এই ফোনটি ঘড়ির মত হাতে পরা যাবে (মটোরোলার অদ্ভুত আবিষ্কার)

গত কয়েক বছর ধরে ফ্লিপ ও ফোল্ড ফোন ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা অর্জন করে চলেছে, মূলত সাধারণ চিরাচরিত ফোনের চেয়ে অধিক সুবিধা প্রদান করায় গ্রাহকগণ এই ফোনগুলোর কার্যকরীতা বুঝতে পারছেন।

স্যামসাং গ্যালাক্সি জি ফ্লিপ বা মটোরোলা রেজার এর মত ফোনগুলো বড় ডিসপ্লের পাশাপাশি মজার ওয়াচ ফেস বা ইন্টারেকটিভ উইজেটস ব্যবহারের সুবিধা করে দিচ্ছে। কভার ডিসপ্লে হিসেবে থাকা এই ডিসপ্লে অনেকটা স্মার্টওয়াচ এর কাজ করে, এই ফিচারটি বেশ ব্যবহারিক না হলেও মজার বটে।

এখনো স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচ দুইটি সম্পূর্ণ আলাদা ডিভাইস। তবে মটোরোলার যে উদ্ভাবন নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি সেটি হয়ত একই সাথে স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচ এর ধারণা সম্পূর্ণরূপে পালটে দিতে চলেছে।

বলছি মটোরোলার Adaptive Display কনসেপ্ট ডিভাইস এর কথা। লেনোভো টেক ওয়ার্ল্ড ইভেন্ট ২০২৩ এ মটোরোলার এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্ট স্মার্টওয়াচ এর ফিচারের সীমাবদ্ধতাকে পরিবর্তন করতে যাচ্ছে।

বলে রাখা ভালো এর আগেও আমরা এমন কিছু স্মার্টওয়াচ দেখেছি যাতে বিশাল স্ক্রিন ও নজরকাড়া এন্ড্রয়েড ইন্টারফেস দেখা যায়, তবে সেসব ডিভাইস মূলধারায় খুব বেশি সাড়া ফেলতে পারেনি। Nubia Alpha smartwatch এই ধরনের ডিভাইসের একটি অনন্য উদাহরণ।

তবে মটোরোলা তাদের এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্টকে কিছুটা ব্যতিক্রমভাবে সাজিয়েছে।

তবে কি বদলে যেতে চলেছে ফোল্ডেবল ফোনের ভবিষ্যৎ? চলুন বিস্তারিত জানি মটোরোলা এডাপটিভ ডিসপ্লে সম্পর্কে ও বোঝার চেষ্টা করি এর ভবিষ্যৎ।

মটোরোলা এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্ট কি? 

সহজ ভাষায় বলতে গেলে মটোরোলার এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্ট হলো একটি এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন যা এক্সট্রিম এংগেলে বেন্ড করা যায়।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

মটোরোলা এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্ট

👉 বাটন চাপলে বড় হবে ফোনের ডিসপ্লে, মটোরোলা স্মার্টফোনের নতুন চমক!

ফ্লেক্সিবল ওলেড প্যানেল দ্বারা এখনকার ফোল্ডেবল ফোনগুলো যেখানে সেন্টার থেকে বেন্ড হয় সেখানে এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্ট একাধিক পয়েন্টে বেন্ড করা যাবে যার ফলে এটিকে হাতে ঘড়ির মত পড়া যাবে।

ফ্লিপ স্মার্টফোন এর মতই এই ডিভাইসটিতেও হিঞ্জ সিস্টেম যা রয়েছে ম্যাগনেটস ব্যবহার করে ওয়্যারেবল কাফ এর সাথে যুক্ত থাকবে ও হাতের কব্জির সাথে জুড়ে থাকবে। এটি মূলত একটি স্মার্টফোনকে একটি স্মার্টওয়াচে পরিণত করে। ব্যাপারটা বেশ মজার কিন্তু।

ফ্লেক্সিবল স্ল্যাপ রিস্টব্যান্ড এর সাথে স্মার্টফোন এর ফাংশনালিটি জুড়ে দিতে পারলে যেমন হতো ঠিক তেমন কিছুই করতে চলেছে মটোরোলার এই ডিভাইসটি। কোনো সাইন্স ফিকশন ফিল্ম থেকে উঠে আসা কোনো ডিভাইসের চেয়ে কোনো অংশে কম নয় এটি।

মটোরোলা এডাপটিভ ডিসপ্লে স্পেসিফিকেশন

মটোরোলার এই এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্ট হল মূলত একটি বেন্ডেবল স্মার্টফোন, এর কিছু কিছু স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে জানা গিয়েছে।

৬.৯ ইঞ্চি ফুলএইচডি ফ্লেক্সিবল ওলেড ডিসপ্লে থাকছে এই ডিভাইসে, তবে রিফ্রেশ রেট বা পিক ব্রাইটনেস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। 

এছাড়া এই মটোরোলা ডিভাইসে কি ধরনের চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে সে সম্পর্কেও তথ্য প্রদান করা হয়নি। তবে বেন্ডেবল ফোন হিসেবে কাজ করার জন্য ডিভাইসটির জন্য এডাপটিভ এন্ড্রয়েড ইউজার ইন্টারফেস তৈরি করেছে মটোরোলা।

👉 মটোরোলা থিংকফোন – যা দেখে অনেকেই আফসোস করছে! (কারণ জানুন)

হাতে পড়লে তখন হোমস্ক্রিন ক্লক উইজেট ওয়াচ ফেস এর মত দেখা যায়। আপসাইড ডাউন থেকে দেখলে আবার ইউআই অরিয়েন্টেশন নিজ থেকে পরিবর্তন হয়।

মটোরোলা জানিয়েছে এই ডিসপ্লে অর্ধেকে ভাঁজ করা যেতে পারে যার ফলে এটিকে সোজা স্ট্যান্ড করানো যাবে যা এটিকে ৪.৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে ফর্ম ফ্যাক্টরে ব্যবহারের সুবিধা প্রদান করবে। হাতে পড়তে চাইলে এটি আবার স্মার্টওয়াচ এর মত কাজ করবে যা মটোরোলা রেজার ৪০ আলট্রার কভার ডিসপ্লের সমতুল্য ডিসপ্লে সুবিধা প্রদান করে।

তবে সাধারণ ফোন বা ফোল্ডেবল ফোনের মত এর ব্যাকে কোনো ধরনের ক্যামেরা নেই, যার মানে হলো সাধারন উপায়ে এতে ছবি তোলার কোনো সুযোগ ন্নেই। আপাতত ফোনটি দিয়ে ছবি তোলা বা ভিডিও রেকর্ড করতে এর ফ্রন্ট ক্যামেরার উপর নির্ভর করতে হবে। বিষয়টি ব্যবহারিক না শোনালেও এটি মনে রাখা জরুরি যে এই ডিভাইসটি একটি কনসেপ্ট ডিভাইস মাত্র, কোনো ফাইনাল প্রোডাক্ট নয়।

এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্টের কল্যাণে কি নতুন উদ্ভাবন দেখা যেতে পারে?

এন্ড্রয়েড এর কল্যাণে বিগত বছরগুলোতে বেশ অসাধারণ সব কনসেপ্ট ডিজাইনের জন্ম হয়েছে। এটিই একমাত্র মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম যা ফ্লেক্সিবল ফর্ম ফ্যাক্টর ও বড় স্ক্রিনের ডিভাইসে কাজ করে।

যেহেতু একাধিক ম্যানুফ্যাকচারার তাদের ফ্লিপ-স্টাইল স্মার্টফোন তৈরিতে অধিক ফোকাস প্রদান করেই চলেছে, সেক্ষেত্রে মটোরোলার এই নতুন ধরনের ডিভাইস উদ্ভাবনের ধারায় নতুন গতি আনবে বলে আশা করা যায়।

মটোরোলার এই এডাপটিভ ডিসপ্লে কনসেপ্ট ডিভাইসটি স্মার্টফোন ও স্মার্টওয়াচ এর মধ্যকার দুরত্ব কমিয়ে আনতে পারে। দেখার বিষয় হলো মটোরোলার রিসার্চ ও ডেভলপমেন্ট (R&D) টিম এই কনসেপ্টকে বাস্তবে রুপ দিতে পারে নাকি অন্য কোনো কোম্পানি সেই দায়িত্ব তাদের কাঁধে তুলে নেয়।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *