যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা কর্তৃক প্রেরিত রোবটযান কিউরিওসিটি মঙ্গলগ্রহে ১ বছর পূর্ণ করল আজ। ২০১২ সালের ৬ আগস্ট (ভৌগোলিক অবস্থানভেদে ৫ আগস্ট) রোভারটি লোহিত গ্রহে পদার্পণ করেছিল। ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচের মিশনে নাসার সবচেয়ে জটিল এই রোবট “গেইল ক্রেটর” পরিভ্রমণের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে পানি আছে বলে মনে করা হত। কিউরিওসিটি মঙ্গল থেকে সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে “অতীতে বাসযোগ্য ছিল” এরকমই ইঙ্গিত দিয়েছে।
কিউরিওসিটি রোভারের সেরা অর্জনগুলো কী?
প্রকৃতপক্ষে, কিউরিওসিটির প্রতিটি পদক্ষেপই এক একটি অর্জন। এক বছরে মঙ্গলের বুকে ১.৬ কিলোমিটার ভ্রমণ করে ১৯০ গিগাবিটের বেশি ডেটা সংগ্রহ করেছে রোবটটি। এটি ৩৬,৭০০টি সম্পূর্ণ ফটোগ্রাফ এবং ৩৫,০০০ থাম্বনাইল ইমেজ পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। এছাড়া এটি আরও ৭৫,০০০ লেজার শট সম্পন্ন করেছে যা বিজ্ঞানীদের নিকট বিভিন্ন উপাদান বিশ্লেষণে সহায়ক এবং দুটি পাথর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। চলুন দেখি কিউরিওসিটির সেরা ৫টি অর্জন।
১. অবতরণ
[★★] মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায় জানতে এখানে ক্লিক করুন
👉 বাংলাটেক ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন, দারুণ ভিডিও দেখুন
হ্যাঁ, কিউরিওসিটি রোভারটি মঙ্গলের বুকে যে ঠিকঠাকমত ল্যান্ড করতে পেরেছিল, সেটাই পৃথিবীর মানুষের জন্য প্রাথমিক বিজয় বলে অভিহিত হয়ে থাকে। গাড়ির মত আকৃতির ২ টন ওজন বিশিষ্ট এরকম একটি বস্তু অন্য গ্রহে পরিকল্পনা মাফিক অবতরণ করাতে পারাটাও নাসা’র কাছে বড় একটা চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল। এজন্য দরকার হয়েছে জটিলতর স্কাই ক্রেন এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় সুপারসনিক প্যারাস্যুট। এই শ্বাসরুদ্ধকর প্রক্রিয়াকে কিউরিওসিটির জন্য “সেভেন মিনিটস অফ টেরর” বলেই উল্লেখ করা হয়। বর্তমান প্রজন্মের জন্য এটা ছিল আরেকটি “চাঁদে মানুষ” টাইপের ঘটনা।
২. মঙ্গলে জীবনের অস্তিত্ব সম্পর্কে তথ্য
মঙ্গলগ্রহে জীবনের অস্তিত্ব আছে কিনা, বা অতীতে ছিল কিনা এ নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। কিউরিওসিটি রোভার এই ১২ মাসের অভিজ্ঞতা ও উপাত্ত দিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে এইটুকু বার্তা পৌঁছে দিয়েছে যে, “রোবটটি যে পরিবেশে চলাফেরা করেছে, সেটি কোন একসময় বাসযোগ্য ছিল”; সেখানে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন সালফার, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, ফসফরাস এবং কার্বন পাওয়া গেছে।
৩. মঙ্গলের উপরিভাগ লাল, কিন্তু নিচের দিকে ধূসর
মঙ্গল গ্রহকে সবাই রেড প্ল্যানেট হিসেবে চিনলেও এর আগাগোড়া সব কিন্তু লাল নয়! কিউরিওসিটি দেখাচ্ছে, গ্রহটির উপরভাগ লালচে বা কমলা রঙের হলেও এর নিচের ড্রিল করা অংশ ধূসর। এখানে পাথরের আয়রন অংশে অক্সিডাইজেশন ঘটায় এই রঙ বিভেদ হয়ে থাকে।
৪. মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল অনেক অনেক দিন আগেই ধ্বংস হয়ে গেছে
শুনে হয়ত একটু হতাশই হবেন, কিউরিওসিটির সাহায্যে পরীক্ষানিরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল আরও ৪ বিলিয়ন বছরেরও বেশি সময় আগে থেকেই জীবনযাপনের জন্য অনুপযোগী ছিল।
৫. তেজস্ক্রিয়তার কারণে মঙ্গলগ্রহে ভ্রমণ করাটা মানুষের জন্য বিপজ্জনক!
আপনি যদি একটু শৌখিন গোছের মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে মঙ্গলগ্রহে ছুটি কাটানোর ইচ্ছে করতেই পারেন। কিন্তু কিউরিওসিটি বলছে, সেখানে গেলে মাটির এই পৃথিবীতে (ছুটি কাটানোর পরে) আর ফিরে নাও আসতে পারেন। কেননা গ্রহটির বুকে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা এতই বেশি যে তা মানবদেহের জন্য জীবনঘাতি হতে পারে।
যাই হোক, মার্চ রোভারের ২য় বছর শুরু হতে যাচ্ছে এবং এবারও এটি আরও অনেক অনেক ছবি ও উপাত্ত সংগ্রহ করবে।
আপনি কি মঙ্গলে ঘুরতে যেতে চান? … চাইতেই পারেন! আধুনিক বিজ্ঞান হয়ত শীঘ্রই এমন কোন উপায় বের করে ফেলবে যাতে করে দিব্যি মঙ্গলগ্রহে গিয়ে মোবাইলের মেমোরি কার্ড ভরা এইচডি ছবি এনে ফেসবুকে শেয়ার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবেন! আর আমরাই হয়ত সেই ছবিগুলো রেফারেন্স সহকারে প্রকাশ করব “প্রথম বাংলাদেশীর মঙ্গল ভ্রমণ” শিরনামে!!!
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।