আইফোনে আইমেসেজ কি? এর সুবিধা ও ব্যবহারের নিয়ম জানুন

আইফোন এর আইমেসেজ একটি আইওএস এক্সক্লুসিভ ফিচার। হোয়াটসঅ্যাপে যেমন মেসেজ ও মিডিয়া আদানপ্রদান করা যায়, কল করা যায়, একইভাবে আইমেসেজ (iMessage) ব্যবহার করেও এসব ফিচার উপভোগ করা যায়। তবে আইমেসেজ মোবাইলের মেসেজ অপশন থেকেই সরাসরি ব্যবহার করা যায়, যা এর অন্যতম প্রধান সুবিধা। চলুন জেনে নেওয়া যাক আইফোনে আইমেসেজ কি, কিভাবে চালু করতে হয়, এর সুবিধা ও ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।

আইমেসেজ ও এসএমএস এর মধ্যে পার্থক্য

আইমেসেজ ও এসএমএস, উভয় দ্বারা বন্ধু বা পরিবারের কাছে টেক্সট বা ছবি পাঠানো যায়। তবে রয়েছে কিছু পার্থক্যঃ 

  • আইমেসেজে নিজের পাঠানো মেসেজগুলোর ব্যাকগ্রাউন্ড কালার ব্লু বা নীল কালারের, অন্যদিকে সাধারণ মেসেজগুলো গ্রীন বা সবুজ কালারের হয়ে থাকে
  • সাধারণ মেসেজ পাঠাতে মোবাইলের ব্যালেন্স খরচ হয়, অন্যদিকে আইমেসেজ পাঠাতে ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়
  • যেকোনো সিমযুক্ত ডিভাইসে এসএমএস কাজ করলেও আইমেসেজ শুধুমাত্র অ্যাপল ডিভাইসেই কাজ করে। অর্থাৎ আপনি চাইলেই অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের আইমেসেজ পাঠাতে পারবেন না 

তবে হ্যাঁ, আইমেসেজ এমনি এমনি চালু হবেনা। আপনার ফিচারটি চালু করে নিতে হবে।

আইফোনে আইমেসেজ চালু করার নিয়ম

  • আইফোনের সেটিংসে অ্যাপল আইডিতে সাইন ইন করুন
  • আইফোনের মূল সেটিংসে প্রবেশ করুন
  • এরপর নিচের দিকে স্ক্রল করে “Messages” অপশনে ট্যাপ করুন
  • স্ক্রিনের টপে iMessage অপশন দেখতে পাবেন
  • iMessage এর পাশে থাকা স্লাইডার অন করে দিন
  • স্লাইডার সবুজ হয়ে গেলে বুঝতে হবে আইমেসেজ চালু হয়ে গিয়েছে

এভাবে খুব সহজে আইফোনে আইমেসেজ চালু করতে পারবেন। আপনার অ্যাপল একাউন্টে যদি ইমেইল ও ফোন নাম্বার দুইটিই যুক্ত থাকে, তবে সেক্ষেত্রে যেকোনো একটিতে আইমেসেজ ব্যবহার করার ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। সেটিংস থেকে Messages মেন্যুতে প্রবেশ করে ফোন নাম্বার এবং/অথবা ইমেইলে আইমেসেজ ব্যবহারের অপশন সিলেক্ট করতে পারবেন। অনেক সময় আইমেসেজ একটিভ করার পর ডিভাইস রিস্টার্ট করতে হয়, তবেই আইমেসেজ ঠিকভাবে কাজ করে।

আইমেসেজ এর সুবিধা

আইমেসেজ ঘুরেফিরে এসএসএস এর নতুন রুপ হলেও এর বাড়তি কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমনঃ

  • এনক্রিপশনঃ আইমেসেজে বিল্ট-ইন এনক্রিপশন রয়েছে, যার মানে হ্যাকার বা দুষ্কৃতিকারি দ্বারা তথ্য চুরির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে
  • ডিভাইস সিঙ্কিংঃ আইমেসেজ এ আসা মেসেজ অ্যাপল কম্পিউটার, ম্যাকবুক, আইপ্যাড ও অন্য যেকোনো অ্যাপল ডিভাইসে দেখা যায় (একই অ্যাপল আইডিতে সাইন ইন করা থাকতে হবে)
  • স্টিকার ও ইফেক্টসঃ আইফোনের আইমেসেজে ইমোজি, স্টিকার ও বিভিন্ন ধরণের ইফেক্ট ব্যবহার করা যায়
  • রিড রিসিপ্টঃ আইমেসেজে পাঠানো মেসেজ প্রাপকের কাছে পৌঁছানোর পর Delivered ও পড়ার পর Read স্ট্যাটাস দেখা যায় 
  • লাইভ টাইপিংঃ একজন টাইপ করার সময় চ্যাটে থাকা অন্য ব্যাক্তি বা ব্যক্তিগণ লাইভ টাইপিং ইন্ডিকেশন পান “…” এর মাধ্যমে

আইমেসেজ / iMessage ব্যবহারের নিয়ম

আইমেসেজ সাধারণ এসএমএস এর মত কাজ করে। তবে iMessage মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট সাপোর্ট করে। এসএমএস এর মত Messages অ্যাপ ব্যবহার করে আইমেসেজ পাঠানো যায়। মেসেজ লেখার পর সেন্ড বাটন যদি নীল হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন উক্ত মেসেজটি আইমেসেজ। আর সেন্ড বাটন সবুজ মানে এটি সাধারন এসএমএস হিসেবে যাবে।

আইমেসেজ ব্যবহার করে অডিও মেসেজ ও পাঠানো যায়। টেক্সট ফিল্ডের মধ্যে থাকা মাইক্রোফোন আইকনে ট্যাপ করে ভয়েস মেসেজ রেকর্ড করে তা পাঠানো যাবে। তবে সাধারন মেসেজের ক্ষেত্রে অডিও মেসেজ পাঠানো যায়না।

শুধুমাত্র শব্দ বা বাক্য এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় আইফোনের আইমেসেজ। অ্যাপল এর আইমেসেজ প্ল্যাটফর্ম অনেক ধরণের ফিচার, যেমনঃ ইফেক্টস, গিফস, ছবি, রিয়েকশন, এনিমোজি, ইত্যাদি অফার করে। চলুন একনজরে আইমেসেজ এর সকল ফিচার ও ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

আইফোনে আইমেসেজ কি? এর সুবিধা ও ব্যবহারের নিয়ম জানুন

টেক্সট ইফেক্টস

পাঠানো মেসেজে ইফেক্ট যুক্ত করতে চাইলে মেসেজ পাঠানোর আগে সেন্ড বাটনে ট্যাপ করে ধরে রাখুন। এরপর ইফেক্ট মেন্যু দেখতে পাবেন, যেখানে Bubble ও Screen অপশন দেখতে পাবেন। পছন্দমত ইফেক্টস যুক্ত করে আইমেসেজ পাঠানো যাবে

রিয়েকশনস

আইমেসেজে কোনো মেসেজের অভিব্যক্তি জানাতে ইমোজি না পাঠিয়ে মেসেজ রিয়েকশনস ব্যবহার করতে পারেন। কোনো মেসেজের উপর লং প্রেস করলে স্ক্রিন ব্লার হয়ে যাবে ও উক্ত মেসেজের জন্য রিয়েকশনস দেখতে পাবেন। এরপর আপনার ইচ্ছামত যেকোনো রিয়েকশন নির্বাচন করে তা পাঠিয়ে দিন। এটি মূলত ফেসবুক মেসেঞ্জার ও ইন্সটগ্রাম চ্যাটের রিয়েকশন ফিচার এর মতোই কাজ করে। 

স্মাইলি

সকল ধরণের ইমোজি আইমেসেজের কিবোর্ড এর মাধ্যমে পাঠানো যাবে। এছাড়া আইমেসেজে আরো বিভিন্ন ধরণের স্টিকার ও ইমোজি ব্যবহার করা যাবে যা মূলত অ্যাপ স্টোরের ডেডিকেটেড পোর্টাল এর মাধ্যমে কাজ করে।

👉 আইফোন ডিজেবল হলে ঠিক করার উপায়

অ্যাপ ড্রয়ার

আইমেসেজে একটি অ্যাপ ড্রয়ার বা বার দেখতে পাবেন কিবোর্ড এর উপরে। এটিতে ডিফল্টভাবে স্টোর, ফটো,  মিউজিক, এনিমোজি ইত্যাদির পাশাপাশি বিভিন্ন সাপোর্টেড অ্যাপ থাকে। আইমেসেজ এর সাথে ব্যবহারযোগ্য অ্যাপসমূহ এই অ্যাপ ড্রয়ার বা বার থেকে অ্যাকসেস করা যাবে।

ছবি

ফোনে থাকা যেকোনো ছবি আইমেসেজের মাধ্যমে পাঠান যাবে। আবার চাইলে তৎক্ষণাৎ তুলেও ছবি বা ভিডিও সেন্ড করা যাবে। 

কলিং

অন্য যেকোনো মেসেজিং অ্যাপ এর মত আইমেসেজেও রয়েছে অডিও ও ভিডিও কলিং শর্টকাট। আইমেসেজ ব্যবহারকারীগণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফেসটাইম অ্যাপ থেকে একে অন্যের সাথে অডিও বা ভিডিও কলে যুক্ত হতে পারবেন। এটি করা হয় অ্যাপলের ফেসটাইম অ্যাপ ব্যবহার করে। ফেসটাইম কলে ব্যবহার করা যাবে বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার ও ইফেক্ট। এছাড়া গ্রুপ কলিং ও সাপোর্ট করে ফেসটাইম।

এনিমোজি

এই ইফেক্ট আইমেসেজে ব্যবহার করতে চাইলে ফেস আইডি সাপোর্টেড ডিভাইসের প্রয়োজন হবে। এনিমোজি মূলত ফেস ডাটা ক্যাপচার করে ও এই ডাটা ব্যবহার করে বানর, রোবট, এলিয়েন, ইত্যাদি জিনিসের সাথে মাথা রিপ্লেস করে দেয় ও এটি রিয়েল টাইমে এনিমেট হয়।

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *