টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বা 2SV অনেক গুগল অ্যাকাউন্টের জন্য বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা রয়েছে গুগলের। এমনকি আপনার জন্যও এটা হতে পারে। কোম্পানিটি ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, যেসব অ্যাকাউন্ট টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার জন্য যথাযথ, সেগুলোতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যাবে ২-স্টেপ ভেরিফিকেশন।
শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান সম্ভব নয়, তাই এই বাড়তি স্তরের নিরাপত্তা বাধ্যতামূলক করতে চায় গুগল। ইতোমধ্যে অনেক উপযোগী গুগল একাউন্টসমূহে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে গিয়েছে। নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের এই পরিবর্তন সম্পর্কে জানিয়েও দিচ্ছে গুগল।
একাধিক উপায়ে গুগল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ব্যবহার করা যাবে। এই সুবিধাটি টু-স্টেপ অথেনটিকেশন নামেও পরিচিত। সবার সুবিধার্থে শুরুতেই জানিয়ে রাখছি এই ফিচারটি সম্পর্কে ব্যাসিক কিছু তথ্য।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন কি?
পাসওয়ার্ড যত কঠিন হোক না কেনো, অজ্ঞাত কারণবশত একাউন্টের নিরাপত্তায় ব্যাঘাত ঘটতেই পারে। তাই অনলাইন একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পাসওয়ার্ড যথেষ্ট নয়। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এর পাশাপাশি টু-স্টেপ অথেনটিকেশন বা টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন অনলাইন একাউন্টসমূহে বাড়তি নিরাপত্তা স্তর যোগ করে।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বলতে মূলত লগিন এর জন্য বাড়তি একটি নিরাপত্তা স্তর, যেমনঃ মোবাইলে কলে বা মেসেজে আসা কোড প্রদান করা, অথেনটিকটর অ্যাপ প্রদত্ত কোড ব্যবহার বা ফিজিক্যাল কি, ইত্যাদি যোগ করাকে বুঝায়। অর্থাৎ একাউন্টের পাসওয়ার্ড প্রদানের পর যেকোনো একটি বাড়তি উপায়ে একাউন্টে লগিন এর বিষয়টি নিশ্চিত করাকে বলা হচ্ছে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন কিভাবে কাজ করে?
বিভিন্ন প্রকার অনলাইন একাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করা যায়। এগুলোর কাজও মোটামুটি একই রকম। চলুন ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন কিভাবে কাজ করেঃ
- আপনার অনলাইন সেবার লগিন পেজে প্রবেশ করুন
- এরপর একাউন্টের ইউজারনেম/ইমেইল ও পাসওয়ার্ড প্রদান করুন
- এরপর একাধিক পদ্ধতিতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন করা যেতে পারে, যেমনঃ ফোনে কল বা মেসেজের মাধ্যমে, অথেনটিকটর অ্যাপের মাধ্যমে, সিকিউরিটি কি ইউএসবি পোর্টে ব্যবহারের মাধ্যমে ইত্যাদি।
গুগল একাউন্টের ক্ষেত্রে এই টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন প্রথমবারের মত কোনো ডিভাইসে গুগল একাউন্ট লগিন করার ক্ষেত্রে দরকার হয়। (অন্যান্য সেবার জন্যও এই নিয়ম প্রযোজ্য।) ভেরিফিকেশনের পদ্ধতিসমূহের মাধ্যমে পাওয়া কোড শুধুমাত্র একবার ব্যবহার করা যায়। ভেরিফিকেশন কোড একাউন্টের সুরক্ষা ও নিশ্চিত করে।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
আপনি যদি ইতিমধ্যে আপনার গুগল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সেটাপ না করে থাকেন, তবে আমাদের “গুগল টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন কিভাবে সেটাপ করতে হয়” পোস্ট থেকে জেনে নিতে পারেন 👉 গুগল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার নিয়ম।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন এর সুবিধা
আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে – গুগল কেনো টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক করতে আগ্রহী? গুগল কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রথম কোম্পানি নয়। ইতিমধ্যে ফেসবুকে লগিন এর ক্ষেত্রে অনেকের একাউন্টে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে টু-স্টেপ অথেনটিকেশন প্রসেস। গুগল ও ফেসবুক এর এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া হিসেবে আসন্ন সময়ে সকল অনলাইন একাউন্টেই টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন এর দেখা মিলতে পারে।
শুধুমাত্র পাসওয়ার্ড দ্বারা কোনো অনলাইন একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত সম্ভব নয়। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বা টু-স্টেপ অথেনটিকেশন এর ইউনিক কম্বিনেশন অনলাইন একাউন্টসমূহকে হ্যাকারদের কাছে দুর্ভেদ্য করবে। জানা থাকে এমন কিছু (পাসওয়ার্ড) ও হাতের কাছে থাকা কিছু (ফোন বা সিকিউরিটি কি) ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে লগিন করতে হয় বলে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন এর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বেশ শক্তপোক্ত বলা চলে।
গুগল একাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন ব্যবহারের বিভিন্ন পদ্ধতি
বেশিরভাগ মানুষের একাউন্টে এক স্তরের নিরাপত্তা রয়েছে – পাসওয়ার্ড। টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকলে যদিওবা কেউ আপনার পাসওয়ার্ড জেনে যায় বা হ্যাক করে, তবুও আপনার একাউন্ট নিরাপদ থাকবে। কেননা একাউন্টে প্রবেশের সময় টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন আপনি ব্যতীত অন্য কারো লগিন দুঃসাধ্য করে তুলবে।
ভেরিফিকেশন কোডসমুহ যেহেতু ইউনিক, তাই কারো পক্ষে সেগুলো অনুমান করা বা হ্যাক করা সম্ভব নয় বলা চলে। লগিন এর সময় পূর্বে সেটাপ করা পদ্ধতিতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক গুগল একাউন্ট এর টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন পদ্ধতিসমুহ সম্পর্কে।
ফোন কল বা এসএমএস
একাউন্টে যুক্ত থাকা ফোন নাম্বারে কল কিংবা এসএমএস এর মাধ্যমে ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে। এসএমএস এর ক্ষেত্রে ৬ ডিজিটের একটি কোড পাঠানো হয়। ভেরিফিকেশন মেথডে ফোন কল সিলেক্ট করলে ফোনে কল করার মাধ্যমে কোড জানানো হবে। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার সময় যে নাম্বারে ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে, সেটির নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক আছে কিনা তা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।
ব্যাকাপ ফোন নাম্বার
আপনার ফোন যদি হাতের কাছে না থাকে, সেক্ষেত্রে ব্যাকাপ হিসেবে এড করা অন্য কোনো ফোন নাম্বারে আসা ভেরিফিকেশন কোড ব্যবহার করেও টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।
👉 গুগল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক হওয়ার ব্যাপারে যা জানা দরকার
👉 গুগল একাউন্টের সুরক্ষার জন্য করণীয়
ব্যাকাপ কোড
গুগল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার সময় ওয়ান-টাইম ব্যবহারের জন্য কিছু ব্যাকাপ কোড ডাউনলোড করার অপশন দেয়া হয়। এই কোডসমুহ প্রিন্ট বা ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। যখনই হাতের কাছে ফোন থাকবেনা, তখন এসব কোড ব্যবহার করে লগিন সম্পন্ন করতে পারবেন। গুগল একাউন্ট সেটিংস থেকে ২-স্টেপ ভেরিফিকেশন অপশনে গিয়ে পরবর্তীতেও এই কোডগুলো ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
গুগল অথেনটিকেটর
অ্যান্ড্রয়েড, আইফোন বা ব্ল্যাকবেরি ডিভাইসে গুগল অথেনটিকেটর অ্যাপ ব্যবহার করে ভেরিফিকেশন কোড জেনারেট করে তা টু-স্টেপ ভেরিফিকেশনে ব্যবহার করতে পারবেন। ফোনে কানেকটিভিটি কাজ না করলে, এই পদ্ধতিটি বেশ সহায়ক। এছাড়া এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করলে এসএমএস বা কলের জন্য আর অপেক্ষা করতে হবেনা। অথেনটিকেটর অ্যাপ থেকে কোড নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
অথেনটিকেটেড ডিভাইস ব্যবহার
ইতিমধ্যে সাইন-ইন করা আছে, এমন ডিভাইস থেকে লগিন রিকোয়েস্ট এপ্রুভ করেও টু-স্টেপ অথেনটিকেশন সম্পন্ন করা যায়। তবে সেক্ষেত্রেও কোড বা সিকিউরিটি কি ব্যবহারের প্রয়োজন হবে। আপনার এন্ড্রয়েড ফোন কিংবা আইফোনে যদি বা গুগল অ্যাপে লগইন করা থাকে তাহলে আপনি এই ফিচারের মাধ্যমে অন্য ডিভাইসের লগিন কনফার্ম করতে পারবেন। অন্য ডিভাইসে ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর আপনার বর্তমান ডিভাইসে একটি নোটিফিকেশন আসবে। সেই নোটিফিকেশন কনফার্ম করে আপনি টু-স্টেপ ভেরিফাই করতে পারবেন।
👉 জিমেইল পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করার নিয়ম (মোবাইল ও কম্পিউটার থেকে)
গুগল একাউন্ট এর টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্নোত্তর
যে কেউ চাইলে তার গুগল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ভবিষ্যতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন অনেকের গুগল অ্যাকাউন্টের লগিন এর ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক হতে যাচ্ছে।
যেসব একাউন্টে ইতিমধ্যে ফোন নাম্বার বা অন্য কোনো ভ্যালিড অথেনটিকেশন মেথড যুক্ত করা হয়েছে, গুগল চাইলে সেসব ডিভাইসের ক্ষেত্রে আপনাআপনি চালু হয়ে যেতে পারে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন। অথেনটিকেশন মেথড বলতে ফোন নাম্বার, সেকেন্ডারি ইমেইল, কিংবা ইতিমধ্যে সাইন-ইন থাকা কোনো ডিভাইসকে বুঝায়।
পাসওয়ার্ড প্রদানের পর বাড়তি নিরাপত্তা স্তরের সুবিধায় পাসওয়ার্ড চুরির সম্ভাবনা কমে যাবে। এক্ষেত্রে কেউ আপনার পাসওয়ার্ড পেয়ে গেলেও লগিন করতে পারবেনা। তাই গুগল টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করছে।
গুগল একাউন্ট সেটিংসে গিয়ে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সেটাপ করা যাবে। গুগল টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের পোস্ট দেখুন।
👉 গুগল একাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করার নিয়ম
উল্লেখ্য যে, সকল ইউটিউব ক্রিয়েটর অর্থাৎ যারা ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করেন, তাদের জন্যও টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক করেছে গুগল।
আপনি কি এই ফিচারটি ব্যবহার করেন? আপনার অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানান!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
Thanks
Wow
BEST TOP TOP ALL HELP
Help sarvise
Helpful services