বাংলাদেশ তথা এশিয়ায় এই মুহূর্তে অন্যতম জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হচ্ছে শাওমি। তুলনামূলক কম বাজেটে অপেক্ষাকৃত বেশি আকর্ষণীয় স্পেসিফিকেশন ও ফিচার সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে শাওমি ফোনের এত চাহিদা। ডিভাইসে মূল এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি নিজস্ব কাস্টম রম ব্যবহার করে শাওমি। এই রমের নাম এমআইইউআই। এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে নিজস্ব কিছু ফিচার ও অ্যাপ লোড করে দেয় শাওমি। কিন্তু অনেকেই এসব সুবিধা পুরোটা উপভোগ করতে পারেন না। কেউ কেউ খুঁজে পান না, আবার অন্যরা হয়ত ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না যে এগুলো আসলে কী। তবে আজ আমি আপনাদের জন্য শাওমি ফোনের লুকায়িত কিছু ফিচারের তালিকা নিয়ে এসেছি যা আপনার কাজে লাগবে।
১. একের মধ্যে দুই, সেকেন্ড স্পেস
একটি শাওমি স্মার্টফোনে আপনি চাইলে আলাদা আরেকটি একাউন্ট খুলে তাতে অন্য কাউকে এক্সেস দিতে পারেন। তখন তাতে করে সেই একাউন্ট ব্যবহারকারী তার নিজের মত অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন, অনেকটা যেন দুটি আলাদা স্মার্টফোন। বাসায় বাচ্চাদের হাতে যদি মাঝে মাঝে ফোন দিতে হয়, তখন এই সেকেন্ড স্পেস ফিচার কাজে আসতে পারে। কারণ, এতে আপনার মূল একাউন্টের সেটিংস ও কনটেন্ট সুরক্ষিত থাকবে। মনে রাখা ভাল, সেকেন্ড স্পেস সিস্টেমে কিছু কিছু অ্যাপ সেটের কিছু পারমিশন পুরোপুরি ব্যবহার করতে সমস্যায় পড়ে। ফোনের সেটিংস মেন্যু থেকে সেকেন্ড স্পেস চালু করা যাবে।
২. ডুয়াল অ্যাপ
ফেসবুক, মেসেঞ্জার প্রভৃতি সেবায় সহজে একাধিক একাউন্ট ব্যবহার করতে চাইলে ডুয়াল অ্যাপ ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি আপনার ফোনে ইনস্টল করা বেশিরভাগ অ্যাপের সেকেন্ড ভার্সন তৈরি করে দিতে পারে। ফলে আপনার ফোনে অন্য কেউ যদি ফেসবুক চালাতে চায়, তাহলে তাকে আপনার ফেসবুক অ্যাপের একটি ক্লোন তৈরি করে দিয়ে সেই ক্লোনে এক্সেস দিতে পারেন। এতে করে আপনার মূল ফেসবুক অ্যাপ থেকে লগআউট না করেই ক্লোনকৃত অ্যাপে অন্যজনকে এক্সেস দিলে সে সেই ডুয়াল ভার্সন ফেসবুক অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবে। ফলে একটি ডিভাইসে দুটি ফেসবুক অ্যাপ চলবে, যেভাবে অন্যান্য এন্ড্রয়েড ফোনে সাধারণত ব্যবহার করা যায়না। ফোনের সেটিংস মেন্যু থেকে ডুয়াল অ্যাপ ফিচারটি উপভোগ করা যাবে।
- আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ https://www.facebook.com/groups/Banglatech24Talks
- আমাদের ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ https://www.facebook.com/Banglatech24/
৩. অ্যাপ লক
এটি অত্যন্ত কাজের একটি ফিচার। যেসব অ্যাপে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যক্তিগত তথ্য থাকে, সেগুলোর সুরক্ষার জন্য আপনি অ্যাপ লক ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি ফিঙ্গারপ্রিন্ট অথবা পাসওয়ার্ড/প্যাটার্ন ব্যবহার করে অ্যাপ লক করে রাখতে পারবেন, যা ছাড়া লক করা অ্যাপগুলো ওপেন করা যাবেনা। ফোনের সেটিংস মেন্যু থেকে অ্যাপ লক ফাংশনটি চালু করা যাবে।
৪. পারমিশনস
এন্ড্রয়েড ফোনে বিভিন্ন অ্যাপ বিভিন্ন পারমিশন চায়। আপনি চাইলে শাওমির সেটিংস অপশনে থাকা পারমিশনস সেকশন থেকে বিভিন্ন অ্যাপের জন্য উপলভ্য বিস্তারিত পারমিশন দেখতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। যেমন, আপনি যদি মনে করেন, একটি অ্যাপ ব্যকগ্রাউন্ডে চলা থেকে বিরত থাকুক, তাহলে পারমিশনস ম্যানেজার থেকে অ্যাপটির ‘অটো স্টার্ট’ পারমিশন বন্ধ করে দিলে একবার পুরোপুরি এক্সিট করলে অ্যাপটি নিজ থেকে আর ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু হতে পারবেনা। এছাড়া ডেটা, একাউন্ট এক্সেস, ক্যামেরা/মাইক্রোফোন এক্সেস প্রভৃতিও এভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
৫. ডবল ট্যাপ করে স্ক্রিনের লাইট জ্বালানো
এই অপশনটি চালু করলে নোটিফিকেশন ও সময় দেখতে স্ক্রিন জাগিয়ে তোলার জন্য আর কোনো বাটন চাপ দিতে হবেনা। দ্রুত পর পর দুইবার স্ক্রিনে আঙুল দিয়ে স্পর্শ (ট্যাপ) করলেই স্ক্রিনের বাতি জ্বলে উঠবে, ফলে আপনি আপনার নোটিফিকেশন প্যানেল দেখতে পারবেন এবং সময় ও অন্যান্য উপলভ্য বিষয়বস্তু দেখতে পাবেন। সেটিংস > ডিসপ্লে মেন্যুতে গেলে ‘ডবল ট্যাপ স্ক্রিন টু ওয়েক’ অপশন পাবেন।
৬. ওয়ান হ্যান্ডেড মুড
বড় স্ক্রিনের ফোনে অনেক সময় এক হাতে ধরে থাকলে স্ক্রিনের কোণার দিকে সেই হাতের আঙুল পৌঁছায় না। এক্ষেত্রে ওয়ান হ্যান্ডেড মুড চালু করলে আপনি ফোনের স্ক্রিনের আকার ভার্চুয়ালি কমিয়ে আনতে পারেন। তখন এক হাতে নিয়েই ফোনের সকল অপশন ব্যবহার করা যাবে। ওয়ান হ্যান্ডেড মুড ব্যবহারের জন্য শাওমি ফোনের হোম বাটনের উপর আঙুল রেখে স্পর্শ থাকা অবস্থায় এক দিক থেকে আরেক দিকে সোয়াইপ করুন। তখন ওয়ান হ্যান্ডেড মুড চালু করে স্ক্রিনের সাইজ ভার্চুয়ালি কমিয়ে আনার অপশন আসবে। যেদিকে এই সোয়াইপ করবেন, সেদিকেই ওয়ান হ্যান্ডেড মুড চালু হবে।
৭. অল-ইন-ওয়ান সিক্যুরিটি অ্যাপ
এটি শাওমির নিজস্ব অ্যাপ, যার মাধ্যমে ফোনে ভাইরাস আছে কিনা তা স্ক্যান করা যায়, নির্দিষ্ট নম্বর থেকে কল ও এসএমএস ব্লক করা যায়, ফোনের জাংক ফাইল ক্লিন করে স্পেস খালি করা যায়, ব্যাটারি অপটিমাইজ/সেভিং ফিচার ব্যবহার করা যায়, ডেটা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং পারমিশন ম্যানেজ করা যায়।
উপরের ফিচারগুলো ছাড়াও শাওমি ফোনে বিল্ট-ইন কম্পাস, কিউআর কোড স্ক্যানার, ভয়েস রেকর্ডার প্রভৃতি দেয়া আছে যা অনেক সময় কাজে আসতে পারে। এছাড়া মেসেজ ইনবক্স ওপেন করে স্ক্রিনের উপর থেকে নিচের দিকে আঙুল ধরে রেখে সোয়াইপ করলে হিডেন মেসেজবক্স পাওয়া যাবে যেটি পাসওয়ার্ড দিয়ে এক্সেস করতে হয়। ফটো গ্যালারির জন্যও এরকম ফিচার দিয়ে দিয়েছে শাওমি। চাইলে এগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার শাওমি ফোনে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে কোন ফিচারগুলো?
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।
আমি শাওমি নোট 8 ফোন ব্যবহার করি
কিন্তু আমার ফোনের সেলফি ক্যামেরা হঠাৎ করে লক হয়ে গেছে
এখন আর অন হয়না। প্লিজ একটু বলবেন এটা কিভাবে সমাধান করবো???
অনুগ্রহ করে শাওমির হেল্প সেন্টারে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।