সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউটের মধ্যে পার্থক্য জানুন

বিকাশ, নগদ, রকেট, ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসে সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট, দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। লেনদেনের ক্ষেত্রে এই দুইটি ফিচার বহুল ব্যবহৃত হয়। অনেকে সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট এর পার্থক্য না জানার কারণে কখন কোনটি ব্যবহার করবে সেটি বুঝে উঠতে পারেন না। এই পোস্টে আমরা সেন্ড মানি এবং ক্যাশ আউট এর মধ্যে পার্থক্য জানবো।

সেন্ড মানি কি?

এক মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকে অন্য মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে টাকা পাঠানোর উপায়কে বলা হচ্ছে সেন্ড মানি। সেন্ড মানি এর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে থাকা ভার্চুয়াল মানি বা ক্রেডিট কাংখিত একাউন্টে ট্রান্সফার করা যায়। যাকে টাকা পাঠানো হবে, তার একাউন্টে উক্ত এমাউন্ট যোগ হবে ও তিনি স্বাভাবিকভাবে উক্ত ব্যালেন্স ব্যবহার করে বিল পে, ক্যাশ আউট, এমনকি সেন্ড মানিও করতে পারবেন। মূলত ব্যক্তিগত লেনদেনের কাজে ব্যক্তিগত একাউন্টে সেন্ড মানি ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট থেকে অন্য একটি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্টে সেন্ড মানি করা যায়।

ক্যাশ আউট কি?

ক্যাশ আউট মানে হলো মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে থাকা টাকা সরাসরি ক্যাশ বা টাকা হিসেবে হাতে পাওয়ার ফিচার। এজেন্ট, নির্দিষ্ট ব্যাংক এটিএম বা শাখা থেকে ক্যাশ আউট করা যায়। ক্যাশ আউট এর আক্ষরিক বাংলা অর্থ হলো টাকা তোলা, নামে ও কাজে ফিচারটি একই। মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থেকে টাকা সরাসরি ভার্চুয়াল কারেন্সি থেকে কাগজের নোট হিসেবে হাতে পেতে ক্যাশ আউট করা যায়। এজেন্ট, এটিএমসহ একাধিক চ্যানেলে ক্যাশ আউট করা যেতে পারে।

সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউটের মধ্যে পার্থক্য

সেন্ড মানি অর্থ টাকা পাঠানো আর ক্যাশ আউট মানে হলো টাকা তোলা, এই পার্থক্য নিশ্চয় এতক্ষণ বুঝতে পেরেছেন। তবে কিছু কিছু ধূর্ত এজেন্ট দেখবেন আপনাকে টাকা তোলার সময় ক্যাশ আউট এর পরিবর্তে সেন্ড মানি করতে বলবে। মূলত ক্যাশ আউট এর চেয়ে সেন্ড মানি করে তারা অধিক মুনাফা পায় বলে এই ধরনের কাজ করে থাকে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট খরচ এর মধ্যে পার্থক্য। এই দুইটি বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য জানার মাধ্যমে এজেন্টরা কিভাবে গ্রাহকদের ঠকিয়ে অধিক মুনাফা লুফে নেয়, সেই বিষয়টিও বুঝতে পারবেন। উল্লেখ্য, এই পোস্টে যেসব চার্জ তুলে ধরা হয়েছে সেগুলোর তথ্য বিভিন্ন এমএফএস কোম্পানির সাইট থেকে নেয়া হয়েছে। এসব চার্জ যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। আবার অনেক সময় মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি ভ্যাট ছাড়া কিছু চার্জ উল্লেখ করতে পারে যেটা বাস্তবে ভ্যাট সহ বেশি হয়ে থাকে। সুতরাং আপনি ব্যবহার করে তবেই বুঝতে পারবেন আসলে কার খরচ কত।

বিকাশ

বিকাশ প্রিয় নাম্বারে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ২৫,০০০টাকা পর্যন্ত কোনো চার্জ ছাড়া সেন্ড মানি করা যাবে। ২৫,০০১টাকা থেকে ৫০,০০০টাকা পর্যন্ত প্রিয় নাম্বারে সেন্ড মানি এর ক্ষেত্রে ৫টাকা চার্জ প্রযোজ্য হয় ও ৫০,০০০টাকার অধিক সেন্ড মানি করলে ১০টাকা চার্জ কাটবে। অন্যদিকে ১০০টাকা বা তার কম সেন্ড মানি করতে কোনো বিকাশ চার্জ প্রযোজ্য হবেনা।

অন্যদিকে বিকাশ ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে প্রিয় এজেন্ট নাম্বারে প্রতি মাসে ২৫,০০০টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে ১.৪৯% চার্জ প্রযোজ্য হবে। ২৫,০০০টাকা লিমিট ক্রস করলে সেক্ষেত্রে ১.৮৫% চার্জ কাটে। অর্থাৎ যেকোনো এজেন্ট নাম্বারে ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে হাজারে ১৮.৫টাকা ক্যাশ আউট চার্জ কাটবে।

অনেক সময় দেখবেন এজেন্টের কাছে ক্যাশ আউট করতে গেলে খরচের টাকাসহ সেন্ড মানি করতে বলে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে সেসব বিকাশ এজেন্টগণ তাদের লাভের খাতা ভারি করে মাত্র। অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য, চলুন অন্যান্য ব্যাংকিং সেবাগুলো সম্পর্কেও জেনে নেওয়া যাক।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

👉 বিকাশ ক্যাশ আউট করার নিয়ম (অ্যাপ/*247# ও এজেন্ট/এটিএম)

নগদ

নগদ অ্যাপ থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কোনো খরচ ছাড়া সেন্ড মানি করা যায়। অন্যদিকে *167# কোড ডায়াল করে সেন্ড মানি করলে সেক্ষেত্রে ৫ টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে।

নগদ এর ক্যাশ আউট ফি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। নগদ কাস্টমারগণ অ্যাপ থেকে প্রতি হাজারে ১১.৪৮ টাকা চার্জে ও *167# কোড ব্যবহার করে ১৫টাকা চার্জে ক্যাশ আউট করতে পারবেন। নগদ ইসলামিক এর ক্ষেত্রেও কোডের মত একই ক্যাশ আউট চার্জ প্রযোজ্য। 

👉 নগদ ক্যাশ আউট করার নিয়ম

রকেট

রকেট ব্যবহারকারীগণ ফ্রিতে সেন্ড মানি করতে পারবেন অন্য রকেট একাউন্টে। অন্যদিকে ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে ১.৬৭% প্রতি হাজারে চার্জ কাটা হয়। তবে ডিবিবিএল শাখা বা এটিএম থেকে ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে এই ফি অনেকটা কম।

👉 রকেট একাউন্টের দারুণ কিছু সুবিধা জেনে নিন

উপায়

এক উপায় একাউন্ট থেকে অন্য উপায় একাউন্টে কোনো খরচ ছাড়া সেন্ড মানি করা যাবে। অন্যদিকে উপায় কোড *268# ডায়াল করে ও অ্যাপ ব্যবহার করে হাজারে ১৪ টাকা ক্যাশ আউট চার্জ প্রযোজ্য হবে। তবে ব্যাংকের শাখা বা এটিএম থেকে ক্যাশ আউট এর ক্ষেত্রে অনেক কম ফি কাটে।

👉 উপায় ক্যাশ আউট ও সেন্ড মানি খরচ সম্পর্কে জানুন

এইতো জানলেন সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট এর পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত। সবসময় কাউকে ব্যক্তিগতভাবে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সেন্ড মানি এবং টাকা ক্যাশ করার বা তোলার ক্ষেত্রে ক্যাশ আউট অপশন ব্যবহার করুন।

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *