এন্ড্রয়েড ফোন সুরক্ষায় এই পূর্ব সতর্কতাগুলো মেনে চলুন

পকেটে কয়েক হাজার টাকা নিয়ে ঘুরতে আমাদের মধ্যে অনেকেই ইতস্তত বোধ করি। কিন্তু এতো দামি ফোনটা যে পকেটে নিয়ে ঘুরি, সেটার সুরক্ষা নিয়ে আসলে কতটুকু চিন্তা করি আমরা? প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড ফোনটা চুরি হয়ে গেলে কী করবেন?

ফোন চুরি হয়ে যাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। তবে একটি ফোন চুরির পর সেটি ফেরত পাওয়ার ছোটাছুটির চেয়ে আগে থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেট করে রাখা উত্তম। এই পোস্টে এমন কিছু পূর্ব সতর্কতা সম্পর্কে জানবেন, যা এন্ড্রয়েড ফোন সুরক্ষায় সকলের মেনে চলা উচিত।

স্ক্রিন লক সেট করা

অ্যান্ড্রয়েড ফোন এর নিরাপত্তা নিশ্চিতের সবচেয়ে সহজ একটি উপায় হলো স্ক্রিনলক সেট করা। একাধিক ধরনের স্ক্রিন লক সেট করার সিস্টেম রয়েছে, যেমনঃ পিনকোড, পাসওয়ার্ড, প্যাটার্ন, ইত্যাদি। প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যেকোনো এক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে লক স্ক্রিন সেট করা উচিত।

অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ফোনে থাকা ফিজিক্যাল ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর ব্যবহার করা উচিত। প্রায় সকল অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ফেস আনলক সুবিধা থাকলেও তা আইফোন এর ফেস আইডি এর ন্যায় কাজের নয়। তবে আধুনিক স্মার্টফোনগুলোতে ফিংগারপ্রিন্ট অনেক বিশ্বাসযোগ্য একটি প্রযুক্তি যা ডিভাইসকে আদর্শ নিরাপত্তা প্রদান করবে।

“ফাইন্ড মাই ডিভাইস” সুবিধা চালু রাখা

চুরি হয়ে যাওয়া বা হারানো ফোন খুঁজে পাওয়ার সবচেয়ে সেরা উপায় হলো গুগল এর “ফাইন্ড মাই ডিভাইস” ফিচারটি ব্যবহার করা। অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ফোনে গুগল এর এই ফিচারটি বিল্ট-ইন পেয়ে যাবেন। এই ফিচারটি বেশিরভাগ ডিভাইসে আগে থেকে চালু থাকে, তাই আলাদা করে “ফাইন্ড মাই ডিভাইস” চালু করার প্রয়োজন হয়না। বরং গুগল একাউন্টে সাইন ইন করে নিতে হয়। কিন্তু শুধুমাত্র অনুমানের ওপর নির্ভর না করে আপনি অবশ্যই এই সেটিংটি নিজে থেকে চেক করে নিন।

ফাইন্ড মাই ডিভাইস ফিচার চালু থাকলে সেটি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা চেক করতে ভুলবেন না। যেকোনো ডিভাইস এর “ফাইন্ড মাই ডিভাইস ওয়েবসাইট” এ প্রবেশ করে ফিচারটি কাজ করছে কিনা তা চেক করা যাবে।

গুগল এর ফাইন্ড মাই ডিভাইস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ডেডিকেটেড পোস্টটি ঘুরে আসতে পারেন। উক্ত পোস্টে এই ফিচার সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন। পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

👉 হারানো এন্ড্রয়েড ফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়

👉 হারানো আইফোন খুঁজে পাওয়ার উপায়

ব্যাকাপ নিয়ে রাখা

ফোন হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় ডাটাগুলো ও হারিয়ে যায়। এছাড়া ফোনে আমাদের অনেক স্মৃতি থাকে যা হারানো বেশ কষ্টের ব্যাপার। ফোন হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ফাইলসমূহ হারিয়ে ফেলতে না চাইলে আগে থেকে ব্যাকাপ নিয়ে রাখুন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

অ্যান্ড্রয়েড ফোন নিয়মিত ব্যাকাপ নেওয়ার অভ্যাস করা ভালো। এতে ফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ একেবারে হারিয়ে ফেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মূলত গুগল ড্রাইভে খুব সহজে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যাকাপ নেওয়া যায়। আবার গুগল ফটোসে ছবি ও ভিডিও ব্যাকাপ নেওয়ার সুবিধা রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন অনলাইন স্টোরেজেও ফাইল ব্যাকাপ নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যাকাপ নেওয়ার আরো বিভিন্ন উপায় রয়েছে।

আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যাকাপ নেওয়ার উপায় জানতে চান? ঘুরে আসতে পারেন অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যাকাপ নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত আমাদের ডেডিকেটেড পোস্ট যাতে সকল পদ্ধতি বর্ণনা করা রয়েছে। পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

👉 এন্ড্রয়েড ফোন ব্যাকআপ নেয়ার উপায়

👉 সেরা ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস সম্পর্কে জানুন

বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ফোনে স্ক্রিন লক ব্যবহারের কথা আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। তবে এই স্ক্রিন লকের বাইরে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে একটি বাড়তি নিরাপত্তার স্তর হিসেবে সেনসিটিভ ডকুমেন্টসমূহের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করতে পারেন। এর ফলে কেউ যদি আপনার ফোনের অ্যাকসেস পেয়েও যায়, তবুও আপনার সকল তথ্যের সন্ধান পাবেনা।

প্রায় প্রতিটি ফোনে বর্তমানে ফাইল হাইড করার কোনো না কোনো বিল্ট-ইন ফিচার রয়েছে। যেমন, স্যামসাং এর ফোনগুলোতে “Secure Folder” ফিচার রয়েছে। এই ফোল্ডারে ফাইল, ভিডিও, ছবি, ইত্যাদি হাইড করে রাখা যায়। এমনকি পুরো অ্যাপ ও হাইড করা যায় স্যামসাং এর এই ফিচারটি ব্যবহার করে। 

স্যামসাং এর পাশাপাশি শাওমি, রিয়েলমি, ইত্যাদি ব্র‍্যান্ডের ফোনগুলোতেও ফাইল হাইড করার সুবিধা রয়েছে। ওয়েবসাইটে প্রদত্ত পোস্ট অনুসরণ করে উক্ত ব্র‍্যান্ডসমূহের ডিভাইসে ফাইল হাইড করতে পারবেন।

👉 শাওমি ফোনে ছবি বা ফাইল হাইড করার নিয়ম

👉 রিয়েলমি ফোনে ফাইল হাইড করার নিয়ম

ডিভাইসের আইএমইআই নাম্বার সেভ করে রাখা

অ্যান্ড্রয়েড ফোন চুরি হয়ে গেলে বা হারিয়ে গেলে তা যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট জানাতে হয়। আর এই কতৃপক্ষকে অভিযোগ জানাতে প্রয়োজন হয় আইএমইআই নাম্বার বা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি নাম্বার। প্রতিটি ডিভাইসের ক্ষেত্রে এই নাম্বার আলাদা হয়ে থাকে। এটি সিম কার্ডের নম্বর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

স্যামসাং গ্যালাক্সি এ১৩

বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেটিংস হতে About Phone সেকশনে প্রবেশ করলে উক্ত ডিভাইসের আইএমইআই নাম্বার দেখতে পাবেন। তাই আগে থেকে আইএমইআই নাম্বার কোথাও নোট করে রাখা ভালো এই ভেবে যে পরে এটি হয়ত কাজে আসতে পারে।

কোনো কিছু হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে হারানোর পরের চেয়ে হারানোর আগে পদক্ষেপ নেওয়া অধিক উত্তম। তাই এখন থেকে আপনার প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড ফোনটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উল্লেখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করুন।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *