বিকাশ একটি জনপ্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা। বিকাশ নিয়ে ব্যবহারকারীদের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এই পোস্টে বিকাশ সম্পর্কে সর্বাধিক জনপ্রিয় প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানবেন।
বিকাশ একাউন্ট কি?
বিকাশ একাউন্ট হলো অর্থ জমা রাখার ও লেনদেনের একটি ভার্চুয়াল স্টোরেজ যা মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাকসেস করা যায়। যে নাম্বার ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খোলা হবে, সেটি বিকাশ একাউন্ট নাম্বার হিসেবে বিবেচিত হবে। উক্ত বিকাশ নাম্বার ব্যবহার করে টাকা ট্রান্সফার, ক্যাশ আউট, বিল পে, ইত্যাদি সুবিধা উপভোগ করা যাবে।
একটি এনআইডি কার্ড দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়?
একটি ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ড দ্বারা শুধুমাত্র একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। বিকাশ একাউন্টের মালিকানা থাকে যে এনআইডি কার্ড দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছে উক্ত ব্যক্তির কাছে।
ভুল বিকাশ নাম্বারে টাকা পাঠালে কিভাবে ফেরত পাবো?
ভুল নাম্বারে টাকা চলে যাওয়া বিকাশের একটি প্রধান সমস্যা। যদিওবা এখনো ভুল নাম্বারে টাকা চলে গেলে তা ফিরিয়ে আনার কোনো গ্যারান্টেড সমাধান নেই, তবুও যে নাম্বারে টাকা চলে গিয়েছে উক্ত নাম্বারে কল করে ভুল নাম্বারে টাকা চলে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে ফেরত চাইতে পারেন। তবে দ্রুত বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করলে তারা সহযোগিতা করবে।
যদি বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে টাকা ভুলে চলে যায়, সেক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় খুব সহজে টাকা ফেরত পাওয়া যায়, যদিও এটাও গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়না। তাই টাকা পাঠানোর আগে ভালোভাবে নম্বর চেক করা আপনার দায়িত্ব।
বিকাশ একাউন্টের মালিকানা কিভাবে পরিবর্তন করতে হয়?
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি বিকাশ একাউন্টের মালিকানা যে এনআইডি দিয়ে একাউন্ট খোলা হয়েছে উক্ত এনআইডি হোল্ডারের কাছে থাকে। বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে একটি মোবাইল নম্বরে থাকা বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে ঐ মোবাইল নম্বরে অন্য ব্যক্তির এনআইডি দিয়ে একাউন্ট খোলা যাবে। এভাবে একই নম্বরে অন্য ব্যক্তি বিকাশ একাউন্ট পেতে পারেন।
এনআইডি কার্ড ছাড়া বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে কি?
আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা স্মার্ট কার্ড/ পাসপোর্ট/ড্রাইভিং/ অনলাইন এনআইডি কপি লাইসেন্স না থাকলে আপনি জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদানকৃত আর্মড লাইসেন্স আইডি, মিলিটারি আইডি, মুক্তিযোদ্ধা আইডি, অফিস আইডি (সরকারি/আধা-সরকারি), স্টুডেন্ট আইডি অথবা এনজিও বেনিফিশিয়ারি আইডি দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন এবং জানিয়ে রাখছি উপরোক্ত আইডি গুলো দিয়ে শুধু মাত্র গ্রাহক সেবা কেন্দ্র এবং গ্রাহক সেবা থেকেই বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। মনে রাখবেন বয়স অবশ্যই ১৮ বছর অথবা তার বেশি হতে হবে।
👉 কিভাবে বিকাশ একাউন্ট খুলতে হয় জেনে নিন
জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম কি?
হ্যাঁ জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা সম্ভব, তবে বাড়তি কিছু ডকুমেন্ট লাগতে পারে। নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ার অফিসে যোগাযোগ করুন।
বিকাশ একাউন্ট খুললে কত টাকা বোনাস পাওয়া যাবে?
বিকাশ একাউন্ট খুললে একেক সময় একেক ধরনের বোনাস পাওয়া যায়। বিকাশ একাউন্টের বর্তমান বোনাস জানতে ঘুরে আসুন বিকাশ বোনাস সম্পর্কিত পোস্টসমূহ।
👉 বিকাশ বোনাস সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
👉 বিকাশ ফ্রাইডে অফারে ৩০০ টাকা বোনাস নেয়ার সুযোগ
বাটন মোবাইলে বিকাশ ব্যবহার করা যায় কি?
যেকোনো ধরনের মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্য বিকাশের সেবাসমূহ তৈরী করা হয়েছে। স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বাটন মোবাইল পর্যন্ত, যেকোনো সিম সাপোর্টেড ডিভাইসে বিকাশ ব্যবহার করা যাবে। তবে ফিচারে কমবেশি হতে পারে।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
বাটন মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে কি?
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি বিকাশ একাউন্ট খুলতে এনআইডি কার্ডের ছবি ও সেল্ফি দ্বারা ভেরিফাই করতে হয়। এর মানে হলো ঘরে বসে সাধারণ/ব্যাসিক বাটন মোবাইল থেকে বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবেনা। বাটন মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খুলতে এনআইডি কার্ড নিয়ে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট বা বিকাশ কাস্টমার কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করুন।
বিকাশ কিভাবে ক্যাশ ইন করতে হয়?
বর্তমানে বিকাশে অসংখ্য উপায়ে ক্যাশ ইন করা যায়৷ প্রথমত বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে বিকাশ ক্যাশ ইন করা যায়। এছাড়াও ব্যাংক একাউন্ট, কার্ড, এমনকি পেওনিয়ার থেকেও বিকাশে টাকা আনা যায়।
👉 ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড থেকে বিকাশে টাকা নেয়ার উপায়
বিকাশ নাম্বারে বিনামূল্যে ক্যাশ সেন্ড মানি করার নিয়ম কি?
বিকাশ প্রিয় নাম্বারে নির্দিষ্ট অংকের অর্থ বিনামূল্যে সেন্ড মানি করা যাবে। বিকাশ প্রিয় নাম্বার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন আমাদের ডেডিকেটেড পোস্টসমূহ থেকে।
👉 বিকাশ প্রিয় নাম্বার সেট করার নিয়ম
বিকাশে ক্যাশ আউট করার নিয়ম কি?
বিকাশ থেকে ক্যাশ আউট করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ আউট করা। বিকাশ এজেন্ট পয়েন্ট, ব্র্যাক ব্যাংক ও সাপোর্টেড এটিএম থেকে বিকাশ ক্যাশ আউট করা যায়।
👉 বিকাশ ক্যাশ আউট করার নিয়ম (অ্যাপ/*247# ও এজেন্ট/এটিএম)
বিকাশ ট্রানজেকশন আইডি ও রেফারেন্স কি?
বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার করে করা যেকোনো ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি ইউনিক রেফারেন্স নাম্বার জেনারেট হয়। মূলত ট্রানজেকশনের পরিচয় হিসেবে এই ইউনিক আইডি ব্যবহার হয়। অন্যদিকে রেফারেন্স ট্রানজেকশন সম্পর্কে ব্যক্তিগত রেকর্ড রাখতে ব্যবহার করা হয়।
বিকাশের সেবা ব্যবহার করতে বিকাশ একাউন্ট লাগবে কি?
হ্যাঁ, বিকাশের যেকোনো সেবা নিজে থেকে ব্যবহার করতে বিকাশ একাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ বিকাশের কোনো সেবা ব্যবহার করতে হলে প্রথমে বিকাশ একাউন্ট খুলতে হবে।
বিকাশ একাউন্ট নেই এমন নাম্বারে টাকা পাঠানো যাবে কি?
হ্যাঁ, বিকাশ একাউন্ট নেই এমন নাম্বারে বিকাশে টাকা পাঠানো যাবে। যে নাম্বারে টাকা পাঠানো হয়েছে, উক্ত নাম্বারে পরবর্তী ৭২ঘন্টার মধ্যে বিকাশ একাউন্ট খোলা হলে উক্ত অর্থ বিকাশ একাউন্টে যুক্ত হয়ে যাবে। তবে ৭২ঘন্টার মধ্যে পাঠানো নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খোলা না হলে সেক্ষেত্রে উক্ত অর্থ যে নাম্বার থেকে পাঠানো হয়েছে সে নাম্বারে রিফান্ড হয়ে জমা হয়ে যাবে।
বিকাশ একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
বিকাশ একাউন্ট খুলতে জাতিগতভাবে বাংলাদেশী হওয়া বাধ্যতামূলক। বয়স ১৮বছর বা তার থেকে বেশি হলে তবেই বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে। ন্যাশনাল আইডি / পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রভৃতির মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে। দেশের সকল মোবাইল অপারেটরে বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে।
👉 বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম (বোনাস সহ!)
বিকাশ ব্যবহার করতে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে কি?
না, বিকাশ একাউন্ট খুলতে বা ব্যবহার করতে ব্যাংক একাউন্ট খোলার কোনো প্রয়োজন নেই। যেকোনো ফোনে শুধুমাত্র ফোন নাম্বার ও এনআইডি ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে।
আমার বিকাশ একাউন্টে বিকাশ লোন নেওয়ার অপশন নেই কেনো?
বিকাশ সম্প্রতি লোন এর ব্যবস্থা করেছে। তবে হচ্ছে অধিকাংশ ব্যবহারকারী তাদের বিকাশ নাম্বারে লোন নেওয়ার অপশন দেখতে পেলেও লোন নিতে পারছেন না। এখানে অনেকগুলো বিষয় কাজ করে। বিকাশ ও সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বিবেচনা করে যাদেরকে লোন দিতে ইচ্ছুক হবে শুধু তারাই এই লোন নিতে পারবেন।
👉 বিকাশ লোন নেওয়ার উপায় – জামানত ছাড়া সিটি ব্যাংক ও বিকাশ ঋণ!
বিকাশ একাউন্ট পিন ও সিম কার্ডের পিন কি একই?
না, বিকাশ একাউন্টের পিন ও সিম কার্ডের পিন আলাদা বিষয়। বিকাশ একাউন্টের পিন শুধুমাত্র বিকাশ একাউন্টের সেবা গ্রহণে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে সিম কার্ডের পিন সিম কার্ডের সুরক্ষায় ব্যবহৃত হয়।
বিকাশ একাউন্টের পিন ভুলে গেলে কি করবো?
বিকাশ একাউন্টের পিন ভুলে গেলে তা রিসেট করা যাবে খুব সহজে। বিকাশ হেল্পলাইন নাম্বারে কল করে, বিকাশ সাপোর্টে যোগাযোগ করে বা বিকাশ লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে বিকাশ পিন রিসেট করা যাবে।
👉 বিকাশ পিন ভুলে গেলে রিসেট করার নিয়ম
একাধিকবার ভুল বিকাশ পিন প্রদান করলে কি হবে?
পরপর তিনবার ভুল বিকাশ পিন প্রদান করলে বিকাশ একাউন্ট টেম্পরারিলি ব্লক হয়ে যাবে। এরপর বিকাশ একাউন্টের পাসওয়ার্ড রিসেট করতে হবে।
বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে কি করা উচিত?
বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে একাউন্টের পিন পরিবর্তন করতে হবে। আপনার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক হলে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন ও তারা যেভাবে বলবে সেভাবে কাজ করুন।
👉 বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
বিকাশ একাউন্ট থেকে ইনকাম কিভাবে করে?
রেফারেল লিংক এর মাধ্যমে অন্যরা বিকাশ একাউন্ট খুললে তার থেকে রেফারেল বোনাস এর মাধ্যমে বিকাশ থেকে ইনকাম করা যায়। তবে এই সুবিধা সবসময় চালু থাকেনা।
বিকাশ সম্পর্কিত আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
Alhamdolillah