বিশ্বজুড়ে মোবাইল পেমেন্ট পদ্ধতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গুগল পে, Samsung Pay-এর মতোই Apple-এর নিজস্ব ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা হলো Apple Pay। যারা আইফোন বা অ্যাপল ডিভাইস ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত সুবিধাজনক ও নিরাপদ লেনদেন মাধ্যম। এই পোস্টে আমরা জানব অ্যাপল পে কী, এর ব্যবহার, সুবিধা ইত্যাদি।
অ্যাপল পে কী?
Apple Pay হলো অ্যাপলের ডিজিটাল ওয়ালেট এবং মোবাইল পেমেন্ট সার্ভিস, যা ব্যবহারকারীদের iPhone, Apple Watch, iPad বা Mac ব্যবহার করে নিরাপদ ও দ্রুত পেমেন্ট করতে দেয়।
এটি NFC (Near Field Communication) প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে এবং ব্যবহারকারীর ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের তথ্য একটি নিরাপদ ডিজিটাল টোকেনে রূপান্তর করে।
অ্যাপল পে কিভাবে কাজ করে?
- ব্যবহারকারী তার অ্যাপল ডিভাইসের Wallet অ্যাপে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড যোগ করেন।
- ব্যবহারকারী ফেস আইডি, টাচ আইডি বা পাসকোড দিয়ে অনুমোদন দিলে পেমেন্ট করার জন্য অ্যাপল ওয়ালেট চালু হয়।
- পেমেন্টের সময় POS মেশিনের পাশে আইফোন বা Apple Watch ধরলে NFC প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযোগ তৈরি হয়। এটা মূলত কন্টাক্টলেস ক্রেডিট কার্ডের মত কাজ করে, তবে অ্যাপল পে আরও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা প্রদান করে।
- অনলাইনেও অ্যাপল পে দিয়ে ওয়েবসাইট বা অ্যাপে পেমেন্ট করা যায়।
অ্যাপল পে ব্যবহারের সুবিধা
১. নিরাপদ পেমেন্ট সিস্টেমঃ Apple Pay ব্যবহার করে লেনদেন করার সময় মূল কার্ড নম্বর কোথাও সংরক্ষিত বা শেয়ার হয় না। প্রতিবারের পেমেন্টের জন্য আলাদা ‘টোকেন’ ব্যবহার হয়, যা লেনদেনকে নিরাপদ করে তোলে।
২. দ্রুত এবং ঝামেলাহীন লেনদেনঃ POS মেশিনে ফোন ধরেই টাচ বা ফেস আইডি দিয়ে মুহূর্তেই পেমেন্ট সম্ভব – কার্ড বের করার দরকার নেই।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
৩. অনলাইন শপিংয়ে সহজ পেমেন্টঃ Safari ব্রাউজারে বা অ্যাপের মধ্যে Apple Pay সাপোর্টেড ওয়েবসাইটে দ্রুত চেকআউট করা যায়। বারবার কার্ড ডিটেইলস দিতে হয় না।
৪. লয়ালটি কার্ড ও টিকিট সংরক্ষণঃ Apple Wallet-এর মাধ্যমে বিভিন্ন লয়ালটি কার্ড, মেম্বারশিপ কার্ড, বাস-ট্রেন টিকিটও সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
৫. Apple Watch দিয়েও পেমেন্টঃ iPhone ছাড়াও শুধু Apple Watch দিয়েও পেমেন্ট করা সম্ভব — যা অত্যন্ত সুবিধাজনক বিশেষ করে বাইরে দৌড়ানো বা জিমে থাকার সময়।
অ্যাপল পে কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়?
Apple Pay বিশ্বের অনেক দেশে/অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় — যেমন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, জাপান ও আরও অনেক দেশে। এছাড়া হাজার হাজার রিটেইল স্টোর, সুপারশপ, অনলাইন শপ এবং অ্যাপে Apple Pay গ্রহণ করে।
বাংলাদেশে অ্যাপল পে কি কাজ করে?
বর্তমানে (২০২৫ সাল পর্যন্ত) বাংলাদেশে Apple Pay অফিসিয়ালি চালু হয়নি। এর মানে আপনি বাংলাদেশের ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করে Wallet অ্যাপে যোগ করতে পারবেন না বা স্থানীয় POS-এ ব্যবহার করতে পারবেন না।
তবে আপনি যদি আন্তর্জাতিক কার্ড (যেমন USA এর MasterCard/Visa) অ্যাড করেন এবং NFC সুবিধাযুক্ত POS ব্যবহার করেন, তাহলে Apple Pay ব্যবহার করা সম্ভব। আজকাল বেশিরভাগ POS / পস মেশিনে এনএফসি থাকে। সুতরাং সেসব পস মেশিনে আপনি অ্যাপল পে দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন। বাংলাদেশেও এভাবে অ্যাপল পে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে অনেকদিন ধরেই!
অ্যাপল পে ব্যবহারের জন্য যা যা প্রয়োজন
- iPhone 6 বা পরবর্তী মডেল / Apple Watch / iPad / Mac
- অ্যাপল আইডি
- সাপোর্টেড ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড (ব্যাংকের সাপোর্ট থাকতে হবে)
- Wallet অ্যাপে কার্ড সংযোজন
- ফেস আইডি, টাচ আইডি বা পাসকোড সক্রিয় করা
Apple Pay হলো অ্যাপল ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জন্য একটি আধুনিক, দ্রুত, এবং নিরাপদ পেমেন্ট ব্যবস্থা। যদিও এটি এখনো বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়নি, তবে ভবিষ্যতে চালু হলে এটি মোবাইল ব্যাংকিং ও পেমেন্টের জগতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। যাদের আন্তর্জাতিক কার্ড রয়েছে এবং যারা বিদেশে ভ্রমণ বা অনলাইন কেনাকাটায় অংশ নেন, তাদের জন্য Apple Pay একটি কার্যকরী ও নিরাপদ পেমেন্ট সমাধান।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।