জিমেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস

বিশ্বজুড়ে জিমেইলের খ্যাতি আকাশচুম্বী৷ ইমেইল ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশই এই প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভরশীল৷ অফিসিয়াল কাজের ক্ষেত্রে হোক বা আন-অফিসিয়াল কাজের ক্ষেত্রে, কিংবা রোজকার তথ্য চালাচালি করতে অনেকেরই নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হলো জিমেইল৷ প্রযুক্তির এই যুগে এসে জিমেইল নামটি শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন।

তবে এটা সত্য যে, জিমেইল ব্যবহার করলেও এর অধিকাংশ ফিচার সম্পর্কে এর ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা একেবারে কম। জিমেইলের বহু ফিচার আছে যেগুলো ব্যবহারের ফলে এর ব্যবহারকারী নানা ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকে তবে সে সম্পর্কে কিছু কিছু ব্যবহারকারীর কোনো আইডিয়া নেই বললেই চলে। তাই আজ আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জিমেইলের প্রয়োজনীয় কিছু ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

একাধিক জিমেইল একাউন্ট এক জায়গায় করা

আমাদের অনেকেরই একাধিক জিমেইল একাউন্ট থাকে। একটি হয়তো ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জন্য এবং একটি অফিসিয়াল কাজের জন্য। আপনি এতোদিন হয়তো একবার ব্যক্তিগত একাউন্টে কাজ শেষ করে লগ আউট করে আবার অফিসিয়াল একাউন্টে লগ ইন করেন অফিসিয়াল কাজ করার জন্য।

উক্ত ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবার জন্য জিমেইলের একটি চমৎকার ফিচার রয়েছে। ফলে যখন একাধিক একাউন্ট এক জায়গায় করবেন তখন এক জায়গা থেকেই আপনি দুইটি একাউন্টের যাবতীয় কাজ করতে পারবেন। ফিচারটি আপনাকে আপনার যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে।

যেভাবে একাধিক জিমেইল একাউন্ট এক জায়গায় করবেন

সবার প্রথমে আপনার জিমেইল একাউন্টে লগ ইন করতে হবে। তারপর সেটিংস অপশন থেকে “Accounts and Import” অপশনে প্রবেশ করতে হবে। এবার “Send mail as” এর পাশে থাকা “Add another email address” এ প্রবেশ করলে একটি পপ আপ আসবে। সেখানে আপনার কাঙ্ক্ষিত জিমেইল একাউন্ট লিখে “Next Step” এ ক্লিক করুন। এবার আপনার ঐ দ্বিতীয় ইমেইল ঠিকানায় লগ ইন করলে দেখতে পাবেন যে, সেখানে গুগলের পক্ষ থেকে একটি ভেরিফিকেশন কোড গিয়েছে। সেই ভেরিফিকেশন কোডটি বসিয়ে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন। আপনি এখন আপনার দুই একাউন্টই এক জায়গায় পেয়ে যাবেন। এবার আপনি যেকাউকে একটি ইমেইল পাঠাতে গেলে দুইটি ইমেইল এড্রেস থেকে যেকোনো একটি আলাদা ভাবে সিলেক্ট করার অপশনও পেয়ে যাবেন।

Undo Send বাটন চালু করুন

ধরুন কাউকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল পাঠানোর সাথে সাথে মনে পড়লো আপনি ঐ ইমেইলে কিছু একটা ভুল করেছেন। তখন নিশ্চয়ই আপনি আগের ইমেইলটি ফেরত আনতে চাইবেন। জিমেইলে এমন দারুণ একটি ফিচার রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি কোনো ইমেইল পাঠানোর পর একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেই ইমেইলটি ফেরত নিয়ে আসার সুযোগ পেয়ে যাবেন। 

যেভাবে Undo Send অপশন চালু করবেন

সেটিংস থেকে প্রথম অর্থাৎ “General” ট্যাবের একটু নিচেই পেয়ে যাবেন Undo Send অপশনটি। তবে এটি ব্যবহার করে আপনি কতক্ষন পর্যন্ত Undo করার সু্যোগ পাবেন তা আপনি এখানে নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। তবে বলে রাখা ভালো যে ৩০ সেকেন্ডের বেশি সময় আপনি পাবেন না।

স্মার্ট কম্পোজ চালু করুন

জিমেইলের আরেকটি জনপ্রিয় ফিচার হলো স্মার্ট কম্পোজ। আপনি ইমেইল লিখার সময় গুগলের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আপনার সুবিধার জন্য সেনটেন্স লিখতে কিছু ওয়ার্ড সাজেস্ট করবে। আপনি চাইলে সে সাজেশন ব্যবহার করতে পারেন, আবার নাও পারেন। ধরুন আপনি লিখেছেন “I hope”। এর পাশেই জিমেইল তাদের সাজেশন কিছুটা ধূসর রঙে দেখাবে “you are doing well”। আপনি যদি সাজেস্ট করা এ অংশ আপনার ইমেইলে যোগ করতে চান, তাহলে কীবোর্ডের Tab বাটনে ক্লিক করুন (পিসি থেকে), আর মোবাইলে হলে ডান দিকে স্লাইড করুন। তাহলেই যুক্ত হয়ে যাবে। স্মার্ট কম্পোজের এই অপশন চালু করতে চাইলে সেটিংস থেকে জেনারেল ট্যাবের একটু নিচে গেলে এই অপশনটি পেয়ে যাবেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

gmail writing suggestion

কী বোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করা

মাউসের ব্যবহার কমিয়ে কী বোর্ডের শর্টকাট ব্যবহারে পারদর্শী হতে পারলে নিঃসন্দেহে কাজের গতি অনেকটাই বেড়ে যাবে। তাই জিমেইল ব্যবহারে সাবলীলতা আনার জন্য কিছু শর্টকাট ব্যবহার শিখে নেওয়া উচিত। কী বোর্ড শর্টকাট অপশন আপনি General ট্যাবে পেয়ে যাবেন। 👉 জিমেইলের কিছু কিবোর্ড শর্টকাট যা আপনার সময় বাঁচাবে

দরকারি কয়েকটি জিমেইল কী বোর্ড শর্টকাট

Shift + ! = Report as spam. এটির মাধ্যমে আপনি যেকোনো ইমেইল স্প্যাম হিসেবে রিপোর্ট করতে পারবেন। 

R = Reply. এই শর্টকাট অনেকের কাছেই সাধারণ মনে হলেও এটি আসলে অসাধারণ একটি উপায়। কারণ R প্রেস করে রিপ্লাই দিলে “Reply All” এর বিব্রতকর অবস্থা এড়াতে পারবেন।

C = Compose. জিমেইল ড্যাশবোর্ডে থাকা অবস্থায় C চাপলে নতুন ইমেইল লেখার উইন্ডোটি পপ আপ হবে।

শিডিউলড ইমেইল সেন্ড করা

ধরুন আপনি অফিসের কাজ শেষ করে বের হলেন বিকাল ৫ টায়।এরপর ট্রাফিক জ্যামে সময় নষ্ট হচ্ছে। কখন বাসায় পৌঁছাবেন, তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। কিন্তু ঠিক সন্ধ্যা ৭ টায় আপনার একটা জরুরি মেইল পাঠাতে হবে কাউকে। জ্যাম – ক্লান্তি সবকিছু মিলিয়ে ভুলে গেছেন মেইল পাঠানোর কথা! এরকম পরিস্থিতিতে হয়তো আপনি বেশ ঝামেলায় পড়বেন। এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে জিমেইলের অসাধারণ একটি ফিচার রয়েছে যার নাম শিডিউলড ইমেইল ফিচার। এই ফিচার ব্যবহার করে আপনি যে কোনো ইমেইল পাঠানোর জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে নিতে পারেন। এতে করে আপনি আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল পাঠাতে ভুলবেন ও না সাথে সাথে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। 👉 ইমেইল শিডিউল করার নিয়ম (জিমেইল)

যেভাবে জিমেইল শিডিউলড ফিচার ব্যবহার করবেন

ইমেইল লেখা শেষে সেন্ড বাটনের পাশেই থাকা তিন কোণা তীর বাটনে ক্লিক করলে শিডিউল সেন্ড নামের একটি পপ আপ পেয়ে যাবেন। এখানে ক্লিক করে আপনি আপনার মেইল পাঠানোর জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করার জন্য অপশন পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে আপনি সময় নির্বাচন করে শিডিউল ইমেইল পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারেন।

প্রতিনিয়ত জিমেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস সম্পর্কে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবেন। এছাড়াও নিত্য নতুন টেকনোলজি বিষয়ক নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং প্রয়োজনীয় সকল ধরনের টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,549 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *