জিবোর্ড কিবোর্ডের যেসব ফিচার আপনার এন্ড্রয়েডে ব্যবহার করা উচিত

অ্যান্ড্রয়েড এর সেরা কিছু সুবিধার মধ্যে একটি হলো থার্ড পার্টি অনেকগুলো কিবোর্ড সফটওয়্যার ব্যবহার করার অপশন থাকা। কিন্তু এদের মধ্যে গুগলের নিজস্ব জিবোর্ড কিবোর্ড সম্ভবত সেরা একটি অপশন। গুগলের জিবোর্ড বাংলা কিবোর্ড হিসেবেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। সারা বিশ্বের প্রচুর পরিমাণে মানুষ এটি ব্যবহার করছে। এটি একটি অত্যন্ত ফিচার সমৃদ্ধ অ্যাপ। এসকল ফিচার ব্যবহার করলে আপনার টাইপিং করার অভিজ্ঞতা আরো অনেক উন্নত হবে। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জিবোর্ডের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার এবং সেগুলোর সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

হাইট এডজাস্ট করা

একটি ভার্চুয়াল কিবোর্ড এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে দুর্দান্ত জিনিস হলো এটি আপনার টাইপিং এর প্রয়োজনের সাথে মানানসই উপায়ে আপনি কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন। একই সাথে আপনার হাতের সাইজের উপর ভিত্তি করেও এটি পরিবর্তন করা সম্ভব।

গুগলের জিবোর্ড আপনাকে আপনার কিবোর্ডের উচ্চতা অতিরিক্ত শর্ট থেকে শুরু করে অতিরিক্ত লম্বা পর্যন্ত করার সুযোগ প্রদান করে থাকে। আপনি আপনার আংগুলের সাইজের সাথে মানানসই করে আপনার কিবোর্ডের উচ্চতা নির্ধারণ করতে পারবেন।

নাম্বার সারি চালু করা 

বাই ডিফল্ট জিবোর্ড “?” কি এর পিছনে কি বোর্ডের নাম্বার রেখে থাকে। কিন্তু এমন ও হতে পারে যে আপনি খুব বেশিরভাগ সময়ই নাম্বার ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার এক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তবে জিবোর্ড এ ব্যাপারে আপনার সুবিধার জন্য একটি উপায় রেখে দিয়েছে। আপনি চাইলে নাম্বারের সারিটি আপনার গুগল কি বোর্ডের উপরের দিকে পারমানেন্ট ভাবে রেখে দিতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে প্রথমেই জিবোর্ডের সেটিংস অপশনে যেতে হবে। সেখানে থাকা প্রেফারেন্স সেকশন থেকে আপনি নাম্বার রো অপশনটি এনাবল করে দিতে পারবেন। এর ফলে গুগলের কি বোর্ডে নাম্বারের সারি সবসময়ের জন্য উপরে থেকে যাবে।

থিম পরিবর্তন করা 

আপনার পছন্দমত আপনার কি বোর্ড পার্সোনালাইজ করার জন্য জিবোর্ড আপনাকে নানা ধরনের থিম প্রদান করে থাকে। আপনি চাইলে আপনার অ্যান্ড্রয়েড এর থিমের সাথে ম্যাচ করে জিবোর্ডের থিম নির্বাচন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে সিস্টেম অটো থিম নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া আপনি চাইলে নানা ধরনের কালার এমনকি বিভিন্ন ধরনের ছবি ও নির্বাচন করতে পারেন। আপনি আপনার কি বোর্ডের বাটনগুলোতে কোনো প্রকার বর্ডার চান কিনা সে ব্যাপারেও জিবোর্ড আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে দেয়। আপনি শুধুমাত্র জিবোর্ড সেটিংস এ যেয়ে থিমস সেকশনে গিয়ে আপনার পছন্দমতো থিম নির্বাচন করে নিতে পারবেন।

ইমোজি ম্যাশ আপ তৈরি করা 

কিবোর্ডের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফিচারগুলোর মধ্যে একটি হলো ইমোজি কিচেন। এটি আপনাকে খুব সহজেই দুইটি ইমোজি ব্যবহার করে একটি নতুন ইমোজি তৈরি করার সুযোগ করে দেয়। যেমন ধরুন আপনি 🔥 এবং 🤔 এই দুইটি ইমোজি ব্যবহার করে একটি নতুন ইমোজি তৈরি করতে পারবেন যেখানে একটি আগুনের গোলা চিন্তা করছে এমন বোঝা যাবে। এটি বন্ধু বান্ধবদের সাথে খেলা করার জন্য খুবই মজাদার এবং আপনি এটি ব্যবহার করে অনেক সুন্দর সুন্দর কাস্টম ইমোজি তৈরি করতে পারবেন।

gboard features

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

ক্লিপবোর্ড এক্সেস করা 

আপনি হয়তোবা জানেন যে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে আপনি খুব সহজেই কপি এবং পেস্ট করতে পারেন। কিন্তু এগুলো মূলত কোথায় সেভ হয়? অ্যান্ড্রয়েড এর মূলত একটি ক্লিপবোর্ড অপশন আছে। আপনি জি বোর্ড ব্যবহার করে খুব সহজ উপায়ে এটি এক্সেস করতে পারবেন। এজন্য আপনি কি শুধুমাত্র টুল বারে থাকা ক্লিপবোর্ড আইকনে ট্যাপ করতে হবে। সাথে সাথে আপনি সম্প্রতি যেসকল জিনিস কপি করেছিলেন সেগুলোর একটি লিস্ট পেয়ে যাবেন।

কিবোর্ডের সাউন্ড বন্ধ করা 

একটি ভার্চুয়াল কিবোর্ডে আসল কিবোর্ড এর মত কোন ধরনের শব্দ করে থাকে না এবং একজন ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি এই জিনিসটাই পছন্দ করে থাকেন। গুগলের জিবোর্ডে কি প্রেস করার শব্দ খুব সহজেই বন্ধ করা যায়। আপনাকে এজন্য প্রথমে জিবোর্ডের সেটিংস অপশনে যেতে হবে। এরপরে সেখান থেকে প্রেফারেন্স সেকশনে গিয়ে সাউন্ড অন কিপ্রেস ডিজেবল করে দিলেই আপনার কিবোর্ডের সাউন্ড বন্ধ হয়ে যাবে। 👉 স্মার্টফোনে দ্রুত লিখতে সেরা জিবোর্ড শর্টকাটগুলো জানুন

অটো কারেক্ট বন্ধ অথবা চালু করা

অটো কারেক্ট হলো এমন একটি জিনিস এটি হয়তোবা আপনি অনেক পছন্দ করেন নয়তোবা আপনি অনেক ঘৃণা করেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল সংবাদ হল এইযে যদি এটিকে সাহায্য করার থেকে আপনার কাজে বাধা প্রদান করছে এমন মনে হয় তাহলে আপনি এটিকে ব্যবহার নাও করতে পারেন। এটি বন্ধ অথবা চালু করার জন্য প্রথমেই আপনাকে জিবোর্ডের সেটিংস অপশনে যেতে হবে। সেখান থেকে টেক্সট কারেকশন সেকশনে থাকা অটো কারেকশন ডিজেবল বা এনাবল করতে পারেন।

ডিকশনারিতে শব্দ অথবা ফ্রেজ যুক্ত করা

সাধারণ শব্দ সঠিক করার ক্ষেত্রে অটো কারেক্ট খুব ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে তবে আপনার কাছে যে সকল শব্দ ইউনিক সেগুলো অটো কারেক্ট না বুঝেই পরিবর্তন করে দিতে পারে। যেমন ধরুন নাম, শহর বা গ্রামের নাম, রাস্তার নাম এমনকি আপনার পোষা প্রাণির নাম জিবোর্ড না জানতেই পারে। আপনি চাইলে এ সকল নাম জিবোর্ডের  ডিকশনারিতে যুক্ত করে দিতে পারবেন। এর ফলে ভবিষ্যতে জিবোর্ড এ সকল শব্দকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করবে না। 👉 মোবাইলে বাংলা লেখার সেরা কিবোর্ড অ্যাপ ফ্রি ডাউনলোড করুন

কিবোর্ড এক হাতের মোডে রাখা

আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন আপনার পছন্দের তুলনায় বড় সাইজের হতে পারে। এটি আসলে মূলত আধুনিক স্মার্টফোনের বিকাশের কারণে হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে ভালো সংবাদ হলো এই যে আপনি চাইলে আপনার জিবোর্ডকে এক হাতের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন। এটা করার জন্য আপনি কিবোর্ডের উপরের দিকে টুলবারে একটি আইকন পাবেন যেটা দেখলে এক হাত দিয়ে মোবাইল ধরে রাখা হচ্ছে বলে মনে হয়। সেখানে প্রেস করলে কিবোর্ডটি ছোট হয়ে স্ক্রিনের যেকোনো এক সাইডে চলে যাবে। আপনি চাইলে আপনার পছন্দমত কিবোর্ড এ যে কোন সাইডে নিয়ে লিখতে পারবেন।

ভয়েস টাইপিং

জিবোর্ড কিবোর্ডের উপরের দিকে ডান পাশে একটি মাইক্রোফোনের চিহ্ন দেখতে পাবেন যেখানে ক্লিক করে আপনি ভয়েস টাইপিং ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এজন্য প্রথমে জিবোর্ড সেটিংস থেকে আপনাকে ফিচারটি অন করে নিতে হতে পারে। 👉 মোবাইল দিয়ে টাইপ করার বিভিন্ন উপায় জানুন

জিবোর্ড মূলত প্রচুর পরিমাণে সেটিংস এবং ফিচার সমৃদ্ধ একটি কিবোর্ড। আপনি যদি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে টাইপিং এর কাজ করে থাকেন তাহলে আপনার কিবোর্ডকে বা আপনার পছন্দ মত পারসোনালাইজড করে নিন। অল্প কিছু সময় ব্যয় করে সেটিংস এর মধ্যে পরিবর্তন আনলে আপনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। জি বোর্ডের ফিচার সম্পর্কিত আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবেন। নিত্য নতুন প্রযুক্তি বিষয়ক নানা ধরনের তথ্য এবং টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *