বিকাশ ও সিটি ব্যাংক নিয়ে এলো “পে-লেটার” ফিচার। এই ফিচার ব্যবহার করে বিকাশ মার্চেন্ট আউটলেটে পেমেন্ট করা যাবে বিকাশ একাউন্টে ব্যালেন্স না থাকলেও। অর্থাৎ এই নতুন বিকাশ ফিচারকে অনেকটা ক্রেডিট কার্ড এর সাথেও তুলনা করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিকাশ পে-লেটার ফিচার সম্পর্কে বিস্তারিত।
“পে-লেটার” ফিচারটি ইতোমধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই প্রচলিত রয়েছে, অবশেষে বিকাশের হাত ধরে বাংলাদেশেও MFS এ এই ফিচার চলে এলো। দেশজুড়ে অসংখ্য বিকাশ মার্চেন্ট আউটলেটে পেমেন্ট করা যাবে এই ফিচার ব্যবহার করা যাবে।
৭ দিনের মধ্যে কোনো ধরনের ইন্টারেস্ট ছাড়া অথবা ৬ টি সহজ মাসিক কিস্তিতে পেমেন্ট পরিশোধ করা যাবে।
বিকাশ পে-লেটার ফিচার কি?
ধরুন কোনো একটি দোকানে কেনাকাটা করার পর পেমেন্ট করার সময় দেখলেন আপনার বিকাশ একাউন্টে ব্যালেন্স নেই। সেক্ষেত্রে বিকাশের পে-লেটার ফিচার ব্যবহার করে উক্ত পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারবেন এবং ৭দিন, ৩মাস বা ৬মাস এর কিস্তিতে উক্ত অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন। অর্থাৎ টাকা না থাকলেও ইন্সট্যান্ট লোন এর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে বিকাশ। এই ফিচার ব্যবহার করে ইমার্জেন্সি মুহুর্তে পেমেন্ট করা যাবে বিকাশ থেকে। ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে এই ফিচার অনেক কাজে আসবে, এমনকি দেশের ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমে এক নতুন বিপ্লব আনতে পারে এই ফিচার।
বিকাশ পে-লেটার সার্ভিস বিকাশ গ্রাহকদের সিটি ব্যাংক এর মত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে “পেমেন্ট” অপশনের সময় ইন্সট্যান্ট লোন পেতে সাহায্য করবে। একজন বিকাশ গ্রাহক ৫০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত এই লোন নিতে পারবেন। পে-লেটার অপশন ব্যবহার করে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে অটোমেটিক লোনের কিস্তি পরিশোধ হয়ে যাবে। ইন্টারেস্ট হার, প্রসেসিং ফি, লোনের লিমিট, পরিশোধের সময়সীমা, লোন পাবার যোগ্যতা এবং লোন প্রদানের নীতিমালা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইত্যাদি সকল বিষয় বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা নির্ধারিত। এখানে বিকাশ শুধুমাত্র পেমেন্ট পার্টনার হিসেবে কাজ করছে।
বিকাশ পে-লেটার ফিচারটি ব্যবহার করা যাবে বিকাশ অ্যাপের মার্চেন্ট পেমেন্ট অপশনে গিয়ে। পেমেন্ট আইকনে ক্লিক করার পর অ্যামাউন্ট স্ক্রিনের নিচে পে-লেটার আইকন দেখতে পাবেন।
বিকাশ পে-লেটার ফি
পে-লেটার ফিচার ব্যবহার করে ইন্টারেস্ট ছাড়া টাকা পরিশোধ করা যাবে ৭ দিনের মধ্যে। ০.৫৭৫% প্রসেসিং ফি দিয়ে ৩ মাসে কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে, যার ইন্টারেস্ট রেট ৯%।
০.৫৭৫% প্রসেসিং ফি দিয়ে ৬টি মাসিক কিস্তিতেও পরিশোধ করা যাবে। সেক্ষেত্রে পেমেন্টের সময় মোট পরিমাণের ২০% বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স থেকে কেটে নেওয়া হবে। এইক্ষেত্রেও ৯% ইন্টারেস্ট ফি প্রযোজ্য হবে।
বিকাশ পে-লেটার ফিচার এর ক্ষেত্রে লোন একাউন্ট সেবার জন্য প্রদত্ত চার্জ-ই প্রসেসিং ফি। লোনের পরিমাণের উপর লোন প্রসেসিং ফি ০.৫৭৫% (০.৫% + ভ্যাট) প্রযোজ্য হবে।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
বিকাশ পে-লেটার ফিচার সম্পর্কিত তথ্য
এবার জানি চলুন বিকাশ লোন বা পে-লেটার সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং কিছু সাধারণ সমস্যার সমাধান।
বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করে “লোন” আইকনে ট্যাপ করলে লোন ড্যাশবোর্ড দেখতে পাবেন। কোনো গ্রাহক যদি লোন নেওয়ার জন্য উপযুক্ত হন, বা বর্তমানে তার বিকাশ অ্যাপে লোন বা পে-লেটার থাকে, তাহলে এই স্ক্রিনে বর্তমান এর লোন বা পে-লেটার এর তথ্য দেখা যাবে।
অনেকের বিকাশ অ্যাপের লোন বা পে-লেটার আইকনটি ডিজেবল করা অর্থাৎ গ্রে (ধূসর) দেখা যেতে পারে। এইক্ষেত্রে লোন মেন্যুতে প্রবেশ করার জন্য বা পেমেন্ট অপশনে পে-লেটার ব্যবহার করতে বিকাশ অ্যাপ আপডেট করতে হবে।
অনেকের বিকাশ অ্যাপের “লোন” বা “পে-লেটার” অপশনে ট্যাপ করলে “লোন নিতে আগ্রহী হওয়ায় আপনাকে ধন্যবাদ। লোন পেতে, আপনার বিকাশ একাউন্টে ব্যালেন্স রাখুন, পেমেন্ট ও অ্যাড মানি সেবা বেশি বেশি ব্যবহার করুন” লেখা দেখতে পেতে পারেন। সেইক্ষেত্রে বুঝতে হবে আপনার বিকাশ একাউন্ট এখনও উল্লেখিত সেবাগুলো পেতে উপযুক্ত নয়। সেবাগুলো ব্যবহার করতে আপনার বিকাশ একাউন্টের তথ্য হালনাগাদ করে নিন এনআইডি এর তথ্য ব্যবহার করে। এরপর বিকাশ এর সার্ভিসগুলো, যেমন: সেভিংস, মোবাইল রিচার্জ, পে বিল, পেমেন্ট ইত্যাদি বেশি বেশি বেশি ব্যবহার করে, বিকাশ একাউন্টে নিয়মিত ব্যালেন্স রেখে তারপর এই ফিচার আনলক করতে পারবেন। 👉 বিকাশ লোন আপনি পাবেন কিনা যেভাবে বুঝবেন
অনেকের ক্ষেত্রে বিকাশ এর লোন বা পে-লেটার অপশনে ট্যাপ করলে “অনুগ্রহ করে তথ্য হালনাগাদ করুন লোন/পে-লেটার সেবা পেতে অনুগ্রহ করে আপনার তথ্য হালনাগাদ করুন। কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে ই-কেওয়াইসি এর মাধ্যমে আপনার তথ্য হালনাগাদ করুন” লেখা দেখাতে পারে। এর কারণ হলো লোন বা পে-লেটার সেবাটি বর্তমানে নির্দিষ্ট সংখ্যক বিকাশ গ্রাহকের জন্য চালু করা হয়েছে৷ লোন বা পে-লেটার সার্ভিসটির অ্যাকসেস পেতে বিকাশ মেন্যু থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র এর তথ্য প্রদান করে তথ্য হালনাগাদ করে নিন।
বর্তমানে নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রাহকের জন্য লোন ও পে-লেটার সার্ভিস চালু করা হয়েছে। আপনার বিকাশ একাউন্টে ফিচারগুলো পেতে একাউন্ট ব্যালেন্স রাখতে ও বেশি বেশি লেনদেন এর পরামর্শ দিয়ে থাকে বিকাশ।
উল্লেখ্য যে বিকাশ লোন বা পে-লেটার এর সর্বোচ্চ লিমিট হলো ২০,০০০ টাকা৷ তার মানে এই নয় যে সকল গ্রাহক সমান এমাউন্টের লোন পাবেন। আপনার লেনদেন ও একাউন্টের ব্যালেন্স এর উপর ভিত্তি করে আপনি কত টাকা লোন পাবেন তা ঠিক করা হবে। এইক্ষেত্রে সকল একাউন্টের লোন এর পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে৷ অর্থাৎ আপনার একাউন্টে লেনদেন বেশি হলে আপনি ২০,০০০টাকা লোন পেতে পারেন, আবার আপনার বন্ধুর বিকাশ একাউন্টে লেনদেন কম হলে সে ৮,০০০ টাকা লোন পেতে পারে
পরিশোধিত লোন এর ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট ৯% যা সিটি ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত লোনের বার্ষিক ইন্টারেস্ট রেট এবং দৈনিক ভিত্তিতে হিসাব করা হয়। উল্লেখ্য যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে ইন্টারেস্ট রেট পরিবর্তন হতে পারে।
বিকাশ লোন বা পে-লেটার ফিচার ব্যবহার করার পুর্বে লোন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ইন্টারেস্ট রেট, ইন্টারেস্ট, কিস্তির পরিমাণ, লোন পরিশোধের তারিখসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্যের বিস্তারিত দেখতে পাবেন বিকাশ অ্যাপের লোন ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করে।
পেমেন্ট এর সময় ‘আংশিক পরিশোধ’ অপশন ব্যবহার করে লোন এর পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো যাবে। সঠিক সময়ে বিকাশ লোনের কিস্তি পরিশোধ না করলে বিলম্বিত পরিমাণের উপর বার্ষিক ২% হারে জরিমানা দিতে হবে। বিকাশ পে লেটার ফিচার সম্পর্কে আরও জানতে পারেন বিকাশের অফিসিয়াল পেজ থেকে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।