বর্তমান বিশ্বে ক্যাশ টাকার ব্যবহার দিন দিন কমের দিকেই যাচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড সব কিছুই বর্তমান সময়ে লেনদেনকে আরো সহজ করে তুলেছে। আজ আমরা ডেবিট কার্ড সম্পর্কে জানবো। কীভাবে ডেবিট কার্ড পাওয়া যায় এবং এর সুবিধা অসুবিধা সব কিছু বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক চলুন।
ডেবিট কার্ড কী?
ডেবিট কার্ড মূলত একটি পেমেন্ট কার্ড। আপনার যদি কোনো ব্যাংকে এক বা একাধিক সেভিংস বা কারেন্ট একাউন্ট থাকে তাহলে ওই ব্যাংক আপনাকে একটি ছোট চিপ যুক্ত প্লাস্টিকের কার্ড প্রদান করবে। এই কার্ডটি আপনার সেভিংস একাউন্টের সাথে কানেক্ট করা থাকবে। এটাকে অনেকে এটিএম কার্ড নামেও জেনে থাকে। আপনি এই কার্ডের মাধ্যমে অথরাইজড এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন অথবা অথরাইজড মার্চেন্টের কাছে পেমেন্ট করতে পারবেন। এতে করে আপনার কানেক্ট করা সেভিংস একাউন্ট থেকে টাকা অটোমেটিকালি কেটে নেয়া হবে।
ডেবিট কার্ড কীভাবে কাজ করে?
ডেবিট কার্ড ব্যাংকে থাকা সেভিংস বা কারেন্ট একাউন্টের সাথে সংযুক্ত থাকে। উক্ত একাউন্টের ফান্ডে জমানো অর্থ খরচ করার একটি মাধ্যম হলো ডেবিট কার্ড। এই কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটার পাশাপাশি ব্যাংকের এটিএম মেশিন থেকে টাকা তোলাও সম্ভব।
অনেক ব্যাংক আবার তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্কের বাইরেও ভিসা ও মাস্টারকার্ড এর মত বড় কার্ড-পেমেন্ট প্রসেসর এর ডেবিট কার্ড ইস্যু করছে। কিছু কিছু ডেবিট কার্ডে স্পেন্ডিং লিমিট দেয়া থাকে। অর্থাৎ একদিন নির্দিষ্ট এমাউন্টের বেশি টাকা খরচ করা যাবে না। ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড দেখতে একরকম হলেও ডেবিট কার্ড অন্যভাবে কাজ করে। ক্রেডিট কার্ড মানে হলো ব্যাংক থেকে ধার নিয়ে চলা কিন্তু ডেবিট কার্ড নিজের একাউন্টে জমানো অর্থ নিজে খরচ করার মতো বিষয়। আপনার সেভিংস একাউন্টে যতক্ষন যথেষ্ট টাকা আছে আপনি ডেবিট কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
ডেবিট কার্ডের খরচ বা ফি কেমন?
ডেবিট কার্ড হলো টাকা আদান প্রদানের সহজ একটি মাধ্যম। ডেবিট কার্ডের জন্য বাৎসরিক কিছু পরিমাণ অর্থ ফি হিসেবে প্রদান করতে হয়। ডেবিট কার্ডের ফি ব্যাংক অনুযায়ী আলাদা হতে পারে। সেটা আপনি ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা সরাসরি ব্যাংক থেকেই জেনে নিতে পারেন। তবে এর পরিমাণ সাধারণত এক হাজার টাকার কম হয়ে থাকে।
ডেবিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা
ডেবিট কার্ডের সুবিধা অসুবিধা দুটোই বিদ্যমান। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনার সুবিধামত এটি ব্যবহারযোগ্য কি না। চলুন দেখে নেয়া যাক এর সুবিধা অসুবিধা গুলো।
সুবিধা
১. ডেবিট কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটাতে ক্রেডিট কার্ডের মতো বিভিন্ন ফি প্রদান করতে হয় না।
২. ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা মানে নিজের অর্থ নিজে খরচ করা। ক্রেডিট কার্ডের মতো এখানে ধার দেনার কোনো ঝামেলা থাকে না।
৩. ক্রেডিট কার্ডের মতো ডেবিট কার্ড ইস্যু করতে গেলে কোন প্রকার স্কোরের প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট থাকলেই হয়।
৪. ডেবিট কার্ডে কোনো প্রকার সুদ প্রদান করতে হয় না।
৫. ডেবিট কার্ডে প্রতিবার লেনদেনের পূর্বে অবশ্যই পিন নাম্বার প্রদান করতে হয়। পিন কোড যেহেতু গোপন নম্বর, তাই সেটা গোপনীয় রাখতে পারলে এবং কার্ডটি নিরাপদে রাখলে অর্থ সুরক্ষিত রাখা যায় সহজেই।
৬. বর্তমানে অগণিত স্টোর, অনলাইন মার্চেন্ট ও এটিএম এ ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ডিজিটাল ওয়ালেটেও এই কার্ডের ব্যবহার করা হয়।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
অসুবিধা
১. ছোট খাটো কেনাকাটার জন্য ডেবিট কার্ড সুবিধা প্রদান করলেও বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে এই কার্ড থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো সুবিধা পাওয়া যায় না।
২. কিছু কিছু ডেবিট কার্ড ফ্রি হলেও অধিকাংশ ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে মেইনটেইনেন্স ফি প্রদন করতে হয়।
৩. ডেবিট কার্ড পেমেন্টের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো রিওয়ার্ড পয়েন্ট পাওয়া যায়না, যা ক্রেডিট কার্ডে পাওয়া যায়।
৪. ডেবিট কার্ড পেমেন্টের ক্ষেত্রে সাধারণত ক্যাশব্যাক বা ডিসকাউন্ট জাতীয় কোনো অফার থাকেনা।
ডেবিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা ও পাওয়ার জন্য করণীয়
সচরাচর ক্রেডিট কার্ড নেয়ার জন্য নানা রকম শর্ত পূরণ করার প্রয়োজন হয়। সেসব শর্তের একটিও অপূর্ণ থাকলে ক্রেডিট কার্ড পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে তেমন কোনো শর্ত পূরণের প্রয়োজন হয় না। ডেবিট কার্ডের জন্য আপনাকে শুধুমাত্র একটি ব্যাংক যেখানে ডেবিট কার্ড প্রদান করে সেখানে একাউন্ট খুলতে হবে এবং অবশ্যই সেটা উপযুক্ত একাউন্ট হতে হবে। ব্যাংক একাউন্ট চালু করার পরে আপনাকে ওই ব্যাংক থেকে ডেবিট কার্ড প্রদান করা হবে। কার্ড একটিভ করার সময় কার্ডের জন্য পিন নাম্বার সেট করতে হবে। এই পিন পরবর্তীতে টাকা তোলা বা কেনাকাটার সময় প্রয়োজন পড়বে। তাই এই পিন সবসময় গোপনীয়তার সাথে ব্যবহার করতে হবে, যাতে কেউ পিনটি না জেনে যায়।
ডেবিট কার্ড এর মাধ্যমে নিজের জমানো অর্থ খরচ করা হয় বিধার অনেকসময় বেশি খরচ হয়ে যায়। তবে এই কার্ডের ক্ষেত্রে যদি কেউ বুঝে শুনে খরচ করতে পারে তাহলে ক্রেডিট কার্ড এর থেকে ডেবিট কার্ডের ব্যবহার কিছু কিছু ক্ষেত্রে উত্তম। ডেবিট কার্ড সম্পর্কে আপনাদের কোনো তথ্য জানার দরকার পড়লে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
Good
Thank you 🙂