তৈরি হল সত্যিকারের “বায়োনিক ম্যান”!

bionic man

বিখ্যাত মুভি “রোবোকপ” কিংবা উইল স্মিথের “আই রোবট” দেখে থাকলে বায়োনিক ম্যান সম্পর্কে ধারণা হওয়ার কথা। উভয় সিনেমায়ই কেন্দ্রীয় চরিত্র দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ইলেকট্রনিক ব্যবস্থার সাহায্য নিয়ে অঙ্গহানির সীমাবদ্ধতা জয় করেন। এর মধ্যে রোবোকপ তার প্রায় পুরো দেহ এবং উইল স্মিথ (ডিটেকটিভ স্পুনার) তার ক্ষতিগ্রস্ত বাম হাত এবং ফুসফুস রোবোটিক অঙ্গ দ্বারা প্রতিস্থাপন করান। তখন পর্যন্ত এগুলো শুধুমাত্র কল্প বিজ্ঞানেই সম্ভব ছিল। কিন্তু এই ২০১৩ সালে এসে সত্যি সত্যি দেখা মিলল “বায়োনিক ম্যান” এর।

ব্রিটেনেরর সায়েন্স মিউজিয়ামে সম্প্রতি প্রদর্শন করা হয়েছে এমনই একজন বায়োনিক ম্যান, যার রয়েছে মানুষের মত মুখমণ্ডল, কিডনি, শ্বাসতন্ত্র ইত্যাদি। রেক্স নামক এই যন্ত্রমানবের শরীরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সিনথেটিক রক্ত। এবং এসবই সম্ভব হয়েছে অত্যাধুনিক রোবোটিক্সের কল্যানে।

বারটল্ট মেয়ার, যিনি পেশায় একজন সামাজিক মনস্তাত্বিক, তিনিও অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সাথে রেক্স তৈরিতে কাজ করেছেন। তবে মিঃ মেয়ারের ভূমিকাটি একটু অন্যরকম। কারণ, তিনি নিজেও কিছুটা বায়োনিক মানুষ। অবাক করা হলেও বাস্তব, বারটল্ট মেয়ার জন্মই নিয়েছিলেন বাম হাত ছাড়া- অর্থাৎ শুধুমাত্র একটি হাত ছিল তার। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের বদৌলতে মিঃ মেয়ার এখন দুটি হাত দিয়ে দিব্যি সুন্দর জীবন যাপন করছেন। প্রযুক্তি তার বাম হাতের শূণ্যতা অনেকাংশে পূরণ করে দিয়েছে।

বায়োনিক ম্যান রেক্স আবিষ্কারক বিজ্ঞানীরা দাবী করেছেন, এখানে মানবদেহের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ অঙ্গপ্রত্যঙ্গই যান্ত্রিক বিকল্প দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে এটা যে পুরোপুরি কার্যকর নয়, সেটিও তারা স্বীকার করে নিয়েছেন।

বিজ্ঞানী স্টিভেন সিয়াও বলেন, “আমাদের রয়েছে মোটর, যা জিনিসপত্র উত্তোলন করতে পারে, কিন্তু আপনি যদি অবিকল হাতের মত নৈপুণ্য চান, তবে সেখানে এখন পর্যন্ত পৌঁছাইনি”। তিনি আরও বলেন, আমরা কেবলমাত্র মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মত দেখতে এমন যান্ত্রিক বিকল্প বানানো শুরু করেছি। কিন্তু মানবদেহের মত অনুভূতিসম্পন্ন নকল অঙ্গ তৈরি করা থেকে একনও অনেক দূরে। তবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে আমরা এমন রোবট তৈরি করতে পারব যার মানুষের মত চেতনাশক্তি না থাকলেও হাতে কলম তুলে নিয়ে লেখার মত দক্ষ হবে।

বায়োনিক ম্যান রেক্সের কিছুটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও রয়েছে। সাড়ে ছয় ফুট লম্বা এই যন্ত্রমানবের বিভিন্ন অংশ তৈরি হয়েছে ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং ব্যবসায়িক উৎপাদন কেন্দ্রে, আর অ্যাসেম্বল (যন্ত্রাংশসমূহ একসাথে জোড়া লাগানো) হয়েছে লন্ডনের শ্যাডো রোবট কোম্পানিতে। এটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বায়োনিক বিপ্লব কি তাহলে সত্যিই শুরু হয়ে গেল? আপনার কি মনে হয়? মন্তব্যের মাধ্যমে সবার সাথে ভাগাভাগি করে নিলে ভাল লাগবে আশা করি। অনেক ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য :)

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,543 other subscribers

2 comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *