মাসে লাখ টাকা আয় করতে চাইলে আপনার যা জানা দরকার

মাসে লাখ টাকা কে না আয় করতে চায়, তাইনা? তবে মাসে লাখ টাকা আয়ের ব্যাপারটা যত কঠিন শোনায় তত কঠিন কিন্তু নয়। যথাযথ ডিজিটাল স্কিল থাকলে আপনিও মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারেন। এই পোস্টে আমরা কিছু ডিজিটাল স্কিল সম্পর্কে জানবো যেগুলো মাসে লাখ টাকা আয় করতে সাহায্য করবে। 

গ্রাফিক্স ডিজাইনিং

গ্রাফিক্স ডিজাইন করে মাসে লাখ টাকা আয়? হ্যা, ঠিক শুনেছেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনিং একটি এমন দক্ষতা যা থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করা যেতে পারে। শুধুমাত্র লেখাই নয়, বরং নজরকাড়া গ্রাফিক্স, ইলাস্ট্রেশন, লোগো, কাস্টম স্লাইড ডেক বা অন্যান্য গ্রাফিক্স ডিজাইন এসেট এর চাহিদা বর্তমান বাজারে অনেক বেশি। আপনি যদি আর্টিস্টিক হোন বা ডিজাইন করতে আপনার ভালো লাগে, তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন হতে পারে আপনার আয়ের নতুন পথ।

গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয়ের একাধিক উপায় রয়েছে। লেখালেখির মত আপওয়ার্ক, ফাইভার এর পাশাপাশি ৯৯ডিজাইনস এর মত ডেডিকেটেড ওয়েবসাইটে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর কাজ পাওয়া যেতে পারে। বিজনেস কার্ড বা লোগো ডিজাইন এর মত কাজেও অনেক টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে।

একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আপনার উচিত সব ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইনে ফোকাস না করে নির্দিষ্ট কোনো নিশ (Niche) খুঁজে নিয়ে সে বিষয়ে কাজ করুন এবং পোর্টফোলিও তৈরী করতে থাকুন। ধীরে ধীরে কাজ এর পরিমাণ বাড়তে থাকবে ও আপনার দক্ষতাও বাড়বে।

ওয়েব ডেভলপমেন্ট

প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তি, সবারই বর্তমানে একটি ওয়েবসাইট এর প্রয়োজন হয়। কিন্তু অনেকের কাছেই ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর রিসোর্স না থাকায় তারা নিজেদের জন্য ওয়েবসাইট তৈরী করিয়ে নিতে পারেন না। বর্তমানে ওয়েব ডেভলপমেন্ট এমন একটি দক্ষতায় পরিণত হয়েছে যার চাহিদা থেকে যোগান কম। বলে রাখা ভালো ওয়েবসাইট তৈরী করা মোটেই সহজ কোনো দক্ষতা নয়। ওয়েবসাইট তৈরী করতে অনেক টেকনিক্যাল জ্ঞান এর প্রয়োজন হয়। ওয়েব ডেভলপমেন্ট শেখার পর প্রথমেই নিজে ওয়েবসাইট তৈরী করে পরীক্ষা চালান আপনার দক্ষতার। এরপর মার্কেটপ্লেসে কাজে নেমে পড়ুন। আবার চাইলে যেসব কোম্পানি বা নোটেবল ব্যাক্তির ওয়েবসাইট নেই, তাদের সাথে ব্যাক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে তাদের আপনার ওয়েব ডেভেলপার সংক্রান্ত সার্ভিস অফার করতে পারেন।

ফ্রিল্যান্স রাইটিং

আপনার যদি লেখালেখি ও এসইও সম্পর্কে ধারণা থেকে থাকে, তবে ফ্রিল্যান্স রাইটিং হতে পারে আপনার মাসে লাখ টাকা আয়ের টিকেট। ফ্রিল্যান্স রাইটিং তেমন কঠিন কোনো দক্ষতা নয়, যা বিভিন্ন ইউটিউব ভিডিও দেখে ও ব্লগ পড়ে আপনি অর্জন করতে পারেন।

একজন ফ্রিল্যান্স রাইটার অনেক ধরনের কাজ করতে পারেন। ব্লগ পোস্ট, ভিডিও স্ক্রিপ্ট, ওয়েবসাইট কপি লেখা, ইত্যাদি একজন ফ্রিল্যান্স রাইটার এর কাজ। শুরুতে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে কাজ খুঁজতে পারেন, যা হয়ত মাসে লাখ টাকা এনে দিবেনা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে দক্ষতা, পরিচিতি ও পোর্টফোলিও ভারি হলে আর্টিকেল প্রতি অনেক মোটা অংকের অর্থ চার্জ করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন ব্লগে গেস্ট রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারেন, পরে তাদের সাথে সম্পর্ক ভালো হলে সরাসরি কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করতে পারেন। বলে রাখা ভালো আপনার লেখালেখির একটা পোর্টফোলিও থাকলে বেশ ভালো হয় যা কাজ করতে করতে তৈরি করে ফেলতে পারবেন।

অন্যদের কম্পিউটারে সাহায্য করা

মিলেনিয়াল বা জেন-জি এর জন্য কম্পিউটার ব্যবহার বেশ সহজ হতে পারে, কিন্তু যারা ন্যাচারালি ডিজিটালি স্কিলড না তাদের কাছে কম্পিউটার বা ইন্টারনেট বিষয়ক কাজসমূহ রকেট সাইন্সের চেয়ে কম নয় কিন্তু। যেমন ধরুন আপনার বাবা-মা কিংবা চাচা-চাচীর কাছে কিন্তু ফোনের সাধারণ সেটিংসও অনেক কঠিন বিষয়। একইভাবে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বিদেশী অনেকেই অনলাইনে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে থাকেন। আপনি যদি প্রযুক্তিগত বিষয়ে পারদর্শী হোন তবে অন্যদের সাহায্য করার মত সহজ কাজ করেও আয় করতে পারবেন। 👉 ডাটা এন্ট্রি করে টাকা ইনকামের সেরা ৯ ওয়েবসাইট

টাকা ইনভেস্ট করা

হয়ত এটি শুনে না ছিটকাবেন অনেকেই, কিন্তু টাকা দিয়ে টাকা আয় হতে পারে আপনার স্বাবলম্বী হওয়ার অসাধারণ উপায়। অবশ্যই টাকা জমা রাখা ভালো, কিন্তু জমানো টাকার ছোট্টো একটি অংশ ইনভেস্ট করা বেশ ভালো একটি বুদ্ধি হতে পারে। আপনি যে পরিমাণ আয় করুন না কেনো, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সরিয়ে রাখুন ইনভেস্ট করার লক্ষ্যে। ইনভেস্ট করার অনেক ক্ষেত্র থাকলেও অবশ্যই যথেষ্ট রিসার্চ না করে যেখানে সেখানে টাকা ইনভেস্ট করা ঠিক হবেনা।

অন্যকে শেখানো

টিউশন তো ছাত্রাবস্থায় কমবেশি সবাই করেন, কিন্তু অনলাইনে অন্যকে শেখানোর চিন্তা কখনো করেছেন কি? অনলাইনে অন্যদের শিখিয়ে আয় করে বেশ মোটা অংকের আয় করা যেতে পারে। সরাসরি সবার সাথে জ্ঞান শেয়ার করা সম্ভব না হলেও ইন্টারনেট এর কল্যাণে আপনার জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে পারেন অন্যদের মাঝে বেশ সহজে। অনলাইনে কোর্স আকারে কিংবা ক্লাস হিসেবে আপনি যে বিষয় দক্ষ সে বিষয় অন্যদের শিখিয়ে আয় করতে পারেন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

working on a laptop to earn money

ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্স

অনেক প্রফেশনালদের যথেষ্ট টাইম থাকেনা, যার ফলে তারা ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট রেখে অনলাইনে তাদের জীবনের কিছু সময় সেভ করে থাকেন। বর্তমানে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর চাহিদা অনেক বেশি, যেহেতু সময়ের মূল্য প্রফেশনালদের কাছে বরাবরই বেশি। 👉 ডিজিটাল মার্কেটিং কি? এটা থেকে কিভাবে আয় করে?

অধিকাংশ কোম্পানি বা প্রফেশনাল তাদের কোম্পানির জন্য এসিস্ট্যান্ট অনলাইনে হায়ার করে থাকেন। আপনি যদি ইংরেজিতে দক্ষ হোন, তাহলে এই কাজ আপনার জন্য অনেক সহজ হবে। একজন ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর কাজ হতে পারে এপয়নমেন্ট শেডিউল করা, ট্রাভেল বুকিং করা, কল ও ইমেইল এর জবাব দেওয়া, ইত্যাদি।

কনসাল্টিং

কনসাল্টিং হতে পারে আপনার মাসে লাখ টাকা আয় এর নতুন মাধ্যম। একজন কনসালটেন্ট এর কাজ হলো কোনো একটি ব্যবসা বা একজন ব্যাক্তির কোনো নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করা। মূলত সমস্যা সমাধান করে আয়ের পথ সুগম করা হলো একজন কনসালটেন্ট এর কাজ।

শুনে বেশ এলাহি কান্ড মনে হতে পারে, তবে কনসাল্টিং আসলেই অনেক বড় একটা টপিক। বুককিপিং, সেলস, মার্কেটিং, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ওয়েবসাইট কপি, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া সহ প্রায় যেকোনো ধরনের বিষয়ে কনসাল্টিং এর কাজ করা যেতে পারে।

এই গেলো মাসে লাখ টাকা আয় এর কিছু স্কিম। হয়ত এসব ব্যাপারে আপনি আগে শুনেছেন, তবে আপনার ধৈর্য ও অধ্যাবসায় ঠিক করবে আসলে কোন দক্ষতা থেকে আপনি কত আয় করতে পারবেন। তাই এখানে উল্লেখিত বিষয়সমূহ সাধারণ মনে হলেও আপনি যদি ধৈর্য ধরে ভালোভাবে মন দিয়ে কাজ করে যেতে পারেন, তবে মাসে লাখ টাকা আয় কোনো ব্যাপার নয়।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *