টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায় – টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয় না কেন, জানুন

বর্তমান সময়ের আলোচিত কিছু সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলোর মধ্যে টিকটক অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমাদের দেশ সহ বিভিন্ন দেশের কোটি ব্যবহারকারীরা টিকটকে ভিডিও আপলোডের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করছে। টিকটকে টাকা আয় করার জন্য টিকটক ভিডিওগুলোতে অনেক বেশি পরিমানে ভিউ পেতে হয়। আর ভিউ পাবার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ভিডিও ভাইরাল হওয়া।

সাধারণত আপনার টিকটক ভিডিওটির ভিউ যদি ২.৫ লক্ষ থেকে ১ মিলিয়নের মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে আপনার ভিডিওকে ভাইরাল ভিডিও হিসেবে মনে করা হয়।

আপনিও যদি টিকটক ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন এবং আপনার টিকটক ভিডিও ভাইরাল না হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে ভিডিও ভাইরাল না হওয়ার সঠিক কারন খুজে বের করতে হবে।

টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার সঠিক নিয়ম ও উপায়গুলো আপনাকে বুঝতে হবে। অনেকেই আবার বলে থাকে যে টিকটক অ্যালগোরিদমের জন্য ভিডিওতে ভিউ আসে না। অবশ্যই টিকটকের অ্যালগোরিদমের সেক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। তবে টিকটক অ্যালগোরিদম কেন আপনার ভিডিও ভাইরাল করছে না সে সম্পর্কে আপনার আগে জানতে হবে। আমাদের আর্টিকেলে আমরা টিকটক ভিডিও কেন ভাইরাল হচ্ছে না এবং ভাইরাল হবার জন্য কি উপায় অবলম্বন করতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

ভিডিও এর ব্যাকগ্রাউন্ড অডিও ভালো দিচ্ছেন তো? 

টিকটক অ্যাপটি শুরুতে মিউজিকাল.লি নামে সকলের কাছে পরিচিত ছিলো। টিকটকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো এই প্লাটফর্ম এ থাকা গান এবং অডিওগুলো। এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এর ক্ষেত্রে ভিডিওতে ব্যবহার করা গান এবং অডিওগুলো মূলত শ্রোতাদের আকর্ষণ লাভ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে। যদি আপনার টিকটক ভিডিও ভাইরাল না হয়ে থাকে তাহলে আপনি হয়তোবা নতুন নতুন, জনপ্রিয় বা ট্রেন্ডিং গান বা অডিওগুলো নিজের ভিডিওতে ব্যবহার করছেন না। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় কোন গান বা অডিও মিউজিকের ট্রেন্ড প্রচুর বাড়ছে এ বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই খোজ খবর রাখতে হবে। যেকোনো গান বা অডিও মিউজিকের প্রবণতা বাড়ার সাথে সাথে যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই অডিও ব্যবহার করে ভিডিও বানিয়ে আপলোড করুন।

সব সময় মাথায় রাখবেন যে দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরে ট্রেন্ডিং গান গুলো নিয়ে লক্ষ লক্ষ ক্রিয়েটররা টিকটকে ভিডিও আপলোড করে ফেলবে। এক্ষেত্রে এই সময়ে আপনি সেই ট্রেন্ডিং গান বা অডিও নিয়ে ভিডিও বানালেও সেগুলো টিকটকে ট্রেন্ড হবার সুযোগ একেবারেই কম থাকবে। তাই যে সকল গান বা অডিও মিউজিক মাত্র কয়েক ঘন্টা বা সর্বোচ্চ এক দুই দিন ধরে ট্রেন্ডিং আছে সেগুলো ব্যবহার করেই ভিডিও বানিয়ে আপলোড করার চেষ্টা করুন।

তবে শুধু মাত্র যে ট্রেন্ডিং গান বা অডিও খুঁজে পাওয়ার পর যদি যা তা কন্টেন্ট তৈরি করলেই আপনার ভিডিও ভাইরাল হবে না। ভালো করে একটি আকর্ষণীয় ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে না পারলে টিকটকে ভিডিও ভাইরাল হবে না।

তৈরি করা কন্টেন্টের কোয়ালিটি ভালো তো?

আপনি যতই ট্রেন্ডিং গান বা অডিও মিউজিক ভিডিওতে ব্যবহার করে থাকেন না কেন, আপনার ভিডিওর বিষয় বস্তু যদি একেবারে নিম্ন মানের হয়ে থাকে তাহলে আপনার ভিডিও ভাইরাল হবে না। এমনকি আপনি কোনো টিপস বা ট্রিকস ব্যবহার করেও নিজের ভিডিও টিকটকে ভাইরাল করতে পারবেন না। 

টিকটক একাউন্ট থেকে ট্রেন্ডিং গান বা অডিও মিউজিক ব্যবহার করে উচ্চ মানের ভিডিও কন্টেন্ট বানিয়ে আপলোড করলে আপনি ভিউ এর পাশা পাশি প্রচুর পরিমানে লাইক ও কমেন্ট পেয়ে যাবেন। শুরুতে টিকটক আপনার ভিডিওটি কেবল কিছু সংখ্যক লোকদের কাছে সরবরাহ করে থাকে। এতে করে অল্প কিছু ভিউ পাওয়া যায়। তবে ভিউস এর পাশা পাশি ভাইরাল হবার জন্য ভিডিওগুলোতে বেশ ভালো পরিমান লাইক ও কমেন্ট হতে হবে।

কেননা বেশি পরিমান লাইক ও কমেন্ট হলে টিকটকের অ্যালগোরিদম বুঝতে পারে যে আপনার ভিডিও লোকেরা পছন্দ করছেন এবং অডিয়েন্স লাইক এবং কমেন্টের মাধ্যমে আপনার ভিডিওর সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারছেন। ফলে সেই ভিডিও আরো অধিক পরিমান ব্যবহারকারীর কাছে দেখানো হয়, এতে করে ভিডিওতে প্রচুর ভিউস বাড়ার পাশাপাশি ভিডিও ভাইরাল হতে থাকে।

আপনার ভিডিওগুলোতে যদি উপযুক্ত পরিমানে লাইক এবং কমেন্ট না হয় তাহলে টিকটক মনে করবে যে আপনার বানানো কন্টেন্ট লোকেরা এতোটা পছন্দ করছে না এবং তাই আপনার সেই ভিডিও টিকটক ধীরে ধীরে দেখানো বন্ধ করে দেয়। তাই টিকটকে অধিক ভিউস পাবার জন্য এবং ভাইরাল হবার জন্য আপনার ভিডিও গুলোতে অবশ্যই অনেক ভালো পরিমানে লাইক ও কমেন্ট থাকতে হবে।

তবে একটি টিকটক ভিডিও ভাইরাল হবার জন্য কত লাইক কমেন্টস লাগবে সে সংখ্যা আসলে বলা সম্ভব নয়। তবে লাইক ও কমেন্টের একটি ভালো ব্যস্ততার হার থাকাটা জরুরি। সেক্ষেত্রে প্রায় ৪% ভিউ টু লাইক রেশিও অর্থাৎ প্রতি ১০০০ ভিউ এর মধ্যে ৪ টি লাইক থাকা প্রয়োজন। ৪% ভিউ টু লাইক অনুপাত টিকটক অ্যালগোরিদমকে একটি আকর্ষণীয় ভিডিও হিসেবে বুঝিয়ে দেবে। এতে ভিডিওটি ভাইরাল হবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

tiktok tips

👉 ফেসবুক একাউন্ট হ্যাক হবার কারণ এবং এর থেকে বাঁচার উপায়

মনোযোগ আকর্ষণকারী ইন্ট্রো তৈরি করছেন তো?

আপনার বানানো টিকটক ভিডিও গুলোতে যদি মনোযোগ আকর্ষণকারী পার্ট বা কোনো কন্টেন্ট না থাকে তাহলে আপনার সম্পূর্ণ ভিডিও অনেক কম লোকেরাই দেখবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই টিকটক ভিডিও গুলো ১৫-৩০ সেকেন্ডের হয়ে থাকে। তবে অনেক টিকটক স্টার রয়েছেন যারা লং কন্টেন্ট বানানো পছন্দ করেন। তবে শর্ট ভিডিও গুলো খুব সহজেই ভাইরাল করা সম্ভব।

কারন শর্ট ভিডিও গুলো অনেক কম সময়ের হয়ে থাকে এবং সেগুলোর শুরুতেই এমন কিছু আকর্ষণীয় অংশ বা ভাগ রাখা যায় যেগুলোর দেখার পরে ১০ থেকে ২০ সেকেন্ডের ভিডিও প্রায় প্রত্যেকেই অবশ্যই দেখে নিবেন। এ জন্য আপনাকে ভিডিওর শুরুতেই এমন ইন্ট্রো রাখতে হবে যেটা দেখার পরে সবাই আপনার সম্পূর্ণ ভিডিও দেখতে প্রলুব্ধ হয়। 👉 ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে কোন কাজের চাহিদা বেশি?

কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে কাজ করছেন তো?

টিকটকের ভিডিও যদি এর কমিউনিটি গাইড লাইন মেনে না চলে তাহলে টিকটকে এটি ভাইরাল হয় না। অনেক সময় আমরা অজান্তেই এমন অনেক কন্টেন্ট গুলো ভিডিও আকারে পাবলিশ করে ফেলি যেগুলো টিকটকের নিয়ম ভঙ্গ করে থাকে। আপনি যদি নিয়ম ভঙ্গ করে টিকটকে ভিডিও পাবলিশ করে থাকেন তাহলে টিকটক আপনার ভিডিও গুলোতে ভিউস দিবে না এটাই স্বাভাবিক।

অনেক সময় এর ফলে আপনার টিকটক একাউন্ট ব্যান পর্যন্ত হতে পারে। তাই ভিডিও পাবলিশ করার আগে অবশ্যই এক বার হলেও টিকটকের কমিউনিটি গাইডলাইন পেইজ অবশ্যই পড়ে নিবেন। এতে করে কোন কোন বিষয়ে ভিডিও পাবলিশ করা হলে টিকটকের নিয়ম ভঙ্গ হবে সে ব্যাপারে আপনি যথেষ্ট আইডিয়া পেয়ে যাবেন।

হ্যাশ ট্যাগ ভালো ভাবে ব্যবহার করা

টিকটকের ভিডিও ভাইরাল করার ক্ষেত্রে হ্যাশট্যাগ গুলোর সঠিক ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা সঠিক ভাবে হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করতে পারলে আপনার ভিডিও আপনি প্রচুর দর্শকের কাছে পৌছে দিতে পারবেন। ভিডিও সম্পর্কিত সঠিক হ্যাশট্যাগ গুলো ব্যবহার করলে অগণিত দর্শকের আপনার ভিডিও খুঁজে পাবার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যাবে। তাই সব সময় নতুন ভিডিও পাবলিশ করার সময় ৩-৫ টি হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করতে ভুলবেন না। 👉 ফেসবুক রিলস থেকে টাকা আয় করুন এভাবে

এছাড়া, #FYP, #foryou এর মতো সাধারণ হ্যাশট্যাগ গুলো ব্যবহার করবেননা, এগুলি কাজ করবেনা। আপনাকে, অধিক ব্যবহৃত ও ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ এবং ভিডিওর সাথে সম্পর্কিত হ্যাশট্যাগ গুলোর মিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে। যেমন, বর্তমানের কিছু ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ গুলো হলো, #tiktokchallenge, #tiktokviral, #tiktoktravel, #tik_tok, #tiktoktraditions, #tiktokers, #lovegoals, #lovestory, #lovesong, #like, #likeforlike, #follow ইত্যাদি।

আশা করি টিকটকে ভিডিও ভাইরাল না হবার কারন এবং কিভাবে টিকটক এ ভিডিও ভাইরাল করা সম্ভব সে বিষয়ে আপনারা ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন। সব সময় মনে রাখবেন যে কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ়তার সাথে কাজ করলে যেকোনো কাজেই সফল হওয়া সম্ভব। তাই নিয়মিত ভালো ভিডিও তৈরি করে ধারাবাহিকতার সাথে পাবলিশ করুন। আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারবেন। নিত্য নতুন টেকনোলজি বিষয়ক আর্টিকেল এবং নানা ধরনের টিপস এবং ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *