ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা জানুন

বর্তমানে মেমোরি কার্ড প্রায় কমবেশি সবাই ব্যবহার করে। অনেকে তাদের ফোনে এসডি কার্ড বা মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে চান, কিন্তু এর সুবিধা অসুবিধা জানেন না বলে আর করেন না। এই পোস্টে মেমোরি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানবেন।

এসডি কার্ড হলো স্টোরেজ এর এক ধরনের ছোট মাধ্যম যা আমরা সবাই জানি। এখনের চেয়েও পূর্বে মেমোরি কার্ড এর ব্যবহার অনেক বেশি ছিলো, যা দিনদিন কিছুটা হলেও কমে আসছে। এসডি কার্ড এর সুবিধা-অসুবিধা উভয়ই রয়েছে যা সম্পর্কে অবশ্যই সবার জানা উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত।

ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করার সুবিধা

বাড়তি স্টোরেজ 

নিঃসন্দেহে মেমোরি কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ফোনে বেশ সহজে স্টোরেজ বাড়ানোর উপায় সেগুলো। স্মার্টফোন স্টোরেজ সবসময়ই লিমিটেড হওয়ার পাশাপাশি ছবি, ভিডিও, অ্যাপস, গেমস, ইত্যাদির সাইজও বেড়েই চলেছে। যার ফলে ফোনের স্টোরেজ যতই হোক না কেনো, বাড়তি স্টোরেজ প্রয়োজন পড়ে যায়। ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে বেশ সহজে স্টোরেজ বাড়ানো যায় ও স্টোরেজ সমস্যার সমাধান করা যায়।

ইন্টারনাল স্টোরেজ এর উপর চাপ কমানো

ফোনে মেমোরি কার্ড এড করে বড় ফাইলগুলোকে মেমোরি কার্ডে সরিয়ে রাখলে সেক্ষেত্রে ইন্টারনাল স্টোরেজ এর উপর অনেক চাপ কমে। আবার অনেক ফোনে মেমোরি কার্ডেও অ্যাপ ইন্সটল করার সুবিধা রয়েছে। ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ খালি রাখতে পারলে ফোন বেশ সুন্দরভাবে চলে এই কথা হয়ত আপনার জানা আছে ইতিমধ্যে। তাই ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ এর উপর চাপ কমাতে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে।

রিমুভেবল ও পোর্টেবল

এসডি কার্ড বা মেমোরি কার্ড সাইজে ছোট হওয়ায় বেশ সহজে রিমুভ বা খুলে রাখা যায়। আবার চাইলে ফোন থেকে খুলেও হার্ড ডিস্ক এর মত এটি বহন করা যায়। বিশেষ করে অনেক ফাইল এক ফোন থেকে অন্য ফোনে ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ মেমোরি কার্ডকে অনেকটা ফোনের পেনড্রাইভ বলা যেতে পারে।

সাশ্রয়ী

ফোনের ইন্টার্নাল স্টোরেজ যত বেশি হবে, ফোনের দামও ঠিক ততই বেশি হয়। অনেক স্টোরেজ যুক্ত ফোন কেনার চেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা, এতে উল্লেখযোগ্য অর্থ সাশ্রয় হবে।

বেশি পাওয়ার লাগেনা

এসডি কার্ড চলতে ফোনের বেশি পাওয়ারের প্রয়োজন হয়না। আপনি যদি ভাবেন এসডি কার্ড চলতে ফোনের অনেক ব্যাটারি খরচ হয়, তাহলে জেনে খুশি হবেন যে মেমোরি কার্ড ফোনের তেমন একটা পাওয়ার ব্যবহারই করেনা।

সহজে অ্যাকসেসিবল

মেমোরি কার্ড কিন্তু প্রায় যেকোনো ডিভাইস থেকেই অ্যাকসেস করা যায়। মোবাইল, কম্পিউটার, এমনকি ক্যামেরাতেও এসডি কার্ড অ্যাকসেস ব্যবহার করা যায় কার্ড রিডার এর মাধ্যমে। অর্থাৎ একই ফাইল আপনি বহন করে একাধিক ডিভাউসে অ্যাকসেস করতে পারছেন মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে।

নিরাপদ

মেমোরি কার্ড এর ক্ষেত্রে পাওয়ার কাট এর মাধ্যমে ডাটা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই, অর্থাৎ আপনার ডাটা সম্পূর্ণ স্ট্যাবল থাকবে মেমোরি কার্ডে।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

memory card

ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করার অসুবিধা

ভঙ্গুর

অন্য সকল স্টোরেজ মিডিয়ার মতই মেমোরি কার্ড ভেংগে যেতে পারে। এছাড়াও ইলেকট্রনিক করাপশন এর কারণে অনেক সময় মেমোরি কার্ড অব্যবহারযোগ্য হয়ে যায়। আবার মেমোরি কার্ড এর মেটাল অংশটি বেশ সেনসিটিভ যার ফলে এটি বেশ সহজে ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে। একবার করাপটেড হয়ে গেলে এসডি কার্ড থেকে ডাটা রিকভার বেশ কষ্টসাধ্য বিষয়। 

সীমিত রিড/রাইট সাইকেল

ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ, সলিড স্ট্যাট ড্রাইভ, ইত্যাদি ফ্ল্যাশ মেমোরির মত এসডি কার্ডের রিড-রাইট সাইকেলও সীমিত। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ব্যবহারের সাথে সাথে মেমোরি কার্ড এর জীবনকাল কমে আসে। এত মানে হলো মেমোরি কার্ড নির্দিষ্ট রিড-রাইট সাইকেল পূরণ করে নষ্ট হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। 👉 স্মার্টফোনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক ব্যবহারের নিয়ম জেনে নিন

বাজে কার্ড ইস্যু

বাজারে অসংখ্য ব্র‍্যান্ডের এসডি কার্ড রয়েছে। আপনি যদি একটি লো-ক্লাস মেমোরি কার্ড কিনে তা আপনার ফোনে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার ফোন উলটা স্লো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। বাজে এসডডি কার্ড ব্যবহারের কারণে ফোনের পারফরম্যান্স আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই মেমোরি কার্ড কেনার সময় ভালো ব্র‍্যান্ডের ভালো প্রোডাক্ট কিনুন।

স্লো

মেমোরি কার্ড ব্যবহার করে কম দামে স্টোরেজ বাড়ানো গেলেও এই স্টোরেজ এর স্পিড কিন্তু ইন্টারনাল স্টোরেজ এর আশাপাশেও নেই। ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ এর চেয়ে মেমোরি কার্ড বেশ স্লো হয়ে থাকে। তাই মেমোরি কার্ডে থাকা ফাইল অ্যাকসেস করা কিছুটা স্লো প্রক্রিয়া। 

এই কারণে অধিকাংশ ফ্ল্যাগশিপ ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহারের অপশন রাখেনা ম্যানুফ্যাকচারার, যাতে ফোনের পারফরম্যান্স সম্পর্কিত কোনো ধরনের ইস্যু না থাকে। 👉 অ্যান্ড্রয়েড ফোনের স্টোরেজ খালি করার উপায়

অ্যাপ গায়েব হয়ে যাওয়া

ইতিমধ্যে সুবিধা সেকশনে বলেছি মেমোরি কার্ডে অ্যাপ বা গেম ইন্সটল করা যায়। তবে মেমোরি কার্ডে অ্যাপ ইন্সটল করলে মেমোরি কার্ড খুলে ফেলার পর দেখবেন উক্ত অ্যাপ গায়েব হয়ে গেছে। আবার ফোনে একই মেমোরি কার্ড ঢুকানোর পরেও উক্ত অ্যাপ বা গেম আবার ঠিকঠাক কাজ না করার সম্ভাবনাও থাকে।

আপনি কি আপনার ফোনে মেমোরি কার্ড ব্যবহার করেন? আপনার মেমোরি কার্ড ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট সেকশনে।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,569 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *