পুরাতন ফোনের গতি বাড়ানোর উপায় – হবে আরও দীর্ঘস্থায়ী!

পুরোনো স্মার্টফোন স্লো হয়ে গিয়েছে? চিন্তার কোনো কারণ নেই, বিভিন্ন স্বাভাবিক কারণে পুরোনো স্মার্টফোন ভালোভাবে কাজ না করতে পারে। হয়ত কিছু ছোট পদক্ষেপ ফোনটিকে আবারও সতেজ করে তুলতে পারে। পুরোনো স্মার্টফোনে অ্যাপ কাজ না করা থেকে শুরু করে ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া, প্রায় সকল সমস্যার কার্যকরী সমাধান রয়েছে। চলুন সহজ কিছু কাজের মাধ্যমে পুরোনো ফোনকে নতুন প্রাণ দেওয়া যাক।

অব্যবহৃত অ্যাপ ডিলেট করুন

আমাদের মধ্যে অনেকে নতুন নতুন অ্যাপ ইন্সটল করে ব্যাবহার করতে ভালোবাসি। ফোনের স্টোরেজ যত বেশিই হোক না কেনো, একটা সময় গিয়ে তা পূর্ণ হয়ে যায়। আবার অনেক অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে বলে এসবের কারণে অজান্তে ফোন স্লো হয়ে যায়।

তাই মাঝেমধ্যে ফোনের অ্যাপ ম্যানেজারে প্রবেশ করে অব্যবহৃত অ্যাপসমূহ ডিলেট করে দিন। আরেকটি বোনাস টিপ হলো যেসব অ্যাপ এর নোটিফিকেশন গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেসব অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন, এতে সিস্টেম রিসোর্স সেভ হয় ও ফোনে কোনো ধরনের চাপ পড়েনা।

ফোন নিয়মিত রিস্টার্ট করুন

নিয়মিত ফোন রিস্টার্ট করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, যা অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী অবজ্ঞা করেন। কম্পিউটারের মত অ্যান্ড্রয়েড ফোনও রিস্টার্ট এর মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করে। মাত্র ৩০সেকেন্ডের মধ্যে আপনার ফোন রিস্টার্ট করতে পারেন। খুব স্বাভাবিক একটি বিষয় মনে হলেও ফোন রিস্টার্ট এর মাধ্যমে মেমোরি ফ্রি হয় বলে ইন্সট্যান্ট স্পিড বুস্ট পাওয়া যায়, আবার স্টাক হয়ে থাকা অ্যাপসও পুনরায় কাজ করা শুরু করে।

সোয়াইপ করে অ্যাপ টাস্ক ম্যানেজার থেকে সরিয়ে দিলেও তা ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে বলে ফোনের র‍্যামে জায়গা দখল করে থাকে অজান্তে। আর আপনার ফোনের র‍্যাম যদি কম হয় তাহলে পারফরম্যান্স ও ব্যাটারি, উভয় ক্ষেত্রে চাপ পড়বে। তাই পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর জন্য নিয়মিত রিস্টার্ট করা জরুরি।

নিয়মিত আপডেট করুন

অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ইউজার আপডেটকে পাত্তা দেন না, যা একটি ভুল কাজ। সিস্টেম আপডেট ও অ্যাপ আপডেট কখনো এড়িয়ে চলা উচিত নয়। নতুন ফিচারের পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকে এসব আপডেট, যার ফলে আপডেট ইন্সটল না করাটা এক ধরনের বোকামির পর্যায়ে পড়ে। এছাড়া প্রতি আপডেটে লেটেস্ট সিকিউরিটি থ্রেট এর বিরুদ্ধে প্রটেকশনও যুক্ত হয়। তাই পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন যদি ভালোভাবে কাজ না করে, তবে কোনো সিস্টেম আপডেট বা অ্যাপ আপডেট পেন্ডিং আছে কিনা চেক করুন।

👉 অ্যান্ড্রয়েড ফোন আপডেট করার নিয়ম

বড় ফাইল এসডি কার্ড বা ক্লাউডে রাখুন

অ্যাপ তো ছাঁটাই করা গেলো, কিন্তু ফোনে থাকা ছবি, ভিডিও বা গান এর কি হবে সেটা নিয়েও কথা বলা উচিত। অধিকাংশ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী ফোনের স্টোরেজ নিয়মিত ক্লিন করেন না। এতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে গিয়ে ফোন অনেক স্লো হয়ে যায় স্টোরেজ পূরণ হয়ে যাওয়ার ফলে।

ইন্টারনাল স্টোরেজ যথেষ্ট পরিমাণে খালি রাখার চেষ্টা করুন সবসময়। চাইলে এসডি কার্ড ব্যবহার করে ফোনের স্টোরেজ থেকে বাড়তি চাপ কমাতে পারেন। আবার গুগল ড্রাইভ এর মত ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করেও ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ খালি রাখা যেতে পারে। এখন প্রায় অধিকাংশ ফোনে ন্যাটিভ স্টোরেজ ক্লিনার থাকে, যা ব্যবহার করে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ও ফাইল ডিলিট করা যায় সহজে।

👉 অ্যান্ড্রয়েড ফোনের স্টোরেজ খালি করার উপায়

👉 অনলাইনে ফাইল রাখার জন্য সেরা ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস কোনটি?

লাইট অ্যাপ ব্যবহার করুন

ফেসবুক থেকে শুরু করে গুগল ম্যাপস, বর্তমানে প্রায় সকল দরকারি অ্যাপের লাইট ভার্সন রয়েছে। আপনার ফোনে কোনো অ্যাপ ভালোভাবে কাজ না করলে উক্ত অ্যাপের লাইট ভার্সন ব্যবহার করুন। এসব লাইট অ্যাপ ফোনের উপর কম চাপ প্রদান করে, কিন্তু উক্ত অ্যাপের সকল সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করে।

যেমনঃ ফেসবুক ও মেসেঞ্জার অ্যাপের পরিবর্তে শুধুমাত্র ফেসবুক লাইট অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন ফেসবুক অ্যাকসেস করতে। এছাড়া এসব লাইট অ্যাপ কম ডাটা খরচ করে। পারফরম্যান্স ও ব্যাটারি, উভয় দিক দিয়ে অসাধারণ সুবিধা প্রদান করে লাইট অ্যাপসমূহ।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

পুরাতন ফোনের গতি বাড়ানোর উপায় - হবে আরও দীর্ঘস্থায়ী!

👉 ব্যাটারি ও ডাটা সাশ্রয়ী ১০টি লাইট অ্যাপ

ডিসপ্লে সেটিংস কাস্টমাইজ করুন

ডিসপ্লে নিয়ে অধিকাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী মাথা ঘামাননা। কিন্তু আসলে ফোনের ডিসপ্লে সেটিংস অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ফোনের পারফরম্যান্স এর ক্ষেত্রে। প্রথমত, আপনার ফোনের হোমস্ক্রিনে যদি অসংখ্য উইজেট থাকে তবে ফোন অবশ্যই স্লো কাজ করবে।

আবার সবসময় ফোনের ব্রাইটনেস ফুল রাখলে সেক্ষেত্রে ফোন গরম হওয়া থেকে শুরু করে পারফরম্যান্সে পর্যন্ত কমতি চোখে পড়তে পারে। ব্যাটারি বেশি ড্রেইন হলে ডার্ক মোড ব্যবহার করতে পারেন, যা ব্যাটারি ব্যাকাপ বাড়াতে সাহায্য করে বলে প্রমাণিত। আবার অলওয়েজ-অন ডিসপ্লে এর মত ফ্যান্সি ফিচার অফ রেখে ফোনের ব্যাটারি ব্যাকাপ বাড়ানো যেতে পারে।

ফ্যাক্টরি রিসেট করুন

উল্লেখিত সকল বিষয় অনুসরণ করেও যদি আপনার পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনের কোনো উন্নতি না দেখেন, তবে একবার ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করে দেখতে পারেন। ফ্যাক্টরি রিসেট করার পরে ফোন সম্পূর্ণ নতুন হয়ে যায় ও একদম নতুনভাবে ব্যবহার শুরু করা যায়। তাই কোনো উপায়ে আপনার পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ঠিক করতে না পারলে শেষ চেষ্টা হিসেবে ফ্যাক্টরি রিসেট করে দেখতে পারেন।

👉 এন্ড্রয়েড ফোন ফ্যাক্টরি রিসেট করার নিয়ম

এছাড়া আপনি চাইলে ব্যাটারি বদলে অফিসিয়াল নতুন ব্যাটারি লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে চার্জ থাকবে প্রায় নতুনের মত। যদি কোনো ভাবেই আপনার পুরাতন ফোনকে যথেষ্ট পরিমাণ গতিশীল করে তুলতে না পারেন তাহলে ফোনটিকে অন্য অনেক কাজেও ব্যবহার করা যাবে। পুরাতন ফোনকে বিভিন্ন বিকল্প উপায়ে ব্যবহার করা যায়। পুরোনো ফোনের অসংখ্য ব্যবহার রয়েছে যা আমাদের পোস্ট থেকে জানতে পারবেন।

👉 আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে সাথেই থাকুন। এখানে ক্লিক করে সাবস্ক্রিপশন কনফার্ম করুন!

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *