বিকাশ আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গিয়েছে। সেন্ড মানি, মোবাইল রিচার্জ, ক্যাশ আউট, পেমেন্ট, ইত্যাদি যেনো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে যেগুলো বাদ দেওয়ার কথা চিন্তা করা সম্ভবই নয়। বিকাশ নিয়মিত যারা ব্যবহার করেন তারা বিকাশ এর চার্জসমূহ সম্পর্কে অবগত থাকবেন। অনেকের কাছে বিকাশ এর খরচ কিছুটা বেশি মনে হতে পারে যা বেশ স্বাভাবিক একটি বিষয়।
এই পোস্টে আমরা জানবো বিকাশের খরচ কমানোর উপায় সম্পর্কে। সেন্ড মানি, ক্যাশ আউটসহ প্রায় সকল বিকাশ ফিচারের ক্ষেত্রে কিভাবে খরচ কমানো যেতে পারে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে এই পোস্টে।
প্রিয় নাম্বার ব্যবহার করে ফ্রি সেন্ড মানি
বিকাশে ৫ টি প্রিয় নাম্বার সেট করা যায়। প্রতি মাসে প্রিয় নাম্বারে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত সেন্ড মানি করা যাবে কোনো সেন্ড মানি ফি ছাড়াই। যে নাম্বারগুলোতে প্রতি মাসে সবচেয়ে বেশি সেন্ড মানি করা হয়৷ সেগুলোকে বিকাশ প্রিয় নাম্বার সেট করুন ও বিনামূল্যে সেন্ড মানি করুন কোনো বাড়তি ফি ছাড়াই।
বলে রাখা ভালো বিকাশ প্রিয় নাম্বারের পাশাপাশি ১০০ টাকা পর্যন্ত সেন্ড মানি করতে কোনো ফি কাটেনা। এই দুইটি সুবিধা উপভোগ করে কোনো ধরনের সেন্ড মানি ফি ছাড়াই বিকাশে সেন্ড মানি করতে পারবেন অ্যাপ ও *247# ডায়াল করে। এভাবে বিকাশ সেন্ড মানি করার ক্ষেত্রে খরচ কমাতে পারবেন।
প্রিয় এজেন্ট নাম্বার থেকে ক্যাশ আউট
প্রতি ক্যালেন্ডার মাসে যেকোনো একজন বিকাশ এজেন্ট নাম্বারকে নিজের প্রিয় এজেন্ট নাম্বার হিসেবে এড করতে পারবেন। ব্যবহারকারীগণ বিকাশ প্রিয় এজেন্ট এর কাছ থেকে ১.৪৯% চার্জে ক্যাশ আউট করতে পারবেন। প্রতি মাসে বিকাশ প্রিয় এজেন্ট এর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউট করা যাবে মাত্র ১.৪৯% চার্জে। সাধারণত বিকাশ ক্যাশ আউট ফি ১.৮৫% বা প্রতি হাজারে ১৮.৫০ টাকা। বিকাশ প্রিয় এজেন্ট এর কাছ থেকে ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে হাজারে ১৪.৯০ টাকা ফি প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ ক্যাশ আউট এর করে সেভ করতে পারবেন। তাই আপনি নিয়মিত ক্যাশ আউট করেন এমন কোনো বিকাশ এজেন্ট নাম্বারকে আপনার প্রিয় বিকাশ এজেন্ট নাম্বার হিসেবে সেট করুন ও বিকাশের খরচ কমান।
এটিএম থেকে ক্যাশ আউট
বিকাশ ক্যাশ আউট এটিএম বুথ থেকে করার মাধ্যমেও উল্লেখযোগ্য হারে বিকাশ ক্যাশ আউট খরচ কমানো যেতে পারে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং Q-Cash এটিএম থেকে হাজারে ১৪.৯০ টাকা চার্জে ক্যাশ আউট করা যাবে।
অর্থাৎ সাধারণ বিকাশ ১৮.৫০ টাকা হাজারে চার্জ এর পরিবর্তে এটিএম বুথ থেকে বিকাশ ক্যাশ আউট করলে সেক্ষেত্রে কম খরচে বিকাশ ক্যাশ আউট করতে পারছেন। তাই সম্ভব হলে বিকাশ এজেন্ট এর কাছ থেকে ক্যাশ আউট করার চেয়ে এটিএম থেকে বিকাশ ক্যাশ আউট অধিক সাশ্রয়ী বটে। 👉 বিকাশে কম খরচে ক্যাশ আউট করতে এলো সিটি ব্যাংক ATM সুবিধা
ব্যাংকে বিকাশ থেকে টাকা আনা
বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে বিকাশ ব্যালেন্স ব্যাংকে নিয়ে আসার সুবিধা রয়েছে। এক্ষেত্রে ক্যাশ আউট এর চেয়ে ফি অনেক কম এবং ব্যাংক থেকে বিনামূল্যে টাকা তোলার সুবিধা তো থাকছেই। অর্থাৎ একটু বুদ্ধি খাটালে বিকাশ ক্যাশ আউট না করে ব্যাংকে ডিপোজিট করে ক্যাশ আউট করলে সেক্ষেত্রে অনেক খরচ কমানো যেতে পারে। ফিচারটির নাম বিকাশ টু ব্যাংক ট্রান্সফার।
অগ্রণী ব্যাংক৷ সোনালী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, এই ব্যাংকগুলোতে বিকাশ থেকে ডিপোজিট করলে সেক্ষেত্রে ১.০০% চার্জ কাটবে। অর্থাৎ প্রতি হাজার টাকা বিকাশ থেকে ব্যাংকে ডিপোজিট করলে ১০ টাকা চার্জ কাটছে।
এবি ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, প্রিমিয়াম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক, এই ব্যাংকগুলোতে বিকাশ থেকে ডিপোজিট এর ক্ষেত্রে ১.২৫% চার্জ অর্থাৎ প্রতি হাজারে ১২.৫ টাকা চার্জ কাটবে।
প্রতি মাসে একজন বিকাশ গ্রাহক দৈনিক ৫০,০০০ টাকা ও মাসিক ৩,০০,০০০ টাকা বিকাশ থেকে ব্যাংকে ডিপোজিট করতে পারবে। উল্লেখযোগ্য হারে খরচ কমানোর পাশাপাশি ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা এনে বড় অংকের অর্থ উত্তোলনে লাভবান হতে পারেন একজন গ্রাহক।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
বিকাশ রিওয়ার্ডস
গ্রাহকদের বিকাশ ব্যবহারের উদ্ভুদ্ধ করতে বিকাশ রিওয়ার্ডস ফিচারটি রাখা হয়েছে। গ্রাহকগণ বিকাশের সেবাগুলো নিয়মিত উপভোগ করার মাধ্যমে বিকাশ রিওয়ার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। পয়েন্ট পাওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকগণ নির্দিষ্ট রিওয়ার্ড লেভেলে অবস্থান করবেন। পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে লেভেল নির্ধারিত হবে। পয়েন্ট যত বেশি হবে, লেভেলও তত উপরে যাবে ও রিওয়ার্ড এর আকর্ষণও ততই বাড়বে। রিওয়ার্ড পয়েন্টে বিভিন্ন ক্যাশ অফার এর পাশাপাশি বোনাসও পাওয়া যায়।
বলে রাখা ভালো রিওয়ার্ড পয়েন্টের মেয়াদকাল ১২ ক্যালেন্ডার মাস। মেয়াদকাল শেষ হওয়ার পর অব্যবহৃত রিওয়ার্ড পয়েন্টের মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ কোনো বছর শেষ হওয়ার সাথে সাথে উক্ত বছরে জমা থাকা রিওয়ার্ড রিসেট হয়ে যাবে ও নতুন বছরে নতুন করে রিওয়ার্ড সিস্টেম চালু হবে। এই শর্ত ১ জানুয়ারি, ২০২২ থেকে কার্যকর হয়েছে । তবে ১ জানুয়ারি, ২০২২-এর আগে অর্জিত রিওয়ার্ড পয়েন্ট ব্যবহার না করা হলে মেয়াদ ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩-এ শেষ হয়ে যাবে।
মাই অফারস
বিকাশ অ্যাপে থাকা “My offers” সেকশনে পেয়ে যাবেন আপনার বিকাশ একাউন্টের জন্য ঠিক করা কিছু অসাধারণ অফার। এসব অফার গ্রহণ করে ক্যাশব্যাক ও বোনাস পেতে পারেন। বিকাশ মাই অফারস সেকশনে প্রায় প্রতিদিন নতুন পারসোনালাইজড অফার আসে যেগুলো ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহকগণ। এই ফিচার ব্যবহার লাভবান হতে পারেন বিভিন্ন অফার গ্রহণ করে।
উল্লেখিত উপায়গুলো অনুসরণ করে বিকাশ সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট খরচ কমানোর পাশাপাশি বিকাশ বোনাস ও ক্যাশব্যাক সুবিধাও উপভোগ করতে পারছেন। বিকাশ খরচ কমানোর কোনো উপায় আপনার জানা আছে কি? কমেন্ট সেকশনে শেয়ার করতে পারেন বাংলাটেক এর পাঠকদের সাথে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।