বাংলাদেশ টু সৌদি আরব বিমান ভাড়া কত জানুন

সৌদি আরব বাংলাদেশীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এক গন্তব্য। এই মুসলিম দেশটিতে অসংখ্য বাংলাদেশী নিয়মিত যাতায়াত করেন। মূলত ব্যবসা এবং চাকরির সন্ধানেই বেশি যাতায়াত করেন এই দেশটিতে বাংলাদেশীরা। এছাড়া হজ্জ, ওমরার মত ধর্মীয় কারন তো রয়েছেই। সৌদি আরব একটি ধনী দেশ হওয়ায় এখানে উপার্জনের সুযোগও অনেক বেশি। সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে নিয়মিত কাজের জন্য লোক নেয়া হয়। মূলত দেশের বেকার যুবকেরা অনেকেই ভাগ্যের সন্ধানে সৌদি আরবে যান।

বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যেতে চাইলে বিমান ভ্রমন সবথেকে সহজ ও দ্রুততম মাধ্যম। ঢাকা থেকে সৌদি আরবে যাবার এই রুটটি অত্যন্ত ব্যস্ত রুট বলে বেশ কিছু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা এই রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে। তাছাড়া ঢাকা থেকে সৌদি আরবের ভাড়াও অন্যান্য কিছু গন্তব্য থেকে বেশ খানিকটা কম

সৌদি আরবের বেশ কিছু শহর বাংলাদেশীদের কাছে জনপ্রিয়। এর মধ্যে কিছু শহরে অনেক বাংলাদেশী বসবাস করেন। যেমনঃ জেদ্দা, রিয়াদ, মদিনা, দাম্মাম ইত্যাদি। সৌদি আরবের এই বড় ও ব্যস্ত শহরগুলোর নিজস্ব বিমান বন্দরও রয়েছে। কাজেই ঢাকা থেকে প্রতিটি শহরের জন্যই আলাদা বিমান বা ফ্লাইট পাওয়া যায়। ঢাকা ছাড়াও সৌদি আরব যাত্রার জন্য আরও ফ্লাইট পাওয়া যায় চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে। এছাড়া হজ্বের সময় আলাদা বিশেষ ফ্লাইটেরও ব্যবস্থা করা হয় এই রুটে। স্বাভাবিক সময় যেসব ফ্লাইট ঢাকা থেকে ছেড়ে যায় তার সংখ্যাও কম নয়।

আজকের পোস্টে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের জনপ্রিয় চারটি শহরের ফ্লাইট ও তার বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। জেনে নিতে পারবেন বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিমান ভাড়া এবং কোন কোন এয়ারলাইন্স এই রুটে বর্তমানে সেবা দিয়ে যাচ্ছে সে সম্পর্কে। যারা সৌদি আরবে যাবার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট।

বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যেসব এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করছে

ঢাকা থেকে অসংখ্য এয়ারলাইন্স বর্তমানে সৌদি আরবের ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। এর মধ্যে একমাত্র দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আর বিদেশি বা আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে আছেঃ ইন্ডিগো এয়ার, ভিস্তারা, গালফ এয়ার, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, এয়ার এরাবিয়া, ইজিপ্টএয়ার, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, এপিজি এয়ারলাইন্স, এমিরেটস, ফ্লাইদুবাই, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স, কুয়েত এয়ারওয়েস, কাতার এয়ারওয়েস, তুরকিশ এয়ারলাইন্স, জাজিরা এয়ারওয়েস, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ইত্যাদি। এর মধ্যে কিছু কিছু গন্তব্যে আপনি সরাসরি ফ্লাইট পাবেন। আর বাকি সব ফ্লাইটই স্টপেজ ফ্লাইট। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে পরের অংশে।

বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিমান ভাড়া

বিমান ভাড়ার ব্যাপারটি নির্দিষ্ট নয়। প্রতিনিয়তই এই ভাড়া পরিবর্তিত হয় চাহিদা, সময়, সিটের ধরন, ফ্লাইটের ধরন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে। ফলে কোন নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট ফ্লাইটের ভাড়া জানতে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে জেনে নিতে হবে। এই পোস্টে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সৌদি আরব ফ্লাইটের ভাড়া সম্পর্কে একটি আনুমানিক ধারনা দেয়া হল। এখানে বলা মূল্য ওয়ান ওয়ে ফ্লাইটের জন্য প্রযোজ্য।

ঢাকা থেকে জেদ্দা বিমান ভাড়া

জেদ্দা সৌদি আরবের সবথেকে জনপ্রিয় শহরের একটি। এটি বন্দর শহর হওয়ায় ব্যবসা বা চাকরির জন্য এই শহরে যেতে চান অনেকেই। আর তাই ঢাকা থেকে সৌদি আরবের সবথেকে বেশি ফ্লাইট পাওয়া যায় এই শহরের জন্য। 

৩৭ হাজার টাকা থেকে সবথেকে সাশ্রয়ে আপনি জেদ্দার ফ্লাইট পাবেন ইন্ডিগো এয়ারের। তাদের টিকেট মূল্য রয়েছে ৪৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এগুলো স্টপেজ ফ্লাইট এবং সময় লাগে ১৪ ঘণ্টা ২০ মিনিট থেকে ২৪ ঘণ্টারও বেশি।

৫০ হাজার টাকার মধ্যে টিকেট পেয়ে যাবেন ভিস্তারা এবং গালফ এয়ারেরও। তাদেরও সকল ফ্লাইট স্টপেজ ফ্লাইট।

এই রুটে সবথেকে কম মূল্যে সরাসরি ফ্লাইট দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তাদের টিকেট মূল্য শুরু হয় ৫০ হাজার টাকা থেকে। সময় লাগে ৭ ঘণ্টা কিংবা ৯ ঘণ্টা যা ফ্লাইটের উপর নির্ভর করে। ৭০ হাজার টাকা থেকে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট পাওয়া যায় যেখানে ৬ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে জেদ্দা পৌঁছানো যায়। আপাতত এই দুটি এয়ারলাইন্সই সরাসরি ফ্লাইট দিচ্ছে এই রুটে।

এছাড়া ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আপনি এমিরেটস, এয়ার এরাবিয়া, ফ্লাইদুবাই, কাতার এয়ারওয়েস ইত্যাদি অসংখ্য নামীদামী এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট পাবেন। কিন্তু এই সকল ফ্লাইটই স্টপেজ ফ্লাইট। 👉 জেদ্দা টু ঢাকা বিমান টিকেট দাম

Bangladesh to saudi arabia plane cost

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

ঢাকা থেকে মদিনা বিমান ভাড়া

মদিনা অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি শহর। দেশ থেকে এই শহরের বেশ কিছু ফ্লাইট পাওয়া যায়। সবথেকে সাশ্রয়ে ৫০ হাজার টাকা থেকে এই শহরের ফ্লাইট পাবেন গালফ এয়ারের। তাদের টিকেট রয়েছে ৬৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে বিমান ভাড়ায় যেতে পারবেন এয়ার এরাবিয়া, ইজিপ্টএয়ার, ওমান এয়ারের ফ্লাইটে। এছাড়া ফ্লাইদুবাই, এমিরেটস ও জাজিরা এয়ারওয়েসের টিকেট মূল্য থাকে ৮০ হাজার টাকার আশেপাশেই। কাতার এয়ারওয়েস এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান টিকেটও এই রুটের জন্য ১ লাখ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন।

তবে এই রুটে আপনি যে এয়ারলাইন্সেই ভ্রমন করুন না কেন তা স্টপেজ ফ্লাইট হবে। কেননা এখানে সরাসরি ফ্লাইট দিচ্ছে না কোন বিমান সংস্থা। কাজেই মদিনা পৌঁছাতে সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। 👉 ঢাকা টু মদিনা বিমান ভাড়া কত জানুন

ঢাকা থেকে রিয়াদ বিমান ভাড়া

রিয়াদ সৌদি আরবের রাজধানী শহর। কাজেই এখানে বেশ কিছু ফ্লাইট পরিচালিত হয়। ৪০ হাজার টাকা থেকে গালফ এয়ারের ফ্লাইটে আপনি ভ্রমন করতে পারেন এই রুটে। এছাড়া ৪৫ হাজার টাকায় আছে ইন্ডিগো এয়ারের ফ্লাইট। এয়ার এরাবিয়া, ওমান এয়ার, শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট টিকেট পাওয়া যায় ৬০ হাজার টাকার মধ্যেই। তবে উপরের সব ফ্লাইট স্টপেজ ফ্লাইট।

৫৭ হাজার টাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট পাবেন। এসব ফ্লাইটে সময় লাগবে ৬ ঘণ্টা ২০ মিনিট। এর থেকেও দ্রুত পৌঁছাতে চাইলে আছে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের সরাসরি ফ্লাইট। ৬ ঘণ্টা ৫ মিনিটে পৌঁছে যেতে পারবেন মদিনায়। ৬৭ হাজার টাকা থেকে পাওয়া যায় তাদের টিকেট।

২ লাখ টাকা পর্যন্ত এই রুটে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকেট পেয়ে যাবেন আপনি। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ছাড়া সবাই স্টপেজ ফ্লাইট দিচ্ছে। 👉 সৌদি থেকে বাংলাদেশ বিমান ভাড়া কত?

ঢাকা থেকে দাম্মাম বিমান ভাড়া

দাম্মাম সৌদি আরবের আরেকটি বড় ও জনপ্রিয় শহর। ঢাকা থেকে এই রুটের বিভিন্ন ফ্লাইট পাওয়া যায়। সবথেকে কম ৪০ হাজার টাকায় এই রুটে গালফ এয়ারের ফ্লাইট পাবেন আপনি। এছাড়া ৪০ হাজার টাকা ভাড়ায় ইন্ডিগো এয়ারের ফ্লাইটও পাওয়া যায়। ৫০ হাজার টাকার মধ্যে আরও ফ্লাইট রয়েছে ভিস্তারা, সালাম এয়ার, এয়ার এরাবিয়া বিমান সংস্থার। ওমান এয়ার ও শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট চালনা করছে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে। ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পর্যন্ত এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েস, ইতিহাদ এয়ারওয়েস, ফ্লাইদুবাই ইত্যাদি নামীদামী বিমান সংস্থার বিভিন্ন রকম ফ্লাইট আছে। 👉 ঢাকা টু দাম্মাম বিমান ভাড়া কত জানুন

এই রুটে সরাসরি ফ্লাইট পাওয়া যায় না ঢাকা থেকে। কাজেই সময় লেগে যায় ৮ ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টারও বেশি।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,545 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *