আইফোন ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানোর উপায়

আপনার প্রিয় আইফোন প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাটারি ব্যাকাপ প্রদান করছে না? অনুসরণ করতে পারেন আইফোন এর ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানোর নিম্নোক্ত উপায়সমূহ।

সাধারণ কিছু বিষয়

সেটিংস পরিবর্তন করে আইফোনের ব্যাটারি ব্যাকাপ অপটিমাইজ করার আগে নিশ্চিত করুন ব্যাটারি ভালো রাখতে প্রয়োজনীয় নিয়মগুলো আপনি অনুসরণ করছেন কিনা।

প্রথমত আপনার আইফোন খুব ঠান্ডা বা খুব উষ্ণ পরিবেশে রাখবেন না। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির পারফরম্যান্স অনেকাংশে আশেপাশের তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে।

আবার ব্যাটারির উপর বাড়তি চাপ না পড়া নিশ্চিত করতে ফোন পুরোপুরি ১০০% চার্জ করা থেকে বিরত থাকুন। আবার একদম ০% চার্জ অবশিষ্ট রেখেও ফোন চার্জে দেওয়া ঠিক নয়। চেষ্টা করুন ২০% এর নিচে ব্যাটারি চলে আসলে চার্জে দেওয়ার ও ৮০% চার্জ হলে চার্জ থেকে খুলে ফেলুন।

এই তো গেলো আইফোন এর ব্যাটারি ব্যাকাপ বাড়ানোর খুব সাধারণ কিছু উপায়। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক আইফোন এর সেটিংস টুইক করে কিভাবে ভালো ব্যাটারি ব্যাকাপ পাওয়া যেতে পারে।

লো পাওয়ার মোড – আইফোন ব্যাটারি সেভিং

আইফোন এর ব্যাটারি ড্রেইন রুখে দেওয়ার সেরা অস্ত্র হলো লো পাওয়ার মোড। লো পাওয়ার মোড চালু থাকলে ডাউনলোড ও ইমেইল ফেচিং এর মত ব্যাকগ্রাউন্ড একটিভিটি বন্ধ থাকে।

ব্যাটারি ২০% এর নিচে আসলে লো পাওয়ার মোড অটোমেটিক চালু হয়ে যায়। তবে ম্যানুয়ালি এই লো পাওয়ার মোড চালু করে উল্লেখযোগ্য হারে অধিক ব্যাটারি ব্যাকাপ পাওয়া যায়।

লো পাওয়ার মোড চালু করতে সেটিংস থেকে Battery মেন্যুতে প্রবেশ করুন, এরপর Low Power Mode অপশন এর পাশে থাকা টোগল অন করে দিন। চালু হওয়ার পরে ফোনের টপ কর্নারে থাকা ব্যাটারি আইকন হলুদ হয়ে যাবে।

অটো ব্রাইটনেস

স্মার্টফোনের ব্যাটারির একটি বিশাল অংশ গ্রহণ করে ডিসপ্লে। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী অটো ব্রাইটনেস সিলেক্ট এর অপশন সেট করে রাখা ভালো। অটো ব্রাইটনেস চালু করতেঃ

  • আইফোন এর সেটিংসে প্রবেশ করুন
  • Accessibility মেন্যুতে প্রবেশ করুন
  • এরপর Display & Text Size সিলেক্ট করুন
  • Auto-brightness এর পাশে থাকা টোগল অন করে দিন

ডার্ক মোড

অধিকাংশ মানুষ ডার্ক মোড এর ফিচারটিকে অবহেলা করলেও এটির বহুবিধ সুবিধা রয়েছে। আইফোনের ডার্ক মোড ব্যবহার করলে প্রচুর পরিমাণে ব্যাটারি সাশ্রয় হয়ে থাকে। আবার চোখে অধিক সুবিধাজনক লাগে ডার্ক মোড।

আইফোন এর ডার্ক মোড চালু করতে প্রথমে সেটিংসে প্রবেশ করুন। এরপর Display & Brightness অপশনে প্রবেশ করে Dark সিলেক্ট করে ডার্ক মোড চালু করুন।

লোকেশন সার্ভিস

কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ, যেমনঃ গুগল ম্যাপস বা উবার ব্যবহারে লোকেশন সার্ভিস এর প্রয়োজন রয়েছে। তবে লোকেশন সার্ভিস আইফোনের ব্যাটারি খরচ করে অনেক। প্রয়োজন না হলে সেক্ষেত্রে Settings এ প্রবেশ করে Privacy মেন্যু থেকে Location Services এ প্রবেশ করে অপ্রয়োজনীয় লোকেশন পারমিশন রিমুভ করে দিন।

উল্লেখ্য যে লোকেশন সার্ভিস বন্ধ করে দিলে লোকেশন সার্ভিস ব্যবহার রয়েছে যেসব অ্যাপে সেসব অ্যাপে সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ ওয়েদার বা ম্যাপস অ্যাপ কাজ না করতে পারে। তবে আপনি প্রয়োজনমত সময়ে লোকেশন সার্ভিস আবার চালু করে নিতে পারেন।

ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ

আইওএস অ্যাপ ক্লোজ করার পর অচল অবস্থায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত চালু থাকে। Background App Refresh অপশন চালু থাকলে সেক্ষেত্রে ক্লোজ করা অ্যাপও ব্যাকগ্রাউন্ডে আপডেট হয়, যা ব্যাটারির চার্জ উল্লেখযোগ্য হারে খরচ করে।

ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ অপশন সম্পূর্ণভাবে বা নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপের জন্য বন্ধ রাখা যাবে। আইফোনের সেটিংসে প্রবেশ করে General সেকশন থেকে Background App Refresh অপশনে প্রবেশ করুন। এই অপশনে ট্যাপ করে ফিচারটি বন্ধ রাখতে পারবেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

আইফোন এর ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানোর উপায়

👉 নতুন আইফোন কেনার পর করণীয়

নোটিফিকেশনস

প্রতিটি নোটিফিকেশনের জন্য আইফোনের স্ক্রিন লাইট জ্বলে ওঠে, যা ফোনের ব্যাটারি ব্যয় করে। সেটিংস থেকে নোটিফিকেশন মেন্যুতে প্রবেশ করে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিন।

এছাড়া এখান থেকে একই অ্যাপের একাধিক নোটিফিকেশন টাইপ, যেমনঃ ব্যানার, স্ট্যাটাস বার, ইত্যাদি ম্যানেজ যায়। একই অ্যাপের একাধিক নোটিফিকেশন অফ রাখতে পারেন।

ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ ও এয়ারড্রপ

আইফোন এর সেটিংস থেকে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এয়ারড্রপ বন্ধ করা না হলে ব্যাকগ্রাউন্ডে এগুলো চালু থেকে যায়। এসব ফিচার ম্যানুয়ালি বন্ধ না করলে অনবরত নেটওয়ার্ক এর জন্য সার্চ করতে থাকে। তাই প্রয়োজন না হলে এসব ফিচার সরাসরি সেটিংসে প্রবেশ করে বন্ধ করা উচিত।

আইফোন এর সেটিংসে প্রবেশ করে Wi-fi থেকে ওয়াই-ফাই ও Bluetooth থেকে ব্লুটুথ অফ করতে পারবেন। এছাড়া সেটিংস এর General মেন্যু হতে AirDrop সেকশনে প্রবেশ করে Receiving Off অপশন সিলেক্ট করে ব্যাটারি সেভ করা যায়। প্রয়োজন না হলে যথাযথ মেন্যুতে প্রবেশ করে এসব সেটিংস বন্ধ করতে ভুলবেন না।

👉 আইফোন ব্যাটারি হেলথ ভালো রাখার উপায়

সিরি সাজেশনস

আপনার একটিভিটির উপর ভিত্তি করে সাজেশনস প্রদান করতে পারে সিরি, যা Siri Suggetions নামে পরিচিত। এটি একটি ব্যাকগ্রাউন্ড একটিভিটি বলে অজান্তে ব্যাটারি খরচ করে। এই ফিচার বন্ধ করতে Settings থেকে Siri & Search মেন্যুতে প্রবেশ করুন। এখান থেকে Siri Suggestions বন্ধ করে দিন।

এছাড়া “Hey, Siri” বলে সিরি ব্যবহারের ফিচারটি চালু থাকলে সার্বক্ষণিক ব্যাটারির চার্জ খরচ করে থাকে। এই ফিচার বন্ধ করতে সেটিংস এর Siri & Search মেন্যু হতে Listen for Hey Siri অপশন বন্ধ করে দিন। চাইলে Press side button for Siri অপশন চালু রাখতে পারেন, যা মূলত সাইড বাটন প্রেস করে রাখলে সিরি চালু করে।

মোশন ইফেক্টস

ব্যাটারি সেভ করতে চাইলে ডায়নামিক বা মুভিং ওয়ালপেপার ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। সবসময় স্ট্যাস্টিক ওয়ালপেপার ব্যবহারের চেষ্টা করুন।

এছাড়া Settings থেকে Accessibility মেন্যু ও এরপর Motion সেকশনে প্রবেশ করে Reduce Motion এর পাশে থাকা টোগল অন করে দিলে এনিমেশন কিছুটা কম প্রদর্শন করবে ও ব্যাটারি ব্যাকাপ বৃদ্ধি পাবে।

👉 হারানো আইফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়

আইক্লাউড

সেটিংস থেকে বন্ধ করা না থাকলে আইক্লাউড ফোনে থাকা ছবি ও ভিডিও ক্লাউডে ব্যাকাপ নেওয়ার কাজে ব্যাস্ত থাকে। স্বভাবতই এই প্রক্রিয়া প্রচুর ব্যাটারি খরচ করে। তাই আইক্লাউড দরকার না হলে বন্ধ রাখা যায়।

আইক্লাউড এর অটো ব্যাকাপ ফিচার অফ রেখে ব্যাটারি সেভ করতে আইফোনের সেটিংস হতে Photos অপশনে প্রবেশ করুন। এরপর iCloud Photos অপশন এর পাশে থাকা টোগল অফ করে দিন।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

https://www.google.com/recaptcha/api.js?ver=1.23