৪০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা কিছু ল্যাপটপ

বর্তমানের ডিজিটাল যুগে পেশাদার কাজে হোক কিংবা ব্যক্তিগত কাজ, ল্যাপটপ একটি অপরিহার্য হাতিয়ার। যদিও পারফরম্যান্স, সামর্থ্য এবং নির্ভরযোগ্যতার মিশ্রণ সরবরাহ করে এমন সেরা ল্যাপটপ খুঁজে পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশে পাওয়া যাবে এমন ৩ টি সেরা ল্যাপটপ সম্পর্কে খুটিনাটি বিষয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।

আমাদের আজকের লিস্টে থাকা প্রত্যেকটি ল্যাপটপই সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের হাতের নাগালে পাওয়ার জন্য আমরা ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ল্যাপটপ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। প্রতিটি ল্যাপটপই যাতে আপনার বিভিন্ন চাহিদা মিটাতে পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রেখে নির্বাচন করা হয়েছে। এর ফলে আপনি এই আর্টিকেল পড়ে আপনার উৎপাদনশীলতা এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ল্যাপটপ ডিভাইসে বিনিয়োগ করতে চাইলে সেটি সচেতনতার সাথে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। চলুন বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।

এইচপি 15s-gu0008AU 

এইচপির উক্ত নোটবুকে উইন্ডোজ ১০ হোম অপারেটিং সিস্টেমের সাথে প্রোসেসর হিসেবে এএমডি এথলন সিলভার 3050U প্রোসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। যার ২ টি কোর এবং ২ টি থ্রেড রয়েছে। টার্বো ফ্রিকুয়েন্সি সর্বোচ্চ ৩.২০ গিগাহার্জ পর্যন্ত এবং সিপিউ ক্যাশ মেমোরি ৫ এমবি। পিসিটিতে ১৫.৬ ইঞ্চির এইচডি এলইডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ডিসপ্লে ব্যাজেলে ডুয়েল এ্যারে মাইক্রোফোন সহ ওয়েব ক্যাম ব্যবহার করা হয়েছে।

উক্ত নোটবুকে ডিডিআর4 ৪ জিবি র‍্যাম ব্যবহার করা হয়েছে এবং স্টোরেজ হিসেবে রয়েছে ১ টেরাবাইট এইচডিডি। গ্রাফিক্স হিসেবে ইন্টিগ্রেটেড এএমডি রেডন গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে আপনি প্রয়োজনীয় ছোট খাটো কন্টেন্ট এডিট করতে পারবেন। এছাড়া অফিসের কাজের ক্ষেত্রে সব কিছুই আপনি অনায়াসে করতে পারবেন। বিভিন্ন ডিভাইস কানেকশনের জন্য I/O পোর্টস হিসেবে এক পাশে দেওয়া আছে একটি ল্যান পোর্ট, একটি এইচডিএম আই পোর্ট, এটি টাইপ সি ও এ পোর্ট এবং কম্বো অডিও পোর্ট। অপর পাশে রয়েছে আরো দুইটি ইউএসবি পোর্ট, এসএসডি পোর্ট। তবে কোনো অপটিক্যাল ড্রাইভ অপশন দেওয়া নেই।

ক্লিয়ার অডিও ব্যবহার করার জন্য এখানে কী বোর্ডের উপরে স্টেরিও স্পিকার বসানো হয়েছে। ব্যাটারি ব্যাকআপের ক্ষেত্রে বলতে গেলে এটি একবার চার্জে প্রায় ৪-৫ ঘন্টা ব্যবহার করা যাবে। তবে ব্যাটারি ব্যাকআপ মূলত আপনার ব্যবহার, সিস্টেম সেটিংস এবং স্ক্রিনের ব্রাইটনেসের উপর অনেকাংশে ডিপেন্ড করে থাকে।

HP 15S GU0008AU Laptop

এছাড়াও এই নোটবুকের সাথে আপনি ১ বছরের ওয়ারেন্টিও পেয়ে যাবেন। 

ডেল ইন্সপাইরন ১৫ ৩৫৮৩

ডেল ইন্সপাইরন ১৫ ৩৫৮৩ ডিভাইসে প্রসেসর হিসেবে পাচ্ছেন ইন্টেল পেন্টিনিয়াম গোল্ড 5405U প্রোসেসর যার সর্বোচ্চ ফ্রিকুয়েন্সি ২.৩০ গিগাহার্জ। এই প্রোসেসরে ২ টি কোর এবং ৪ টি থ্রেডের পাশাপাশি আছে ২ এমবি ক্যাশ মেমোরি। র‍্যাম হিসেবে এখানে থাকছে ৪ জিবির DDR4 র‍্যাম এবং স্টোরেজ হিসেবে থাকছে ১ টেরা বাইট এইচডিডি। আপনি চাইলে এই ডিভাইসে র‍্যাম আপডেট করে নিতে পারবেন। এজন্য আলাদা একটি স্লট ব্যবহার করা হয়েছে। আপনি যদি এর সাথে আপনার ল্যাপটপকে দ্রুত করার জন্য এসএসডি কার্ড ব্যবহার করতে চান তাহলে সেও সুবিধাও পেয়ে যাবেন। 

ডিসপ্লে হিসেবে পাচ্ছেন ১৫.৬ ইঞ্চির এইচডি এলইডি ডিসপ্লে। যার রেজুলেশন থাকেবে ১৩৬৬*৭৬৮ পিক্সেল। এই বাজেটের মধ্যে এটি একটি ভালো ডিসপ্লে বলা চলে। গ্রাফিক্স কার্ড হিসেবে এই ডিভাইসে ইন্টেল ইউএইচডি ৬১০ দেওয়া হয়েছে। ব্যাটারি ব্যাকআপের ক্ষেত্রে আলাদা করে বলতে গেলে এই ল্যাপটপ ব্যবহার করলে আপনি ৪-৫ ঘন্টার ব্যাকআপ পেয়ে যাবেন। যেটি এই বাজেটের ল্যাপটপগুলোর জন্য পর্যাপ্ত। কেননা এটি আপনাদের দৈনন্দিন চাহিদা ভালোভাবে মিটাতে সক্ষম। তবে ভারী কাজের ক্ষেত্রে এই ব্যাটারি ব্যাকআপ আরো কম হতে পারে। 

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

Dell Inspiron 3583

এই ল্যাপটপে ওয়ারলেস কানেক্টিভিটি অপশন হিসেবে আপনারা ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ ভার্শন ৪.১ পেয়ে যাবেন। পোর্ট কানেকশনের ক্ষেত্রে একটি ইউএসবি ২.০ পোর্ট, দুইটি ইউএসবি ৩.১০১ পোর্ট, একটি এইচডিএমআই পোর্ট এবং একটি হেডফোন এবং মাইক্রোফোন কম্বো জ্যাক। এই ডিভাইসের সাথে একটি এসডি কার্ড রিডার পোর্টের ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে বর্তমান সময়ের বিবেচনায় এখানে একটি টাইপ সি পোর্ট ব্যবহার হলে সেটি ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধা হতো। এই ডিভাইসটি রান করার জন্য অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করা হয়েছে। ব্লাক এবং সিলভার কালারের এই ডিভাইসটির ওজন ২.০৩ কেজি।

👉 ডেল নাকি এইচপি? কোন ল্যাপটপ বেশি ভাল?

আসুস ভিভোবুক X515MA 

এই ল্যাপটপটির ডিজাইনের ব্যাপারে বলতে গেলে এটিতে খুব সাধারণ একটা ডিজাইন থাকলেও এটি ব্যবহারকারীকে আকৃষ্ট করবে। ল্যাপটপ অনুযায়ী এর বেজেলের সাইজ তুলনামূলক একটু ছোট এবং কীবোর্ড একটু বড় হওয়ায় এটি এই বাজেটের অন্যান্য ল্যাপটপ থেকে এগিয়ে থাকবে। এই ল্যাপটপটিতে প্রোসেসর হিসেবে ইন্টেলের সেলেরন N4020 ব্যবহার করা হয়েছে। যার সর্বোচ্চ ক্লক স্পিড হলো ১.১০ গিগা হার্জ থেকে ২.৮০ গিগাহার্জ। এই ল্যাপটপতি র‍্যাম হিসেবে ৪ জিবি DDR4 র‍্যাম পাওয়া যাবে এবং স্টোরেজ হিসেবে থাকছে ১ টেরা বাইট HDD।

আসুস ভিভোবুক X515MA 

ল্যাপটপটিতে স্ক্রিন হিসেবে ১৫.৬ ইঞ্চির ফুল এইচডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। এটির রেজুলেশন ১৯২০*১০৮০ পিক্সেল। এই ল্যাপটপে গ্রাফিক্স কার্ড হিসেবে ইন্টেল UHD গ্রাফিক্স ৬০০ চিপসেট ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া এতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে থাকছে উইন্ডোজ ১০। এই ল্যাপটপটিতে ২ সেল ৩৭ওয়াট আউয়ার ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে। যার ব্যাটারি ব্যাকআপ প্রায় ৪-৫ ঘন্টা হয়ে থাকে। 👉 ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য কেমন কম্পিউটার ভাল হবে?

এই ল্যাপটপটিতে ওয়্যারলেস কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ ৪.২ ব্যবহার করা হয়েছে। পোর্টস কানেক্টর হিসেবে থাকছে একটি ইউএসবি ৩.০ পোর্ট, দুইটি ইউএসবি ২.০ পোর্ট, একটি ইউএসবি টাইপ সি পোর্ট, একটি এইচডিএমআই পোর্ট এবং একটি হেডফোন এবং মাইক্রোফোন কম্বো জ্যাক। চার্জিং পোর্টের পাশে আপনি একটি ভেন্টিলেশনের জন্য ফাকা জায়গা পাবেন যেটি এই ল্যাপটপকে ঠান্ডা রাখতে কিছু পরিমান সহায়তা করবে। ল্যাপটপটির উপরের বেজেলে একটি ওয়েব ক্যামেরা আছে যেটি দিয়ে মোটামুটি ভিডিও কলিংয়ের কাজ সেরে নেওয়া যাবে। এই ল্যাপটপটির ওজন ১.৭ কেজি। যেটি এসব বাজেটের জন্য স্ট্যান্ডার্ড একটা ওজন। ব্যবহারকারী চাইলে এই ল্যাপটপটিতে র‍্যাম এবং এসএসডি কার্ড সংযুক্ত করতে পারবেন। কেননা এই ল্যাপটপে এজন্য আলাদা পোর্ট যুক্ত করা আছে।

৪০ হাজার টাকার ভিতরে আমরা তিনটি নামি দামি কোম্পানির ল্যাপটপ নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি। সাধারণ ব্যবহারের জন্য আপনি এর থেকে যেকোনো একটি ল্যাপটপ বাছাই করতে পারেন। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবেন। এছাড়াও নিত্য নতুন প্রযুক্তি বিষয়ক নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং প্রয়োজনীয় সকল টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *