ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার উপায়

ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট খুব বড় একটি ক্ষেত্র। অনেক সফল ফ্রিল্যান্সার ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমেই তাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বলতে বোঝায় ওয়েবসাইট তৈরি করা ও ওয়েবসাইট সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে পারদর্শিতা অর্জন করা। এজন্য আপনাকে সার্ভার তৈরি করা, কোডিং থেকে শুরু করে আরও অনেক ব্যাপার জানতে হয়। তবে একদম নতুন কারো জন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট একটি বিশাল সমুদ্রের মতো। সঠিকভাবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে হলে কোনদিকে আগাতে হবে সেটি নিয়ে দ্বিধায় থাকেন অনেকেই।

এছাড়া অনেকে ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট দুটিকে এক ভাবেন। কিন্তু ওয়েব ডেভেলপমেন্ট মূলত আলাদা একটি শাখা। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অনেকের কাছেই কঠিন মনে হতে পারে অনেক বড় বড় সব ওয়েবসাইট দেখে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সঠিক পথে আগালে ধাপে ধাপে ওয়েব ডেভেলপমেন্টে দক্ষতা অর্জন করা যায়। আজকের পুরো পোস্টে আলোচনা করা হবে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে হলে আপনাকে মূলত কোন বিষয়গুলো শিখতে হবে এবং কোথায় সেসব শিখতে পারবেন।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে কোন কোন বিষয় নিয়ে জানতে হয়?

বর্তমানে খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায় কেননা বিভিন্ন টুল আপনাকে ওয়েবসাইট তৈরিতে সাহায্য করবে। বর্তমানে ওয়েবসাইট তৈরিতে সাহায্য করার জন্য অসংখ্য টুল রয়েছে। ওয়েব ডিজাইন শিখতে এসব টুল ও কোডিং জেনে নিতে হয় ধাপে ধাপে, যা আমাদের পোস্ট থেকে জানতে পারবেন।

এইচটিএমএল – (ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার প্রথম ধাপ)

বর্তমানে অনেকে স্কুল জীবনেই এইচটিএমএল শেখেন। এইচটিএমএল খুব পরিচিত শব্দ হয়ে উঠেছে। এইচটিএমএল হচ্ছে ওয়েবসাইটের ভাষা। যে ভাষার মাধ্যমে প্রতিটি ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে থাকে। কাজেই ওয়েবসাইট তৈরি করতে প্রথমে ওয়েবসাইটের ভাষায় পারদর্শিতা অর্জন করতে হবে। বর্তমানে এইচটিএমএল৫ নামের নতুন ও আরও উন্নত সংস্করণের মাধ্যমে ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। এইচটিএমএল৫ শুধু ওয়েবসাইট তৈরির কাজেই নয় বরং ওয়েবসাইটের মধ্যে বিভিন্ন ভ্যারিয়েবল ও অ্যানিমেশন তৈরিতেও সাহায্য করতে পারে। আজকাল এইচটিএমএল৫ দিয়ে বিভিন্ন গেমও তৈরি হচ্ছে।

অর্থাৎ এইচটিএমএল৫ হচ্ছে বর্তমানে আধুনিক যুগের ওয়েবসাইট তৈরির ভিত্তি। কাজেই এইচটিএমএল৫ ছাড়া ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখবার কথা চিন্তাও করা ঠিক হবেনা। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে প্রথমেই এইচটিএমএল৫ -এ পারদর্শিতা অর্জন করতে হবে।

সিএসএস

ওয়েবসাইট কতটুকু সুন্দর বা আকর্ষণীয় তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। আকর্ষণীয় ওয়েবসাইট সহজেই দৃষ্টি কাড়ে। ফলে ওয়েবসাইটের প্রতি আরও বেশি মানুষ আকৃষ্ট হয়। আর সিএসএস সেই কাজটিই করে থাকে। অর্থাৎ এইচটিএমএল দ্বারা তৈরি ওয়েবসাইটের সৌন্দর্য দেয় সিএসএস। CSS এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন রঙ দিতে পারবেন, ওয়েবসাইটকে আরও স্মুথ করা সম্ভব হয়। এমনকি বিভিন্ন অ্যানিমেশন তৈরির কাজেও সিএসএস দরকারি একটি জিনিস। ওয়েবসাইটের বিভিন্ন স্ক্রলিং ইভেন্ট, মাউস ক্লিক ইভেন্ট ইত্যাদি তৈরি হয় সিএসএস দ্বারা।

বর্তমানে সিএসএস৩ ব্যবহার করা হচ্ছে ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে। কাজেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে চাইলে শুধুমাত্র এইচটিএমএল জানলেই হবে না, সিএসএস এও দক্ষতা অর্জন করতে হবে পুরো ওয়েবসাইটকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তুলতে।

জাভাস্ক্রিপ্ট

জাভাস্ক্রিপ্ট সিএসএস শিখবার পরবর্তী ধাপ। আপনি এইচটিএমএল ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন, সিএসএস ব্যবহার করে পারবেন সৌন্দর্য দিতে। তবে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন কাজ তৈরি করতে দরকার হবে জাভাস্ক্রিপ্ট। ওয়েবসাইটে কোথায় ক্লিক করলে কোন কাজটি হবে, অ্যানিমেশন কীভাবে প্লে বা পজ হবে, কোথাও মাউস নিলে কী কাজ হবে ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস ঠিক করা যায় জাভাস্ক্রিপ্টের সাহায্যে। এটি ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে সবথেকে সেরা স্ক্রিপ্টিং ভাষা। 

যদিও জাভাস্ক্রিপ্ট পুরোপুরি শেখা বেশ কঠিন, তবুও এটি কিছুটা শিখতে পারলেই ওয়েব ডেভেলপমেন্টের সকল কাজ সহজেই করে ফেলতে পারবেন আপনি। ওয়েবসাইটকে স্মুথ করতে বা অন্যান্য বিভিন্ন কাজ তৈরি করতে জাভাস্ক্রিপ্টের জুড়ি নেই।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

How to learn web development

👉 সিভি লেখার নিয়ম

বুটস্ট্র্যাপ

অনেকেই রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট নামক শব্দটি শুনে থাকবেন। রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট বলতে বুঝানো হয় যেসব ওয়েবসাইট ডিভাইস অনুযায়ী নিজেকে পরিবর্তন করে সুন্দরভাবে সেই ডিভাইসে নিজেকে পরিদর্শন করতে পারে। এই কাজটি করা সম্ভব হয় বুটস্ট্র্যাপ প্রযুক্তির মাধ্যমে। বর্তমানে আমাদের কাজে নানা সাইজ ও ডিসপ্লের ডিভাইস থাকে। সকল ডিভাইসে একটি ওয়েবসাইট যেন সুন্দরভাবে দেখা যায় সেটির জন্য বুটস্ট্র্যাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যদিও এখন বুটস্ট্র্যাপ শেখারও বিকল্প আছে।

পিএইচপি

সামনে থেকে ওয়েবসাইট ডেভেলপ করা শেখা যাবে উপরের বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জন করলেই। সেগুলোকে বলা হয় ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট। তবে আজকাল ভালো ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে ব্যাক এন্ড বা সার্ভারের ডেভেলপমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর এখানেই পিএইচপি কাজে লাগে। পিএইচপি একটি সার্ভার সাইড প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। পিএইচপি শেখা ও ব্যবহার করা এজন্যই দরকার।

পিএইচপি তে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা সহজ হয়ে যায়। পুরো একটি ওয়েবসাইট তৈরির দক্ষতার ক্ষেত্রে পিএইচপি গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থাৎ উপরের বিষয়গুলো জানলে আপনি নিজে থেকেই একটি পুরো ওয়েবসাইট তৈরির দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। ফলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার প্রতিষ্ঠা পাওয়াও সহজ হয়ে যাবে। মূলত উপরের বিষয়গুলো ক্রমানুযায়ী ধীরে ধীরে শেখা শুরু করা উচিত ওয়েব ডেভেলপার হতে চাইলে।

কোথায় শিখতে পারবেন

প্রতিটি বিষয় শেখার জন্য অনলাইনে অনেক ফ্রি ওয়েবসাইট ও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায়। বিভিন্ন সাইট বিনামূল্যে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের জন্য কোর্স প্রদান করে থাকে। বিনামূল্যে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের বিভিন্ন বিষয়ে গাইডলাইন পেতে নিচের ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করতে পারেনঃ

এছাড়া ইউটিউবেও এই বিষয়ে বিভিন্ন ফ্রি টিউটোরিয়াল পেয়ে যেতে পারেন। ফ্রি ওয়েবসাইট ছাড়াও বিভিন্ন কোর্স ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে ভালো কোর্স রয়েছে। যেমনঃ ইউডেমি, কোর্সেরা ইত্যাদি।

এভাবে আপনি ওয়েব ডেভেলপিং শিখার ক্ষেত্রে আপনার যাত্রা শুরু করতে পারেন। সঠিক পথ ধরে এগোলে সহজেই দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার হওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ করে মনযোগী হওয়া প্রয়োজন। একজন ভালো ওয়েব ডেভেলপার ইন্টারনেটের যুগে বেশ দামী। তাই নিজেকে দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার করে গড়ে তুলতে পারলে তা আপনার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারকে সহজেই ঠিক করে দিতে পারে।

👉 লিংকডইনে সহজে চাকরি পেতে এগুলো মেনে চলুন

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *