পহেলা সেপ্টেম্বর ২০১৫ ব্র্যানোর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে “হ্যাপি সেল ডে” ঘোষণা দেয়া হয় দুই সপ্তাহ আগে। “হ্যাপি সেল ডে” অনেকটা অ্যামাজনের “ব্ল্যাক ফ্রাইডে” অথবা ফ্লিপকার্ট এর “বিগ বিলিয়ন ডে” র অনুরুপে করা হয় অর্থাৎ সারা বছরে মাত্র একবার এই ধরণের ছাড় দেয়া হয় এবং গ্রাহকেরা অধীর আগ্রহ নিয়ে এই দিনগুলোর জন্য বসে থাকেন অনলাইনে কেনাকাটা করার জন্য। “হ্যাপি সেল ডে” উপলক্ষে ব্র্যানো ৩৫% পর্যন্ত তাদের সাইটের বিভিন্ন পণ্যের উপর ছাড় দেয়। এ বিষয়ে দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্নভাবে সোশাল, ব্লগ, অনলাইন, নিউজ, পত্রপত্রিকাসহ সব ধরণের মিডিয়াতে প্রচারনা চালানো হয়।
এর ফলস্বরূপ, পহেলা সেপ্টেম্বর তারা বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ (১০ লাখ টাকার উপর) পণ্য বিক্রি করে বাংলাদেশ ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে একদিনে সর্বোচ্চ বিক্রির ইতিহাস তৈরি করল।
ব্র্যানোর প্রস্তুতি সম্পর্কে কথা হল তাদের অপারেশন হেড সাগর দের সাথে। উনি জানান, তারা এ উপলক্ষে অনেক আগে থেকেই তাদের ওয়্যারহাউসে পণ্য মজুদ করা শুরু করেছিলেন যাতে করে গ্রাহকদের খুব সহজেই পণ্যের ডেলিভারি দেয়া যায়। “হ্যাপি সেল ডে” সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত ছিলো। সেই অনুযায়ী যাতে গ্রাহকদের সার্ভিস দেয়া যায় রাত ১২টা পর্যন্ত, সেই প্রস্তুতি আগে থেকেই নেয়া ছিলো। গ্রাহকদের সাথে লাইভ চ্যাট, ফোন কল, কল ব্যাক, সোশাল মিডিয়ার সকল মেসেজের উত্তর দেয়া থেকে সব কিছুই অনেক ভালোভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয় তারা। তাদের টেকনিক্যাল প্রস্তুতি সম্পর্কে টেকনিক্যাল হেড সজীব বড়ুয়া আমাদের জানান, “ব্র্যানো সবসময় ১৬টি প্রসেসরযুক্ত ৩২জিবি র্যাম সম্পন্ন সার্ভার ব্যবহার করে। কিন্তু “হ্যাপি সেল ডে” উপলক্ষে বাড়তি সাবধানতা হিসাবে সার্ভার মেমোরি দ্বিগুণ করা হয় এবং সার্ভারকে ২৪X৭ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখা ছিলো যাতে করে কোন রকমের হ্যাকিং অথবা সার্ভার ডাউনটাইমের শিকার না হয়। সেই হিসাবে আমরা শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছি”।
তাদের হেড অব মার্কেটিং অলড্রিন চৌধুরীর কাছে আমরা তাদের প্রস্তুতি, কিছু পরিসংখ্যান এবং ফিগার জানতে চেয়েছি। উনি আমাদের জানান, “আমরা গত দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্নভাবে সোশাল, ব্লগ, অনলাইন, নিউজ, পত্রপত্রিকাসহ সব ধরণের মিডিয়াতে মার্কেটিং এর প্রচারনা চালাই যাতে করে দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যাক গ্রাহক আমাদের এই একদিনের অফারটি উপভোগ করতে পারে। সেই হিসাবে আমরা আমাদের প্রত্যাশার অনেক উর্ধে সাড়া পেয়েছি। সেল শুরু হয়েছে সকাল দশটা থেকে এবং শুরু হবার ত্রিশ মিনিটের মধ্যেই আমরা সেল ১ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এই দিনে আমাদের সাইটে ৩৬,৩৫০ জন ভিজিটর, ২,৫৯,৬৫৯ বার পেজ ভিউ হয়েছে। আমরা ৩২৬টি ফোন কল, ১৪৪টি ফেসবুক মেসেজ, ৮৪ জনকে লাইভ চ্যাটে সাপোর্ট, এবং ডিরেক্টলি ৫৪ জনকে আমাদের সাইটে সাপোর্ট দিয়েছি। এর ফলস্বরূপ আমরা একদিনে ৪৩০টি অর্ডার সফলভাবে সম্পন্ন করেছি যার মূল্য ১০,০৫,৯৩১ টাকা। আমরা আসলেই অভিভূত গ্রাহকদের আমাদের উপর আস্থা এবং ভরসা দেখে এবং আমাদের এই “হ্যাপি সেল ডে” অনেক খুশি মনে গ্রহণকরার জন্য। এই ধরণের দিনগুলোই আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে”।
[★★] মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায় জানতে এখানে ক্লিক করুন
👉 বাংলাটেক ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন, দারুণ ভিডিও দেখুন
ব্র্যানোর “হ্যাপি সেল ডে” সম্পর্কে ব্র্যানোর সি ই ও মি. রাজীব রায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি আমাদের জানান, “আসলে আমারা (ব্র্যানো ডট কম) দেখেছি বাংলাদেশের অনেক মানুষ অনলাইনে কেনা কাটা করার ব্যাপারে অনিহা প্রকাশ করে বা অনলাইনে কেনাকাটাকে তেমন ভরসা করে না । তাই আমরা বাংলাদেশের মানুষদের অনলাইনে কেনা কাটা করার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া এবং বিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য এই উদ্যেগটি নিয়েছি। গ্রাহকরা যাতে অনলাইনে কেনাকাটা করতে ভরসা পায় এবং নামমাত্র মূল্যে পণ্য কেনার সুযোগ পাই এটাই ছিল আমাদের মুখ্য বিষয়। আমাদের কোম্পানির বর্ষপূর্তিতে গ্রাহকদের হ্যাপি করাই ছিলো আমাদের “হ্যাপি সেল ডে” মূল উদ্দেশ্য। আমরা মনে করি আমাদের এই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে । তবে আমাদের আরও ইমপ্রুভ করার সুযোগ আছে কারন আমাদের কনভার্সন রেট বাইরের দেশের তুলনাই অনেক কম। এটাকে আরো কিভাবে বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি”।
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদ জানান “বাংলাদেশের ই-কমার্স সেক্টরের জন্য এটি একটি এতিহাসিক দিন। কয়েকজন ক্রেতা আমাকে এ নিয়ে ব্যাক্তিগতভাবে ফোন দিয়েছে। আশা করি আগামী বছর ব্র্যানো এক দিনে এক কোটি টাকা বিক্রি করবে।”
আমরা আগে শুধু দেখতাম USA, China এবং India তে ই-কমার্স এর জন্য বিশেষ দিন পালন করা হতো। বাংলাদেশেও এই প্রবণতাটা শুরু হয়ে গেছে, যা ব্র্যানো ডট কম অত্যন্ত সফলতার সাথে পালন করেছে। আমরা আশা করবো ব্র্যানো ডট কম এর মতো আমাদের দেশের বাকী ই-কমার্স সাইট গুলো ও এই ধরনের বিশেষ দিন সিলেক্ট করে একটি বড় ডিসকাউন্ট এর আয়োজন করে আমাদের দেশের মানুষদের অনলাইনে কেনা কাটা করার বেপারে আরও উৎসাহিত করবে । এভাবে সবাই যদি একসাথে ব্র্যানোর দেখানো পথে কাজ করে যায় তা হলে আমদের দেশের অর্থনীতিকে এবং বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি বিশাল ভূমিকা পালন করতে পারবে ।
—————–
২০১৪ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর আইটি বিশেষজ্ঞ রাজীব রায়ের হাত ধরে ব্র্যানোর বাংলাদেশের মার্কেটে পদার্পণ। অরিজিনাল এবং ব্র্যান্ডেড পারফিউম, কসমেটিকস নিয়ে যাত্রা শুরু করা সাইটি এখন ৮টি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটেগরিতে পাঁচ হাজারেরও বেশি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের গ্রাহকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ক্যাটেগরিগুলো হচ্ছেঃ পারফিউম, কসমেটিকস, শাড়ি, ঘড়ি, অলঙ্কার, ডিজাইনার পোশাক, ছোটদের সামগ্রী এবং পেইন্টিং। আসল এবং গুনগত মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করাই ব্র্যানোর মুল লক্ষ্য। ব্র্যানোতে কেনাকাটা করতে কোনো রেজিস্ট্রেশন কিংবা লগিনের প্রয়োজন হয়না। মাত্র ১ মিনিটের মধ্যেই এখানে পণ্য অর্ডার করা যায়। এছাড়া ‘ট্র্যাকিং’ সিস্টেমের মাধ্যমে আপনি আপনার অর্ডার ডেলিভারি পাওয়ার আগে সেগুলোর অবস্থানও ট্র্যাক করতে পারেন। এখান থেকে ক্যাশ অন ডেলিভারি, মোবাইল ব্যাংকিং ও ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড পেমেন্ট পদ্ধতিতে কেনাকাটা করা যায়।
তথ্যসূত্রঃ ব্র্যানো
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।