ভিডিও এডিটিং থেকে টাকা আয় করতে এগুলো জেনে রাখুন

এনিমেশন, ইলাস্ট্রেশন, অডিও এবং ভিডিও কন্টেন্ট দিয়ে খুব সহজেই একজন ভিডিও এডিটর ভিডিও তৈরি করতে পারেন। যেটি তিনি ইন্টারনেট বা অন্যান্য মিডিয়াতে সম্প্রচার করতে সক্ষম। তবে মান সম্মত কন্টেন্ট তৈরি করার জন্য একজন পেশাদার ভিডিও এডিটরকে বিস্তরভাবে এডিটিং করার কৌশল এবং প্রোডাকশন চেইন সম্পর্কে জানতে হয়। বাংলাদেশের মতো জায়গায় আপনি ভিডিও এডিটিং করে ফুলটাইম ইনকাম করতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ভিডিও এডিটিং এবং এর ক্যারিয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ভিডিও এডিটিং শুরু করার জন্য কোন সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে?

ভিডিও এডিটিং করার ক্ষেত্রে বাজারে অনেক ধরনের সফটওয়্যার রয়েছে এবং এগুলো দিয়ে খুব সহজেই ভিডিওর কোয়ালিটি ইম্প্রুভ করা সম্ভব। তবে এগুলোর মধ্যে আপনি নিচের যেকোনো একটি সফটওয়্যার দিয়ে আপনার কাজ শুরু করতে পারেন। 

এডোবি প্রিমিয়ার প্রো

প্রফেশনাল এডিটিং এবং প্রোডাকশনের জন্য একটি দারুণ সফটওয়্যার এডোবি প্রিমিয়ার প্রো। অ্যাপটি ভিডিও এডিটের জন্য প্রায় সকল ফিচার সমৃদ্ধ, যাতে ক্লিপ তৈরি করা, শিরোনাম বা ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট যুক্ত করা এবং অডিও মিক্সিং ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যায়।

ফাইনাল কাট প্রো

অ্যাপলের তৈরি করা একটি সফটওয়্যার হলো ফাইনাল কাট প্রো। যেটি ব্যবহার করার জন্য অ্যাপল ব্রান্ডের কম্পিউটার প্রয়োজন। এডোবি প্রিমিয়ারের মতো উক্ত সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি আপনার পছন্দমতো এডিট করতে পারবেন। এছাড়াও সাউন্ড এডিটিং দরকার তেমন ভিডিওর ক্ষেত্রে সফটওয়্যারটি খুব ভালো ভাবে ব্যবহার করা যায়। এগুলো ছাড়াও আরো কিছু এডিটিং সফটওয়্যার রয়েছে যেমন উইন্ডোজ মুভি মেকার (ফ্রি এবং লিমিটেড), দাভিঞ্চি রিসলভ, সনি ভেগাস প্রো, ম্যাজিক্স ভিডিও ডিলাক্স ইত্যাদি।

এডোবি প্রিমিয়ার এলিমেন্ট ও আফটার ইফেক্টস 

প্রিমিয়ার এলিমেন্ট হল এর বড় ভার্শন প্রিমিয়ার প্রো এর তুলনায় সহজ। এনিমেটেডে মনটাজ বানানোর ক্ষেত্রে আফটার ইফেক্টস সফটওয়্যার ভিজুয়াল ইফেক্ট এবং স্পেশাল গ্রাফিক্স যোগ করতে ব্যবহার করা হয়।

ভিডিও এডিটরের কাজ কি?

একজন ভিডিও এডিটর মূলত কোনো ব্র‍্যান্ডকে হাইলাইট করার জন্য, কোনো গেমের জন্য, কোনো বিজ্ঞাপন এর মেসেজের জন্য,  কোনো কোম্পানি কিংবা কোনো স্কুলের জন্য ভিডিও তৈরি করে থাকে। এসব করার জন্য তার স্ক্রিপ্ট লেখা, শ্যুট, সাউন্ড নেওয়া, ইমেজ নির্বাচন এবং ইলাস্ট্রেট করা এবং সেগুলো একসাথে করার মতো কাজ করা লাগতে পারে। অনেক সময় ভিডিও এডিটরের তার ভিডিও ব্রডকাস্টিং করার ক্ষেত্রেও দায়িত্বে থাকতে হয়।

ভিডিও এডিটিং এ যাওয়ার আগে আপনার কি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে?

আপনি ভিডিও এডিটর হবার আগে কিংবা এটিকে আপনার পেশা বানানোর আগে নিজেকে কিছু প্রশ্ন করে নিন। এটি আপনাকে আপনার পেশাদার প্রকল্প করতে নানা উপায়ে সহায়তা করবে।

আপনাকে আগে ভেবে নিতে হবে যে আপনি কিভাবে আপনার প্যাশনকে আপনার কাজে রূপান্তর করতে পারবেন। আপনি কি সারাদিন এডিট করতে পারবেন কিনা সে ব্যাপারেও আপনার ধারনা থাকা লাগবে। এছাড়াও আপনার কি এই সেক্টরে সামান্য পরিমান স্কিলও আছে কিনা সেটি খেয়াল রাখতে হবে। সর্বোপরি আপনাকে চিন্তা করত্র হবে যে এখানে পর্যাপ্ত চাকরির সুবিধা আছে কি না।

ভিডিও এডিটরের বাংলাদেশে বেতন কত?

একজন ভিডিও এডিটর কেমন ধরনের কোম্পানিতে চাকরি করছেন তার উপর ভিত্তি করে তার মাসিক বেতন নির্ভর করে থাকে৷ তবে বাংলাদেশে একজন ভিডিও এডিটর শুরুর দিকে মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে। আপনি চাকরিতে স্থায়ীভাবে আছেন নাকি অল্প সময়ের জন্য আছেন তার উপর নির্ভর করে আপনার স্ট্যাটাস কেমন হবে।

ভিডিও এডিটর হিসেবে কিভাবে চাকরি খুজবেন?

প্রচলিত চাকরির অ্যাপ ও সাইটগুলো প্রতিনিয়ত চাকরি এবং ইন্টার্নশিপের বিজ্ঞাপন অফার করে থাকে। প্রতিনিয়ত আপনি যদি আপওয়ার্ক, ফাইভার, বিডিজবস কিংবা গ্লাসডোরে খোঁজ রাখেন তাহলে একসময় চাকরি পেয়ে যাবেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

video editing career

ক্যারিয়ার এভালুয়েশন

একজন ভিডিও এডিটর খুব জলদি তার স্থান থেকে উন্নতি করে প্রথমে এসিস্ট্যান্ট এডিটর, পরে এডিটর এবং সর্বশেষে চীফ এডিটরে পৌছে যেতে পারে। তবে এর জন্য ভিডিও এডিটিং এ দক্ষতার পাশাপাশি অধ্যবসায়ী হতে হবে। 

👉 আরও জানুনঃ ভিডিও এডিটিং কি? ভিডিও এডিটিং করে আয় করার উপায়

বিদেশে কিভাবে ভিডিও এডিটর হওয়া যায়?

আপনি যদি সত্যিই বিদেশে যেয়ে ভিডিও এডিটরের কাজ কর‍তে চান তাহলে কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে৷ এছাড়াও আপনি যে দেশে যেতে চান সেখানকার ভাষা জানেন কি না অথবা যেই কোম্পানিতে যেতে চান সেটিতে ব্যবহৃত যেকোনো একটি ভাষা জানেন কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। এরপরে আপনার স্কিল এবং কাজের ধরন একটি পোর্টফোলিও এর মাধ্যমে প্রকাশ করে কোম্পানিকে দেখাতে হবে যে আপনি কতটুকু কাজ করতে পারেন। একজন ভিডিও এডিটর যিনি প্রিমিয়ার প্রো খুব ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে পেরেছেন তিনি খুব সহজেই যেকোনো গেম স্টুডিও, ওয়েব এজেন্সি অথবা বিজ্ঞাপনের এজেন্সিতে চাকরি করতে পারবেন।

সুবিধা ও অসুবিধা 

ভিডিও এডিটরের পেশা নির্বাচন করার বেশ কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে৷ সেগুলো হলো –

সুবিধা 

  • শক্তিশালী নিয়োগযোগ্যতা
  • সৃজনশীলতা বৃদ্ধি
  • সহজলভ্য পেশা

অসুবিধা 

  • অনেক সময় টাইট ডেডলাইনের মধ্যে পড়তে হয়
  • প্রচুর সময় ধরে কাজ করতে হয়

শেষ কথা

ভিডিও এডিটিংকে পেশা হিসেবে নির্বাচন করার অর্থ হলো আপনাকে অডিও ভিজুয়াল পেশাগুলোকে ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। এছাড়াও চিত্র গ্রহণ পরিচালনার সাথে সাথে ভালো এডিটিং এর দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়াও কোম্পানির প্রয়োজনের স্বার্থে তাদের চাহিদা মিটিয়ে ভালো, শক্তিশালী এবং ছোট ভিডিও তৈরি করার ক্ষমতা থাকতে হবে। ডিজাইন করা ভিডিও অনলাইনে ব্রডকাস্ট করা হয়ে থাকে বিধায় এসব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট জ্ঞান থাকাও অনেক জরুরি। তাই বাংলাদেশের মতো জায়গায় ভালো ভিডিও এডিটিং করার জন্য যেকোনো একটি ভিডিও এডিটিং কোর্স সম্পন্ন করা উচিত। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

https://www.google.com/recaptcha/api.js?ver=1.23