দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেল ২০১৫। পুরো বছর জুড়ে নতুন নতুন অনেক প্রযুক্তি পণ্য এসেছে বাজারে। সেই সাথে বিদায় নিয়েছে বেশ কিছু প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা। চলুন দেখে নিই উল্লেখযোগ্য কিছু প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয় যা বিদায় নিয়েছে ২০১৫ সালে।
১. ফায়ারফক্স ওএস মোবাইল ও অ্যামাজন ফায়ার ফোন
মজিলা ফায়ারফক্স অপারেটিং সিস্টেম চালিত ২৫ ডলার দামের স্মার্টফোনের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? মনে না থাকলে আমার এই পোস্টটি পড়তে পারেন। ২৫ ডলার দামের সুলভ স্মার্টফোন বানিয়ে উন্নয়নশীল দেশের মোবাইল ফোনের বাজার ধরতে চেয়েছিল মজিলা। বেশ কয়েকটি মডেলের ফোন বিক্রিও করেছিল সংস্থাটি। কিন্তু ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক এই বাজারে শেষ পর্যন্ত আর এগোয়নি ফায়ারফক্স ওএস। চালু হওয়ার মাত্র ২ বছর পর অবশেষে এই ডিসেম্বরের শুরুতে মজিলা ঘোষণা দিয়েছে যে তারা আর মোবাইলের জন্য ফায়ারফক্স অপারেটিং সিস্টেম ডেভলপ করবেনা এবং এই ওএস চালিত ফোন বিক্রিও করবেনা। যদিও ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ক্ষেত্রে সফটওয়্যারটি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চালাবে সংস্থাটি।
এছাড়া অ্যামাজন ফায়ার ফোন স্মার্টফোনও ফ্লপ খেয়ে বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৫ সালে। এটি বাজারে এসেছিল ২০১৪ এর মাঝামাঝি সময়ে।
২. অ্যাডোবি ফ্ল্যাশ
অনলাইন মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে অ্যাডোবি ফ্ল্যাশ এক বৈপ্লবিক নাম। এটি প্রথম তৈরি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। কিন্তু আধুনিক যুগে এইচটিএমএল৫ এর যখন জয়জয়কার, তখন ফ্ল্যাশের মত “অনিরাপদ” অ্যাডঅন এড়িয়ে চলছে প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিগুলো। আর সেইসাথে অ্যাডোবি নিজেও ফ্ল্যাশের উত্তরাধিকারী ‘অ্যাডোবি অ্যানিমেট’ বাজারে এনেছে যা আধুনিক ওয়েব স্ট্যান্ডার্ডের সাথে মানানসই। অফিশিয়ালি ফ্ল্যাশ একেবারে বন্ধ না করে দিলেও অ্যাডোবি এখন ফ্ল্যাশের বদলে এইচটিএমএল৫ ব্যবহার করতে বলছে। সুতরাং ২০১৫তেই মূলত ফ্ল্যাশের দরজা বন্ধ করে দিলো এর নির্মাতা অ্যাডোবি।
৩. গুগল প্লাস সোশ্যাল নেটওয়ার্ক
গুগল প্লাস মূলত ফেসবুকের মত একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট হতে চেয়েছিল। কিন্ত ৪ বছর ধরে সংগ্রাম করে শেষ পর্যন্ত হাঁপিয়ে উঠেছে গুগল। এরপর ২০১৫ সালে গুগল প্লাসের ডিজাইন ও ফাংশনে পরিবর্তন এনে এটিকে পিন্টারেস্টের মত একটি শেয়ারিং টুল হিসেবে প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। সুতরাং বলাই যায়, যে উদ্দেশ্য নিয়ে গুগল প্লাস এসেছিল তা ২০১৫’তে হারিয়ে গেছে।
৪. রেডিও (Rdio), বিটস মিউজিক ও মাইক্রোসফট জুন
রেডিও (Rdio) নামের একটি মিউজিক স্ট্রিমিং সার্ভিস যা ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করেছিল, সেটি এই ডিসেম্বরে বন্ধ হয়ে গেছে। স্পটিফাই ও অ্যাপল মিউজিকের সাথে পাল্লা দিয়ে আর পেরে ওঠেনি রেডিও। এছাড়া বিটস কিনে নিয়ে এর মিউজিক স্ট্রিমিং সার্ভিসও বন্ধ করে দিয়েছে অ্যাপল। অপর দিকে মাইক্রোসফটে মিউজিক প্লেয়ার ডিভাইস ‘জুন’ এর সাথে আসা জুন মিউজিক পাস সাবস্ক্রিপশন সার্ভিসও এই নভেম্বরে বন্ধ করে দিয়েছে উইন্ডোজ নির্মাতা। গুগলের স্ট্রিমিং রেডিও সার্ভিস সংজা বন্ধ করারও ঘোষণা দিয়েছে সার্চ জায়ান্ট।
৫. ফেসবুক ক্রিয়েটিভ ল্যাবস
ফেসবুকের ক্রিয়েটিভ ল্যাবস টিম প্রায়ই নতুন নতুন মোবাইল অ্যাপ লঞ্চ করত। এরকমই কিছু অ্যাপ ছিল স্লিংশট, রুমস ও রিফ। এসব অ্যাপ দিয়ে ভিডিও তৈরি, চ্যাটিং ও মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট শেয়ার করা যেত। কিন্তু চালুর ২ বছরের মাথায় এই ডিসেম্বরে ক্রিয়েটিভ ল্যাবস ও এর অ্যাপগুলো বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক।
৬. ইয়াহু ম্যাপস
ইয়াহু ম্যাপস এর নাম শুনেছেন তো? গুগল ম্যাপস এর কথা তো নিশ্চয়ই জানেন। তাহলে এটাও জেনে নিন, ইয়াহু ম্যাপস গুগল ম্যাপসের চেয়েও ৩ বছর আগে চালু হয়েছিল। ইয়াহু ম্যাপস বাজারে আসে ২০০২ সালে, আর গুগল ম্যাপস চালু হয় ২০০৫ এর ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু এক যুগ ধরে ধুঁকে ধুঁকে ২০১৫ এর জুন মাসে বন্ধ হয়ে যায় ইয়াহু ম্যাপস। যদিও ইয়াহু ম্যাপসের আলাদা সাইটটির (maps.yahoo.com) বয়স হয়েছিল ৮ বছর।
৭. স্যামসাং চ্যাটঅন-মিল্ক ভিডিও, ইউটিউব মিউজিক কি…
২০১৫’তে আরো যেসব প্রযুক্তি সেবা বন্ধ হয়েছে তার মধ্যে স্যামসাংয়ের চ্যাটঅন সেসেজিং সেবা, মিল্ক ভিডিও স্ট্রিমিং, গুগলের মিউজিক কি স্ট্রিমিং সার্ভিস, ফাইল শেয়ারিং সার্ভিস র্যাপিডশেয়ার উল্লেখযোগ্য।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।