বিকাশ একাউন্ট লেনদেন বন্ধ হয়ে গেলে কি করবেন?

বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে বিকাশ নিজেকে শীর্ষ স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছে। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে কিন্তু বিকাশ সম্পর্কে জানে না এমন মানুষের সংখ্যা নাই বললেই চলে। বিকাশ একাউন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু ব্যবহারকারী একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবার ঝামেলায় পড়ে। 

বিকাশ তাদের ব্যবহারকারীদের একাউন্টে কিছু নির্দিষ্ট কার্যকলাপ লক্ষ করলে সাময়িক সময়ের জন্য তাদের একাউন্ট বন্ধ করে দেয়। বিকাশ এটি মূলত একাউন্ট এবং ওই ব্যবহারকারীর সুরক্ষার কথা চিন্তা করে বন্ধ করে দেয়। আপনি যদি বিকাশ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার একাউন্টে যেসকল কার্যকলাপ করলে একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে সেগুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিকাশ একাউন্ট কেন সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং বন্ধ হয়ে গেলে করণীয় কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

বিকাশ একাউন্ট সাময়িকভাবে কেন বন্ধ হয়ে যায়?

যখনি বিকাশ মনে করে যে তাদের একটি একাউন্ট থেকে অস্বাভাবিক কোনো কার্যক্রম বা লেনদেন হচ্ছে, তখনি বিকাশ থেকে ওই ব্যবহারকারীর একাউন্টির লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে একাউন্ট লেনদেন বন্ধ করা হয় সাময়িক সময়ের জন্য। মূলত বিকাশের কাস্টমারের নিরাপত্তার জন্যই উক্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাতে করে কাস্টমারের কিছুটা ভোগান্তি হলেও তা তার একাউন্ট সেইফ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

আমরা বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করার সময় অনেক কাজ বুঝে বা না বুঝে করে থাকি। আমরা মনে করি তাতে আমাদের একাউন্টের উপর কোনো প্রকার প্রভাব পড়বে না। কিন্তু কিছু কাজের প্রভাবে বিকাশ থেকে একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে সে ব্যাপারে অনেকেই অবগত না। আপনাদের সুবিধার্থে সেসব কাজ সম্পর্কে নিচে ব্যাখ্যা দেওয়া হলো-

অস্বাভাবিক লেনদেন সম্পন্ন করার জন্য

বিকাশ একাউন্ট অনেক সময় হ্যাক কিংবা বিকাশ ফ্রডের হাতে পড়ে যায়। এমন অবস্থায় ওই সকল অসাধু ব্যক্তি অতি দ্রুত সকল টাকা অন্য বিকাশ নাম্বারে পাঠানোর চেষ্টা করে। বিকাশ যদি এসকল অস্বাভাবিক লেনদেন লক্ষ করে তাহলে একাউন্টের সুরক্ষার খাতিরে একাউন্ট বন্ধ করে দিতে পারে। বিকাশ ফ্রড ছাড়াও সাধারণ ব্যবহারকারীরাও যদি অস্বাভাবিক ভাবে বিকাশ থেকে লেনদেন করতে থাকে তাহলেও বিকাশ ওই ব্যবহারকারীর একাউন্ট সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দিতে পারে।

পরপর তিন বার ভুল পিন প্রদান করলে 

আমরা অনেক সময় বিকাশ একাউন্ট এর পিন ভুলে গেলে বিভিন্ন পিন দিয়ে বিকাশ একাউন্টে লগ ইন করার চেষ্টা করে থাকি। তবে এই কাজ করা আমাদের বিকাশ একাউন্ট সচল রাখার জন্য মোটেই উচিত নয়। বিকাশ এর পাসওয়ার্ড দুইবারের বেশি ভুল গেলে তৃতীয়বার সঠিক পিন না জেনে চেষ্টা করা ঠিক না। কেননা বিকাশে পর পর তিন বার ভুল পিন প্রদান করলে বিকাশ সেই একাউন্টটি লক করে দিতে পারে। কেউ আপনার পাসওয়ার্ড পর পর তিন বার ভুল দেওয়া মানে হতে পারে যে কোনো অসাধু ব্যক্তি আপনার বিকাশ একাউন্টে আপনাকে অবগত না করে ঢোকার চেষ্টা করছে। সে কারনে একাউন্টের নিরাপত্তার স্বার্থে এমন পরিস্থিতিতে বিকাশ কর্তৃপক্ষ ওই একাউন্ট সাময়িক লক করে দিতে পারে।

অল্প সময়ের মধ্যে একই বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠালে

আপনি যদি ১৫ মিনিটের মধ্যে একই বিকাশ নাম্বারে একাধিক বার সেন্ড মানি করেন তাহলে বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্টে সাময়িক সময়ের জন্য লেনদেন বন্ধ করে দিতে পারে। এমনকি একই নাম্বারে অল্প সময়ের মধ্যে একের অধিক বার রিচার্জ করলেও বিকাশ লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

bkash bonus offer

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে করণীয় কি?

যেকোনো কারনে আপনার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে আপনি বিভিন্ন উপায়ে সেটি পুনরায় চালু করতে পারবেন। বিকাশ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে পুনরায় চালু করার উপায় সম্পর্কে নিচে ব্যাখ্যা দেওয়া হলো- 

বিকাশ এর কাস্টমার কেয়ারে কলের মাধ্যমে

বিকাশে যেকোনো প্রকার সমস্যা সহ একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে সর্বপ্রথম আপনি বিকাশ এর কাস্টমার কেয়ারে কল করতে পারেন। বিকাশের কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার হলো ১৬২৪৭

যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে 16247 নাম্বারে কল করে আপনি বিকাশ প্রতিনিধিদের কাছে আপনার সমস্যা ব্যাখ্যা করে বলতে পারেন। আপনার সমস্যা শোনার পরে বিকাশ প্রতিনিধি আপনার সমস্যা দূর করার জন্য আপনার কাছে আপনার তথ্য জানতে চাইবে। তথ্য হিসেবে বিকাশ প্রতিনিধিরা আপনার নিজের নাম, ভোটার আইডি কার্ড নাম্বার কিংবা কোনো কোনো সময় আপনার বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে। আপনি আপনার সকল তথ্য সঠিক ভাবে প্রদান করতে পারলে বিকাশ কর্তৃপক্ষ আপনার বন্ধ হয়ে যাওয়া বিকাশ একাউন্ট পুনরায় চালু করে দিতে পারবে।

বিকাশের লাইভ চ্যাটে যোগাযোগ এর মাধ্যমে

বিকাশ কাস্টমার কেয়ারের পাশাপাশি আপনি চাইলে আপনার সকল সমস্যা বিকাশের লাইভ চ্যাটে জানাতে পারবেন। বিকাশ আপনার সমস্যা গ্রহন করে নির্দিষ্ট একটি সময়ের মধ্যে আপনার সমস্যা সমাধান করার জন্য আপনাকে কল করবে। তখন আপনি আপনার সমস্যার সঠিক ভাবে সমাধান করতে পারবেন।

কাস্টমার কেয়ারে ভিজিটের মাধ্যমে 

আপনি চাইলে সশরীরে বিকাশের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার বিকাশ একাউন্ট এর সাথে সংযুক্ত করা ন্যাশনাল আইডি সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে যেতে হবে। আপনার বিকাশ একাউন্ট যদি অন্য কারো ন্যাশনাল আইডি দিয়ে খোলা হয়ে থাকে তাহলে ওই ব্যাক্তির ভোটার আইডি কার্ড সহ ওই ব্যাক্তিকে নিয়ে যেতে হবে। 

বিকাশ একাউন্ট লেনদেন সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হওয়া অসম্ভব নয়। খুব বড় কোনো সমস্যা না হলে পার্মানেন্টলি একাউন্ট বন্ধ করা হয় না। আর এই সাময়িক বন্ধ কাস্টমারের একাউন্টের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে করা হয়ে থাকে। যেকোনো অস্বাভাবিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কাস্টমারের একাউন্টকে সুরক্ষিত রাখতে বিকাশ এই পদক্ষেপ নেয়।

আপনার একাউন্ট যদি সাময়িক বন্ধের শিকার হয় তবে তা খুব বেশি একটা চিন্তার বিষয় নয়। এটি ঠিক করতে আপনি বিকাশ হেল্প লাইনে যোগাযোগ করুন। তারা আপনার সমস্যার সমাধান করে দিবে। বিকাশ এর একাউন্ট বন্ধ কেন হয় এবং হয়ে গেলে আপনার করণীয় কি এ সম্পর্কে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারবেন। নিত্য নতুন টেকনোলজি বিষয়ক আর্টিকেল এবং নানা ধরনের টিপস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *