চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে বাড়তি টাকা ইনকামের উপায় (ঘরে বসে)

আমরা সকলেই নিজেদের জীবনে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চাই। এক্ষেত্রে চাকুরির পাশাপাশি যদি ঘরে বসে অনলাইনে কিছু অর্থ উপার্জন করা যায় তাহলে আমাদের সকলের জন্যই ব্যাপারটা সুখকর হয়ে ওঠে। এমন অনেক কাজ আছে যা আপনি ঘরে বসে করতে পারবেন যার জন্য আপনাকে অতিরিক্ত বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাড়তি অর্থ উপার্জনের এ সকল উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

ফ্রিল্যান্সিং 

ফ্রিল্যান্সিং বলতে আমাদের দেশে আউটসোর্সিং এর সাথে মিলিয়ে ফেলা হয়। ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যদি প্রচলিত ধারায় চিন্তা করা হয় তাহলে বলা যায় যে, কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সমূহের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি নির্বাচন করে তাকে দিয়ে সম্পন্ন করাবে। এক্ষেত্রে কাজ দাতা এবং কাজ গ্রহীতা উভয়েই অনলাইনে যোগাযোগ স্থাপন করবে এবং পেমেন্ট ও অনলাইনের মাধ্যমে প্রদান করবে। আমাদের দেশে বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে ডলার আসার ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। আপনি চাইলে চাকরির পাশাপাশি বাড়তি আয়ের মাধ্যম হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নিতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের হাজারো স্কিলস এর মধ্যে থেকে যেকোনো একটিতে দক্ষ হয়ে আপনিও ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে দিতে পারেন। রাইটিং, ডিজাইনিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স কাজগুলো আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয়, তাই সেগুলোর যেকোনো একটি ট্রাই করে দেখতে পারেন।

ব্লগিং 

ব্লগিং মানে মূলত লেখালেখিকেই বোঝানো হয়। ইন্টারনেট জগতে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে লেখালেখি করার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই টাকা উপার্জন করতে পারেন। চাকুরির পাশাপাশি লেখালেখি করে অর্থ উপার্জন করা অত্যন্ত সহজ। কেননা এই ব্লগিং করার জন্য নির্দিষ্টভাবে কোনো সময় নির্ধারণ করা থাকে না। সে কারনে যে কোনো সময়েই আপনি চাইলে লেখা লেখি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। ব্লগিং আপনার চাকুরির সাথে সাথে আয় করার এমন একটি মাধ্যম যেটি একবার ভালো মতো চালু হয়ে গেলে আপনার পরবর্তীতে আর কোনো কিছু নাও করা লাগতে পারে। যদিও ব্লগিং থেকে টাকা ইনকাম করা যায় তবে একটি ব্লগিং সাইট ভালো মতো দাড় করাতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। আপনি যদি ধৈর্য্য সহকারে সেই সময় টুকু দিতে পারেন তাহলে খুব সহজেই অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমানে একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পেশা এবং যে কোনো চাকুরির পাশাপাশি আপনি অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং ব্লগিং এর সাথে সাথেও করা যায় আবার আপনি চাইলে ব্লগিং ছাড়াও অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং সেক্টরটি অতি বিশাল কেননা বর্তমান সময় প্রায় প্রত্যেকটি কোম্পানি অনলাইনে তাদের অ্যাফেলিয়েট প্রোগ্রাম চালু রাখে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আপনি বিনা খরচেই অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ শুরু করতে পারেন। যার ফলে আপনাকে লাভের কথা চিন্তা করার ঝামেলা থাকবে না।

ইউটিউবিং

বর্তমান সময়ে চাকুরির পাশাপাশি টাকা আয় করার আরো একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ইউটিউব। আমাদের দেশে এখন অনেক ইউটিউবার আছে যারা শুধু মাত্র ভিডিও আপলোড করেই মাসে লাখ টাকার উপরে ইনকাম করছে। ইউটিউব চ্যানেলে ক্রিয়েট করে আপনি আপনার পছন্দমতো টপিক নির্ধারণ করে ভিডিও তৈরী করতে পারেন। আপনার তৈরী করা ভিডিওতে ভালো পরিমান ভিউ আনতে পারলে ইউটিউব এর পক্ষ থেকে আপনাকে টাকা দেওয়া হবে। আপনি ধৈর্য্য ধরে কয়েক বছর ইউটিউবে সময় দিলে আপনার কাজের কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে প্রচুর টাকা ইনকাম কর‍তে সক্ষম হবেন। 👉 ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম আরও সহজ হচ্ছে! (নতুন মনিটাইজেশন পলিসি)

ফেসবুক

আপনি চাইলে ফেসবুককে টাকা উপার্জনের একটি প্লাটফর্ম হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আপনি ফেসবুককে শুধুমাত্র বন্ধু বান্ধবদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে না নিয়ে এখান থেকে টাকা আয় করতে পারেন। ফেসবুকে আপনি চাইলে একটি অনলাইন শপ তৈরী করতে পারেন। আপনার অনলাইন শপের জন্য একটি ফেসবুক পেজ ওপেন করে সেখানে আপনার প্রোডাক্ট গুলোর ছবি এবং তথ্য শেয়ার করতে পারেন। ফেসবুকে আপনার কানেকশন যত বৃদ্ধি পাবে দেখবেন আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি হবার সংখ্যাও ততো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া আপনি আপনার পেজকে মনিটাইজেশন করে আপনার পেজে কনটেন্ট তৈরী করে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন। আপনার শেয়ার করা কন্টেন্ট যত বেশি মানুষের কাছে পৌছাবে ফেসবুক আপনাকে তত বেশি টাকা প্রদান করবে। 👉 ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার উপায়

ই কমার্স 

ইন্টারনেটভিত্তিক কেনাকাটার জন্য ই-কমার্স সাইটের জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। তবে আমাদের দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ই-কমার্স ব্যবসায় অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে এ থেকে অনেকের বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। এর মধ্যেও আপনার সুযোগ রয়েছে আর সেটি হলো এই যে আপনি সৎ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে গেলে মানুষ আপনার ওপর আস্থা রাখতে পারবে। যদি গ্রাহকরা অগ্রিম পেমেন্ট করতে ভয় পায় তাহলে আপনি ক্যাশ অন ডেলিভারির ব্যবস্থা রাখতে পারেন যাতে করে ক্রেতারা আগে পণ্যটি পেয়ে যাচাই করে তারপর টাকা দিতে পারবে। এখন আপনাকে চিন্তা করতে হবে যে আপনি কোন কোন পণ্যের ওপর ই-কমার্স শুর করবেন। আপনার পছন্দের আইটেমগুলো নিয়ে শুরু করে দিতে পারেন ই-কমার্স এর যাত্রা।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

dollar money

ওয়েবসাইট ফ্লিপিং 

সোজা ভাষায় বলতে গেলে ওয়েবসাইট ফ্লিপিং মানে হলো কোনো একটি ওয়েবসাইট তৈরী করে তা বিক্রি করা। ধরেন আপনি একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করলেন এবং এতে বেশকিছু আর্টিকেল লিখে পাবলিশও করলেন। কিছুদিন পর যখন এসব আর্টিকেল গুগলে র‍্যাংক করবে তখন আপনার ওয়েবসাইটটির মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এভাবে একসময় আপনার ওয়েবসাইটের মূল্য তৈরি করতে যা খরচ হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি মাত্রায় বেড়ে যাবে আর তখন আপনি তা বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারেন। তবে এই কাজে আপনি মূলত কয়েক মাসের টাকা একবারে হাতে পাবেন। যার ফলে মাসিক ভিত্তিতে এটি আপনাকে সহায়তা নাও করতে পারে। 

সান্ধ্যকালীন অনলাইন কোচিং

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাকুরির সময় সীমা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আপনি চাইলে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য সন্ধ্যার পর থেকে সময় গুলো কাজে লাগাতে পারেন। আপনি যদি প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখায় পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে অনলাইনে কোনো কোচিং প্লাটফর্ম এ আপনার সুবিধামতো টপিক পড়াতে পারবেন। এতে করে আপনি আপনার মেধা কাজে লাগিয়ে চাকুরির পাশা পাশি বাড়তি টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

বিক্রয়.কম 

আমাদের দেশে বিক্রয় ডট কম আপনার জন্য একটি খুবই সুখবর হতে পারে কারণ এখানে সেলার একাউন্ট খুলে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট সেল করা যায়। Bikroy.com এ আপনার প্রোডাক্ট সেল করতে আপনাকে আলাদা করে কোনো ধরনের ফিজিক্যাল শপ না শুরু করলেও চলবে। আপনি আপনার বাসাতেই বিভিন্ন প্রোডাক্ট এনে রাখতে পারেন অথবা আপনি প্রোডাক্ট না রেখেই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর অ্যাড bikroy.com এ আপনার অ্যাকাউন্টে দিয়ে দিন। এরপর যখনই কেউ অর্ডার করবে তখন আপনি সেই পণ্য মার্কেট থেকে কিনে আপনার কাস্টমারকে ডেলিভারি করুন। এভাবে আপনার অনেক টাকা বেঁচে যাবে আবার পণ্য মজুদ রাখার ঝামেলাও পোহাতে হবে না।

অনেকেই চাকুরির পাশা পাশি নিজেদের জন্য অতিরিক্ত কিছু অর্থ উপার্জন করতে চান। এতে করে তারা অর্থনৈতিক ভাবে নিজেদের আরও স্বচ্ছল করে তুলতে পারেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আশা করা যায় আপনি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে চাকুরির পাশা পাশি ঘরে বসেই অনলাইনে বাড়তি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। চাকুরির পাশা পাশি ঘরে বসে অনলাইনে বাড়তি অর্থ উপার্জন বিষয়ক আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারবেন। নিত্য নতুন প্রযুক্তি ভিত্তিক নানা ধরনের তথ্য ও টিপস এবং ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কিত আর্টিকেল পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *