অবশেষে চলে এলো অ্যাপল এর ২০২৩ সালের আইফোন মডেলগুলো। আইফোন ১৫ সিরিজে থাকছে আইফোন ১৫, আইফোন ১৫ প্লাস, আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স, ডিভাইস চারটি। চলুন জেনে নেওয়া যাক সদ্য মুক্তি পাওয়া আইফোন ১৫ সিরিজ সম্পর্কে বিস্তারিত।
আইফোন ১৫ ও ১৫ প্লাস
আইফোন ১৫ সিরিজের সবচেয়ে বড় আপডেট হলো ইউএসবি-সি পোর্ট। অবশেষে অ্যাপল তাদের লাইটনিং পোর্ট বাদ দিয়ে ইউনিভার্সালি ব্যবহৃত ইউএসবি-সি পোর্ট নিয়ে এসেছে নতুন আইফোনগুলোতে।
অ্যাপল গতবছর জানায় তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিয়ম মেনে ইউএসবি-সি ব্যবহার করতে যাচ্ছে নতুন আইফোনে। অবশেষে উক্ত সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে এই প্রথমবারের মত অফিসিয়ালি ইউএসবি-সি পোর্ট চলে আসলো কোনো আইফোনে।
ইউএসবি-সি এর খবর শুনে খুশি হয়ে ডিজাইনে নতুনত্ব আশা করলে কিছুটা হতাশ হতে পারেন। সামনের দিকে গতবছরের আইফোন ১৪ প্রো এর মতই দেখতে নতুন আইফোন ১৫, যাতে ৬.১ ইঞ্চি ডিসপ্লে থাকছে। সকল আইফোন ১৫ মডেলে ডায়নামিক আইল্যান্ড থাকছে। পিল-শেপড এর কাটআউট প্রথম দেখা যায় আইফোন ১৪ প্রো ও আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্সে, যার সাহায্যে বিভিন্ন অ্যাপ ও নোটিফিকেশনের সাথে ইন্টারেক্ট করা যায়।
আইফোন ১৫ তে আরো থাকছে ওলেড সুপার রেটিনা ডিসপ্লে, যাতে ১৬০০ নিটস ব্রাইটনেস এর পাশাপাশি ডলবি ভিশন সাপোর্টও রয়েছে। সূর্যের আলোতে ২০০০ নিটস পর্যন্ত ব্রাইটনেস পাওয়া যাবে আইফোন ১৫ তে যা আইফোন ১৪ এর দ্বিগুণ। আইফোন ১৫ এর ক্যামেরা সিস্টেমেও আপগ্রেড এসেছে। মেইন ক্যামেরা সেন্সর হিসেবে ১২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরার পরিবর্তে থাকছে ৪৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এর পাশাপাশি রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেল টেলিফটো ক্যামেরা যা অটোমেটিক পোর্ট্রেইড মোড এর মত ফিচার প্রদান করবে।
এর পাশাপাশি নাইট মোড, লাইভ ফটোস, অ্যাকশন মোড, ইত্যাদি ক্ষেত্রেও আইফোন ১৫ এর ক্যামেরাতে আপগ্রেড এসেছে। সেলফি প্রেমীদের জন্য ফ্রন্ট ক্যামেরায় এসেছে বেটার অটোফোকাস ও পোরট্রেইট লাইটিং।
নতুন আইফোন ১৫ তে গতবছরের আইফোন ১৪ প্রো তে থাকা এ১৬ বায়োনিক চিপ থাকছে। এছাড়া আগের চেয়ে বড় ব্যাটারি থাকছে এখানে যার কল্যাণে “all-day battery life” পাওয়া যাবে বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করছে অ্যাপল।
অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৯ এর মত আইফোন ১৫ তেও সেকেন্ড-জেনারেশন আলট্রা ওয়াইডব্যান্ড চিপ রয়েছে যার কল্যাণে দূর থেকেও ফাইন্ড মাই ব্যবহার করে আইফোন ১৫ মডেলগুলোকে সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে ওয়াচ সিরিজ ৯ ব্যবহার করে।
আইফোন ১৫ এর দাম থাকছে ৭৯৯ ডলার ১২৮ জিবি মডেল এর জন্য। অন্যদিকে ১২৮ জিবি আইফোন ১৫ প্লাস পাওয়া যাবে ৮৯৯ ডলার দামে।
আইফোন ১৫ প্রো ও ১৫ প্রো ম্যাক্স
আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স তৈরি টাইটেনিয়াম দ্বারা, নতুন যুক্ত হয়েছে অ্যাকশন বাটন। অ্যাপল এর সবচেয়ে শক্তিশালী আইফোন মডেলগুলো সম্পর্কে জানি চলুন।
এই বছরের আইফোন ১৫ প্রো তে ডিসপ্লে থাকছে ৬.১ ইঞ্চি ও প্রো ম্যাক্স এ থাকছে ৬.৭ ইঞ্চি। অর্থাৎ এখানে আইফোন ১৫ ও ১৫ প্লাস এর স্ক্রিন সাইজ থাকছে।
আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স চলবে নতুন এ১৭ প্রো চিপ দ্বারা, যা অ্যাপল এর ভাষ্যমতে যেকোনো স্মার্টফোনে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী চিপ। অ্যাপল দাবি করছে কিছু কিছু পিসিকে পর্যন্ত টক্কর দিতে পারে এই প্রসেসর।
রিডিজাইনড জিপিউ’র কল্যাণে আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স ফোন দুইটিতে মাথানষ্ট গেমিং পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে। অ্যাপল তো রীতিমত কম্পিউটার গেম খেলা যাবে বলে জানিয়েছে এই নতুন চিপযুক্ত ফোনগুলোতে।
উভয় ফোনেই ইউএসবি-সি পোর্ট থাকছে, বাদ পড়েছে চিরচেনা লাইটেনিং পোর্ট। প্রো মডেলগুলোতে ১০জিবিপিএস পর্যন্ত ফাইল ট্রান্সফার স্পিড পাওয়া যাবে ইউএসবি ৩ পোর্ট এর কল্যাণে। ব্ল্যাক, ব্লু, হোয়াইট, এসব কালারেই পাওয়া যাবে আইফোন ১৫ প্রো মডেলগুলো।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স এ রিংগার সুইচ এর পরিবর্তে যুক্ত হয়েছে অ্যাকশন বাটন। এই নতুন বাটন ব্যবহার করে শর্টকাট কাস্টমাইজ, একসেসিবিলিটি ফিচার অ্যাকসেস, ক্যামেরা ওপেন, ফ্ল্যাশলাইট ওপেন, ইত্যাদিও করা যাবে রিংগার সুইচ এর সাধারণ কাজের পাশাপাশি।
আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স এর সবচেয়ে বড় উন্নতি এসেছে এর ক্যামেরা সেকশনে। প্রায় সাতটি আলাদা ফোকাল লেংথে ছবি তোলা যাবে আইফোন ১৫ প্রো ও আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স এ, যার ফলে এখানে সাতটি ক্যামেরা সেন্সর পাচ্ছেন বললেও ভুল হবেনা। আইফোন ১৪ প্রো থেকে বিশাল উন্নতি এসেছে এখানে।
মূলত 24mm, 28mm, ও 35mm ফোকাল লেংথের তিনটি ক্যামেরাকে ব্যবহার করে অ্যাপল এই সাতটি ক্যামেরা ভিউপয়েন্ট প্রদান করতে যাচ্ছে। ম্যাক্রো ফটোগ্রাফির পাশাপাশি 120mm ফোকাল লেংথ সুবিধা পাওয়া যাবে যার মাধ্যমে 5x অপটিক্যাল জুম সুবিধা পাওয়া যাবে।
ভিডিও এর ক্ষেত্রে এখানে ৪কে ৬০এফপিএস প্রোরেজ ভিডিও রেকর্ড এর পাশাপাশি ইউএসবি-সি পোর্ট ব্যবহার করে সরাসরি এক্সটারনাল ড্রাইভে ভিডিও রেকর্ড করা যাবে। অ্যাপল ভিশন প্রো এর জন্য “Spatial vidoes” রেকর্ড এর অপশন এসেছে আইফোন ১৫ প্রো ও প্রো ম্যাক্সে, এগুলো মূলত প্রফেশনালদের জন্য ফিচার মাত্র যা সবার কাজে আসবেনা।
আইফোন ১৫ প্রো এর ১২৮ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়ান্ট এর দাম ৯৯৯ ডলার। অন্যদিকে আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্স এর দাম ১১৯৯ ডলার যাতে ২৫৬ জিবি স্টোরেজ রয়েছে।
নতুন অ্যাপল ওয়াচ
আইফোন এর পাশাপাশি নতুন অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৯ ও অ্যাপল ওয়াচ আলট্রা ২ এর ঘোষণাও দেয় অ্যাপল।
অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৯ এ থাকছে নতুন এস৯ চিপ যাতে আরো বেশি প্রসেসিং ও জিপিইউ পাওয়ার থাকবে। নতুন ওয়াচ সিরিজে সিরি রিকুয়েস্ট অন-ডিভাইস কাজ করবে। পাওয়া যাবে আগের মত ১৮ ঘন্টা ব্যাটারি লাইফ। নতুন UWB চিপ এর কল্যাণে ওয়াচ ব্যবহার করে আইফোন খুঁজে পাওয়ার প্রসেস আরো অ্যাকুরেট হবে। এছাড়া ব্রাইটনেস ডাবল হয়েছে, ওয়াচ সিরিজ ৯ এ পেয়ে যাবেন ২০০০ নিটস পিক ব্রাইটনেস। অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৯ এর দাম ৩৯৯ ডলার।
অন্যদিকে অ্যাপল ওয়াচ আলট্রা ২ তে এস৯ চিপ এর সকল সুবিধার পাশাপাশি ৩০০০ নিটস ব্রাইটনেস সুবিধা পাওয়া যাবে। এসেছে নতুন মডিউলার ওয়াচ ফেইস। অ্যাপল ওয়াচ আলট্রা ২ এর দাম ৭৯৯ ডলার। অন্যদিকে অ্যাপল ওয়াচ এসই এর দাম থাকছে নন-জিপিএস মডেলের জন্য ২৪৯ ডলার ও সেলুলার মডেলের জন্য ২৯৯ ডলার।
আপনার কাছে কেমন লেগেছে নতুন আইফোন ১৫ মডেলগুলো? নতুন আইফোন সম্পর্কে আপনার মতামত আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট সেকশনে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।