বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকরির সন্ধানে যাওয়া খুবই জনপ্রিয়। অসংখ্য বাংলাদেশি আরব আমিরাতের বিভিন্ন শহরে কাজ করছেন। বড় শহর হওয়ায় এবং ধনী দেশ হবার কারনে এখানে কাজ পাওয়া কঠিন। তবে প্রতিটি কাজের বেতন দেশের থেকে অনেক বেশি বলে অসংখ্য মানুষ আরব আমিরাতের বড় একটি শহর দুবাই কাজ করতে আগ্রহী থাকেন। আর তাই তারা দুবাই কাজের সন্ধান পেতে বিভিন্ন রকম পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। দুবাই জব ফর বাংলাদেশি একটি বহুল কাঙ্ক্ষিত বিষয়।
দুবাইতে চাকরির বাজার সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেকেই ভুল পথে দুবাই যেতে চান। তবে আপনি কোন স্থানে চাকরি করতে চাইলে সবার আগে সে স্থানের চাকরির বাজার, খরচ ও অন্যান্য সকল বিষয় সম্পর্কে জেনে নেয়া প্রয়োজন। অন্ধের মতো কোন স্থানে চাকরি করতে চাইলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকটাই। কাজেই নিজের দক্ষতা অনুযায়ী সকল দিক বিচার বিবেচনা করে তবেই বিদেশে চাকরির জন্য যাবার পরিকল্পনা করা উচিত।
আমাদের পোস্টে চাকরির ক্ষেত্রে অন্যতম জনপ্রিয় শহর দুবাই চাকরির বাজার নিয়ে কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হবে। যারা দেশ থেকে দুবাইতে চাকরি করতে আগ্রহী তাদের জন্য পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুবাইতে চাকরি করবার ক্ষেত্রে দুবাই চাকরির খবর সঠিকভাবে জেনে নিয়ে নিজে থেকেই চেষ্টা করা উচিত। এক্ষেত্রে দালাল কিংবা অন্যান্য বিভিন্ন অবৈধ পন্থা থেকে বিরত থেকে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী চাকরি খোঁজা উচিত। আমাদের পোস্টে দুবাইতে কেমন ধরণের চাকরি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সেখান থেকে আপনি কেমন উপার্জন করতে পারবেন সে বিষয়ে কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হবে।
দুবাইতে যেসব কাজের চাহিদা বেশি
দুবাইতে বেশিরভাগ ছোটখাটো কাজের ক্ষেত্রে বিদেশি শ্রমিকদের প্রাধান্য দেয়া হয়। মূলত যেসব কাজে বেতন বেশি সেসব কাজই সবথেকে চাহিদা সম্পন্ন। সেসব কাজের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাও বেশি হয়ে থাকে। দুবাইতে সবথেকে বেশি যেসব ক্ষেত্রে কাজ পাওয়া যায় সেগুলো হলঃ ড্রাইভিং, ওয়েল্ডিং, প্লাম্বিং, কনস্ট্রাকশন, হোটেল বয়, ক্লিনার, ইলেকট্রিশিয়ান ইত্যাদি। অর্থাৎ বিশেষ দক্ষতার কাজগুলোর ক্ষেত্রে দুবাইতে বেশ চাহিদা রয়েছে। সাধারণত আপনি যদি ড্রাইভিং, কনস্ট্রাকশন বা ইলেক্ত্রিকাল বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তবে দুবাইতে আপনার চাহিদা হবে সবথেকে বেশি। এসব কাজে অভিজ্ঞ লোকের দরকার হয় প্রচুর পরিমাণে। এছাড়া লেবার বা শ্রমিক হিসেবেও দুবাইতে প্রচুর কাজ রয়েছে। তবে এগুলো শারীরিক পরিশ্রমের কাজ হওয়ায় এসব ক্ষেত্রে সুস্থ, সবল হওয়া প্রয়োজন।
বেতন ও চাহিদা অনুসারে দুবাইতে কনস্ট্রাকশন কাজগুলো অত্যন্ত ভালো। এসব কাজ কিছুটা কঠিন এবং বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হয়। কিন্তু দুবাইতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন দালান ও স্থাপনা নির্মিত হয় বলে এই কাজে সবসময়ই জনবল দরকার হয়ে থাকে। অর্থাৎ দুবাইতে আপনি শ্রমিক কিংবা উপরে উল্লেখিত বিশেষায়িত কাজের জন্য যেতে পারেন। শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চাইলে সুস্থ-সবল হওয়া জরুরি। আর অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। আপনি সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে পারলে এবং অভিজ্ঞতা থাকলে দুবাইতে কাজ পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। কাজেই দুবাইতে কাজের সন্ধানে যেতে চাইলে আগে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিতে হবে।
বিভিন্ন কাজে দুবাইতে কেমন বেতন পাবেন
দুবাইতে সবথেকে জনপ্রিয় কাজগুলোর জন্য কেমন বেতন পাওয়া যায় এটি সম্পর্কে অনেকেরই কৌতূহল রয়েছে। কেননা বেতন বেশি বলেই এখানে সবাই কাজ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন। তবে এই বেতনে দুবাইতে কাজ করতে আসা ঠিক কিনা সেটি ভাবতে হবে আপনাকেই।
দুবাইতে একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন বাংলাদেশি টাকায় ৩৫ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। তবে এটি শুরুর বেতন, ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা বাড়লে এই বেতন বাড়তে থাকে। কাজেই শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চাইলে এই পরিমাণের আশেপাশের বেতনে আপনাকে কাজ শুরু করতে হবে। একজন শ্রমিক বর্তমানে দুবাইতে গড়ে ৬৫ হাজার টাকা বেতন পান। তবে আপনি কত বেতন পাবেন সেটি নির্ভর করবে আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও কাজের উপরে।
দুবাইতে অন্যতম জনপ্রিয় ও চাহিদাসম্পন্ন কাজ হচ্ছে ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ। এই কাজের জন্য বেতন পাওয়া যায় ৬৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। দুবাইয়ের কোন ইলেকট্রিক কোম্পানিতে নিয়োগ পেলে আপনি প্রথম বেতন হিসেবে ৬৫ হাজার টাকা কিংবা এর আশেপাশে পাবেন। তবে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়লে এবং দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে আপনি ধীরে ধীরে এই বেতন বাড়াতে পারবেন।
দুবাইতে কনস্ট্রাকশনের বিভিন্ন কাজে নিয়োগ হয়ে থাকে। এসব কাজের বেতন শুরু হয় ৪৫ হাজার টাকা থেকে। কনস্ট্রাকশন কাজ দুবাইতে অত্যন্ত চাহিদা সম্পন্ন একটি কাজ।
অনেকেই জানতে চান দুবাইতে কোন কাজের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি বেতন পাওয়া যায়। দুবাইতে সবথেকে বেশি বেতন পাওয়া যায় ড্রাইভিং এবং রেস্টুরেন্টের কাজে। ড্রাইভিং বেতন শুরু হয় ৭০ হাজার টাকা থেকে এবং বেড়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ড্রাইভিং ভিসা নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানিতে ড্রাইভিংয়ের কাজ পেলে বেতন বেশি পাওয়া যায়। তবে বাসা-বাড়ির ড্রাইভিংয়ে বেতন কিছুটা কম হয়ে থাকে। অপরদিকে রেস্টুরেন্টের বিভিন্ন কাজে আপনি ৬০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন। তবে এসব কাজে অভিজ্ঞতার দরকার হয়।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
দুবাইতে কোম্পানি ভিসাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা যায়। এই ভিসার ক্ষেত্রে বেতন হতে পারে ৪০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। ভালো ও আন্তর্জাতিক মানের কোম্পানি হলে প্রথমেই ৫০ হাজার টাকার বেশি বেতন পাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে কী কাজ করতে হবে, কত ঘণ্টা কাজ করতে হবে এসব নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া উচিত। ⭐️ ঢাকা টু দুবাই এয়ার টিকেট প্রাইস বাংলাদেশ বিমান।
দুবাইয়ে আরও নানা ধরণের কাজ রয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে ৩৫ হাজার, ফ্যাক্টরির কাজে ৪৪ হাজার, মেকানিক্যাল কাজে ৬৫ হাজার, গার্মেন্টসের কাজে ৪৫ হাজার, বাসা বাড়ির কাজে ৪০ হাজার টাকা বেতনে আপনি কাজ শুরু করতে পারবেন। অর্থাৎ দুবাইতে আপনি যে কাজই করুন না কেন বেতন সাধারণত ৩৫ হাজার টাকার উপরে হয়ে থাকে। দেশের তুলনায় এই বেতন অনেক বেশি।
তবে দুবাইতে কাজ করতে চাইলে বেশ কিছু ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি। বেতন দেখেই দুবাইতে কাজ করতে আগ্রহী হবার আগে দুবাইতে থাকা কিংবা খাওয়ার খরচ সম্পর্কেও ধারণা রাখা উচিত। দেশের থেকে দুবাইতে সকল ক্ষেত্রে ব্যয় অনেক বেশি। এছাড়া দালালের খপ্পরে পড়ে দুবাইতে কাজ করতে যাওয়া উচিত নয়। এতে হারাতে পারেন সর্বস্ব।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।