আমাদের নিত্য ব্যবহার্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে বিদ্যুৎ। বড় আকারের মেশিন যেমন ফ্রিজ, টিভি, কম্পিউটার প্রভৃতিতে বাসাবাড়ির লাইন থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ সরাসরি কানেক্ট করলেও অপেক্ষাকৃত ছোট এবং বহনযোগ্য ডিভাইসে সাধারণত রিচার্জেবল ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে লিথিয়াম আয়ন সেলই সবচেয়ে অধিক জনপ্রিয়।
সব সময়কার সঙ্গী মোবাইল ফোনের মধ্যেও সাধারণত লিথিয়াম আয়ন প্রযুক্তির ব্যাটারি দেয়া থাকে। এগুলো একবার চার্জ করে কয়েক দিন পর্যন্ত স্ট্যান্ডবাই টাইম পাওয়া যায়। কিন্তু ব্যাটারির বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এর ব্যবহারযোগ্যতাও কমে। এছাড়া সঠিক নিয়মে রিচার্জ-ডিসচার্জ না করলেও ব্যাটারি ব্যাকআপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অনেকেই প্রতিদিন তাদের মোবাইলের ব্যাটারি সম্পূর্ণ রিচার্জ করেন এবং এরপর তা আবার পুরোপুরি নিঃশেষ করে ফেলেন। কিন্তু নতুন একটি গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা।
ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা যায়, বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনের ব্যাটারি ১০০% পর্যন্ত চার্জ করা ঠিক নয়! বরং এর চার্জ সব সময় ৪০-৫০% এর উপরে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, আপনার ফোনের ব্যাটারির চার্জ সবসময় ৪০-৮০ শতাংশের মধ্যে রাখলে সেটাই তার পারফর্মেন্সের জন্য সর্বোত্তম হবে। এমনকি ওয়্যারলেস চার্জিং এড়িয়ে চলার পরামর্শও দেয়া আছে এতে।
আমাদের মধ্যে আরও একটি প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, নতুন ফোন কিনে সেটি ৮ ঘন্টা (কোন কোন জায়গায় ৭২ ঘন্টা) চার্জ দেয়া উচিৎ। গবেষক এরিক লাইমার এটিকে ভুল বা কুসংস্কার বলে অভিহিত করেন! কেননা, বর্তমানে ব্যবহৃত লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির জন্য এই পদ্ধতি প্রযোজ্য নয়। আগের দিনে যে নিকেল ব্যাটারি পাওয়া যেত সেগুলোর জন্য প্রথমবার একটানা বেশি সময় ধরে চার্জ দেয়ার দরকার হত।
১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস হচ্ছে মোবাইলের ব্যাটারির জন্য আদর্শ তাপমাত্রা। এর চেয়ে বেশি হলে সেটি কার্যক্ষমতা হারাবে। মিঃ লাইমার বলেন, ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কোন লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি রাখা হলে প্রতি বছর সেটি ২০% ধারণক্ষমতা হারাবে। আর সর্বোচ্চ ৪০-৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় ব্যাটারিটি তাৎক্ষণিক ক্ষতি (যেমন বিস্ফোরণ) থেকে নিরাপদ থাকবে।
প্রতিদিন স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় একটু খেয়াল রাখলেই এর ব্যাকআপ বেশি পাওয়া সম্ভব। যেমন, অপ্রয়োজনে ব্লুটুথ, ওয়াফাই, জিপিএস, সিঙ্ক্রোনাইজ, টাচস্ক্রিন ভাইব্রেশন, প্রভৃতি ফিচার চালু না রাখলে ব্যাটারির চার্জ কম খরচ হবে।
অল্প সময়ের জন্য নেটওয়ার্ক নেই এমন এলাকায় গেলে ফোনটি বন্ধ না করে একে অফলাইন/ফ্লাইট/এয়ারপ্লেন (অর্থাৎ সেট থেকেই নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয়া) মুডে রেখে দেয়াও বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা, প্রতিবার সেট অফ-অন করতেও বেশ কিছুটা চার্জ খরচ হয়, যার চেয়ে ফোন অফলাইনে থাকলে চার্জ কম লাগে।
👉 অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ব্যাটারি হেলথ চেক করার নিয়ম
স্ক্রিনের ব্যাকলাইট কতক্ষণ সময় জ্বলবে সেটা আপনার দরকার অনুযায়ী সেট করে নিন। অযথা বেশি ব্রাইটনেস দিয়ে রাখলে তাতেও অনেক চার্জ খরচ হয়। হ্যান্ডসেটের বিল্ট-ইন পাওয়ার সেভিং অপশন চালু করেও ব্যাটারি ব্যাকআপ বেশি পেতে পারেন।
ফোন ব্যবহারের পর সেট লক করে রাখুন। এতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কোন অপশন চালু হতে পারবে না। সেট নিয়মিত ব্যবহার করুন। এর সফটওয়্যার আপডেটেড রাখুন এবং প্রতি মাসে অন্তত একবার একে পুরোপুরি চার্জ এবং সম্পূর্ণ ডিসচার্জ করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর পোস্ট, পরে অনেকটা উপকৃত হলাম। জাযাকাল্লাহ খইরান।