‘আইফোন আনএভেইলেবল’ সমস্যা সমাধানের উপায়

প্রাইভেট ছবি থেকে শুরু করে পারসোনাল কন্ট্যাক্টস এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্য সব কিছুই আমাদের স্মার্টফোনে সংরক্ষিত থাকে এবং আমরা চাই না এটি অন্য কারো হাতে পড়ে যাক। সৌভাগ্যক্রমে অ্যাপল আপনার গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল কিছুই অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নেয়। অনেক সময় এমন হয় যে পাসকোড না জানা থাকলে অ্যাপলের সেরা ইঞ্জিনিয়াররাও আইফোন চালু করতে পারে না।

নিরাপত্তার স্বার্থে আপনি আইফোনে কতবার ভুল পাসকোড দিতে পারবেন সেক্ষেত্রে অ্যাপল একটি নির্দিষ্ট লিমিট নির্ধারণ করে রেখেছে। কেননা এই লিমিট নির্ধারণ না করলে যদি কেউ আপনার ফোন হাতে পেয়ে যায় তাহলে একাধিকবার পাসকোড অনুমান করে আপনার ফোন আনলক করে ফেলতে পারবে।

আপনার আইফোন যখন লক করা থাকে তখন আপনার কাছে ৫ টি সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে যদি আপনি আইফোন আনলক করতে না পারেন তাহলে ফোনের স্ক্রিনে একটি মেসেজ আসবে যে আপনার আইফোন এই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডিসেবল হয়ে গেছে। আপনি যে ভার্শনের আইওএস ব্যবহার করেন সেটির উপর নির্ভর করে “আইফোন ইজ ডিসেবলড” অথবা “আইফোন ইজ আনএভেলেবল” মেসেজটি আসবে। যদিও দুটি জিনিসই একই অর্থ বহন করে। আমাদের আর্টিকেলে আমরা আইফোন আনএভেলেবল হলে কি করণীয় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

নির্দিষ্ট কয়েকবার ভুল পাসকোড দেয়ার পর আইফোন আনএভেইলেবল হয়ে সেখানে একটি টাইমার দেখানো হয়। সেখানে যে টাইম দেয়া থাকে সেই সময় পর সঠিক পাসকোড দিয়ে আইফোন আনলক করা যাবে। তবে আপনি যদি সেই সুযোগ পাওয়ার পরেও সঠিক পাসকোড দিয়ে আইফোন আনলক করতে না পারেন তাহলে আপনার আইফোন রিসেট করতে হবে।

আইফোন আনএভেইলেবল ইরর (আইওএস ১৫.২ অথবা নতুন) ফিক্স করার উপায়

আপনি যদি আইওএস ১৫.২ অথবা এর থেকে নতুন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আইফোন আনএভেইলেবল মেসেজ আসার স্ক্রিন থেকেই আপনি সরাসরি আপনার আইফোন মুছে ফেলে দিয়ে নতুন ভাবে শুরু করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে অতিরিক্ত কোনো ট্যুল যেমন কম্পিউটার কিংবা ওয়েব ব্রাউজারের প্রয়োজন পড়বে না। আপনি যদি শিওর থাকেন যে আপনি পাসকোড ভুলে গেছেন তাহলে শুধু শুধু পাসকোড চেষ্টা করার পিছে সময় নষ্ট না করে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। এই পদ্ধতি অবলম্বন করার ক্ষেত্রে আপনাকে সেলুলার ডাটা কিংবা ওয়াইফাই কানেকশন অবশ্যই কানেক্ট করে রাখতে হবে। এমন অবস্থায় কখনোই আপনার আইফোনকে রিস্টার্ট করবেন না কেননা এতে করে আনলক না হওয়া পর্যন্ত আপনি আর ওয়াইফাই চালু করতে পারবেন না।

ধাপ ১ঃ আইফোন আনএভেইলেবল এই স্ক্রিন থেকে ইরেজ আইফোন (আইওএস ১৫/১৬) অথবা ফরগট পাসকোড? (আইওএস ১৭ অথবা নতুন) নির্বাচন করুন। আপনার আইফোন অথবা অ্যাপল আইডি এর উপর ভিত্তি করে এই বাটন নাও আসতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন না। আপনাকে অন্য যেকোনো ট্যুল যেমন আইক্লাউড, ম্যাক অথবা উইন্ডোজ পিসি ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। 

ধাপ ২ঃ সিকিউরিটি লকআউট স্ক্রিনে থাকা “ইরেজ আইফোন ফরগট পাসকোড?” সিলেক্ট করে কনফার্ম করুন।

ধাপ ৩ঃ পরবর্তী স্ক্রিনে আপনার অ্যাপল আইডি পাসওয়ার্ড প্রদান করুন।

ধাপ ৪ঃ এবার “ইরেজ আইফোন” নির্বাচন করে কনফার্ম করুন।

এক্ষেত্রে আপনার আইফোন সম্পূর্ণ মুছে গিয়ে ফ্যাক্টরি সেটিংসে পৌছে যাবে। আপনার যখন নতুন ফোন কেনা হয়েছিলো ঠিক সেভাবেই আবার আগের মতো সেটিংস সেভ করুন। যদিও আপনার কাছে যদি আইক্লাউড ব্যাকআপ থাকে তাহলে সেটি নির্বাচন করে কিছু ডেটা পুনরায় আইফোনে আনতে পারবেন।

আইফোন ইজ ডিসেবলড (আইওএস ১৪ অথবা পুরাতন) ফিক্স করার উপায়

আপনি যদি আইওএস ১৪ অথবা তার থেকেও পুরাতন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি দশটি ভুল পাসকোড দিয়ে চেষ্টা করার আগে সকল ডাটা মুছে ফেলতে পারবেন না। আপনি যখনই দশটি ভুল পাসকোড প্রদান করবেন তখন অটোমেটিকালি সকল ডাটা মুছে ফেলবে। তবে এক্ষেত্রে এই অপশনটি অবশ্যই চালু থাকতে হবে।

আপনার আইফোনে যদি এই ইরেজ ডাটা সেটিংস চালু করা না থাকে তাহলে আপনার আইফোন একটি সিকিউরিটি লকআউট মোডে চলে যাবে। এটি হলে আপনাকে একটি ম্যানুয়াল স্টেপ অনুসরন করে আপনার সকল সমস্যা সমাধান করতে পারবেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

iphone unavailable

ডিসেবল হওয়া আইফোন বা আইপ্যাড আইক্লাউডের মাধ্যমে ফিক্স করার উপায়

যতক্ষন পর্যন্ত আপনি আপনার “ফাইন্ড মাই আইফোন” অপশনটি চালু রাখবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি অন্য কোনো ওয়েব ব্রাউজার অথবা আইপ্যাড বা ম্যাক থেকে ফাইন্ড মাই অ্যাপের মাধ্যমে আইক্লাউডে লগ ইন করে ডিভাইসের ডাটা মুছে ফেলতে পারেন। 

ধাপ ১ঃ যেকোনো ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে icloud.com/find ওয়েবসাইটে ভিজিট করে অ্যাপল আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইন ইন করুন। এবার আপনাত ডিভাইসে লোকেশন সহ একটি ম্যাপ আপনার কাছে চলে আসবে। 

ধাপ ২ঃ স্ক্রিনের উপরে থাকা অল ডিভাইসেস অপশনটি নির্বাচন করুন।

ধাপ ৩ঃ এখানে যেই লিস্ট এখন দেখানো হবে সেখান তগেকে ডিসেবলড আইফোন নির্বাচন করুন। ম্যাপটি আপনার নির্বাচন করা আইফোনের উপর জুম ইন করবে।

ধাপ ৪ঃ এবার যেই ডিভাইস উইন্ডো আসবে সেখান থেকে ইরেজ আইফোন অপশন নির্বাচন করুন।

👉 পাসকোড ছাড়াই আইফোন আনলক করার উপায়

যখন আপনার আইফোন সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা হয়ে যাবে এটি নতুন একটি কনফিগারেশনে রিস্টার্ট হয়ে যাবে এবং আপনাকে পুনরায় নতুন করে সেটাপ প্রোসেস চালু করতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন যে এটি এক্টিভেশন লক ফিচার ডিসেবল করে না তাই আপনাকে আপনার অ্যাপল আইডি এবং পাসকোড প্রদান করে আইফোন সেটিং করার আগে কনফার্ম করতে হবে যে আপনি এর আসল মালিক। যখন আপনি এটি একবার করে ফেলবেন আপনি আপনার সেটআপ প্রোসেস শেষ করে দিয়ে আইক্লাউড অথবা পিসি থেকে ব্যাকআপ নির্বাচন করে সেটি রিস্টোর করতে পারবেন। কিংবা আপনি চাইলে আপনার আইফোনকে একদম নতুন ফ্রেশ মোবাইল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। আরও জানতে পারেন অ্যাপলের অফিসিয়াল পেজ থেকে

👉 আইফোন ডিজেবল হলে ঠিক করার উপায়

তবে এসকল সমস্যা থেকে বাঁচার সহজ নিউমেরিক পাসকোড সেট করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন যাতে এটি সহজে কেউ অনুমান করতে না পারে। এছাড়াও আপনি চাইলে টাচ আইডি কিংবা ফেস আইডি ব্যবহার করতে পারেন কেননা এতে পাসকোড ভুলে যাওয়ার কোনো ভয় থাকে না। এছাড়া ভুলবশত পাসকোড দেওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য ট্যাপ টু ওয়েক এবং রেইজ টু ওয়েক অপশন ডিসেবল করে দিতে পারেন। আইফোন আনএভেইলেবল ইরর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবেন। এছাড়াও নিত্য নতুন প্রযুক্তি বিষয়ক নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং প্রয়োজনীয় টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,569 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *