ঘরে বসে টাকা আয় করতে চাইলে এই কাজগুলো করতে পারেন

ঘরে বসে আয় করতে চাওয়া কিংবা নিজের চাকরি / কাজ এর পাশাপাশি বাড়তি কাজ করে আয়ের পরিমাণ বাড়াতে পারলে তো ভালো হয়, তাই নয় কি? আপনার প্রয়োজনের চেয়ে যদি আয় কম হয় তাহলে ঘরে বসে টাকা আয় করতে চাইলে এই পোস্টে উল্লেখিত কাজগুলো করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং করুন

আপনি যদি ফুল-টাইম কোনো চাকরিও করে থাকেন, তবুও অবসর পেলে আপনার যেকোনো দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ফাইভার, আপওয়ার্ক এর মত ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে আয় করতে পারেন। এসব ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে ছোট থেকে বড় বিভিন্ন কাজ পেয়ে যাবেন যেগুলো থেকে ঘরে বসে আয় করা যেতে পারে। কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে ৫ ডলার থেকে শুরু করে যেকোনো অংকের অর্থ আয় করা যেতে পারে এসব প্ল্যাটফর্ম থেকে।

চিঠি, ইমেইল লেখা থেকে শুরু করে গ্রাফিক্স তৈরী করা, এমনকি ওয়েবসাইট ডেভলপমেন্টের মত কাজ করিয়ে নিতে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মানুষ উল্লিখিত প্ল্যাটফর্মে এসে ফ্রিল্যান্সার খোঁজ করেন। আর সেগুলোর মধ্যে যেকোনো এক বা একাধিক স্কিলকে ভিত্তি করে আপনিও শুরু করে দিতে পারেন আপনার ফ্রিল্যান্সিং জার্নি।

এসব ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কাজ করা শুরু করতে পারবেন, ভালো ব্যাপার হলো ইন্টারনেট থেকে শিখে টাকা খরচ ছাড়াই কোনো কোর্স না করেই শুধুমাত্র আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারবেন।

ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করুন

বিশ্বব্যাপী দারুণভাবে বেড়েছে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর চাহিদা। প্রতিষ্ঠানগুলো ও প্রফেশনালগণ তাদের প্রয়োজনে খোঁজ করছেন ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট যারা তাদের কাজের বোঝা কমাতে সাহায্য করবে। একজন ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর কাজ হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট চালানো, ইমেইল বা কল এর রেসপন্স করার মত সহজ বিষয়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার অরগানাইজেশন ও প্ল্যানিং স্কিল কাজে আসবে। ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করাও কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে পড়ে। ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে হাতেখড়ি হতে পারে আপনার এই নতুন কাজের। উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত বর্তমানে অনলাইনে এসিস্ট্যান্ট রাখছে তাদের কাজের গতি বাড়াতে।

ডাটা এন্ট্রি করুন

ঘরে বসে আয়ের যতসব কাজ রয়েছে তার মধ্যে ডাটা এন্ট্রি সবচেয়ে জনপ্রিয়। যেকেউ ঘরে বসে কম্পিউটার থেকে বেশ সহজে এই কাজ করতে পারে বলে এটি বেশ জনপ্রিয়। আবার এই কাজে আহামরি কোনো অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার প্রয়োজন হয়না বলে যেকেউ করতে পারেন এই কাজ।

একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর তথ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এন্ট্রি করেন মাত্র। ডাটা এন্ট্রির কাজের আয় যেহেতু শব্দের উপর নির্ভর করে তাই ওয়ার্ডস পার মিনিট (WPM) এখানে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর। আপনি যদি ডাটা এন্ট্রি করে ভালো অংকের অর্থ আয় করতে চান তবে অবশ্যই আপনার টাইপিং এর স্পিড বাড়াতে হবে। অন্য যেকোনো কাজের মত ডাটা এন্ট্রির কাজও পেয়ে যাবেন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে।

ট্রান্সক্রাইবিং

এআই এর কারণে স্পিচ-টু-টেস্ট ট্রান্সক্রিপশন বেশ সহজ একটি বিষয়ে পরিণত হলেও এখনো মানুষের সমান দক্ষ হতে পারেনি এসব সিস্টেম। যার ফলে অধিকাংশ কোম্পানি এখনো অডিও বা ভিডিওকে টেক্সটে সঠিকভাবে রুপান্তর করতে মানুষের সাহায্যই গ্রহণ করে থাকেন। যেহেতু সবসময় ট্রান্সক্রাইবার এর প্রয়োজন হয়না, তাই অধিকাংশ সময় কোম্পানিগুলো তাদের প্রয়োজনে লোকবল আউটসোর্স করে থাকে।

ট্রান্সক্রাইবার হিসেবে কাজ করার জন্য অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যা ইন্টারনেটে একটু তল্লাশি করলেই পেয়ে যাবেন। এই কাজে আপনার শোনার, বোঝার ও লেখার দক্ষতাই মূলত কাজে আসতে যাচ্ছে।

ইউটিউব

ইউটিউব থেকে ঘরে বসে আয় এর কথা আপনি ইতিমধ্যে হয়ত অসংখ্যবার শুনে ফেলেছেন। শুনতে বিরক্তিকর মনে হলেও বর্তমানে ঘরে বসে আয়ের জন্য সবচেয়ে সেরা উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো ইউটিউব। আপনার গুগল একাউন্ট ব্যবহার করে আপনার নাম বা অন্য যেকোনো নামে এখনি খুলে ফেলতে পারেন একটি ইউটিউব চ্যানেল।

ইউটিউব থেকে আয়ের একাধিক ক্ষেত্র রয়েছে। মনেটাইজেশন, স্পন্সর, মার্চেন্ডাইজ, ইত্যাদি হলো ইউটিউব থেকে আয়ের অসংখ্য উপায়ের মধ্যে কয়েকটি মাত্র। বলে রাখা ভালো ইউটিউবে যদি সফল হতে চান, তাহলে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট নিশ (niche) ধরে শুরু থেকে কাজ করলে ভালো। তবে এক্ষেত্রে আপনার ভিডিওতে কভার করা বিষয়বস্তুর প্রতি আকর্ষণ ও ভালোবাসা এবং ধৈর্য এর উপর নির্ভর করবে আপনার সফলতা। 👉 ইউটিউব শর্টস কি? কিভাবে এর থেকে টাকা ইনকাম করা যায়?

earn money

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

ছবি বিক্রি করা

আপনি যদি ছবি তোলা পছন্দ করেন ও ইতিমধ্যে আপনার কাছে ভালো ছবির কালেকশন কম্পিউটার বা ফোনে পড়ে থাকে তবে সেগুলো বিক্রি করে কিন্তু ঘরে বসে আয় করতে পারছেন। 500px, Shutterstock, Adobe Stock, iStock এর মত ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করে আপনার তোলা ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারেন ঘরে বসে।

আবার Printful, Redbubble ও CafePress এর মত প্রিন্ট-অন-ডিমান্ড ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনার ছবির প্রিন্ট অনলাইনে সেল করতে পারেন। এখানে আপনার কাজ হবে শুধুমাত্র ছবি ও পণ্যের ডিজাইন আপলোড করা, বাকি প্রিন্টিং, ইনভেন্টরি সামলানো, প্যাকেজিং, শিপিং, ইত্যাদি কাজ উক্ত কোম্পানি করবে।

সোশ্যাল মিডিয়া কনসাল্টিং

সোশ্যাল মিডিয়ার প্রসার যেমন দিনদিন বাড়ছে, তেমনি এর সফল ব্যবহারের পেছনে মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে নিজেদের গ্রাহককে প্রয়োজনীয় বার্তা জানান দিতে সোশ্যাল মিডিয়া কনসালটেন্ট এর সাহায্য গ্রহণ করে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলো।

অন্যকে শেখান

টিউশান করে আয় এর কথা কারোই অজানা নয়, কিন্তু বর্তমানে অনলাইন টিউশানও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ সে বিষয়ে অন্যদের শিখিয়ে আয় করতে পারেন। আবার চাইলে তৈরী করতে পারবেন ই-বুক কিংবা কোর্স যা থেকে ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।

অনলাইন সার্ভে?

অনলাইনে যত কাজ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ বোধহয় অনলাইন সার্ভেতে অংশগ্রহণ করা। এই কাজ বেশ সহজ হওয়ার পাশাপাশি যেকেউ এটি করে আয় করতে পারেন। তবে অনেক ভুয়া সার্ভে সাইট রয়েছে যেগুলো থেকে টাকা পাওয়া যায়না। তাই সার্ভে করে টাকা আয় করার চিন্তা না করে আপনার উচিত হবে অন্যান্য স্কিল অর্জন করা এবং সেগুলো থেকে আয় করা।

আয়ের চেয়ে আপনার ব্যায়কে নিয়ন্ত্রন করাও কিন্তু বেশ জরুরী। আয়-ব্যায় এর দারুণ সমন্বয়ে জীবনকে আরো গুছাতে অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিন, দক্ষতা থাকলে আগের চেয়ে বেটার কাজের খোঁজ করুন, পূঁজি থাকলে ব্যবসা শুরু করুন। শুধুমাত্র এভাবেই আর্থিকভাবে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারবেন।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,569 other subscribers

3 comments

    • আরাফাত বিন সুলতান Reply

      আগে নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা অর্জন করে কাজ খোঁজা শুরু করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *