অনলাইনে ইনকাম ও ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। আমরা খুঁজে বের করেছি ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন আয় নিয়ে সর্বাধিক আলোচিত প্রশ্নসমূহ। চলুন জেনে নেওয়া যাক অনলাইন আয় সম্পর্কে জনপ্রিয় প্রশ্নসমূহ ও তাদের উত্তর।
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজসমূহ কি কি?
অসংখ্য ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কাজ রয়েছে। প্রায় যেকোনো ধরনের কাজ ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে করা যায়। কিছু জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং কাজ হলোঃ
- রাইটিংঃ কনটেন্ট রাইটিং, কপি রাইটিং, প্রুফরিডিং, ইত্যাদি
- গ্রাফিক ডিজাইনঃ লোগো ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিজাইন, ইত্যাদি
- ফটোগ্রাফিঃ ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, পোর্ট্রেইট ফটোগ্রাফি, ফটো এডিটিং
- ওয়েব ডিজাইন ও ডেভলপমেন্টঃ এসইও, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ওয়েব টুল ডেভলপমেন্ট, ওয়েবসাইট ডিবাগিং, ইত্যাদি
- সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টঃ সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডিজাইনার
- ইউএক্স ও ইউআই ডিজাইনার
- ট্রান্সক্রিপশন
- টিচিংঃ অনলাইন কোর্স, ওয়ান-অন-ওয়ান টিচিং, কোচিং
- ডাটা এন্ট্রি করে আয়
- ভিডিও এডিটিং, ইত্যাদি
ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যায়?
দিনদিন ফ্রিল্যান্সার এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফাইভার এর তথ্যমতে ২০২০ সালে একজন ফ্রিল্যান্সার ঘন্টায় গড়ে ২০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারতেন। তবে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়ের পরিমাণ মূলত নির্ভর করে কাজের ধরনের উপর।
একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। তবে শুনতে খারাপ লাগলেও ফ্রিল্যান্সিং করে শুরুর দিকে আয়ের পরিমাণ তেমন একটা বেশি থাকে না, যার ফলে স্বাভাবিক রেটের চেয়ে কম দামে কাজ করতে বাধ্য হন ফ্রিল্যান্সারগণ।
ফ্রিল্যান্সিং করতে স্কিলের প্রয়োজন আছে কি?
কোনো দক্ষতা ছাড়া যেমন চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়, ঠিক একইভাবে দক্ষতা ছাড়া কোনো ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া সম্ভব নয়। কোনো দক্ষতা ছাড়া আয়ের কথা অনেকে বলে থাকেন বা অনেক বিজ্ঞাপনে দেখা যায়।
বাস্তবতা হলো ফ্রিল্যান্সিং করতে অবশ্যই স্কিল বা দক্ষতার প্রয়োজন হবে। কেউ যদি বলে দক্ষতা ছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করা সম্ভব, তাহলে এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল। 👉 নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যে ভুলগুলো এড়িয়ে চলা দরকার।
ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি?
একজন ফ্রিল্যান্সার কি ধরনের কাজ করতে চান ও কার সাথে কাজ করতে চান তা নির্বাচন করার ক্ষমতা রাখেন। অর্থাৎ কাজের স্বাধীনতা সম্পূর্ণ একজন ফ্রিল্যান্সারের হাতে থাকে। আবার ফ্রিল্যান্সিং কাজের কোনো বাধা ধরা সময় নেই। ক্লায়েন্টের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করাই একজন ফ্রিল্যান্সার এর কাজ, এতে রুটিন মাফিক কাজ করার কোনো প্রয়োজন পড়েনা।
এছাড়াও জব এর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব। আবার চাইলে চাকরি ছেড়ে দিয়েও ফুল টাইম ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব। কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরি করলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য করা কোনো ব্যক্তির কাজ প্রতিষ্ঠানের সফলতা হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে একজন ফ্রিল্যান্সার নিজের করা কাজসমূহে পোর্টফোলিও আকারে সাজাতে পারেন ও দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারেন।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
ফ্রিল্যান্সার হওয়ার অসুবিধাসমূহ কি?
কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে বিভিন্ন বোনাস বা প্রয়োজনে ছুটি নেওয়া যেতে পারে। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে এই ধরনের সুযোগ অনিশ্চিত। আবার ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে একজন ফ্রিল্যান্সার ই যেহেতু নিজেই নিজের বস ও কর্মী, সেক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের সকল কাজ নিজেরই করা লাগে।
আবার ফ্রিল্যান্সিং করে আয়ের কোনো নির্দিষ্ট নিশ্চয়তা নেই। কোনো মাসে প্রচুর কাজ পাওয়ার কারণে লক্ষ টাকা আয় করলেও অন্য মাসে কাজ না পাওয়ায় কোনো আয়ই না থাকতে পারে একজন ফ্রিল্যান্সার এর।
👉 ফাইভার নাকি আপওয়ার্ক? কোনটি বেশি সুবিধাজনক?
ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং কি একই?
না, ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং একই বিষয় নয়। তবে এই দুইটি বিষয় মূলত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার প্রয়োজনে আউটসোর্সিং করেন ও একজন ফ্রিল্যান্সার উক্ত ব্যক্তির কাজ গ্রহণ করেন। ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বাংলাটেক এর নিম্নোক্ত পোস্টটি ঘুরে আসুন।
সবচেয়ে বেশি আয়ের ফ্রিল্যান্সিং কাজ কি?
মূলত কাজের উপর ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয়ের পরিমাণ নির্ভর করে। তবে কিছু নির্দিষ্ট ফ্রিল্যান্সিং কাজ আছে যা কিছুটা জটিল ও এসব কাজ থেকেও আয়ের পরিমাণ অন্যান্য কাজসমূহ থেকে বেশি।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভলপমেন্ট এর ক্ষেত্রে অন্যান্য সচরাচর ফ্রিল্যান্সিং জব থেকে অধিক আয় করা সম্ভব। প্রোগ্রামিং একটি জটিল প্রক্রিয়া ও ডিমান্ডিং স্কিল হওয়ায় প্রোগ্রামিং সম্পর্কিত ফ্রিল্যান্সিং কাজসমূহের জন্য অধিক হারে চার্জ করে থাকেন ফ্রিল্যান্সারগণ। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগত কনসালটেন্ট হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং জব এর ব্যাপক ডিমান্ড রয়েছে বিধায় বিশাল অংকের আয়ের সুযোগ রয়েছে।
👉 এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করার উপায়
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা আনার উপায় কি?
ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মসমূহে আয়ের অর্থ উক্ত প্ল্যাটফর্মের ভার্চুয়াল একাউন্টে জমা থাকে। অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম পেপাল এর মাধ্যমে উইথড্র সাপোর্ট করলেও বাংলাদেশে পেপাল না থাকায় বেশ ভোগান্তিতে পড়িতে হয় ফ্রিল্যান্সারদের।
তবে Payoneer ও Wise এর মত আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে আয়ের অর্থ উইথড্র করা যায়। এছাড়াও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ উত্তোলনের সুযোগ রয়েছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। “কাজ খুঁজি” এর মত দেশী ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটসমূহে বিকাশ দ্বারা পেমেন্টের ও ব্যবস্থা রয়েছে।
👉 পেপাল কি? পেপাল এর সুবিধা কি?
ফ্রিল্যান্সিং করে ক্যারিয়ার তৈরি করা যাবে কি?
অনেকে মনে করেন যে নির্ভরযোগ্য আয়ের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং কোনো আদর্শ সমাধান নয়। তবে এই ধারণা সঠিক নয়। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব। তবে ফ্রিল্যান্সিং করে ক্যারিয়ার তৈরী করতে প্রয়োজন হবে কঠিন অধ্যবসায় ও ধৈর্যের।
আর স্বাধীনভাবে নিজের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে আয় যদি হয়ে থাকে আপনার লক্ষ্য, তবে ফ্রিল্যান্সিং করে ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে তৈরি করতে হলেঃ
- নির্দিষ্ট নিশ (niche) বা কাজের ক্ষেত্র বাছাই করুন
- লিংকডইন, আপওয়ার্ক ও ফাইভার এর মত ওয়েবসাইটসমূহে নিজের পরিচিতি তৈরী করুন
- কাজের পাশাপাশি নিজের সেরা কাজসমূহকে এক করে পোর্টফোলিও তৈরী করুন
- দীর্ঘমেয়াদী ক্লায়েন্ট খুঁজে বের করুন যারা নির্ভরযোগ্য আয়ের মাধ্যম হবে
- আয় করার অর্থ বিভিন্ন লাভজনক মাধ্যমে ইনভেস্ট করুন
👉 ফাইভার কী? যেভাবে ফাইভারের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করবেন
👉 আপওয়ার্ক এর মাধ্যমে অনলাইনে আয় শুরু করবেন যেভাবে
👉 ফ্রিল্যান্সার ডটকম থেকে আয়ের উপায়
👉 ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করুন PeoplePerHour থেকে
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে আয় শুরু করবো?
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে প্রথমত এই কাজে বদ্ধপরিকর হতে হবে। এছাড়াও আপনি ফুল টাইম নাকি পার্ট টাইম ফ্রিল্যান্সার হতে চান, তাও ঠিক করা জরুরি। এরপর আসে দক্ষতা অর্জনের পালা। ইতিমধ্যে আপনার নির্দিষ্ট ফ্রিল্যান্সিং স্কিল থাকলে তা কাজে লাগাতে পারেন। এছাড়াও যে বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং করবেন, তার দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট সমূহ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করে কাজ শুরু করুন। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কিভাবে শুরু করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বাংলাটেক এর নিম্নোক্ত পোস্টসমূহ ঘুরে আসতে পারেন।
👉 ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবেন তা জানুন
👉 ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন তা জানুন
ফ্রিল্যান্সিং করে আয় এর জন্য কাজ পাওয়ার উপায় কি?
ইতিমধ্যে ফাইভার বা আপওয়ার্কে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেছেন, কিন্তু আশানুরূপ কাজ পাচ্ছেন না? এমন অবস্থায় ধৈর্য সহকারে উক্ত প্ল্যাটফর্মসমূহের বেসিক জেনে নিয়ে সে অনুসারে আগানোই উত্তম। এছাড়াও ঘুরে আসতে পারেন ফাইভার ও আপওয়ার্কে কাজ পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বাংলাটক এর ডেডিকেটেড পোস্ট দুইটিঃ
👉 ফাইভারে কাজ পাওয়ার উপায় জানুন
👉 আপওয়ার্কে কাজ পেতে করণীয় সম্পর্কে জানুন
ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইন আয় সম্পর্কে আপনার মতামত কী? আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনে!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।