বিকাশ লোন এখন ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাবেন!

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘বিকাশ’ ব্যবহারকারীদের জন্য এসেছে এক বড় সুখবর। আগে যেখানে একজন গ্রাহক বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারতেন, এখন সেই সীমা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০,০০০ টাকায়। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে এই লোন সুবিধা দিচ্ছে সিটি ব্যাংক, এবং লোন গ্রহণের প্রক্রিয়া আগের মতোই দ্রুত, সহজ ও কাগজপত্রবিহীন।

বিকাশ লোন সুবিধা একদিকে যেমন জরুরি আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে সহায়ক, তেমনি ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। বিশেষ করে যেসব গ্রাহকের ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ নেয়ার উপায় নেই, তাদের জন্য এটি একটি কার্যকর বিকল্প হয়ে উঠছে।

আগের সীমা ছিল ২০ হাজার, এখন সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা

বিকাশ-সিটি ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে চালু হওয়া এই লোন পরিষেবা শুরুতে সীমিত পরিসরে ছিল। সেবাটি যখন চালু হয় তখন এতে ৫০০ থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যেত। এরপর একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারতেন। তবে ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং গ্রাহকের সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে এখন সর্বোচ্চ সীমা বৃদ্ধি করে ৫০,০০০ টাকা করা হয়েছে।

লোনের পরিমাণ ৫০০ টাকা থেকে শুরু হয় এবং একজন গ্রাহক একাধিক লোনও নিতে পারেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করছেন। এটি স্বল্প ও মাঝারি মেয়াদের জরুরি চাহিদা মেটাতে বেশ কার্যকর হতে পারে।

কেন বিকাশ লোন এত জনপ্রিয়

বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাল লোন পাওয়ার পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ এবং ঝামেলামুক্ত। ব্যাংকে গিয়ে আবেদন করার প্রয়োজন নেই, জামানত বা কাগজপত্র কিছুই লাগে না। শুধুমাত্র আপনার বিকাশ অ্যাপ থেকেই আবেদন করা যায় এবং লোন অনুমোদন হলে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা জমা হয় আপনার বিকাশ একাউন্টে।

bkash loan info

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

এখানে ১ মাস ও ৩ মাস মেয়াদে লোন নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। লোন গ্রহণের সময় আপনি মেয়াদ বেছে নিতে পারবেন। কিস্তি পরিশোধের সুবিধাও রয়েছে—আপনার বিকাশ একাউন্ট থেকেই নির্দিষ্ট তারিখে কিস্তির টাকা কেটে নেওয়া হবে। চাইলে নির্ধারিত সময়ের আগেও লোন পরিশোধ করা যায়, যার ফলে সুদের খরচ কমে আসে।

এই লোন পরিষেবায় ব্যাংকের প্রসেসিং ফি রাখা হয়েছে খুবই সামান্য—মাত্র ০.৫৭৫ শতাংশ (০.৫ শতাংশ + ভ্যাট)। সুদের হার গ্রাহকভেদে ভিন্ন হতে পারে, যা নির্ধারিত হয় ব্যাংকের ক্রেডিট পলিসি অনুযায়ী।

বিকাশ লোন কীভাবে পরিশোধ করবেন

বিকাশ লোন নেওয়ার পর আপনি বিকাশ অ্যাপেই দেখতে পাবেন কিস্তি কত টাকা এবং কখন পরিশোধ করতে হবে। নির্ধারিত তারিখে যদি বিকাশ একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা থাকে, তাহলে সেখান থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিস্তির টাকা কেটে নেওয়া হবে।

আপনি চাইলে নির্ধারিত সময়ের আগেও পুরো অর্থ পরিশোধ করতে পারেন। এতে করে আপনি কম সুদে লোন পরিশোধের সুবিধা পাবেন। তবে যদি নির্ধারিত তারিখে টাকা না থাকে এবং আগেভাগে পরিশোধও না করা হয়, তাহলে বিলম্ব ফি প্রযোজ্য হবে। বিলম্ব ফি হিসেবে বাৎসরিক ১.৫ শতাংশ হারে চার্জ কাটা হবে।

কারা বিকাশ লোন নিতে পারবেন

সব বিকাশ গ্রাহক এই লোন সুবিধা পাবেন না। সিটি ব্যাংকের নির্ধারিত যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত কিছু গ্রাহকই এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। আপনি যোগ্য কি না তা জানার জন্য বিকাশ অ্যাপে “Loan” অপশনটি ওপেন করে দেখতে পারেন।

সিটি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে ইন্টারেস্ট রেট, লোন লিমিট, প্রসেসিং ফি ও যোগ্যতার শর্ত নির্ধারণ করে। আপনার ব্যক্তিগত লেনদেনের ইতিহাস, বিকাশ ব্যবহারের ধরন ইত্যাদির ভিত্তিতেই মূলত এই লোন সুবিধার অনুমোদন দেওয়া হয়।

👉 বিকাশ লোন আপনি পাবেন কিনা যেভাবে বুঝবেন

কেন এই পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ

বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে এখনো অনেক মানুষ ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে, সেখানে এমন সহজলভ্য ডিজিটাল লোন একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা করছে। বিকাশ ইতোমধ্যেই দেশের কোটি কোটি মানুষের আর্থিক লেনদেনের একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এখন এই লোন সুবিধা আরও বড় পরিসরে চালু হওয়ায় ছোট ব্যবসায়ী, ছাত্রছাত্রী কিংবা চাকরিজীবীদের জন্য এটা হতে পারে জরুরি প্রয়োজনের সময়ে তাৎক্ষণিক সমাধান।

ব্যাংকিং ঝামেলা ছাড়াই মোবাইল অ্যাপে কয়েক ক্লিকেই লোন পাওয়া এবং সেটি কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ – এটাই এই সেবার সবচেয়ে বড় শক্তি।

👉 বিকাশ লোন নিতে চান? আগে এগুলো জেনে রাখুন

বিকাশ লোনের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন

বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করলেই আপনি সহজেই আবেদন করতে পারবেন:

১. বিকাশ অ্যাপে ঢুকে “Loan” অপশন সিলেক্ট করুন
২. দেখতে পাবেন আপনি এই লোনের জন্য যোগ্য কি না
৩. যদি যোগ্য হন, তাহলে পরবর্তী ধাপে গিয়ে পরিমাণ ও মেয়াদ নির্ধারণ করুন
৪. শর্তাবলি পড়ে সম্মতি দিন এবং “Confirm” চাপুন
৫. কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই টাকা চলে আসবে আপনার বিকাশ একাউন্টে

👉 বিকাশ লোন নেওয়ার পর করণীয়

বিস্তারিত জানতে

বিকাশ লোন পরিষেবা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে পারেন বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। 

👉 অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় (ঘরে বসেই ডিজিটাল ঋণ)

শেষ কথা

আগে যেখানে বিকাশ লোন সীমা ছিল ২০ হাজার টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার টাকায়। এটি নিঃসন্দেহে ডিজিটাল ফাইন্যান্স সেক্টরে একটি বড় অগ্রগতি। শুধুমাত্র বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করলেই এখন তাৎক্ষণিকভাবে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া সম্ভব।

আপনি যদি একজন নিয়মিত বিকাশ ব্যবহারকারী হন, তাহলে আজই অ্যাপে গিয়ে দেখে নিন আপনি এই সুবিধার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন কি না। আপনার প্রয়োজনের সময় এটি হতে পারে একদম হাতের কাছে থাকা একটি সহজ, দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য সমাধান।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,518 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *