ফেসবুকের ১০টি ব্যর্থ ফিচার যেগুলো হয়ত আপনার নজরেই আসেনি

Facebook-dislikeগত ১০ বছর ধরে ফেসবুকে বিভিন্ন উত্থান-পতন ঘটেছে। এই দীর্ঘ সময়ে সাইটটির উন্নয়নের লক্ষ্যে এতে অনেকগুলো ফিচার চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সফল বৈশিষ্ট্য ছিল স্ট্যাটাস আপডেট, ফটো আপলোড প্রভৃতি। এগুলোর পাশাপাশি ফেসবুক বিকন, ডিলস, ক্রেডিটস এসব ফিচারও লঞ্চ করেছিল কোম্পানিটি। কিন্তু আপনি হয়ত এদের নামই শোনেননি। কারণ, কিছু কিছু ফেসবুক ফিচার ইউজারদের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছিল। আর এজন্যই এগুলো চালু হলেও শেষ পর্যন্ত আর পরিচিত হয়ে ওঠেনি এবং অতঃপর ব্যর্থ ফিচার লিস্টে যুক্ত হয়েছে। এই পোস্টে এমন ১০টি ফেসবুক ফিচারের কথাই বলব।

১. ফেসবুক বিকন

এই ফিচারটির মাধ্যমে ফেসবুক তাদের ব্যবহারকারীদের অনলাইন কেনাকাটার দিকে লক্ষ্য রাখত এবং এসব তথ্য বিজ্ঞাপনদাতাদের নিকট বিক্রি করত। মনে করুন, আপনি অনলাইনে কোন পণ্য কিনলেন, তখন আপনি যদি ফেসবুকে লগইন করা নাও থাকতেন তাহলেও ব্রাউজারের কুকি ব্যবহার করে ফেসবুক আপনার সেই কেনাকাটার খবর সংগ্রহ করত এবং অ্যাডভার্টাইজারদের এই তথ্য দিয়ে আপনাকে পরবর্তী কেনাকাটার সাজেশন দেখাত। এটি প্রাইভেসির জন্য হুমকি হওয়ায় ২০০৭ এর শেষদিকে এসে পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেয়া হয়।

২. ফেসবুক ক্রেডিট

ফেসবুকে বিভিন্ন সেবা ক্রয়ের জন্য ভার্চুয়াল মুদ্রা চালু করা হয়েছিল যেটি ‘ফেসবুক ক্রেডিট’ নামে পরিচিত হয়। ১ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ১০ ফেসবুক ক্রেডিট পাওয়া যেত যা ব্যবহার করে গেমসের জন্য বিভিন্ন ফিচার/কনটেন্ট কেনা যেত। ফেসবুক এর আরও বহুমুখী ব্যবহার চাইলেও শেষ পর্যন্ত সেটি আর সফল হয়নি। অবশেষে ২০১২ সালের শেষদিকে এটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

৩. ফেসবুক প্লেসেস

ফোরস্কয়ারের মত লোকেশন শেয়ারিং অ্যাপের সাথে পাল্লা দিতে ফেসবুক তাদের মোবাইল অ্যাপে চালু করেছিল ‘প্লেসেস’ ফিচার। এতে ইউজাররা বিভিন্ন অবস্থান থেকে চেক ইন করতে পারতেন। কিন্তু ফেসবুকারদের নিকট এটি জনপ্রিয় হয়নি। এরপর ‘প্লেসেস’ পুরোপুরি মুছে দিয়ে সেবাটি স্ট্যাটাস আপডেটের সাথে একীভূত করে দেয়া হয়।

৪. ফেসবুক ডিলস

২০১১ সালে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটটি গ্রুপঅন, লিভিং সোশ্যাল প্রভৃতি সেবার সাথে প্রতিযোগিতা করতে ‘ডিলস’ ফিচার চালু করেছিল যা স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্রেতাদের জন্য ডিসকাউন্ট অফার করত। উদ্দেশ্য মহৎ হলেও এই ফিচারটিও ব্যর্থ হয়।

৫. ফেসবুক সাবস্ক্রাইব

সেপ্টেম্বর ২০১১’তে জনপ্রিয় ফেসবুক প্রোফাইলগুলোকে অনুসরণ করার জন্য ‘সাবস্ক্রাইব’ নামক ফিচার চালু করেছিল ফেসবুক। এর মাধ্যমে সাবস্ক্রাইবড ব্যক্তির ফ্রেন্ডলিস্টের বাইরের লোকজনও তাদের পাবলিক পোস্টে এক্সেস পেত। পরের বছর ডিসেম্বরে সাবস্ক্রাইব নামটি পরিবর্তন করে ‘ফলো’ রাখা হয়।

৬. ফেসবুক অন দিস ডে

এই ফিচারটি প্রথম চালু হয়েছিল ২০১১ সালে। এটি ফেসবুক ডেস্কটপের ডানপাশে এক বছর আগের পোস্টের হাইলাইট দেখাতো। কিন্তু বৈশিষ্ট্যটির পূর্ণ রিলিজ আর আসেনি। যদিও আপনি আপনার টাইমলাইন ভিজিট করে এখনও পুরনো পোস্ট দেখতে পারেন।

৭. ফেসবুক স্পন্সরড স্টোরিজ

এটি হচ্ছে ফেসবুকের একটি বিজ্ঞাপনী টুল। এর মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আয় করেছে কোম্পানিটি। কিন্তু ব্যবহারকারীদের প্রাইভেসি লঙ্ঘন হয় বলে ২০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দিয়ে এরপর আবারও আইনী ঝামেলার সম্মুখীন হওয়ার ফলে ফিচারটি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক।

৮. ফেসবুক অফারস

২০১২’তে ফেসবুক ‘অফারস’ নামের এই সেবাটি চালু করেছিল যার মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা বিভিন্ন কুপন সরবরাহ করতে পারত। কিন্তু ডিলের মতই এটিও বছরখানেক পর বন্ধ করে দেয়া হয়।

৯. ফেসবুক কোয়েচশন্স

কয়েক বছর আগে ফেসবুকে হয়ত এই ফিচারটি লক্ষ্য করে থাকবেন। এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্ন করা যেত এবং উত্তর হিসেবে মাল্টিপল চয়েস সেট করার সুবিধাও ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটি শুধুমাত্র গ্রুপের জন্য সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।

১০. ফেসবুক গিফট

ফেসবুকের গিফট ফিচারটির সাহায্যে আপনি আপনার বন্ধুদেরকে বাস্তব উপহার যেমন ক্যান্ডি, পশুপাখি প্রভৃতি পাঠাতে পারতেন। এটি একটি মার্কেটপ্লেসের মতই ছিল। কিন্তু আশানুরূপ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে না পারায় গত বছর এর বাস্তব গিফট দেয়ার ফিচার সরিয়ে নেয়া হয়।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,573 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *