বর্তমানে জনপ্রিয় সকল অ্যাপের ফাইল সাইজ দিনদিন বেড়েই চলেছে। আপনার হাতের স্মার্টফোনটির স্টোরেজ ও মেমোরি ও কম হওয়ায় দরুন ফেসবুক, ইউটিউব এর মতো অ্যাপগুলো ব্যবহারও অসম্ভব মনে হতে পারে।
তবে সকল অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে জনপ্রিয় অ্যাপসমুহের লাইট ভার্সন তৈরী করেছেন ডেভলপারগণ।
লাইট অ্যাপসমুহ ব্যবহারের অনেক ধরনের সুবিধা রয়েছে। লাইট অ্যাপসমুহের ফাইল সাইজ অনেক কম হয়। যার ফলে ফোনের কম স্টোরেজ দখল করেও ঠিকভাবে চলে অ্যাপগুলো।
এছাড়াও কম র্যাম ব্যবহার করে চলায়, লাইট অ্যাপগুলো সাধারণ অ্যাপগুলোর তুলনায় যেকোনো ফোনেই স্মুথলি চলে। লাইট অ্যাপসমুহ ব্যবহারে মোবাইল ডাটা সেভ করার পাশাপাশি ফোনের ব্যাটারিও কম খরচ হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক অ্যান্ড্রয়েড এর এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও দরকারী লাইট অ্যাপ সম্পর্কে।
গুগল ম্যাপস গো
ন্যাভিগেশনে স্মার্টফোন এর ব্যবহার নতুন কিছু নয়। তবে গুগল এর আসল ম্যাপ অ্যাপটি কিছুটা রিসোর্স হেভি হওয়ায় সব ধরনের ফোনে এটি স্মুথলি চালানো দুরুহজনক হয়ে পড়ে। এর সমাধান হচ্ছে গুগল ম্যাপস এর লাইট সংস্করণ, গুগল ম্যাপস গো অ্যাপটি ব্যবহার করা।
ডাউনলোড সাইজ ২মেগাবাইট হলেও অ্যাপটিতে গুগল ম্যাপস এর সকল গুরুত্বপূর্ণ ফিচার যুক্ত রয়েছে। অ্যাপটি ব্যবহার করে ডিরেকশন সার্চ করা ও খুঁজে পাওয়া পাশাপাশি দেখা যাবে রিয়েল-টাইম ট্র্যাফিক সম্পর্কিত ডেটা।
ফেসবুক লাইট
মোবাইল আছে অথচ ফেসবুক ব্যবহার করেনা এমন মানুষ আমাদের দেশে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর বলা চলে। আসল ফেসবুক অ্যাপটি ভালোভাবে চালাতে ভালো র্যামওয়ালা ফোনের প্রয়োজন পড়ে। তবে ফেসবুক লাইট অ্যাপটি ব্যবহার করে যেকোনো ডিভাইসেও ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে নির্বিঘ্নে।
সাইজে ২মেগাবাইটের কম হলেও ফেসবুক এর প্রায় সকল ফিচারই উপস্থিত ফেসবুক লাইট অ্যাপটিতে। এতো কম সাইজেও কেমনে ফেসবুক এতোসব ফিচার এই ছোট অ্যাপটিতে যুক্ত করেছে, তা আসলেই ভাবার বিষয়। ফেসবুক লাইট ব্যবহার করে ফেসবুক ব্রাউজিং, পোস্টিং, এমনকি চ্যাটিং করাও সম্ভব। এছাড়াও অ্যাপটি ব্যবহার করে কম ডেটা খরচ করে ফেসবুক ব্যবহার সম্ভব।
মেসেঞ্জার লাইট
ফেসবুক এর অন্যতম একটি জনপ্রিয় অ্যাপ হলো মেসেঞ্জার। তবে এটি কিছুটা ভারী হওয়ায় সব ফোনে সুন্দরভাবে চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। সেই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে ব্যবহার করতে পারেন মেসেঞ্জার লাইট অ্যাপটি।
মেসেঞ্জার এর জনপ্রিয় চ্যাটিং সুবিধার পাশাপাশি মেসেঞ্জার লাইট ব্যবহার করে মেসেঞ্জারের অ্যাপের মতোই অডিও কল ও ভিডিও কল করাও সম্ভব। এছাড়াও অ্যাপটিতে চ্যাটিংয়ে স্টিকার ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। স্লো ইন্টারনেট স্পিডেও অ্যাপটি খুব ভালোভাবেই কাজ করে।
ইন্সটাগ্রাম লাইট
ছবি শেয়ারিং এর জনপ্রিয় অ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম এর কথা কমবেশি সবারই জানা। অ্যাপটি ফিচারসে ভরপুর হওয়ায় লো এন্ড ডিভাইসগুলোতে অ্যাপটি চালাতে সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে ইন্সটাগ্রাম লাইট অ্যাপটি ব্যবহার করা যেতে পারে। ইন্সটাগ্রাম লাইট অ্যাপটিতে ইন্সটাগ্রাম এর প্রায় সকল ফিচার, যেমনঃ ছবি বা ভিডিও পোস্টিং, স্টোরি দেখা বা পোস্ট করা, এমনকি চ্যাটিং এর সুবিধাও রয়েছে। এটি আসল ইন্সটাগ্রাম অ্যাপ এর চেয়ে কম ডেটা খরচ করে।
গ্যালারি গো বাই গুগল
যেকোনো ডিভাইসের জন্য আদর্শ গ্যালারি অ্যাপ হতে পারে গুগল এর গ্যালাক্সি গো অ্যাপটি। অন্যান্য গ্যালারি অ্যাপ এর মতো ছবি ও ভিডিও ব্রাউজ করার সুবিধার পাশাপাশি অ্যাপটিতে আরো কিছু অসাধারণ ফিচার রয়েছে। যেমনঃ অ্যাপটিতে রয়েছে রিসাইকেল বিন এর মতো সুবিধা, যেখানে ডিলেট করা ছবি ৩০দিন পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকে। এই সুবিধার ফলে ভূলে ডিলেট করে দেওয়া ছবি বা ভিডিও ফেরত পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও অ্যাপটির আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ছবি, যেমনঃ সেল্ফি, ল্যান্ডস্ক্যাপ, ইত্যাদিকে আলাদা ক্যাটাগরিতে সাজিয়ে রাখতে পারে। এছাড়াও টুকটাক বেসিক এডিটিং এর সুবিধা তো থাকছেই।
ফাইলস বাই গুগল
যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ফাইল ম্যানেজমেন্ট এর জন্য একটি অ্যাপ লাগেই লাগে। ব্যবহার করতে পারেন ফাইলস বাই গুগল অ্যাপটি। সাইজে কম হওয়ার পাশাপাশি অ্যাপটি ছোটো প্যাকেটে বড় ধামাকার মতোই। ফাইল ম্যানেজমেন্ট এর পাশাপাশি অ্যাপটি স্টোরেজ ক্লিন করার টুলস ও রয়েছে। এছাড়াও ফাইলস বাই গুগল অ্যাপটি ব্যবহার করে অন্য অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সাথে অ্যাপ, মিডিয়া বা যেকোনো ফাইল আদান-প্রদান ও করা যায়। ফাইলস বাই গুগল অ্যাপটিতে সেফ ফোল্ডার নামে একটি ফিচার রয়েছে, যা ব্যবহার করে পিন বা প্যাটার্ন দিয়ে যেকোনো ফাইল লক করে রাখা যায়।
শেয়ারইট লাইট
যাদের কাছে এক ফোন থেকে আরেক ফোনে অফলাইনেই ফাইল শেয়ারিং খুব জরুরি একটি বিষয়, তাদের নিকট শেয়ারইট অপরিচিত কোনো নাম নয়। তবে শেয়ারইট অ্যাপ এর বিরক্তিকর এড ও অতিরিক্ত ফিচার এর ফলে অ্যাপটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠছে। সেক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন শেয়ারইট লাইট অ্যাপটি। ফাইল সাইজে ছোট হওয়ার পাশাপাশি বেদরকারি কোনো ফিচার থাকছেনা অ্যাপটিতে। ফাইল শেয়ারিং এর পাশাপাশি মিউজিক প্লেয়ার বা ফাইল ম্যানেজমেন্ট এর জন্যও শেয়ারইট লাইট অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন।
ইউটিউব গো
ইউটিউব দেখতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষের সংখ্যা খুবই নগন্য। ইউটিউব অ্যাপটি যেকোনো ফোনে ভালোভাবে চললেও কিছু বাড়তি সুবিধার জন্য ইউটিউব গো অ্যাপটি ব্যবহার করে দেখতে পারবেন। মূলত মোবাইল ডাটা ব্যবহারকারীদের জন্য এই ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোড এর ক্ষেত্রে এই অ্যাপটি বেশি কাজের। এছাড়াও যাদের ফোনের স্টোরেজ কম, তারা ইউটিউব গো ব্যবহার করে ফোনে থাকা মেমোরি কার্ডেও (যদি থাকে) ভিডিও ডাউনলোড করতে পারবেন।
ভিয়া ব্রাউজার
অন্য কোনো অ্যাপের লাইট ভার্সন না হলেও শুধুমাত্র কার্যকরিতার বিচারে ভিয়া ব্রাউজার অ্যাপটিকে এই তালিকায় রাখা হয়েছে। ছোট সাইজের এই ব্রাউজার অ্যাপটি যেমন ফাস্ট, তেমনই ফিচার এ ভরপুর। বড় ব্রাউজার অ্যাপের কারণে ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে যাদের ফোনে সমস্যা হয়, তাদের জন্য ভিয়া ব্রাউজার একটি আদর্শ সমাধান হতে পারে।
ইন্টারনেট স্পিড মিটার লাইট
আপনার ইন্টারনেট এর রিয়েল-টাইম স্পিড সম্পর্কে জানতে চান? ব্যবহার করতে পারেন ইন্টারনেট স্পিড মিটার লাইট। অ্যাপটি ফোনের স্ট্যাটাসবারে ডাটা ট্রান্সফার স্পিড প্রদর্শন করে। এছাড়াও দৈনিক ও মাসিক কি পরিমাণ ডাটা ব্যবহৃত হচ্ছে, তারও হিসাব রাখে অ্যাপটি।
ইন্টারনেট স্পিড মিটার লাইট ইন্সটল করুন
আপনি কোনো লাইট অ্যাপ ব্যবহার করেন কি? আমাদের জানান কমেন্ট সেকশনে।
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।