পিডিএফ বা পূর্ণভাবে বললে পোর্টেবল ডকুমেন্ট ফরম্যাট- অর্থাৎ এটি ডিজিটালভাবে ডকুমেন্ট সংরক্ষণের একটি ফরম্যাট। এই ফরম্যাটটি বর্তমানে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে স্কুল, কলেজ, অফিস কিংবা নিজস্ব ব্যবহারের জন্য। ১৯৯২ সালে এই ফরম্যাটটি তৈরি করেছে জনপ্রিয় সফটওয়্যার কোম্পানি অ্যাডোবি এবং ধীরে ধীরে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফাইল বা অন্যান্য অনেক ধরণের ডকুমেন্ট ফরম্যাট অনেক আগে থেকেই থাকার পরেও কেন এই ফরম্যাট জনপ্রিয় হয়ে উঠলো? সেটিই জানতে পারবেন আজকের পোস্ট থেকে। তাছাড়াও পিডিএফ ফরম্যাটের সুবিধা, কীভাবে এই ফাইল তৈরি করবেন সেগুলো নিয়েও আলোচনা করা হবে এখানে।
পিডিএফ ফাইল কী?
সোজা কথায় পিডিএফ (PDF) ডকুমেন্ট ফাইলের জন্য ফরম্যাট। তবে অন্যান্য ফরম্যাট থেকে এটি আলাদা। পিডিএফ ফাইল ফরম্যাট ডিজাইন করা হয়েছে একদম কাগজের মতো সবাই যাতে একই জিনিস দেখতে পারে সেটির কথা মাথায় রেখে। অর্থাৎ কাগজের ডকুমেন্টের ডিজিটাল একটা অভিজ্ঞতা তৈরি ছিলো মূল লক্ষ্য। বেশিরভাগ ডকুমেন্ট ফাইল ডিভাইসভেদে আলাদা করে দেখতে হয়। যেমন ফন্ট সাপোর্ট না করতে পারে বা ভিন্ন ফন্টে দেখতে হতে পারে। তবে পিডিএফ ফাইলের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি মাথায় রেখে সকলকে সার্বজনীনভাবে এক রকম ফাইল দেখাতে এই ফরম্যাট ডিজাইন করা হয়েছে।
অর্থাৎ ফাইল শেয়ারের জন্য এই ফরম্যাট খুবই ভালো কাজ করে। পিডিএফ ফাইল ফরম্যাটে খুব সহজেই সাধারণ কাগজের মত সকল এলিমেন্ট এড করা যায়। এই ফাইল ফরম্যাটের ভেতরেই ফন্টও দিয়ে দেয়া হয় ফলে যেখানেই এই ফাইল দেখুন না কেনো অরিজিনাল ফন্টেই সেটা দেখতে পাবেন খুব সহজে। একারণেই পিডিএফ এতোটা জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
কীভাবে তৈরি করবেন পিডিএফ ফাইল
পিডিএফ ফাইল তৈরির জন্য বিভিন্ন উপায় আছে। পিডিএফ ক্রিয়েটর বা এডিটর সফটওয়্যার, কনভার্টার ইত্যাদি বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে আপনি পিডিএফ ফাইল বানিয়ে নিতে পারবেন। এমনকি আপনার ক্যামেরা থেকে তোলা ছবিকেও পিডিএফ ফাইল হিসেবে তৈরি করে ফেলা সম্ভব। পিডিএফ তৈরি তাই বেশ সহজ একটি ব্যাপার। এখানে আমরা পিডিএফ তৈরির বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।
অ্যাডোবি অ্যাক্রব্যাট
এটি পিডিএফ তৈরির অফিসিয়াল উপায়। অ্যাডোবির তৈরি এই সফটওয়্যার দিয়ে পিডিএফ তৈরি, এডিট, কনভার্ট, স্প্লিট, স্ক্যান করে পিডিএফ, মার্জ ইত্যাদি নানা কিছু করা সম্ভব। অ্যাডোবি এই সফটওয়্যারে পিডিএফ ফাইলকে ইচ্ছামতো তৈরি করা, এডিট করা বা কাস্টোমাইজ করার সুবিধা রেখেছে। এই সফটওয়্যার অনেক ফিচার সমৃদ্ধ এবং পিডিএফ তৈরির জন্য কাজের। যেহেতু ফরম্যাটটি অ্যাডোবের নিজের তৈরি তাই তাদের সফটওয়্যার ফাংশনগুলো বেশ ভালো কাজ করে।
তবে অ্যাডোবি অ্যাক্রব্যাট একটি প্রিমিয়াম সফটওয়্যার। ফ্রিতে ব্যবহার করার উপায় এতে নেই। মাসিক একটি সাবস্ক্রিপশন ফি এর বিনিময়ে এটি আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। তাই ফ্রিতে কিছু চাইলে পরবর্তী উপায়গুলো দেখে নিতে পারেন। অ্যাডোব অ্যাক্রব্যাট ডাউনলোড করতে এবং বিস্তারিত জানতে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।
পিডিএফ ক্রিয়েটর সফটওয়্যার
পিডিএফ বানানোর জন্য বা দেখার জন্য পিডিএফ ক্রিয়েটর সফটওয়্যার সেরা পদ্ধতি। এর মাধ্যমে আপনি নিজের ইচ্ছামতো পিডিএফ বানাতে পারবেন এবং একটা ডকুমেন্টকে নিজের ইচ্ছামতো সাজিয়ে নিতে পারবেন বিভিন্ন ইমেজ, স্টাইল, ফন্ট বা কালার দিয়ে। পিসি বা স্মার্টফোনের জন্য অসংখ্য ফ্রি পিডিএফ বানানোর সফটওয়্যার রয়েছে যা বেশ ভালো ফিচারযুক্ত। এমন কিছু ভালো ফ্রি পিডিএফ ক্রিয়েটর হচ্ছে:
এছাড়াও অনেক ফ্রি পিডিএফ এডিটর রয়েছে যা গুগল সার্চের মাধ্যমে খোঁজ করলেই পেয়ে যাবেন। এদের অনেকগুলোই অনলাইন ভিত্তিক, ফলে আপনার কোনো সফটওয়্যার ডাউনলোড করার দরকার হবেনা।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
👉 স্মার্টফোন দিয়ে ডকুমেন্ট স্ক্যান করুন সহজেই
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও গুগল ডকের মাধ্যমে
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড বা গুগল ডক থেকেও সহজেই ডকুমেন্ট ফাইলকে পিডিএফ হিসেবে কনভার্ট করে নেয়া যায়। এতে আলাদা কোনো সফটওয়্যারের প্রয়োজন পড়ে না।
আপনার পিসি বা ডিভাইসে মাইক্রোসফট অফিস থাকলে সহজেই ওয়ার্ড ফাইলে আপনার ডকুমেন্ট টাইপ করে তৈরি করে নিতে পারেন নিজের মতো করে। এরপর ফাইল ট্যাব হতে ‘Save As’ অপশন সিলেক্ট করে পিডিএফ হিসেবে ওয়ার্ড ফাইলটি সেভ করে নিতে পারবেন। ওয়ার্ড ফাইলে থাকা সকল ফন্ট, ইমেজ ও অন্যান্য এলিমেন্ট সহজেই পিডিএফ এ কনভার্ট হয়ে যাবে এবং অন্যকে পাঠানো সহজ হয়ে যাবে।
আর গুগল ডকে পিডিএফ তৈরি করতে আপনাকে প্রথমে গুগল ডকের ওয়েবসাইটে চলে যেতে হবে বা স্মার্টফোনের জন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। এরপর নতুন একটি ডকুমেন্ট তৈরি করে নিজের ইচ্ছামতো ডকুমেন্ট সাজিয়ে নিন। এরপর পিডিএফ হিসেবে চাইলেই এই ডকুমেন্ট ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। পিসিতে ডাউনলোড করতে ফাইল ট্যাব হতে ‘Download’ এ যেতে হবে। এরপর ‘Pdf Document (.pdf)’ সিলেক্ট করে দিতে হবে। এতে সহজেই আপনার ডকুমেন্ট পিডিএফ এ ডাউনলোড হয়ে যাবে। মোবাইল ‘Share & Export’ অপশন থেকে একইভাবে এটি করে নিতে পারবেন।
এছাড়াও যেকোন অফিস ফাইলকেও পিডিএফ হিসেবে সেভ করা যায় ‘Save As’ অপশন হতে।
অনলাইন কনভার্টার
অনলাইনে অসংখ্য ফ্রি কনভার্টার রয়েছে যা যেকোন ডকুমেন্ট ফাইলকে পিডিএফে কনভার্ট করে দিতে পারে। এসব কনভার্টার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজেই অন্য যে কোনো ফরম্যাটে আপনার ডকুমেন্ট তৈরি করে কনভার্ট করে নিতে পারেন। গুগল সার্চের মাধ্যমে এরকম অসংখ্য ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। এছাড়া নিচের লিংক হতেও সরাসরি প্রবেশ করতে পারেন।
গুগল ক্রোম ব্রাউজারের মাধ্যমে
গুগল ক্রোম ব্রাউজারের মাধ্যমে সহজেই যে কোনো ওয়েবসাইট পেজ বা এইচটিএমএল পেজকে পিডিএফ করে ফেলতে পারবেন। Ctrl+P কী চাপ দেয়ার মাধ্যমে আপনি প্রিন্ট উইন্ডো সামনে নিয়ে আসতে পারবেন। ‘Destination’ অপশনে ‘Save as PDF’ সিলেক্ট করে দিন। এরপর নিচে সেভ বাটনে ক্লিক করলেই তা পিডিএফ হিসেবে সেভ হয়ে যাবে।
এভাবেই সহজে পিডিএফ তৈরি করে এই ফরম্যাটের সকল সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। পিডিএফ ফাইল আজকাল সকল স্থানেই বেশ জনপ্রিয়। তাই এটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে চিন্তা করবার কোনো কারণ নেই।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
Your information are very essential and time demanded,Go Ahead
অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। অনুগ্রহ করে আমাদের সাথেই থাকুন 🙏