ইনভেস্ট বা বিনিয়োগ করা খুলে দিতে পারে আপনার আর্থিক সফলতার দুয়ার। একইভাবে আর্থিক অবস্থায় ধ্বসও নামাতে পারে মন্দ বিনিয়োগ। তাই বুঝেশুনে ইনভেস্ট বা বিনিয়োগ করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিনিয়োগ করার আগে খেয়াল রাখা জরুরি বিষয়সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন এই পোস্টে।
আর্থিক অবস্থা যাচাই-বাছাই করুন
বিনিয়োগের আগে আপনার ঝণ, প্রায়োরিটি, লাইফস্টাইল চয়েজ, ইনকাম, ইত্যাদি বিষয়ের ভিত্তিতে আপনার আর্থিক অবস্থা মূল্যায়ন করুন। বিনিয়োগ করতে গেলে কিছুটা কম্প্রোমাইজ করতে হবে সেটা স্বাভাবিক। তবে বিনিয়োগের খাতিরে যদি আপনার নিয়মিত খরচে উল্লেখযোগ্য হারে আপোষ করতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি সাধ্যের বাইরে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন যা অবশ্যই উচিত নয়। আপনার আর্থিক অবস্থা ও আয়ের উৎসকে ভালোভাবে পরখ করুন ও কি ধরনের বিনিয়োগ আপনার লাভে আসবে তা খুঁজে বের করুন।
নিরাপদ ঝুঁকি গ্রহণ করা
বিনিয়োগে ঝুঁকি রয়েছে এই কথা সবার জানা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কতটা ঝুঁকি নিতে পারবেন সেটা। প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও অগ্রাধিকার রয়েছে, যা দ্বারা তার ঝুঁকি বহনের ক্ষমতা নির্ণয় করা যায়। তাই একজন ব্যক্তির ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা বিবেচনা করে তবেই স্ট্রেটেজি সাজানো হবে বুদ্ধিমানের কাজ। বিনিয়োগ হওয়া উচিত সমস্যামুক্ত, যা আপনার দৈনন্দিন জীবনে কোনো সমস্যা টেনে আনবেনা। বিনিয়োগ করে যদি তা নিয়ে রাতের ঘুম হারাম হয়, তাহলে এই ধরনের বিনিয়োগ করে নিজের অর্থকে ঝুঁকিতে রাখা বোকামি।
নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ঠিক করুন
কোনো ধরনের বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বিনিয়োগের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করবে আপনার বিনিয়োগ কি ধরনের হতে যাচ্ছে। গাড়ি কেনা বা ঘরের ডাউন পেমেন্টের জন্য সেভ করার উদ্দেশ্যে কম সময়ে লাভ পাওয়া হতে পারে আপনার উদ্দেশ্য। আবার রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান বা বাচ্চাদের পড়ালেখার খরচ এর উদ্দেশ্যে দীর্ঘমেয়াদী লাভের আশায় বিনিয়োগও করতে পারেন। অর্থাৎ বিনিয়োগ থেকে আপনি যা রিটার্ন আশা করছেন তার উপর বিনিয়োগের অধিকাংশ বিষয়টি নির্ভর করছে।
বিনিয়োগ বিন্যাস
অনেক কষ্টে জমানো আপনার সকল অর্থ কখনো একটি চ্যানেলে বিনিয়োগ করবেন না। সবসময় চেষ্টা করুন একাধিক স্থানে আপনার অর্থ ইনভেস্ট করতে। এতে লাভের অধিক সম্ভাবনা তৈরী হয় ও ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকটা কমে আসে। বর্তমান মার্কেটের অবস্থা বিবেচনা করুন ও একাধিক ক্ষেত্র বা সেগমেন্টে আপনার ইনভেস্টমেন্ট ডিস্ট্রিবিউট করুন।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিশ্লেষণ
রিভিউ ও সাজেশন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও শুধু এসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে বিনিয়োগ করা ঠিক নয়। বন্ধুর পরামর্শ, সাম্প্রতিক খবর, এক্সপার্ট এডভাইস বা টেলিভিশন চ্যানেল কিন্তু আপনার বিনিয়োগের সঠিক পথের দিশারি হবেনা। বিনিয়োগ থেকে আয়ের কোনো সহজ পথ নেই এখানে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিস্তারিত যাচাই-বাছাইয়ের পর আপনাকে প্রয়োজনের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ
মিউচুয়াল ফান্ড যেহেতু প্রফেশনালি ম্যানেজ করা হয়, তাই নতুন ও অনভিজ্ঞ ইনভেস্টরদের জন্য এটি উপযুক্ত হতে পারে। তবে প্রতারকদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসরণ করুন। বহুমুখীকরণের মত অনেক সুবিধা পাওয়া যায় মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্টমেন্ট এর ক্ষেত্রে, যা সম্ভাব্য লাভ বজায় রেখে রিস্ক লেভেল ম্যানেজে সাহায্য করে। সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানিং একটি ভালো বুদ্ধি হতে পারে, যেহেতু এই নিয়মে সেভিংস নিয়মিত থাকে ও এটি বিনিয়োগকারীর মধ্যে শৃংখলা আনতে সাহায্য করে।
ঝামেলামুক্ত থাকুন
ধার নিয়ে বিনিয়োগ করার মানে হলো আর্থিক অবস্থার উপর বাড়তি বোঝা যোগ করা। আর প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য আলাদা একটি ফান্ড তৈরী করতে ভুলবেন না। অর্থাৎ কোনোভাবে বিনিয়োগের অর্থের কারণে সমস্যায় পড়া এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা উচিত। তাই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাড়তি ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
👉 বিকাশ লোন আপনি পাবেন কিনা যেভাবে বুঝবেন
নিজেই নিজের মেন্টর হোন
উল্লেখিত সকল যাচাই-বাছাই এর প্রক্রিয়া শেষ হলে এবার পালা হলো নিজের সিদ্ধান্তের বিচার নিজেই করা। আপনার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে মূল্যায়ন করার মাধ্যমে আপনার সিদ্ধান্ত শক্তপোক্ত ও বুদ্ধিমানের মত কিনা তা সহজে বুঝতে পারবেন।
এতো গেলো বিনিয়োগের আগে বিবেচ্য বিষয়গুলো সম্পর্কে যত কথা। কোনো কোম্পানিতে ইনভেস্ট বা বিনিয়োগের আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিত সেগুলো সম্পর্কে চলুন একনজরে জেনে নেওয়া যাকঃ
- যে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবেন, উক্ত কোম্পানির সেবা বা প্রোডাক্ট গ্রাহকের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয় কিনা ও তা থেকে লভ্যাংশ পেতে পরিমিত পরিমাণে বিক্রি হয় কিনা।
- কোম্পানির পরিচালক বা সিইও এর বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করুন। একটি কোম্পানির মুখপাত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড যদি বিশ্বাসযোগ্য ও বিশ্বস্ত হয় তবে উক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
- কোম্পানি তাদের আয়ের বিষয়গুলো নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সাথে সম্পূর্ণ ট্রান্সপারেন্সি বজায় রাখে কিনা তা জানা জরুরি। এই বিষয়টি জানতে পারবেন ইন্টারনেট থেকে বা অন্য ইনভেস্টরের কাছ থেকে।
এই হলো বিনিয়োগের আগে জানা জরুরি বিষয়সমূহ। আপনি কি বিনিয়োগে আগ্রহী? তাহলে অবশ্যই উল্লেখিত বিষয়সমূহ বিবেচ্যধীন রেখে বিনিয়োগ করতে পারেন।
👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।