কম পুঁজির কিছু অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

বলা হয় যেকোনো ধরনের তথ্যের ভান্ডার হলো ইন্টারনেট। একইভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কিন্তু অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করা যায় লাভজনক অনলাইন ব্যবসা। আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবস্থার উন্নতির কথা বিবেচনা করলে দেখা যায় যে অনলাইন ব্যবসার সুযোগ দিনদিন বেড়ে চলেছে। এজন্য অনেকেই কম পুঁজির কিছু অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে থাকেন।

আপনার যদি পর্যাপ্ত দক্ষতা ও স্বল্প পুঁজি থাকে, তবে শুরু করতে পারেন কোনো অনলাইন ব্যবসা। চলুন জেনে নেওয়া যাক কম পুঁজির কিছু অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত।

অনলাইন কোর্স বিক্রি

বর্তমানে যেকোনো বিষয়ের উপর অনলাইন কোর্স এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন, যেখানে বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল আছে শেখার জন্য সেখানে কেনো মানুষ টাকা দিয়ে কোর্স কিনতে যাবে। এর উত্তর অনেক সহজ।

কোনো ব্যক্তি যদি কোনো বিষয় শেখা নিয়ে সত্যি সত্যি আগ্রহী থাকেন, তবে অবশ্যই সে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দক্ষ কারো কাছ থেকে শিখতে চাইবে। এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে বর্তমানে আমাদের দেশেও পেইড অনলাইন কোর্স এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অনলাইন কোর্স বিক্রি করতে প্রথমে অনলাইন কোর্স তৈরী করতে হবে। প্রথমে আপনি কোন বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে দক্ষ তা খুঁজে বের করুন। এরপর উক্ত বিষয়ে এক্সপার্ট হতে আরেকজন ব্যক্তির কি কি তথ্য জানা লাগবে তা নোট করুন ও কোর্স তৈরির কাজে লেগে পড়ুন।

আপনি চাইলে আপনার অনলাইন কোর্সকে একাধিক সিরিজ ও পার্টেও সাজাতে পারেন। এক্ষেত্রে যে ব্যক্তি যে বিষয়ে আগ্রহী, সে বিষয়ের কোর্স কিনবে। যেমনঃ আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ডেভলপমেন্ট নিয়ে একটি কোর্স তৈরী না করে বরং ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপমেন্ট ও ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ডেভলপমেন্ট এর আলাদা কোর্স তৈরী করুন সেক্ষেত্রে যারা কিনবে তারা তাদের প্রয়োজনীয় কোর্সটি বেছে নিতে পারবে।

অনলাইন কোর্স বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনে পাঠদান করেও আয় করা শুরু করতে পারেন। এছাড়াও ইউটিউব বা ফেসবুক এর মত ফ্রি মিডিয়া ব্যবহার করে সহজেই আপনার কোর্সের প্রচারণা চালাতে পারেন। আবার কোর্সের ফাঁকে ফাঁকে যদি বিজ্ঞাপন দেখাতে পারেন তাহলে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে আয় করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অনলাইনে ইনকামের যে কয়টি পথ রয়েছে তার মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যতম বহুল প্রচলিত কার্যকর পন্থা। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে অন্যের প্রোডাক্ট প্রোমোট ও সেল করার মাধ্যমে পাওয়া কমিশন থেকে আয় করা যায়।

শুনতে বেশ কঠিন কাজ মনে হলেও আসলে কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করা তেমন আহামরি কোনো ব্যাপার না। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সেরা বিষয় হলো যেকেউ তার বর্তমান কাজের পাশাপাশি এটি করতে পারে।

যাদের নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইট আছে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছুটা পরিচিতি আছে, তাদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনেক সহজ একটি কাজ।

👉 ওয়েবসাইট কি? কেন আপনার একটি ওয়েবসাইট দরকার?

অনলাইন টি-শার্ট শপ

অনলাইন শপিং এখন অনেক জনপ্রিয়। তার উপর বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন বিষয় বা থিমকে মাথায় রেখে তৈরী টি-শার্ট এর ব্যাপক ট্রেন্ড রয়েছে। আপনি চাইলে অল্প স্যাম্পল নিয়ে ফেসবুক থেকেই আপনার অনলাইন টি-শার্ট শপ এর যাত্রা শুরু করতে পারেন।

এই ব্যবসার ক্ষেত্রে সবসময় খেয়াল রাখতে হয় কি বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা হচ্ছে। সে বিষয় মাথায় রেখে আপনার টি-শার্ট ক্যাটালগ নিয়মিত আপডেট করুন।

আপনি প্রশ্ন করতে পারেন যে শুরুতে বেশি পুঁজি ছাড়া কিভাবে অনেক টি-শার্ট কালেকশন রাখবেন। এর উত্তর অনেক সহজ। আপনার অনলাইন কালেকশনে থাকা প্রতিটি প্রোডাক্ট আপনার কালেকশনে থাকার প্রয়োজন নেই। টি-শার্ট নির্মাতার সাথে এমন ডিল করুন যাতে অর্ডার পাওয়ার পর অল্পসময়ে টি-শার্ট ডিজাইন করে দেয়!

ড্রপশিপিং ব্যবসা

সত্যি বলতে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে কোনোই ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন হয়না। ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করতে মূলত প্রয়োজন ড্রপশিপিং ব্যবসা সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান ও উপযুক্ত সময়ের। ড্রপশিপিং এর ক্ষেত্রে ভালো বিষয় হচ্ছে এক্ষেত্রে কোনো ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট আপনার কিনতে হয় না বা কোথাও জমা রাখতে হয়না।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

ড্রপশিপিং ব্যবসায় মূলত কিছু প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য অনলাইনে পোস্ট করা হয় ও যারা কিনতে চান তারা বিক্রেতাকে উক্ত প্রোডাক্টের জন্য অর্ডার দেয়। বিক্রেতা সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে প্রোডাক্ট কম দামে কিনে নিয়ে তা ক্রেতার নিকট পৌঁছে দেয়। এখানে ড্রপশিপিং যিনি করেন তার তার আয় হলো সাপ্লাইয়রকে প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার পর অবশিষ্ট অর্থ। আরো জানুন 👉 ড্রপশিপিং কি? ড্রপশিপিং ব্যবসা থেকে আয় করে কিভাবে?

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট

facebook page - কম পুঁজির কিছু অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

সোশ্যাল মিডিয়া আজকের দিনে প্রতিটি ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। তবে ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক সময় সোশ্যাল মিডিয়া পরিচালনা করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট পদ থাকেনা। তাই ব্যবসাগুলো সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার আউটসোর্স করে থাকে। আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন, সেক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার এজেন্সি বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে ভালো অংকের অর্থ আয় করতে পারেন।

রিমোট কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট

আপনি যদি অন্যদের সাহায্য করতে পছন্দ করেন কিন্তু একটি অফিস বা কল সেন্টারে সারাদিন বদ্ধ হয়ে থাকতে পছন্দ না করেন, সেক্ষেত্রে একজন রিমোট কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট হিসাবে ঘরে বসেই অন্যদের সাহায্য করে আয় করতে পারেন। নিজে কয়েকজন টিম মেম্বার সংগ্রহ করে এটা আপনার এজেন্সি ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। বিদেশে আজকাল এটা প্রচলিত একটা ব্যবসা।

👉 অনলাইনে ইনকাম করার সেরা ১০ উপায়

একাধিক উপায়ে আপনি রিমোট কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট হিসাবে কাজ করতে পারেন। চ্যাট, ইমেইল, ফোন, ভিডিও, ইত্যাদির মাধ্যমে অন্যদের খুব সহজেই কাস্টমার কেয়ার সাপোর্ট দিতে পারেন। বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠানই রিমোট কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট নিয়োগ করে থাকে, যা আপনার জন্য একটা দারুণ সুযোগ হতে পারে।

ই-বুক বিক্রি

প্রকাশের প্রথম দিনেই ১৬লক্ষ টাকার মত বিক্রি হয় ১০মিনিট স্কুল থেকে প্রকাশিত মুনজেরিন শহীদ এর স্পোকেন ইংলিশ পিডিএফ ই-বুকটি। ডিজিটাল প্রোডাক্ট হলেও ৭৫টাকার এই বই দেশের মানুষ সাদরে গ্রহণ করে। এর থেকে বুঝা যায় দেশে ই-বুক এর মত ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর যথেষ্ট ডিমান্ড রয়েছে।

আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে তথ্যনির্ভর ই-বুক তৈরিতে সক্ষম হোন ও সঠিকভাবে এর মার্কেটিং করতে পারেন, তাহলে দেশের বাজারেও ই-বুক বিক্রি করতে তেমন একটা অসুবিধা হবেনা। আপনার কোন বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে তার পাশাপাশি মানুষের চাহিদার কথা মাথা রেখে ই-বুক এর বিষয় নির্বাচন করুন। ই-বুক বিক্রি করতে পারেন আপনার নিজের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে।

👉 অনলাইন ব্যবসা শুরু করার আগে করণীয়

ডোমেইন ফ্লিপিং

ডোমেইন ফ্লিপিং একটি মজার কাজ। এই প্রক্রিয়াতে একটি সম্ভাবনাময় ডোমেইন নাম কেনা হয় ও পরে সুযোগ বুঝে বেশি দামে তা বিক্রি করা হয়। ডোমেইন নেম এর চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলেছে। তাই নিজের পছন্দের ডোমেইন লুফে নিতে ভালো মানের অর্থ খরচ করতে পিছুপা হননা অনেক ব্যবসা বা ব্যক্তিগণ। তাই গোড্যাডি কিংবা নেমচিপ থেকে সুলভ মূল্যে একটি সম্ভাবনাময় ডোমেইন কিনে সেল এর জন্য নোটিশ দিতে পারেন।

ডোমেইন ফ্লিপিং এর প্রক্রিয়া কিন্তু একদিনেই আপনাকে আয়ের মুখ দেখাবে না। ডোমেইন ফ্লিপিং করে আয়ের ক্ষেত্রে একটি ডোমেইন থেকে কাঙ্ক্ষিত দাম পেতে কিংবা সেলার খুঁজে পেতে অনেক সময় মাসের পর মাস, এমনকি বছর ও লেগে যেতে পারে। তাই এই ব্যবসাটিকে সাইড ব্যবসা হিসেবে চালানোর সাজেশন থাকবে।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর ধারণা তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও বিশ্বব্যাপী বেশ ভালোভাবেই গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে বিষয়টি। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ হলো ঘরে বসে ব্যবসার পক্ষ থেকে ইমেইল এর জবাব দেওয়া, কনটেন্ট লেখা ও অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা।

👉 ফরেক্স ট্রেডিং কি ও কিভাবে কাজ করে?

ডাটা এন্ট্রির কাজ থেকে শুরু করে রিসার্চ এর কাজ পর্যন্ত, যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারেন একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট। সুতরাং নতুন সুযোগ ও অভিজ্ঞতার খোঁজে থাকলে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ শুরু করতে পারেন। এমনকি বাংলাদেশেও এরকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বড় পরিসরে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট সেবা দিয়ে থাকে।

খাবার ও হস্তশিল্পের অনলাইন শপ

আপনি যদি রান্নাবান্না কিংবা হস্তশিল্পের কাজে দক্ষ হয়ে থাকেন, তাহলে বসে না থেকে আজই শুরু করুন আপনার অনলাইন ব্যবসা। বর্তমানে ঘরে তৈরি খাবার ও হাতের তৈরি জিনিসের বেশ চাহিদা রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের বিভিন্ন আর্টস ও ক্রাফটস সম্পর্কিত গ্রুপ ঘুরলেই বুঝতে পারবেন হাতে তৈরী জিনিসের আসল কদর।

তাই আপনি যদি এই গুণে গুণী হয়ে থাকেন, তবে শুরু করে দিন আপনার হাতে তৈরী অসাধারণ সব জিনিসের অনলাইন শপ। এই ধরনের অনলাইন শপ ফেসবুক পেজেই খোলা ভালো। সেক্ষেত্রে খুব সহজেই শেয়ার এর মাধ্যমে অন্যদের জানানো যায়।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,581 other subscribers

4 comments

  1. Md. Washak Billa Reply

    I want a online income site link for income.
    I know how to hard working.
    I know how to work under pressure.
    I know how development team work.

    • বাংলাটেক টিম Post authorReply

      Pick any of the mentioned process and follow accordingly.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *