বাজারের অন্যান্য ফোনের চেয়ে আইফোন এর দাম অপেক্ষাকৃত বেশি সে কথা কারোই অজানা নয়। নতুন আইফোন কিনলে সেটি নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যায়, তবে পুরোনো আইফোন বা স্পেশাল ডিল থেকে আইফোন কেনার ক্ষেত্রে কেমন ফোন কিনছেন সে বিষয়ে দ্বিধা থেকেই যায়। বিশেষ করে রিফার্বিশড আইফোন এর ব্যাপারটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দের শেষ নেই।
আপনি যে আইফোনটি কিনতে যাচ্ছেন সেটি নতুন নাকি রিফার্বিশড? নতুন বলে আপনাকে রিফার্বিশড আইফোন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছেনা তো? এই পোস্টে আমরা জানবো কিভাবে আইফোন রিফার্বিশড কিনা তা জানা যায়। এর পাশাপাশি রিফার্বিশড আইফোন কেনা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন এই পোস্ট থেকে।
আইফোন রিফার্বিশড কিনা কিভাবে বুঝবেন
আইফোন রিফার্বিশড, নতুন নাকি রিপ্লেসমেন্ট ইউনিট তা জানার একাধিক উপায় রয়েছে। প্রথমত ফোনের সেটিংস অ্যাপ থেকে তথ্যটি জানতে পারবেন, আবার অ্যাপল সাপোর্টে যোগাযোগ করেও উক্ত তথ্য জানতে পারবেন। আমাদের পোস্ট জানতে পারবেন রিফার্বিশড আইফোন কিভাবে চিনবেন।
মডেল নাম্বার ব্যবহার করে
মডেল নাম্বার ব্যবহার করে আইফোন রিফার্বিশড নাকি নতুন তা জানতে আইফোন এর Settings অ্যাপে প্রবেশ করুন। এরপর General অপশনে প্রবেশ করে About এ ট্যাপ করুন। এরপর আপনার আইফোন এর মডেল নাম্বার দেখতে পাবেন। এই মডেল নাম্বার এর মাধ্যমে আপনার আইফোন এর ব্যবহারের স্ট্যাটাস জানতে পারবেন। এই মডেল নাম্বার M, F, N, P এই চারটি লেটার দিয়ে শুরু হয়। প্রতিটি লেটার দ্বারা ফোনের স্ট্যাটাস জানা যায়, এগুলোর মানে হলো:
- M: আইফোনটি সম্পূর্ণ নতুন
- F: আইফোনটি অ্যাপল বা ক্যারিয়ার দ্বারা রিফার্বিশড
- N: আইফোনটি একটি রিপ্লেসমেন্ট ইউনিট
- P: আইফোনটি ব্যাক্তিগত পছন্দ অনুসারে কাস্টমাইজড
এছাড়া Serial Number ব্যবহার করে আইফোন এর ওয়ারেন্টি স্ট্যাটাস চেক করা যায়।
অ্যাপল কাস্টমার সাপোর্টে যোগাযোগ করে
কোনো অনির্ভরযোগ্য উৎস থেকে আইফোন কেনার ক্ষেত্রে প্রথম উপায়ে যদি আপনি স্বস্তি না পান, সেক্ষেত্রে প্রথমত উক্ত উৎস থেকে ফোন না কেনার পরামর্শ থাকবে। তবুও যদি আপনি উক্ত ফোন কিনতে চান সেক্ষেত্রে অ্যাপল কাস্টমার সাপোর্টে যোগাযোগ করতে পারেন। ফোন কল বা ইমেইল এর মাধ্যমে অ্যাপল এর কাছে জানতে চাইতে পারেন উক্ত ডিভাইস রিফার্বিশড, নতুন নাকি রিপ্লেসমেন্ট ইউনিট। তবে এই প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ হয়ে থাকে যা অনেকের কাছে বিরক্তির কারণ হবে অবশ্যই।
নতুন ও রিফার্বিশড আইফোন এর পার্থক্য
একটি রিফার্বিশড আইফোন হলো এমন একটি আইফোন যা আগে অন্য কেউ ব্যবহার করেছে কিংবা স্টোরে ডিসপ্লে মডেল হিসেবে ছিলো। বিক্রির আগে এটিকে কোয়ালিটি চেক এর প্রক্রিয়া পার করতে হয়। এই প্রক্রিয়াতে কোনো ধরনের সমস্যাপূর্ণ পার্টস থাকলে সেগুলো রিপ্লেস করা হয় ও ফোনের বয়স ও কন্ডিশন এর উপর নির্ভর করে এটিকে গ্রেডও দেওয়া হয়ে থাকে। একই মডেলের নতুন আইফোনের চেয়ে বেশ কম দামে বিক্রি হয়ে থাকে রিফার্বিশড আইফোন।
রিফার্বিশড আইফোনগুলো সাধারণ আইফোন এর মতই স্বাভাবিকভাবে কাজ করে। প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে নতুন আইফোন আর এই ফোনের মত পার্থক্যটা কোন জায়গায়? রিফার্বিশড আইফোনে স্ক্র্যাচ বা পূর্বে ব্যবহারের চিন্হ থাকতে পারে। এর পাশাপাশি এই ফোনগুলো ফাংশনাল হলেও সম্পূর্ণভাবে পারফেক্ট কিন্তু নয়। রিফার্বিশড ফোনগুলোতে কোনো পার্টস একেবারে কাজ না করলে তবেই তা রিপ্লেস করা হয়, অর্থাৎ এই ফোনগুলোতে অধিকাংশ কম্পোনেন্ট ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
👉 সেকেন্ড-হ্যান্ড ফোন ও রিফারবিশড ফোনের পার্থক্য কি?
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ব্যাটারির পিক পারফরম্যান্স এখানেই অনুপস্থিত থাকতে পারে। ক্যামেরা ঠিকঠাক কাজ করলেও লেন্সে ছোটোখাটো স্ক্র্যাচ থাকতে পারে। এসব বিষয় বিবেচনা করে এসব রিফার্বিশড আইফোনকে গ্রেড প্রদান করা হয়, যথা:
- গ্রেড এ: এক্সিলেন্ট বা অসাধারণ
- গ্রেড বি: গুড বা ভালো
- গ্রেড সি: ফেয়ার বা ব্যবহারযোগ্য
রিফার্বিশড আইফোন যদি কিনতেই হয় তবে পরামর্শ থাকলে শুধুমাত্র অ্যাপল বা সার্টিফাইড সেলার এর কাছ থেকে কেনার।
রিফার্বিশড আইফোন কি কেনা উচিত?
এবার প্রশ্ন হলো রিফার্বিশড আইফোন কি ভালো? আগেই বলেছি অ্যাপল বা ভরসাযোগ্য রিসেলার এর কাছ থেকে কিনলে তবেই রিফার্বিশড আইফোন কেনার কথা ভাবা ভালো। এছাড়াও সম্ভব হলে গ্রেড-এ রিফার্বিশড মডেল কেনার চেষ্টা করুন। এসবের বাইরেও তিন জেনারেশনের চেয়ে অধিক পুরোনো আইফোন মডেল কেনা থেকে বিরত থাকুন কারণ খুব শীঘ্রই এসব ফোনে আর সফটওয়্যার আপডেট আসবেনা।
বলে রাখা ভালো নতুন আইফোন এর চেয়ে রিফার্বিশড আইফোনে সমস্যা থাকার সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত বেশি। যেহেতু এই আইফোনগুলো ইতিমধ্যে কিছু সময় ধরে ব্যবহৃত হয়েছে তাই কোনো ডিভাইস পুরোনো হয়ে গেলে যেসব সমস্যায় পড়তে হয় সেগুলো স্বভাবত এখানেও দেখা যাবে।
আপনি যদি পরামর্শ চান তবে আমরা বলবো নতুন আইফোন কিনতে যা বেশ কয়েক বছর নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি যদি কিছুটা বাড়তি অর্থ খরচ করতে পারেন তবে রিফার্বিশড আইফোন কেনার চেয়ে নতুন আইফোন কেনাই উত্তম হবে। 👉 আইফোনের সাধারণ কিছু সমস্যা এবং সেগুলোর সহজ সমাধান
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
রিফার্বিশড আইফোন এর প্রকারভেদ
অ্যাপল এর পাশাপাশি ক্যারিয়ার ও থার্ড পার্টি সেলারও আইফোন রিফার্বিশড করে থাকে। তবে যে উৎস থেকেই আইফোন রিফার্বিশড হোক না কেনো, এটি যথাযথ কোয়ালিটি চেক পার করে তবেই বিক্রি করা হবে।
অন্যসব রিফার্বিশড আইফোন এর চেয়ে অ্যাপল এর কাছ থেকে রিফার্বিশড মডেল কেনার সুবিধা হলো এগুলোতে নতুন ব্যাটারি থাকে ও এক বছরের ওয়ারেন্টিও পাওয়া যায়। তাই অন্যান্য উৎস এর চেয়ে অ্যাপল এর কাছ থেকে রিফার্বিশড আইফোন কেনা অনেকটা নিরাপদ।
এইতো গেলো রিফার্বিশড আইফোন এর সাতকাহন। এই ফোনগুলোর মূল লক্ষ্য হলো কিছুটা খরচ কমিয়ে আইফোন এর একই সুবিধা উপভোগ করা। এখন যেহেতু আপনি রিফার্বিশড আইফোন সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন, কখনো কোনো সেল বা ডিলে কম দামে আইফোন পেলে সেটি নতুন নাকি রিফার্বিশড তা চেক করতে ভুলবেন না।
রিফার্বিশড আইফোন সম্পর্কে আপনার মতামত কি? এসব আইফোন কি কেনা উচিত নাকি নতুন আইফোন কেনাই উত্তম? রিফার্বিশড আইফোন সম্পর্কে আপনার মতামত বা প্রশ্ন আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট সেকশনে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।