মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বদৌলতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে বিকাশ, নগদ এর মতো অ্যাপগুলো। বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম অত্যন্ত সহজ। একজন গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে নতুন বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। এছাড়াও বিকাশের ওয়েবসাইট থেকেও ঘরে বসেই বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়৷ এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট কিংবা কাস্টমার কেয়ারে গিয়েও বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।
বিকাশ কি?
বিকাশ হলো ব্র্যাক ব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানি ইন মোশন, বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের অর্ন্তগত ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং অ্যান্ট ফিনান্সিয়াল এর যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রিত পেমেন্ট সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল/ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস দিয়ে আসছে বিকাশ।
বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা
বর্তমানে একটি বিকাশ একাউন্ট থাকার রয়েছে নানাবিধ সুবিধা। ঘরে বসেই বিকাশ একাউন্ট খুলে উপভোগ করা যাবে বিকাশ এর সকল সুবিধা। বিকাশ একাউন্ট খোলার সুবিধা হলোঃ
- টাকা জমা করাঃ বিকাশ একটি ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে কাজ করে। ব্যাংকবিহীন ক্যাশ সিস্টেম হওয়ায় বিকাশে টাকা জমা করার প্রসেসটি অত্যন্ত সহজ
- টাকা পাঠানোঃ অবশ্যই বিকাশ ব্যবহার করে টাকা আদান-প্রদান করা যায়। যেকোনো সময় যেকোনো স্থান থেকেই দেশের অন্য প্রান্তে খুব সহজে টাকা পাঠানো যায় বিকাশ ব্যবহার করে
- টাকা তোলাঃ বিকাশ একাউন্টে থাকা টাকা যেকোনো সময় এজেন্ট এর কাছ থেকে ক্যাশ আউট করা যায়। এছাড়াও ব্র্যাক ব্যাংক এটিএম থেকেও বিকাশ এ টাকা তোলা যায়
- মোবাইল রিচার্জঃ বিকাশ একাউন্ট থেকে খুহ সহজেই মোবাইলে রিচার্জ করা যায়। মোবাইল রিচার্জের ক্ষেত্রে কোনো ফি প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ বাড়তি কোনো ফি ছাড়াই বিকাশ হতে মোবাইল রিচার্জ করা যায়।
- কেনাকাটাঃ বিভিন্ন পণ্য কেনাকাটা ও সেবার মূল্য খুব সহজেই বিকাশে পরিশোধ করা যায়। এছাড়াও ইন্টারনেট হতে যেকোনো কেনাকাটার ক্ষেত্রে বিকাশে পে করা যায়
- অন্যান্যঃ বিকাশ ব্যবহার করে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স গ্রহণ, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, যানবাহনের টিকেট কেনার মতো আরো অনেক সুবিধা উপভোগ করা যায়
- বিকাশ অফারঃ বিকাশ এ সবসময় বিভিন্ন অফার, বোনাস ও ক্যাশব্যাক ক্যাম্পেইন চলতেই থাকতে।
বিকাশ অফার সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন
বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড
অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস – উভয় প্ল্যাটফর্মেই ব্যবহার করা যাবে বিকাশ অ্যাপ।
বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন
বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি লাগে
বিকাশ একাউন্ট খুলতে যা যা লাগেঃ
- একটি অ্যাক্টিভ মোবাইল নাম্বার
- ইন্টারনেট কানেকশন
- বিকাশ অ্যাপ ইন্সটল করা স্মার্টফোন
- জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)
- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (এজেন্ট এর ক্ষেত্রে)
ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
ঘরে বসে নিজে নিজে বিকাশ একাউন্ট খুলতে হলে প্রথমেই উপরে দেওয়া লিংক থেকে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন। এরপর নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করুন। ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম নিচে ছবিসহ বর্ণনা করা হলো।
বিকাশ অ্যাপ ওপেন করে “লগ ইন/রেজিষ্ট্রেশন” বাটনে ট্যাপ করুন
লগ ইন/রেজিষ্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করার পরের পেজে যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান, সে নাম্বারটি প্রদান করে পরবর্তী বাটনে ট্যাপ করুন
এরপর আপনার মোবাইল নাম্বারটির অপারেটর সিলেক্ট করে পরবর্তী বাটনে ট্যাপ করুন
এরপর আপনার মোবাইল নাম্বারটি যাচাই করতে আপনার প্রদত্ত নাম্বারে একটি ওটিপি কোড পাঠানো হবে। উল্লেখ্য যে, যে ফোনে বিকাশ খুলছেন সে ফোনেই সিমটি অ্যাক্টিভ থাকতে হবে
ওটিপি কোড এর মেসেজ আসার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোডটি বিকাশ অ্যাপ গ্রহণ করে নিবে
কোড চলে আসলে “কনফার্ম করুন” এ ট্যাপ করুন
এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র অর্থাৎ এনআইডি কার্ড এর উপরের পৃষ্ঠার ছবি তুলে সাবমিট করে “সাবমিট করুন” এ ট্যাপ করুন
এরপর অপর পৃষ্ঠার ছবি তুলে আবার “সাবমিট করুন” এ ট্যাপ করুন
এবার আপনার আইডি কার্ডের তথ্যসমূহে সঠিকভাবে বিকাশ গ্রহণ করেছে কিনা তা নিশ্চিত করুন
এবার আপনার লিঙ্গ, পেশা, মাসিক আয় ও আয়ের উৎস সিলেক্ট করে এগিয়ে যান
এরপর সাবমিটকৃত এনআইডি কার্ডে যার ছবি আছে তাকে ফোনে একটি সেল্ফি তুলতে হবে যা দ্বারা আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন হবে
চেহারার ছবি তুলে সাবমিট করুন
এবার বিকাশ থেকে কনফার্মেশন এসএমএস পাবেন
বিকাশ অ্যাপে প্রবেশ করুন, “লগ ইন/রেজিষ্ট্রেশন” বাটনে ট্যাপ করুন
এবার যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলেছেন সেটি প্রদান করুন, অপারেটর সিলেক্ট করুন
এবার এসএমএস এ প্রাপ্ত কোড প্রদান করুন
এবার আপনার বিকাশ একাউন্টের জন্য একটি পিন সেট করুন
নতুন পিন কনফার্ম করার পর ফোন নাম্বার ও পিন দ্বারা বিকাশ অ্যাপে লগিন করুন
এবার চাইলে বিকাশ একাউন্টে আপনার নাম ও ছবি যুক্ত করতে পারবেন যা লেনদেনের ক্ষেত্রে অন্যরা দেখতে পাবেন। আবার “পরে করুন” সিলেক্ট করে এসব সেটিংস পরেও ঠিক করতে পারবেন
উল্লেখিত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার বিকাশ একাউন্ট খুলে যাবে
👉 বিকাশ একাউন্ট নিরাপদ রাখার উপায়
বিকাশ এজেন্ট কি?
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর প্রতিনিধিদের বিকাশ এজেন্ট বলা হয়। বিকাশ এজেন্টগণ স্থানীয়ভাগে বিকাশের সকল সেবা প্রদান করে থাকেন। এজেন্টগণ ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট বা বিল প্রদানের মতো বিকাশ সেবাগুলো গ্রাহকদের প্রদান করেন। শতকরা কমিশন হারে বিকাশ এজেন্টগণ আয় করে থাকেন।
বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে?
বিকাশ এজেন্ট হতে নির্দিষ্ট কোনো টাকার পরিমাণ জানায়নি বিকাস কতৃপক্ষ। এর মানে হলো ট্রেড লাইসেন্স আছে, এমন যেকেউ বিকাশ এজেন্ট হতে পারবেন।
বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি লাগে?
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে ব্যবসা করতে চাইলে বিকাশ এজেন্ট হতে হবে। সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত তথ্য ও ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবেঃ
- এজেন্ট হতে ইচ্ছুক ব্যাক্তির ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- জাতীয় পরিচয়পত্র / পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স।
- ট্রেড লাইসেন্স (বাধ্যতামূলক)
- ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা
- যোগাযোগের নম্বার ও ঠিকানা
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ এজেন্ট হতে চাইলে উল্লেখিত তথ্য ও ডকুমেন্ট এর সহিত নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে ফর্ম ফিলাপের মাধ্যমে এজেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে। এছাড়াও অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তৈরীর জন্য।
👉 বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট কি?
ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করতে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করা হয়। বিকাশ পারসোনাল অর্থাৎ ব্যাক্তিগত একাউন্টের চেয়ে বেশ কিছু অনন্য সুবিধা পাওয়া যায় বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টে।
বিকাশ মার্চেট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে নিম্নোক্ত তথ্য ও ডকুমেন্টসমুহ দরকার হয়ঃ
- সংযোগসহ একটি মোবাইল ফোন
- জাতীয় পরিচয়পত্র এর ফটোকপি
- ২ কপি পার্সপোট সাইজের ছবি
- মেয়াদ আছে এমন প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স
বিকাশ মার্চেট একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার আবেদন করা যাবে বিকাশ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে। আবেদনের পর ফর্মে উল্লেখিত ফোন নাম্বারে কল করে বিকাশ মার্চেন্ট অফিসে আসার জন্য বলা হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য ও ডকুমেন্টের সহিত অফিসে সাবমিট করার পর বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট তৈরি করা হয়। বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে নিচে লিংক করা পোস্ট ঘুরে আসুন।
👉 বিকাশ মার্চেন্ট কিভাবে ওপেন করতে হয় জেনে নিন
বিকাশ একাউন্ট সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্নসমুহ
- কে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবে?
উত্তরঃ ১৮ বছর বা তার অধিক বয়সী বাংলাদেশের নাগরিক প্রয়োজনীয় ন্যাশনাল আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইনেন্স কিংবা পাসপোর্ট থাকলে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- বিকাশ একাউন্ট খুলতে কত টাকা খরচ হয়?
উত্তরঃ বিকাশ একাউন্ট খুলতে কোনো টাকা খরচ হয়না, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যেকেউ বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারে।
- বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি ব্যাংক একাউন্ট লাগে?
উত্তরঃ না, বিকাশ একাউন্ট খুলতে ব্যাংক একাউন্ট থাকা জরুরি নয়।
- বিকাশ এর পিন ভুলে গেলে কি করবো?
নিজে নিজে বিকাশ পিন রিসেট করতে *২৪৭# ডায়াল করে ৯ চাপুন এবং স্ক্রিনে দেখানো ইনস্ট্রাকশান অনুসরণ করুন। এছাড়াও 16247 নাম্বারে কল করার মাধ্যমে সাহায্য নিতে পারেন। [email protected] ও livechat.bkash.com – ব্যবহার করেও সহায়তা পাবেন। এছাড়াও যোগাযোগ করতে পারেন নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে।
- বিকাশ একাউন্ট খুলতে কোথায় যেতে হবে?
উত্তরঃ উপরে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করে যেকেউ ঘরে বসেই বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারে। তবে এতে যদি আপনার সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট বা বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে একাউন্ট খুলতে পারবেন।
👉 বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
সচরাচর জিজ্ঞাসিত আরও কিছু প্রশ্ন
একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আপনি একটি বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন।
হ্যাঁ। তবে সেক্ষেত্রে আপনার বিকাশ এজেন্টের কাছে অথবা বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
Nc
Ami chai