নতুন আইফোন কেনার পর করণীয়

অ্যাপল এর আইফোন বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। তবে আইফোন কেনার পর কি কি করা উচিত, সে সম্পর্কে দ্বিধার মধ্যে থাকেন নতুন ব্যবহারকারীগণ। নতুন আইফোন কেনার পর কিছু বিষয় চেক করে সেটিং ঠিক করে নেওয়া দরকার। প্রয়োজন হয় কিছু অ্যাপের। ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এসব বিষয় পরে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। তাই শুরুতেই এসব বিষয় জেনে রাখলে আইফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বেশ সহজ হয়।

চলুন জেনে নেওয়া যাক নতুন আইফোন কেনার পর ফোনটি ব্যবহারের সুবিধার্থে আপনার যা করা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

অ্যাপল আইডি

অ্যাপল আইডিকে অনেকটা অ্যাপল ডিভাইসসমূহের প্রাণ বলা চলে। অ্যাপ স্টোরসহ অ্যাপল ডিভাইসের অধিকাংশ ফিচার নির্ভর করে অ্যাপল আইডি’র উপর। এই ফ্রি একাউন্ট ব্যবহার করে আইমেসেজ, আইক্লাউড, ফাইন্ড মাই আইফোন, ফেসটাইম, অ্যাপল মিউজিক, ইত্যাদি অ্যাপল সার্ভিস ব্যবহার করা যাবে। চাইলে অ্যাপল আইডি ছাড়াও আইফোন ব্যবহার করা যায়, কিন্তু আইফোনের সম্পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে অ্যাপল আইডি লাগবেই।

প্রয়োজনীয় কন্ট্রোলস শেখা

যেকোনো ডিভাইস কেনার পর উক্ত ডিভাইস কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক আইফোন এর কিছু বেসিক কন্ট্রোলস সম্পর্কে।

অ্যাপ ওপেন করা

আইফোনে অ্যাপ ওপেন করা সহজ। হোমস্ক্রিন থেকে যেকোনো অ্যাপের আইকনে ট্যাপ করে উক্ত অ্যাপ ওপেন করতে পারবেন। উল্লেখ্য যে, আইফোনের সকল অ্যাপ আইকন হোমস্ক্রিনে সাজানো থাকে ও অ্যাপ আইকনে ক্লিক করে অ্যাপসমূহ ওপেন করা যায়।

অ্যাপ মুভ ও ডিলিট করা

আইফোনে কোনো অ্যাপ হোমস্ক্রিনের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মুভ করতে প্রথমে যেকোনো অ্যাপ আইকনের উপর প্রেস করে ধরে রাখুন। এরপর সকল অ্যাপ আইকন নড়াচড়া করতে দেখবেন, যেখান থেকে অ্যাপ আইকন ড্রাগ করে মুভ করানো যাবে অন্য স্থানে। আবার অ্যাপ আইকনের বামদিকের কর্নারে থাকা X বা মাইনাস চিহ্ন ট্যাপ করে অ্যাপ আনইন্সটল করা যাবে।

সার্চ

আইফোনের স্পটলাইট সার্চ ফিচারটি অসাধারণ একটি সার্চ ফিচার, যা দ্বারা সম্পূর্ণ ডিভাইস সার্চ করা যায়। অ্যাপ, কনটাক্ট, নোট থেকে শুরু করে ইন্টারনেটে পর্যন্ত প্রয়োজনীয় তথ্য খোজা যাবে এই সার্চ ফিচার ব্যবহার করে। সার্চ ফিচারটি ব্যবহার করতে হোমস্ক্রিনে উপর থেকে নিচের দিকে সোয়াইপ করতে হবে।

কন্ট্রোল সেন্টার

পুরাতন আইফোনে স্ক্রিনের বোটম পার্ট থেকে উপর দিকে সোয়াইপ করলে কন্ট্রোল সেন্টার দেখা যাবে। তবে বর্তমানে স্ক্রিনের উপরের দিকের ডান কর্নার থেকে নিচের দিকে সোয়াইপ করলে কন্ট্রোল সেন্টার ওপেন হয়। যেকোনো স্ক্রিন থেকে কন্ট্রোল প্যানেল অ্যাকসেস করা যায়।

কন্ট্রোল সেন্টার ব্যবহার করে এয়ারপ্লেন মোড, ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, ডু নট ডিস্টার্ব, পোর্ট্রেইট অরিয়েন্টেশন, ব্রাইটনেস, মিউজিক, এয়ারড্রপ, ফ্ল্যাশলাইট, টাইমার, ক্যালকুলেটর, ক্যামেরা, ইত্যাদি ফিচার খুব সহজে সরাসরি অ্যাকসেস করা যায়। সেটিংসে প্রবেশ করে Control Center মেন্যু থেকে কন্ট্রোল সেন্টার ম্যানেজ করা যাবে।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

নোটিফিকেশন সেন্টার

স্ক্রিনের উপর থেকে নিচের দিকে সোয়াইপ করলে নোটিফিকেশন সেন্টার দেখতে পাবেন, যেখানে ফোন কল, মেসেজ, ইমেইল, রিমাইন্ডার, ইত্যাদি সম্পর্কে নোটিফিকেশন পাবেন। সেটিংসে প্রবেশ করে Notification Center মেন্যু থেকে নোটিফিকেশন সেন্টার সেটিং কাস্টমাইজ করা যাবে।

ইমেইল একাউন্ট সেটাপ করা

যেকোনো ডিভাইস সেটাপের সময় ইমেইল একাউন্ট যুক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। ইমেইল যে কত কাজে লাগে, তার কোনো হিসাব নেই। আইফোন এর Mail অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজে যেকোনো ইমেইল একাউন্ট আইফোনে এড করা যাবে।

আইক্লাউড সেটাপ

আইফোনে আইক্লাউড সার্ভিস ব্যবহার করলে ফোন ব্যবহারের সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা লাভ সম্ভব। বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিস আইক্লাউডের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। আইক্লাউড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আইক্লাউড সম্পর্কে বাংলাটেক এর ডেডিকেটেড পোস্টটি ঘুরে আসতে পারেন।

👉 আইক্লাউড কি? অ্যাপল আইক্লাউডের সুবিধা কি?

টাচ আইডি বা ফেস আইডি সেটাপ

আইফোন ৫এস, ৬ সিরিজ, ৭ ও ৮ সিরিজে টাচ আইডি রয়েছে। অন্যদিকে আইফোন ১০ এর পরের আইফোনসমূহে সিকিউরিটি সেকশনে রয়েছে ফেস আইডি। টাচ আইডি ও ফেস আইডি উভয়ই নির্ভরযোগ্য বায়োমেট্রিক আনলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।

এসব বায়োমেট্রিক আনলক ফিচার ব্যবহার করে ফিংগার বা ফেস ব্যবহার করে ফোনের লক খোলার পাশাপাশি অ্যাপ স্টোর ব্যবহারের সময় পারচেজসমূহ ভেরিফাই করা হবে। এছাড়াও অ্যাপল পে এর অন্যতম সিকিউরিটি অপশন হিসেবে কাজ করে টাচ আইডি বা ফেস আইডি। তাই আপনার আইফোনে টাচ আইডি থাকুক বা ফেস আইডি, এই ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা ব্যবহার করা উচিত।

👉 আইফোন এর ফেইস আইডি সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য

ফাইন্ড মাই আইফোন সেটাপ

ফাইন্ড মাই আইফোন হলো আইক্লাউড এর একটি ফিচার যা আইফোন এর বিল্ট-ইন জিপিএস ব্যবহার করে লোকেশন ট্র্যাক করে। ফাইন্ড মাই আইফোন ফিচারটি চালু থাকলে আইফোন কখনো হারিয়ে গেলে বা খুঁজে না পেলে বেশ সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে। তাই নতুন আইফোন হাতে নিয়েই ফাইন্ড মাই আইফোন ফিচারটি চালু করে নেওয়া উচিত।

👉 হারানো আইফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়

বিল্ট-ইন অ্যাপসমূহ ব্যবহার

প্রায় যেকোনো কাজের জন্য অ্যাপ স্টোরে অ্যাপ পাওয়া যায়। কিন্তু থার্ড পার্টি অসংখ্য অ্যাপ ডাউনলোড করে ফোনের স্টোরেজ ভর্তি করার আগে ফোনে থাকা বিল্ট-ইন অ্যাপসমূহ ব্যবহার করা শিখুন। ফোনে থাকা বিল্ট-ইন অ্যাপসমূহ দ্বারা সকল বেসিক কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। যেমনঃ সাফারি ব্যবহার করে ওয়েব ব্রাউজিং, ফটোস অ্যাপ ব্যবহার করে ফটো এডিটিং, নোটস ব্যবহার করর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেভ করে রাখা, ইত্যাদি করা যায়।

নতুন আইফোন কেনার পর করণীয়

প্রয়োজনীয় অ্যাপ নামানো

বিল্ট-ইন অ্যাপসমূহের পাশাপাশি আরও অ্যাপ দরকার? চিন্তার কোনো কারণ নেই। ঘুরে আসুন অ্যাপল স্টোর, যেখানে অসংখ্য অ্যাপ ও গেম পেয়ে যাবেন। অ্যাপ স্টোরের অধিকাংশ অ্যাপ ও গেমই ফ্রিতে ডাউনলোড করা যায়, তবে কিছু পেইড অ্যাপও রয়েছে। প্রায় ৪০টি ক্যাটাগরি থেকে নিজের পছন্দের অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারবেন অ্যাপ স্টোর থেকে।

👉 নতুন এন্ড্রয়েড ফোন কেনার পর করণীয়

সোশ্যাল একাউন্ট সেটাপ

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের একটি অত্যাবশ্যক উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নতুন আইফোন সেটাপের প্রক্রিয়াতে সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টসমূহে লগিন করে নিতে পারেন। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এর মত অ্যাপসমূহে লগিন করে নিলে বন্ধু ও পরিবারের সাথে যোগাযোগ বেশ সহজ হয়ে যায়। আপনার যদি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট না থাকে তাহলে বাংলাটেক এর নিম্নোক্ত পোস্টসমূহ থেকে একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিতে পারেনঃ

👉 ফেসবুক একাউন্ট খোলার নিয়ম

👉 ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট খোলার নিয়ম

👉 হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট খোলার নিয়ম

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,573 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *