ফেসবুকে কিভাবে চাকরি পাওয়া যায়?

ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিনেদিনে বেড়েই চলেছে। ২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ দ্বারা সহপ্রতিষ্ঠিত এই ওয়েবসাইট বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে অসংখ্য মানুষের। তাই অ্যাপল, গুগল, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট এর পাশাপাশি ফেসবুকেও চাকরি পেতে চান অনেকেই।

বিশ্বব্যাপী ৭৭ হাজারের অধিক কর্মী নিয়ে মেটা বা ফেসবুক নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। মেটা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর কোম্পানিটিতে কাজের সুযোগ বেড়েছে আরো কয়েকগুণ। ফেসবুকে চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় অন্যসব কোম্পানির মতই। এই পোস্টে ফেসবুক বা মেটা কোম্পানিতে চাকরি কিভাবে পাওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন।

ফেসবুকে কী ধরনের চাকরি রয়েছে?

ফেসবুক (মূলত মেটা) একটি বিশাল কোম্পানি, স্বভাবতই এতে অসংখ্য পদ রয়েছে। ফেসবুক বা মেটা এর ওয়েবসাইটে কাজের ক্ষেত্র, লোকেশন, ক্যাটাগরি, অ্যাপ ও সার্ভিস (ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, অকুলাস) এর উপর ভিত্তি করে চাকরিগুলো সাজানো থাকে। ফেসবুক বা মেটা’র ক্যারিয়ার সাইট অনুসারে কোম্পানিটি বর্তমানে ৪,০০০ এর অধিক জব অফার করছে।

ফেসবুক বা মেটাতে চাকরির কিছু উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র হলোঃ

  • এডভার্টাইজিং
  • কমিউনিকেশন এন্ড পাবলিক পলিসি
  • ডাটা এন্ড এনালিটিকস
  • ডিজাইন এন্ড ইউজার এক্সপেরিয়েন্স
  • পিপল এন্ড রিক্রুটিং
  • প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট
  • সিকিউরিটি
  • সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
  • টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট

ফেসবুক কত টাকা বেতন দেয় – এই প্রশ্ন থাকে অধিকাংশ মানুষের মনে। আসলে ফেসবুকে আপনার বেতন নির্ভর করে দক্ষতা, ব্যাকগ্রাউন্ড ও অভিজ্ঞতার উপর। তবে ইন্ডাস্ট্রির গড় বেতনের তুলনায় ফেসবুক ভালোই বেতন প্রদান করে এটা বলা যায়। অনেক ফেসবুক সুপারভাইজার সিক্স ফিগার ইনকাম করে থাকেন, এর সাথে আবার স্পেশাল মেডিক্যাল কেয়ার, প্যারেন্টাল লিভ, ট্যাক্স কনসাল্টেশন, বোনাস, ইত্যাদি সুবিধা পেয়ে থাকেন। এখানে কিছু চাকরি আপনি বাসা থেকে রিমোট জব সিস্টেমে করতে পারবেন। আবার কিছু চাকরির জন্য তাদের অফিসে যেতে হবে।

ফেসবুকে চাকরির জন্য কিভাবে আবেদন করব?

ফেসবুকে চাকরির জন্য এপ্লাই করার সেরা উপায় হচ্ছে তাদের ক্যারিয়ার ওয়েবসাইট। প্রথমত আপনার প্রাসঙ্গিক দক্ষতার উপর ফোকাস করুন। অন্যসব বড় টেক কোম্পানির মত ফেসবুকও “আউট অফ দ্যা বক্স” ভাবতে পছন্দ করে, অর্থাৎ এখানে লম্বা অভিজ্ঞতা বা পরিচিতর তালিকা আহামরি কোনো কাজে আসবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। আপনার দক্ষতার যথেষ্ট পরিচয় দিতে পারলে তবেই ফেসবুকে স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আপনার প্রাসঙ্গিক দক্ষতা রয়েছে ও আপনি আপনার কাজ ঠিকভাবে করতে পারেন, তা আপনার রেজ্যুমেতে প্রকাশ পাওয়া জরুরি। জব ডেসক্রিপশনে থাকা কিওয়ার্ড এর উপর ফোকাস করুন ও তার উপর ভিত্তি করে নিজেকে উপস্থাপন করুন। ফেসবুকে চাকরি পাওয়া সম্পূর্ণ অথেনসিটি ও কনফিডেন্স এর উপর নির্ভর করে, আপনার ইউনিক পারসোনালিটিও আপনার অ্যাপ্লিকেশনে ভূমিকা রাখবে।

ফেসবুক সম্পর্কে প্রচুর রিসার্চ ম্যাটেরিয়াল ইন্টারনেটে পেয়ে যাবেন, যা থেকে কোম্পানিটি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন।  এসব বিষয় ভালোভাবে অনুধাবন করে তবেই আপনার চাকরির আবেদন ফেসবুকের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

ফেসবুক মেটা

👉 ২ কোটি টাকা বার্ষিক বেতনে ফেসবুকে চাকরি পেলেন বাঙালি ছাত্র!

ইন্টারভিউ

অধিকাংশ ব্যক্তি কোনো কোম্পানিতে এপ্লাই করার আগে উক্ত কোম্পানি সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করেন, আপনারও উচিত এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে একই কাজ করা। ফেসবুকে এপ্লাই করার ক্ষেত্রে ফেসবুক সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান ও ফেসবুকের আর্নিং রিপোর্ট, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানা জরুরি। মূলত আপনি যে শাখায় এপ্লাই করছেন, সে শাখা সম্পর্কে যেনো আপনার সম্পূর্ণ ধারণা থাকে, তা নিশ্চিত করুন।

ফেসবুকে চাকরির ইন্টারভিউ এর প্রথম ধাপ হলো একজন রিক্রুটার এর সাথে প্রি-স্ক্রিনিং কল যা সাধারণত ৩০মিনিটের হয়ে থাকে৷ রিক্রুটার আপনার রেজ্যুমেতে থাকা বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে আপনাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করবেন। আপনি যদি ইন্টারভিউ এর এই ধাপেও এসে থাকেন, তাহলে সেটিকে আপনার অর্জন বলে ধরে নিতে পারেন।

প্রি-স্ক্রিনিং ধাপ পাস করে গেলে ফেসবুকের একজন কর্মকর্তার সংগে টেকনিক্যাল ফোন ইন্টারভিউ হবে। এই ইন্টারভিউ আগের ইন্টারভিউ এর চেয়ে কিছুটা দীর্ঘ হবে, এখানে আপনার ক্যারিয়ার, স্কিল ও অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলা হবে। ইন্টারভিউ এর এই ধাপে কোডিং টেস্ট এর মত পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে আপনার দক্ষতা যাচাই করতে, তাই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো।

উক্ত দুইটি ইন্টারভিউ পাস করলে এবার আসবে সর্বশেষ তিনটি ইন্টারভিউ। এই তিনটি ইন্টারভিউতে আপনার দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতিটি ইন্টারভিউ এক ঘন্টা বা তার বেশি হবে, ইন্টারভিউ অনলাইনে বা অন-সাইটে হতে পারে। 

পাঁচটি ইন্টারভিউ এর পর এই প্রক্রিয়া শেষ হবে। অবশ্য ক্ষেত্র বিশেষে এই পরিমাণ কম বেশি হতে পারে। এবার অপেক্ষা করতে হবে ফেসবুক আপনার ইন্টারভিউ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নিলো সে ফলাফল জানার। 

মনে রাখবেন ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তারা চাইবে এমন ব্যক্তিকে তাদের কোম্পানিতে কাজ দিতে যারা কোম্পানিটিকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে ফেসবুকে চাকরির প্রস্তুতি প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে পারেন।

👉 ভিডিওঃ ফেসবুকে ২ কোটি টাকা বার্ষিক বেতনে চাকরি পেলেন বাঙালি ছাত্র

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 7,976 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.