প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে চিপ ও প্রসেসর আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় ছোট ডিভাইসগুলো আরও ছোট হচ্ছে আর তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্যই এখন স্মার্টওয়াচ আমাদের ফ্যাশনের অংশ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে স্মার্টওয়াচ রয়েছে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। অ্যাপলের অন্য সকল ডিভাইসের মতোই এখানেও তাদের স্মার্টওয়াচ আলাদা জায়গা ধরে রেখেছে।
অ্যাপল তাদের সব ডিভাইসেই আলাদা বেশ কিছু ফিচার ও সুবিধা রাখে যা বাজারের অন্য সকলের থেকে অনন্য হয়। স্মার্টওয়াচের বাজারেও অ্যাপল একইভাবে তাদের প্রভাব বজায় রেখেছে। অ্যাপল ওয়াচ বলতে মূলত অ্যাপলের স্মার্টওয়াচকেই বুঝানো হয়। আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানবো অ্যাপলের স্মার্টওয়াচের সুবিধা সম্পর্কে। অ্যাপলের স্মার্টওয়াচ কেন এতো জনপ্রিয় সে বিষয়েও জেনে নিতে পারবেন পুরো পোস্ট থেকে।
অ্যাপল ওয়াচ কী?
অ্যাপল ওয়াচ বলতে অ্যাপলের স্মার্টওয়াচের লাইনআপকেই বুঝানো হয়। স্মার্টওয়াচের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাপল ২০১৪ সালে সেই বাজারে পা রাখার ঘোষণা দেয়। আর তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ বাজারে আনে অ্যাপল। অন্য সকলের আগেই বেশ কিছু আধুনিক ফিচার নিয়ে এসে ক্রেতাদের মন জয় করে নেয় অ্যাপল। অ্যাপলের ইকোসিস্টেমে থাকলে স্মার্টওয়াচটি অসাধারন সব সুবিধা প্রদান করতে পারে। অ্যাপল ওয়াচ স্মার্টওয়াচের জন্য অ্যাপল তাদের নিজস্ব ওয়াচওএস নিয়ে আসে যেখানে বিভিন্ন অ্যাপ ইন্সটলের সুবিধাও রাখা হয়।
বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাপল ওয়াচ তুমুল জনপ্রিয়তা পায় অ্যাপল ডিভাইস ব্যবহারকারীদের কাছে। অ্যাপল তাদের অসাধারন সব ওয়াচফেস, সফটওয়্যার ফিচার ও ট্র্যাকিং সেবার মাধ্যমে বাজারে সাড়া ফেলে দেয়। আর তাই খুব কম সময়েই অ্যাপল ওয়াচ ক্রেতাদের প্রিয় পছন্দ হয়ে উঠতে পেরেছিল। সুন্দর ডিজাইন, ভালো মানের ব্যান্ড ও সফটওয়্যার সবকিছুই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেছিল সহজেই। অ্যাপল ওয়াচ এখন স্মার্টওয়াচের বাজারে অন্যতম বড় নাম।
অ্যাপল ওয়াচের সুবিধা
অ্যাপল ওয়াচ শুধু ঘড়ি নয়, অনেক দিক থেকেই ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে থাকে। আর এসব সুবিধা পেতেই অ্যাপল ওয়াচের এতো বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে। মূলত যাদের আইফোন রয়েছে তারা অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহার করতে চান। অ্যাপল তাদের ইকোসিস্টেমের সাথে তাদের ডিভাইসগুলোকে খুব ভালোভাবে যুক্ত করে দেয়। ফলে আইফোন থাকলে অ্যাপল ওয়াচ থেকে সবথেকে বেশি সুবিধা আদায় করা যায়। এই ২০২৩ সালে এসে অ্যাপল ওয়াচ কী কী সুবিধা দিয়ে থাকে সেগুলো নিয়েই জানা যাক।
[★★] মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায় জানতে এখানে ক্লিক করুন
👉 বাংলাটেক ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন, দারুণ ভিডিও দেখুন
সময় জানা
অন্য যে কোন হাতঘড়ির মতই অ্যাপল ওয়াচ থেকে সময় জেনে নেয়া যায় খুব সহজে। সময় জানার ক্ষেত্রে অ্যাপল ওয়াচের বেশ কিছু অসাধারন ও আকর্ষণীয় ফিচার আছে। প্রতি বছর নতুন মডেলের অ্যাপল ওয়াচের জন্য অ্যাপল খুব সুন্দর বিভিন্ন ওয়াচ ফেস তৈরি করে। ফলে নিজের ইচ্ছামতো ডিজিটাল বা অ্যানালগ ভাবে সময় দেখার সুবিধা থাকে। আপনি সময় দেখতে হাত উচু করবার সাথে সাথেই অ্যাপল ওয়াচ বুঝে গিয়ে তার ডিসপ্লে চালু হয়ে আপনাকে সময় জানাতে পারে। তাছাড়া অলঅয়েজ অন ডিসপ্লের মতো ফিচারও আছে সময় দেখার সুবিধার জন্য।
দ্রুত ফোনের নোটিফিকেশন দেখে নেয়া
অনেক সময় আমাদের ফোনের গুরুত্বপূর্ণ সব নোটিফিকেশন আড়ালে থেকে যায়। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ফোনটি বের করে নোটিফিকেশন দেখার মতো অবস্থা থাকে না। আপনার যদি আইফোন থেকে থাকে তবে আপনার অ্যাপল ওয়াচটি আইফোনের সাথে যুক্ত করে নিলে আর কোন নোটিফিকেশন আড়ালে থাকার সম্ভাবনা থাকে না। আপনার অ্যাপল ওয়াচ নোটিফিকেশন আসবার সঙ্গে সঙ্গে ভাইব্রেশনের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দিতে পারে এবং ঘড়ি থেকেই সেসব নোটিফিকেশন দেখে নেয়া যায়।
শুধু নোটিফিকেশন দেখে নেয়া যায় তাই নয়। যে কোন মেসেজ বা চ্যাটের রিপ্লাই দেয়ার সুবিধা আছে অ্যাপল ওয়াচের ডিসপ্লে থেকেই। অ্যাপল ওয়াচ থাকলে তাই আপনাকে বারবার ফোন বের করার প্রয়োজন পড়বে না। এমনকি অ্যাপল ওয়াচে আইফোনের মতোই নোটিফিকেশন সেন্টার রয়েছে যেখানে সোয়াইপ করবার মাধ্যমে সমস্ত নোটিফিকেশন এক নজরে দেখে নেয়া যায়।
এছাড়া বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপ, ম্যাপের ডিরেকশন ফিচার ইত্যাদি অ্যাপল ওয়াচ থেকেই পাওয়া যায়।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
👉 ম্যাকবুক কী? অ্যাপলের ম্যাকবুক ল্যাপটপ এত জনপ্রিয় কেন?
স্বাস্থ্য ও ফিটনেসের দিকে খেয়াল রাখা
যারা স্বাস্থ্য সচেতন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকেন তাদের জন্য অ্যাপল ওয়াচ একটি অসাধারন ডিভাইস। এতে বিভিন্ন ধরণের ট্র্যাকিং সুবিধা থাকে যার মাধ্যমে আপনার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন জিনিসের দিকে আপনি লক্ষ্য রাখতে পারবেন সহজেই। এতে হার্ট মনিটর করবার মাধ্যমে আপনার হার্টরেট জেনে নেয়া যায়। সারাদিনে কতটুকু হাঁটলেন বা দাঁড়িয়ে থাকলেন সব কিছুই অ্যাপল ওয়াচ থেকে জেনে নেয়া যায়। কতটুকু ব্যায়াম করলেন সে বিষয়েও সকল তথ্য জমা রাখে অ্যাপল ওয়াচ। আপনি কেমন ও কতটুকু সময় ঘুমালেন সেটিও ট্র্যাক করতে পারে এই স্মার্টওয়াচ। ফলে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খুঁটিনাটি সকল বিষয় সম্পর্কে সবসময় খেয়াল রাখা সম্ভব হয়।
অ্যাপল পে
আমাদের দেশে এই ফিচার খুব একটা কার্যকরী না হলেও বিদেশে অ্যাপল পে খুব জনপ্রিয়। ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে কার্ড বের না করে এনএফসি ফিচার ব্যবহার করে ঘড়ি থেকেই যে কোন স্থানে পেমেন্ট করা যায় এই ফিচার ব্যবহার করে।
মেসেজের রিপ্লাই দেয়া ও কল রিসিভ করা
যে কোন ধরণের মেসেজের রিপ্লাই অ্যাপল ওয়াচ থেকেই দেয়া যায়। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ বা সাধারণ এসএমএস যেটাই হোক না কেন অ্যাপল ওয়াচ থেকেই টাইপ করে রিপ্লাই দেয়া যায়। শুধু তাই নয় ফোন বের না করে ঘড়ি থেকেই আপনি কলে কথা বলতে পারবেন অ্যাপল ওয়াচের মাধ্যমে। অ্যাপল ওয়াচে মাইক্রোফোন ও স্পিকার দুটিই থাকে বলে কে কল দিয়েছে তা ঘড়ি থেকেই দেখে নিয়ে কল রিসিভ বা কেটে দেয়া যায়।
👉 আরও শক্তিশালী আইফোন আলট্রা আসতে পারে আগামীতে
রিমোট কন্ট্রোল
অ্যাপল ওয়াচ রিমোট কন্ট্রোল হিসেবেও কাজ করে অ্যাপল টিভি বা ঘরের অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসের জন্য। অ্যাপল ওয়াচের মাধ্যমে আইফোনের ক্যামেরাও নিয়ন্ত্রন করা যায়। সিরি অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকায় ঘরে থাকা স্মার্ট লাইট, ফ্যান ইত্যাদি সহজেই নিয়ন্ত্রন করা যায়।
অফলাইনে অডিও শোনা
অফলাইনে অডিও শোনার জন্য অ্যাপল ওয়াচ বেশ জনপ্রিয়। অ্যাপল ওয়াচে মোবাইলের মতোই আলাদা স্টোরেজ রয়েছে অডিও সংরক্ষন করে রাখার জন্য। এছাড়া স্পটিফাইয়ের মতো স্ট্রিমিং অ্যাপও রয়েছে যার মাধ্যমে সরাসরি ইন্টারনেট ব্যবহার করে অডিও ট্র্যাক শোনা যায় অ্যাপল ওয়াচ ব্যবহার করে।
মূলত অ্যাপল ওয়াচের এই সকল ফিচার আইফোনের সাথে মিলে খুব ভালো কাজ করে। অন্য স্মার্টওয়াচেও এই ধরণের ফিচার আছে। তবে আইফোনের জন্য অ্যাপল ওয়াচ ন্যাটিভ ইন্টিগ্রেশন দিয়ে থাকে, কেননা উভয়ই একই কোম্পানির পণ্য। তাই অ্যাপল ব্যবহারকারীরা অ্যাপল ওয়াচকেই পছন্দ করেন বেশি। তাছাড়া অ্যাপল ওয়াচ একটি আলাদা স্বতন্ত্র ডিভাইস হিসেবেও কাজ করতে পারে আইফোনের সাথে যুক্ত না হয়েই। নির্দিষ্ট কিছু মডেলের অ্যাপল ওয়াচ থেকে আপনি চাইলে কল, মেসেজ, মোবাইল ডাটা, ওয়াইফাই, জিপিএসের মতো সকল ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। সব মিলিয়েই তাই অ্যাপল ওয়াচ বেশ জনপ্রিয় স্মার্টওয়াচ।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।