ফ্রিল্যান্স ব্লগিং থেকে টাকা আয় করতে যা জানা উচিত

বাসা থেকে কাজ করার মাধ্যমে খালি সময় গুলো ভালোভাবে ব্যবহার করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং খুব ভালো সুযোগ প্রদান করে থাকে। আপনি যেই বিষয়ে পারদর্শী এবং কাজ করতে মজা পান সেই বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ে তোলা এখন তুলনামূলক ভাবে সহজ বলা যায়। তবে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য আপনাকে অনেক বেশি ফোকাসড, মনোযোগী এবং কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে।

ফ্রিল্যান্সার হবার জন্য আপনি যেকোনো বিষয় দিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি ব্লগিং দিয়ে আপনার ক্যারির‍্যার শুরু করতে পারেন। ভালো ফ্রিল্যান্সার হবার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট উপায় অবলম্বন করতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা একজন ভালো ফ্রিল্যান্সার হিসবে ব্লগিং নিয়ে কিভাবে ক্যারিয়ার শুরু করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

রিসার্চ করুন

আপনি একজন ফুল টাইম কিংবা পার্ট টাইম ফ্রিল্যান্সার যেটিই হতে চান না কেন আপনাকে সর্বপ্রথম আপনার ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিষয়ের উপরে সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে। এছাড়া আপনি যদি আপনার পোর্টফলিও আরো সংগঠিত করতে চান কিংবা ক্লায়েন্টের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে চান তাহলে আপনার সঠিক জ্ঞান আহরণ করা খুবই প্রয়োজন।

ফ্রিল্যান্স ব্লগার কর্তৃক বানানো সবচেয়ে জনপ্রিয় প্লাটফর্ম গুলো খুঁজে বের করে সেখান থেকে প্রোফেশনাল লেখকদের লেখা ব্লগ পড়া শুরু করুন। ফ্রিল্যান্স ব্লগাররা কিভাবে ব্লগকে তৈরি করে, সাজায় এবং কাজ খুঁজে থাকে সে বিষয়ে খুব ভালো ভাবে লক্ষ করুন। এর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন যে ব্লগিং মূলত কি এবং একজন সেরা ফ্রিল্যান্স ব্লগার হবার জন্য আপনাকে কিভাবে কাজ করতে হবে। আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সার, এসেটাইগারস এবং রাইটারস ওয়ার্ক ইত্যাদি প্লাটফর্মের সহায়তা নিতে পারবেন।

আপনার গোল নির্ধারণ করুন

আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন যে-

  • কেন আপনি একজন ফ্রিল্যান্স ব্লগার হতে চান?
  • আপনি প্রতি মাসে কত টাকা উপার্জন করতে চান?
  • আপনি প্রতি সপ্তাহে কত ঘন্টা কাজ করতে চান?
  • আপনি কেমন ধরনের কাজ শেষ করতে চান?
  • আপনি কি ঘন্টা প্রতি নাকি প্রোজেক্ট প্রতি টাকা নিতে চান?
  • ফ্রিল্যান্সিং ব্লগিং এর জন্য আপনার কাছে কোন স্কিলটি রয়েছে যেটি আপনি ব্যবহার করতে পারবেন?
  • আপনি কার জন্য লিখতে চান?
  • আপনি কোন বিষয়ের উপরে লিখতে চান?

আপনার ফ্রিল্যান্সিং ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করার আগে দ্বিতীয় যেই কাজটি কিরা জরুরী সেটি হলো একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা। এই সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি কেমন ধরনের কাজ করতে পারবেন এবং এতে আপনার ফ্রিল্যান্সিং ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করা সম্ভব কি না।

নিশ খুঁজে বের করুন

আপনার ফ্রিল্যান্সিং ব্লগিং ক্যারিয়ারের শুরুতে আপনি সাধারণত যেকোনো ধরনের লেখা বা কাজ পেলেই সেটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার পোর্টফলিও এবং রেপুটেশন বৃদ্ধি পাবে। আপনার শুরুর দিকে বিভিন্ন ধরনের টপিক যেমন লাইফস্টাইল এবং ট্রাভেল থেকে শুরু করে টেকনোলজি এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল লিখতে পারেন।

শুরুর দিকের এই কাজগুলো করার মাধ্যমে আপনি কোন বিষয়ে লিখতে পছন্দ করেন এবং কোন বিষয়ে আপনার লেখা ভালো হয় সে ব্যাপারে একটি ভালো অভিজ্ঞতা পেয়ে যাবেন। এছাড়া প্রত্যেকটি ব্লগ যেগুলো আপনি লেখার জন্য কন্ট্রাক্ট পাবেন সেগুলো আপনাকে একজন ইউনিক রাইটার হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। সময় যত যেতে থাকবে আপনি আপনার প্রোজেক্টের স্ট্রাকচার ভালো করে দাড় করাতে পারবেন এবং নির্দিষ্ট কোনো একটি সেক্টরে আপনার পারদর্শীতার প্রকাশ ঘটবে।

বেশি করে পড়ুন

মূলত লিখতে বসার বাইরে আপনার লেখালেখির দক্ষতা উন্নত করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বেশি করে পড়া। প্রচুর পরিমাণে সাহিত্য, ব্লগ পোস্ট এবং নিবন্ধন পড়ার মাধ্যমে আপনি বিষয়বস্তু সংগঠন, বাক্য গঠন এবং শব্দের উপর একটি বিস্তৃত জ্ঞান লাভ করবেন। কোন একটি বিষয়বস্তুর উপরে পড়ার সময় যৌক্তিক প্রবাহের দিকে মনোযোগ প্রদান করুন। এছাড়া ট্রাফিক বাড়াতে এবং লেখার প্রতি পাঠকদের জড়িত করতে কিওয়ার্ড গুলো সম্পর্কে এবং কিভাবে সেগুলো ব্যবহার করা হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। 

ব্লগ স্টাইল আর্টিকেলের সাধারণ প্রবাহ বুঝতে পারলে আপনি খুব সহজে নিজের অনন্য এবং মূল ধারার লেখালেখি করতে পারবেন। কেননা এটি একটি ভালো ব্লগ তৈরি করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়। আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং রাইটিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য কিছু সহায়ক বই পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে পিটার বোয়ারম্যান এর দ্যা ওয়েল ফেড রাইটার কিংবা ময়রা এন্ডারসন এলেন এর স্টার্টিং ইউর ক্যারিয়ার এজ এ ফ্রিল্যান্স রাইটার বই গুলো পড়তে পারেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

freelancer working

প্রাক্টিস

আপনার ফ্রিল্যান্স ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু হবার আগেই শেষ হয়ে যাবে যদি আপনি কিভাবে লিখতে হয় সেটি না জানেন। আপনি যদি প্রতিনিয়ত চেষ্টা না করেন তাহলে আপনি কখনোই আপনার লেখার স্কিল বাড়াতে পারবেন না। প্রথমে প্রতি সপ্তাহে অল্প কিছু ছোট পোস্ট থেকে শুরু করে লেখার জন্য একটি রুটিন তৈরি করে ফেলুন এবং অল্প তথ্য থেকেই লেখার চেষ্টা করতে থাকুন। 

আপনার প্র্যাকটিস করা লেখা গুলি পোস্ট করে আপনি আপনার দর্শকদের কাছ থেকে লেখা উন্নত করার উপায় এবং ভবিষ্যতে কি কাজ করা যাবে সে বিষয়ে নতুন ধারণা বা প্রতিক্রিয়া নিতে পারবেন। এছাড়া এই প্রাক্টিস করা ব্লগগুলো আপনার লেখার পোর্টফলিও এর জন্য দূর্দান্ত নমুনা হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। আপনি যত বেশি কনটেন্ট তৈরি করবেন একজন ক্লায়েন্ট আপনার ফ্রিল্যান্স ব্লগার হিসেবে ক্ষমতা সম্পর্কে তত ভালোভাবে বুঝতে পারবে। 👉 অনলাইনে কাজ করতে হলে যেসব দক্ষতা দরকার

পোর্টফলিও তৈরি করুন

ফ্রিল্যান্সে সফল হবার জন্য একটি শক্ত পোর্টফোলিও যেটি একজন ফ্রিল্যান্স ব্লগার হিসেবে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা দিবে সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোন একটি ক্লায়েন্টকে আকৃষ্ট করা এবং ধরে রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আপনার সকল লেখার নমুনা গুলিকে সংগঠিত, আপ টু ডেট এবং আপনি যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সে বিষয়ের সাথে প্রাসঙ্গিক ভাবে রাখা। 

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেরা ব্লগিং ফ্রিল্যান্সারেরা অনলাইন রাইটিং পোর্টফলিও তৈরি করে যাতে করে ক্লায়েন্টরা তাদের কাজ সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে পারে এবং প্রোজেক্ট এর জন্য অনুরোধ করতে পারে। 👉 একটানা কাজ না করেও যেভাবে টাকা ইনকাম সম্ভব

ফ্রিল্যান্সিং এমন একটি পেশা যা আপনাকে অফিসে আটকে না থেকে পেশাগত ভাবে আপনার ক্যারিয়ার বাড়াতে সাহায্য করে। অধ্যাবসায়, ধৈর্য এবং সময়ের সাথে আপনি সারা বিশ্বের ক্লায়েন্টদের জন্য আপনার প্রিয় বিষয়গুলিতে ব্লগ তৈরি করার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবে।  নিত্য নতুন প্রযুক্তি বিষয়ক নানা ধরনের তথ্য এবং টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *