পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছবি “মা বড় না বউ বড়” এর নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই মুভির পরিচালক ছিলেন শেখ নজরুল ইসলাম যাতে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করেছেন আমিন খান, নিপুন, ডলি জহুর, রাজ্জাক, আলীরাজ, কাজী হায়াত, নাসরিন প্রমুখ। এই ছবিতে আমিন খান একজন পুলিশ অফিসার থাকেন। সিনেমাটির নামকরণ দেখে কেউ কেউ বিব্রতবোধ করেছেন। যদিও, এর গল্পটা ভালই ছিল।
এই পোস্টে সিনেমার রিভিউ লিখবনা। বরং এর নামকরণ ও সে সম্পর্কিত সাম্প্রতিক একটি ইস্যুতে কিছু কথা বলব।
গতকাল এক পোস্টে মাইক্রোসফট সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস সম্পর্কে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছিল। বিল গেটস প্রতিরাতে থালাবাসন ধৌত করেন এবং এটা তিনি উপভোগ করেন। নিঃসন্দেহে তার মত ব্যস্ত ও ধনাঢ্য ব্যক্তির নিকট থেকে এ ধরণের মন্তব্য একটু কমই আশা করা যায়। এখান থেকে আমরা নিজের কাজ নিজে করার মন-মানসিকতা গড়ে তুলতে পারি, যেটা অনেকের মধ্যেই বিলুপ্তপ্রায়।
বিল গেটস সম্পর্কে উক্ত পোস্টটি প্রকাশের পর-পর আমাদের ফেসবুক পেইজে বেশ কিছু কমেন্ট এসেছে। বেশিরভাগই মিঃ বিল এর উদ্দেশ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন “এ আর এমন কী?”, “এটা প্রচার করার মত কোনও বিষয় হল?”
একজন ক্ষুব্ধ হয়ে মন্তব্য করেছেনঃ “বিল গেটসের থালাবাসন ধোয়া চোখে পড়ে আর মাওলানা ভাসানীর নিজ হাতে রান্না করার ছবি চোখে পড়েনা?”
আরেকজন বলেছেন- কিছুদিন পর নাকি বিখ্যাত ব্যক্তিদের টয়লেট টিস্যু ব্যবহারের খবরও পত্রিকায় আসবে!
এবার ডিফেন্সের পালা। গুণী ব্যক্তিদের কদর করলে তাতে আমাদের নিজেদের সম্মান কমবে না, বরং সেটাই আমাদের দায়িত্ব হওয়া উচিৎ বলে মনে করি। মহান নেতা মাওলানা ভাসানী অবশ্যই আমাদের সবার নিকট শ্রদ্ধার পাত্র। তাঁকে সম্মান করি বলে অন্যদেরকে সম্মান করা যাবেনা এমনটি তো নয়!
পৃথিবীতে বড় বড় মানুষদের কাছ থেকে আমরা অনুপ্রেরণা নেব। মাওলানা ভাসানী ও বিল গেটসের মধ্যে পার্থক্য কিংবা তুলনা করা আমাদের কাম্য নয়। বরং, আমরা তাঁদের কাছ থেকে অন্তত এইটুকু শিখব যে, ওনারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে এত উঁচু স্তরে থেকেও নিজের কাজ নিজে করছেন; এবং আমাদেরও এরকম মন-মানসিকতা গড়ে তোলা উচিৎ। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একটা প্রবন্ধে পড়েছিলাম “হাতে কাজ করায় অগৌরব নেই। অগৌরব হয় মিথ্যায়, মূর্খতায় ও নীচতায়”; মনে পড়েছে?
এবার চলে যাই সেই বাংলা সিনেমা “মা বড় না বউ বড়” এর প্রসঙ্গে। ছবিটির নামকরণ নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু কথা আছে। বলাই বাহুল্য, আপনারা ভিন্নমতও পোষণ করতে পারেন।
আমাদের জীবনে “মা” এর অবস্থান এমন একটি জায়গায় যেখানে অন্য কারও তুলনা আনাটা শোভনীয় নয়। এক একটা সম্পর্কের ধরণ এক এক রকম। এখন মায়ের অবস্থানের সাথে বৌয়ের অবস্থানের তুলনা করাটা আমার কাছে নিতান্তই অনর্থক ও অসাড় বলে মনে হয়। আমি জানিনা, আপনারা কেউ কেউ হয়ত ঐ ছবিটির ফ্যান হয়ে থাকতে পারেন। আপনাদের কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য এই কথাটি বলিনি, তবে “মা বড় না বউ বড়” প্রশ্নটির উত্তর খোঁজা অর্থপূর্ণ হতে পারেনা। এই দুটি সম্পর্কের মধ্যে তুলনা করার কোনও অবকাশ নেই।
ভাবছেন এর সাথে আজকের পোস্টের সামঞ্জস্য কোথায়? এর উত্তরও হয়ত ইতোমধ্যেই পেয়ে গেছেন। মহান ব্যক্তিদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা অবদানের জন্য আমরা তাঁদের স্মরণ করি। আমরা তাঁদের থেকে শেখার চেষ্টা করব। উল্টা তর্ক-বিতর্ক করে লাভ কী?
- বাংলাটেক ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিয়ে প্রযুক্তি বিষয়ক যেকোনো প্রশ্ন করুনঃ এখানে ক্লিক করুন।
- বাংলাটেক ফেসবুক পেইজ লাইক করে সাথে থাকুনঃ এই পেজ ভিজিট করুন।
- বাংলাটেক ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন এবং দারুণ সব ভিডিও দেখুন।
- গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন।
- বাংলাটেক সাইটে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
- প্রযুক্তির সব তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.banglatech24.com সাইট।