ইন্টেল ১১ প্রজন্মের প্রসেসর ‘টাইগার লেক’ ল্যাপটপের জন্য নতুন পাওয়ারহাউজ

ইন্টেল ১১ প্রজন্মের প্রসেসর ‘টাইগার লেক’ পিসির জন্য নতুন পাওয়ারহাউজ

ল্যাপটপের জন্য ১১ প্রজন্মের ‘টাইগার লেক’ প্রসেসর ঘোষণা করেছে ইন্টেল। এই প্রসেসরগুলোতে যুক্ত থাকবে প্রতিষ্ঠানটির নতুন এক্সই গ্রাফিক্স, থান্ডারবোল্ট ৪ সাপোর্ট, ওয়াইফাই ৬ এবং পূর্ববর্তী আইস লেক প্রসেসর এর তুলনায় অপেক্ষাকৃত ভালো ব্যাটারি লাইফ। ইন্টেল এর দাবি ১১ প্রজন্মের প্রসেসরগুলো “ওজনে হালকা ও পাতলা ল্যাপটপগুলোর জন্য সেরা প্রসেসর” হতে যাচ্ছে।

১১ প্রজন্মের নতুন নয়টি প্রসেসর ডিজাইন আনতে যাচ্ছে ইন্টেল। এর মধ্যে ইউ-সিরিজ (ইউপি৩) এবং ওয়াই-সিরিজ (ইউপি৪) – উভয় ক্লাসের চিপই অন্তর্ভুক্ত। এই দুই ক্লাসের প্রসেসর কোর আই৭-১১৮৫জি৭ দ্বারা চালিত, যার বেস স্পিড ৩.০গিগাহার্জ। এটি সিংগেল কোর টার্বো বুস্টের মাধ্যমে ৪.৮গিগাহার্জ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।

এছাড়াও নতুন শক্তিশালী গ্রাফিক্স থাকায় ৯৬ সেন্ট্রাল ইউনিট এবং ১.৩৬গিগাহার্জের সমান গ্রাফিক্স স্পিড পাওয়া যাবে।

এই বছরের আর্কিটেকচার ডে ইভেন্টে এই নতুন চিপগুলোর কথা প্রথমবারের মত জানায় ইন্টেল। ১০ প্রজন্মের মতই ১১ প্রজন্মের চিপগুলো ১০ন্যানোমিটার আর্কিটেকচারের উপর ভিত্তি করে তৈরী। তবে যুক্ত হয়েছে নতুন “১০ন্যানোমিটারের সুপারফিন ডিজাইন” যা ইন্টেল এর দাবি অনুসারে কম পাওয়ার কনজ্যুম করেও ভালো স্পিড প্রদার করবে।

ইন্টেল এর তরফ থেকে এটা জানানো হয়নি যে এই বাড়তি সুবিধাওগুলো কোন ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে। তবে এটি জানানো হয়েছে যে অফিস প্রোডাক্টিভিটি, সিস্টেম লেভেল পাওয়ার ইত্যাদিক্ষেত্রে ২০% অধিক স্পিড লক্ষণীয় হবে। যার ফলে ভিডিও স্ট্রিমিং এর মত টাস্কগুলোতে পাওয়া যাবে বাড়তি ব্যাটারি ব্যাকাপ।

ওয়ার্ড প্রসেসিং এর মত কাজগুলো আইস লেক প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৩২% দ্রুত হবে। এছাড়াও এএমডি এর রাইজেন ল্যাপটপ চিপ হতে ইন্টেল এর এই চিপগুলো ২৪% দ্রুততর। ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রে আইস লেক প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৪৯% এবং এএমডি এর তুলনায় দ্বিগুণ স্পিড পাওয়া যাবে ১১ প্রজন্মের প্রসেসরগুলোতে। অনলাইন গেমের ক্ষেত্রে আইস লেক প্রসেসগুলোর তুলনায় ৭৭% এবং এএমডি এর তুলনায় ১৪৬% দ্রুততর হবে ১১ প্রজন্মের টাইগার লেক প্রসেসরগুলো।

বোনাসঃ ল্যাপটপ নাকি ডেস্কটপ? কোনটি কিনলে ভাল হবে?

নতুন গ্রাফিক্স নিয়ে বেশ গর্বিত ইন্টেল। পূর্বের দ্বিগুণ পর্যন্ত গ্রাফিক্স পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে এই চিপগুলোতে। ৮কে এইচডিআর ডিসপ্লের সাপোর্ট থাকছে এই নতুন ১১ প্রজন্মের চিপগুলোতে। এছাড়াও ভিডিও কলিং এ ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করার মত টাস্কগুলো পারফর্ম করার সময় ভালো পারফরম্যান্স দেওয়ার লক্ষ্যে বিল্ট-ইন এআই ইঞ্জিন থাকছে চিপসমূহে।

নতুন চিপগুলোর পাশাপাশি প্রজেক্ট এথেনা সার্টিফিকেশন স্ট্যান্ডার্ডকে নতুন নাম দেয়া হয়েছে, ইন্টেল ইভো। ইভো এর জন্য উন্নতমানের স্পেসিফিকেশন দরকার হবে। সিংগেল চার্জে অন্তত ৯ ঘন্টা রিয়েল ওয়ার্ল্ড ব্যাকাপ পাওয়া যাবে। এছাড়াও থাকতে হবে ফাস্ট চার্জিং, যা ৩০ মিনিট চার্জে ৪ ঘন্টা ব্যাকাপ দিবে। এই বছর ২০টির বেশি ইভো ভেরিফাইড ডিজাইন দেখা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ইন্টেল।

১১ প্রজন্মের ইন্টেল প্রসেসর দ্বারা চালিত ল্যাপটপ

ইন্টেল এর এই একাদশ প্রজন্মের প্রসেসর দ্বারা চালিত বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ আনতে যাচ্ছে আসুস। চলুন একনজরে জেনে আসি সেগুলো সম্পর্কে।

আসুস জেনবুক ফ্লিপ এস (UX371)

আলট্রাকম্প্যাক্ট জেনবুক ফ্লিপ এস হ’ল প্রথম আসুস ল্যাপটপ যা ইন্টেল ইভো প্ল্যাটফর্মের ল্যাপটপ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে । এটি অনায়াসে বহনযোগ্য, মাত্র ১৩.৯ মিমি পাতলা এবং মাত্র ১.২ কেজি ওজনের। থাকছে ফোরকে ওএলিডি ডিসপ্লে সহ ৩৬০ ডিগ্রি টাচ ডিসপ্লে।

আসুস জেনবুক ফ্লিপ ১৩ (UX363)

মাত্র ১৩.৯ মিমি পাতলা এবং মাত্র ১.৩ কেজি  ওজনের কমপ্যাক্ট জেনবুক ফ্লিপ ১৩ এ থাকবে উচ্চ-ক্ষমতার ব্যাটারি যা ১৪ ঘন্টা পর্যন্ত চলতে সক্ষম।, এতে থাকছে ৬৫ ওয়াটের চার্যার যা ফাস্ট চার্জিং সমর্থন করে।  পারফরম্যান্সের জন্য, জেনবুক ফ্লিপ ১৩ থছে ইন্টেল এর ১১ প্রজন্মের কোর আই ৭ প্রসেসর সাথে ইন্টেল আইরিস এক্স ই গ্রাফিক্স এবং ১৬ জিবি র‍্যাম। স্টোরেজের জন্য, এটি ১ টিবি পিসিআই 3.0 এসএসডি পর্যন্ত সমর্থন করে।

আসুস জেনবুক এস (UX 393)

জেনবুক এস একটি প্রিমিয়াম আল্টরপোর্টেবল ১৩.৯-ইঞ্চি ল্যাপটপ যা একেবারে নতুন ৩:২ অ্যাসপেক্ট-রেশিও ফর্ম ফ্যাক্টর সহ। এটা ১৫.৭ মিমি পাতলা ১.৩৫ কেজি ওজনের কম্প্যাক্ট ল্যাপটপ,যা  3.3K (3300 x 2200) এর চারপাশে নির্মিত হয়েছে ৩:২ রেশিওর টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে। এতেও থাওছে উচ্চ-ক্ষমতা 67 ডাব্লু ব্যাটারি যা জেনবুক এস ল্যাপটপ্টিতে ১২ ঘন্টা চালাতে সক্ষম।  থাকছে নম্বরপ্যাড ২.০  ইনফ্রারেড (আইআর) ক্যামেরা সুবিধাসহ শক্তিশালী কনফিগারেশন।

আসুস জেনবুক ১৪ আল্ট্রালাইট (UX435EAL / EGL)

মাত্র ৯৮০গ্রামের জেনবুক ১৪ আল্ট্রালাইট ল্যাপটপে থাকছে ১১ প্রন্মের ইন্টেল প্রসেসর সহ আইয়ারাইএক্স বা এনভিডিয়া গ্রাফিক্সের অপশন।এর বিশেষত্ব হচ্ছে এর হাল্কা ওজন, শক্তিশালী কফিগারেসন সহ এর ৯২% স্ক্রিন টু বডি রেশিও।

বোনাসঃ হার্ড ডিস্ক নাকি এসএসডি স্টোরেজ? কম্পিউটারে কোনটি ভাল হবে?

আসুস এক্সপার্টবুক  বি ৯

ASUS এক্সপ্রেসবুক B9  এর ওজন মাত্র ৮৮০ গ্রাম। ব্যাবসায়িক কাজে সহজে বহনযোগ্য কিন্তু শক্তিশালী এই ল্যাপটপ এ থাকছে নতুন এই প্রসেসর সহ দুটি এসএস ডি ব্যাবহারের সুবিধা। এছাড়াও এআই সম্বলিত ক্যামেরা যা স্বচ্ছ ভিডিও কনফারেন্স করতে সাহায্য করবে।

আসুস জেনবুক ১৪

জেনবুক 14  একটি সম্পূর্ণ নতুন ল্যাপটপ যা পারফরম্যান্স এবং সৌন্দর্য আর বহনযোগ্যতার দারুন সংযোগ। ১.১৯ কেজির এই ল্যাপটপে ইন্টের ১১ পজন্মের প্রসেসর সহ এনভিডিয়া এমেক্স৪৫০ গ্রাফিক্স।

জেনবুক ক্লাসিক সিরিজের এই সর্বশেষ সংযোজনে এ থাছে দুটি থান্ডারবোল্ট ৪ ইউএসবি-সি, ইউএসবি ৩.২ টাইপ-এ, স্ট্যান্ডার্ড এইচডিএমআই ২.০ , মাইক্রোএসডি কার্ড রিডার এবং একটি অডিও জ্যাক। জেনবুক 14 এর উল্লেখযোগ্য ফিচার এর ৯২% স্ক্রিন-টু-বডি অনুপাত সহ একটি চার দিকের ফ্রেমলেস ন্যানোএডজ ডিসপ্লে।

আসুস ভিভোবুক ফ্লিপ ১৪

ভিভোবুক ফ্লিপ ১৪ হ’ল ৩৬০ ডিগ্রি হিঞ্জ আর স্টাইল যুক্ত ফ্লিপেবল টাচস্ক্রিন ল্যাপটপ যা ট্যাবলেট মোডে ব্যবহার করা যায়। টাচস্ক্রিন এই ল্যাপটপ ।

আসুস জেনবুক ১৩/১৪ (UX325 / UX425)

জেনবুক ক্লাসিক সিরিজের জেনবুক ১৩ (ইউএক্স ৩২৫) এবং জেনবুক ১৪ (ইউএক্স ৪২৫) দুটি নতুন প্রজন্মের ১৩.৩-ইঞ্চি এবং ১৪ ইঞ্চির আল্ট্রাপোর্টেবল ল্যাপটপ। জেনবুক ১৩ এবং জেনবুক ১৪ আগের প্রজন্মের চেয়েও পাতলা এবং হালকা। জেনবুক ১৩ এর ওজন মাত্র ১.০৭ কেজি ৯ এবং উভয় মডেল কেবল ১৩.৯ মিমি পাতলা।

আসুস ভিভোবুক S13 / S14 / S15 (S333 / S433 / S533)

সম্প্রতি দেশে উন্মোচিত হওয়া আসুস ভিভোবুক এস সিরিজ ১৩ ইঞ্চি, ১৪, এবং ১৫ ইঞ্চির ল্যাপটপের গুলো ইতিমধ্যেই দেশের বাজারে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এই ল্যাপটপে আপগ্রেডে আসতে যাচ্ছে সামনের বছর ইন্টেলের ১১ প্রজন্মের প্রসেসর নিয়ে।

২০২০ সালের শেষের দিকে আসুস এর উল্লিখিত ল্যাপটপগুলো বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যাবে।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,569 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *