কাছের বন্ধুকে বিদায় জানানো বেশ হৃদয়বিদারক বিষয়, কিন্তু ১৪০মিলিয়ন মাইল দূরে থাকা কোনো রোবটকে বিদায় জানানো কেনোই বা কষ্টের? এই পোস্টে জানবেন নাসা’র ইনসাইট রোবট সম্পর্কে সম্প্রতি যার যাত্রা শেষ হয়েছে।
২০১৮সালে মঙ্গলগ্রহে অবতরণ করে নাসা’র ইনসাইট রোবট। এই পোস্ট লেখার সময়ে রোবটটি মোট ১,৪৪৫ সোলস (মঙ্গলগ্রহের দিন) সময় কাটিয়েছে লালগ্রহে। মঙ্গলগ্রহে থাকাকালীন এই রোবট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও মজার কাজ করেছে যার ফলে এর বিদায় বেশ কষ্টের বিষয় বটে।
Interior Exploration using Seismic Investigation, সংক্ষেপে NASA InSight এর যাত্রা শুরু হয় শুধুমাত্র ২বছর স্থায়িত্বের পরিকল্পনা করে। রোবটটি ২০১৮সালের মে মাসে পৃথিবী ছেড়ে যায় ও নভেম্বর মাসে মঙ্গলের পৃষ্ঠে অবতরণ করে।
ইনসাইট রোবট এর মূল লক্ষ্য হলো বিল্ট-ইন সিসমোমিটার ব্যবহার করে ডাটা রিড ও ইন্টারসেপ্ট করা। এতে একটি হিট প্রোব (এইচপি৩) রয়েছে যা গ্রহের ইন্টারনাল হিট ট্রান্সফার পরিমাপে ব্যবহার করা হয়। এই রোবটে একটি বিল্ট-ইন ক্যামেরাও রয়েছে যা স্পেস প্রেমীদের জন্য সবচেয়ে সেরা সংযুক্তি। এর কারণ হলো এই রোবট নিয়মিত ছবি পাঠাতো ও মঙ্গলগ্রহ দেখতে কেমন তা সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছিলো। এসব ছবি নাসা’র অফিসিয়াল ইনসাইট মিশন পেজে দেখা যাবে।
মাত্র ৭০৯সোলস (৭২৮দিন) স্থায়িত্বের পরিকল্পনা করা হলেও এই রোবট এর চেয়েও বেশি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যেহেতু এখানে সোলার প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে তাই এটি যতটুকু আশা করা হয়েছিলো তার চেয়েও বেশি দূর যেতে সক্ষম হয়েছে। ওভারটাইমে বেশ ভালোভাবেই সেবা প্রদান করে যাচ্ছিলো এই রোবট। তবে দুঃখজনকভাবে ইনসাইট এর শক্তি ফুরিয়ে এসেছে যার ফলে চলে এসেছে বিদায়বেলা।
🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥
নাসার ইনসাইট ল্যান্ডার এর বিদায়বেলা যে ঘনিয়ে আসছে তা অনেক আগেই বুঝা গিয়েছে। অপারেশন শুরুর চার বছর পর ইতি ঘটতে যাচ্ছে পৃথিবীর সাথে ইনসাইট রোবটের সকল ধরনের যোগাযোগের। ল্যান্ডারের ৭-ফুট প্রশস্ত সোলার প্যানেলে জমা ধুলোর কারণে পাওয়ার মেইনটেইন করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে।
ইনসাইট রোবট এর টুইটার একাউন্ট থেকে মঙ্গলগ্রহ থেকে পাঠানো শেষ ছবিসহ একটি টুইট করা হয়। উক্ত টুইটে লেখা ছিলো, “আমার পাওয়ার কমে এসেছে, হতে পারে এটিই আমার পাঠানো শেষ ছবি।” হৃদয়বিদারক এই টুইটে আরো লেখা ছিলো, “আমাকে নিয়ে চিন্তার কারণ নেইঃ এখানে আমার সময় সুন্দর ও প্রোডাক্টিভ ছিলো। যদি আমার মিশন টিমের সাথে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয় তবে আমি তা চালিয়ে যাবো – কিন্তু আমার যাত্রা শীঘ্রই শেষ হতে যাচ্ছে। ধন্যবাদ আমার সাথে থাকার জন্য।”
👉 মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার ঝুঁকিগুলো জেনে নিন
সম্প্রতি পরপর দুইটি কমিউনিকেশন সেশন মিস করার পর নাসা এই মিশনকে অফিসিয়ালি সমাপ্ত বলে ঘোষণা করে। এর কারণ কি তা আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন। তবে নাসা জানায় ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক আরো কিছু সময় ধরে ইনসাইট এর খবর রাখার চেষ্টা করবে যদি কোনো খবর পাওয়া যায়।
পারসিভারেন্স ও কিউরিওসিটি এর মত অন্যান্য মার্স রোভারগুলোর মত ইনসাইটে কোনো চাকা নেই, এটি এর সম্পূর্ণ মিশনজুড়ে Elysium Planitia এর একই স্থানে অবস্থান করে। নাসা জানায় কিভাবে গত চারবছর ধরে ইনসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে মঙ্গল এর ইন্টেরিয়র লেয়ার, লিকুইড কোর, ভ্যারিয়েবল এলিমেন্ট সম্পর্কে জানা গেছে। মূলত প্লেনেটারি সাইন্সে সিসমোগ্রাফ ব্যবহারের কার্যকরিতা এই মিশন দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।
👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।