পুরাতন এন্ড্রয়েড ফোন নতুনের মত করার ৫টি উপায়

আপনি হয়তোবা অনেক বেশি দিন সময় ধরে আপনার ফোন ব্যবহার করছেন। এটি খুবই ভালো কিন্তু আস্তে আস্তে আপনি আপনার ফোনের প্রতি উদাসীন হয়ে যাচ্ছেন। আপনার কাছে হয়তোবা একই ফোন অনেক দিন ধরে ব্যবহার করা একঘেয়েমিতা নিয়ে আসছে। যখনই কোন একটি ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে একঘেয়েমিতা চলে আসে তখনই আমরা আসলে নতুন একটি ফোন কেনার কথা চিন্তা করি।

কিন্তু আপনার ফোন থাকা সত্বেও নতুন একটি ফোনের পিছে এখন অর্থ ব্যয় করা কি যৌক্তিক। আমাদের আজকের আর্টিকেলে কিভাবে আপনি আপনার পুরাতন ফোনে নতুন ফোনের ফিলিংস ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এর ফলে আপনি প্রচুর অর্থ খরচ না করে আপনার পুরাতন এন্ড্রয়েড ফোনে নতুনত্বের ছোয়া আনতে পারবেন।

নতুন হোম স্ক্রিন লঞ্চার ব্যবহার করুন

হোম স্ক্রিন মূলত আপনার স্মার্টফোনের এমন একটি স্ক্রিন যেটি আপনি হয়তোবা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বার ব্যবহার করে থাকেন। হোম স্ক্রিন হিসেবে নতুন কিছু ব্যবহার করার জন্য নানা ধরনের উপায় রয়েছে। প্রথমত আপনি চাইলে একটি থার্ড পার্টি হোম স্ক্রিন লঞ্চার ইন্সটল করে দেখতে পারেন। অ্যান্ড্রয়েডের কিছু সেরা ফিচারের মধ্যে অন্যতম হলো হোমস্ক্রিন চেঞ্জ করা। ফিচারটি এমন সুবিধাজনক যেটা আরো বেশি সংখ্যক স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর ব্যবহার করা উচিত। 

নোভা লঞ্চার এবং নাইয়াগারা লঞ্চার খুব জনপ্রিয় এবং মান সম্মত হোম স্ক্রিন লঞ্চার। নোভা হোম স্ক্রিন লঞ্চার ব্যবহার করে আপনি আপনার নিজের সুবিধা মত কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন। এমনকি সেটা ব্যবহার করে আইফোনের হোম স্ক্রিনের মতো করা সম্ভব। নাইয়াগারা আপনাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের হোম স্ক্রিন লেয়াউট প্রদান করে থাকে। আপনি যদি নতুন কিছু চেষ্টা করতে চান সে ক্ষেত্রে এটি খুব ভালো সেবা প্রদান করতে পারবে। 

আপনার আইকন গুলোতে পরিবর্তন আনুন

আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের হোম স্ক্রিনে সবচেয়ে প্রধান উপাদানগুলো কি তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনার উত্তর আসবে অ্যাপ আইকন। আপনি চাইলে আপনার সকল অ্যাপ আইকনের চেহারা শুধুমাত্র একটি আইকন প্যাক এর মাধ্যমে সহজেই বদলে দিতে পারবেন। গুগল প্লে স্টোরে অনেক বেশি পরিমানে আইকন প্যাক রয়েছে এবং আপনার কাছে যদি আগে থেকেই একটি থার্ড পার্টি হোম স্ক্রিন লঞ্চার থেকে থাকে তাহলে ব্যবহার করা আরো বেশি সহজ। আইকন প্যাক আপনাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাস্টমাইজেশন এর সুযোগ প্রদান করে থাকে। কিন্তু আপনার হোম স্ক্রিনের আইকন গুলোর চেহারা পাল্টানোর জন্য আপনাকে হয়তোবা আইকন প্যাক কাস্টমাইজেশন করারও কোনো দরকার পড়বে না।

স্যামসাং গ্যালাক্সি এবং গুগল পিক্সেলের ফোন গুলো আপনার ওয়াল পেপারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে একই কালারের আইকন রাখার সুবিধা দিয়ে থাকে। যখনই আপনি নতুন কোন ওয়াল পেপার ব্যবহার করবেন তখন তার সাথে সাথে আইকনগুলিও পরিবর্তন হয়ে যাবে। এটি দেখতে খুবই সুন্দর লাগে।

ওয়াল পেপার পরিবর্তন করুন

এটি হয়তোবা অনেক মানুষের কাছে খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা কিন্তু বর্তমানে এমন অনেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে যারা কখনো তাদের এন্ড্রয়েড ফোনের ওয়াল পেপার পরিবর্তন করার জন্য সময় বের করেনি। আপনার ডিভাইসকে পার্সোনালাইজ করার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে সহজ উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়া মডার্ন ভার্সনের এন্ড্রয়েড এর ক্ষেত্রে এটি শুধুমাত্র আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ চেঞ্জ করার উপরে নির্ভর করে না। 

স্যামসাং গ্যালাক্সি এবং গুগল পিক্সেল ফোন একটি এন্ড্রয়েড ফিচার সাপোর্ট করে যার নাম ম্যাটেরিয়াল ইউ। মূলত এর মাধ্যমে আপনি যখনই একটি ওয়াল পেপার নির্বাচন করেন তখন অ্যান্ড্রয়েড এই ওয়াল পেপার থেকে একটি কালার নির্বাচন করে সম্পূর্ণ ফোন জুড়ে সেই কালার ব্যবহার করে। এই কালার আপনার কুইক সেটিং প্যানেল, ভলিউম কন্ট্রোল, সিস্টেম অ্যাপস এবং বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপেও দেখা যায়। এজন্য আপনার ফোনের ওয়াল পেপার এখন কিংবা পরে পরিবর্তন করার ফলে আপনি আপনার ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি আমূল পরিবর্তন দেখতে পারবেন। 

নতুন কেস সংগ্রহ করুন 

আমরা এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র আপনার ফোনের সফটওয়্যার ভিত্তিক চেহারা পাল্টানোর দিকে নজর দিয়েছি। কিন্তু আপনি আপনার ফোনের বাহ্যিক চেহারা পাল্টিয়েও আপনার ফোনকে একটি নতুন ফোন হিসেবে আবির্ভূত করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে আপনার স্মার্ট ফোনের জন্য একটি নতুন কেস সংগ্রহ করতে হবে। আপনি ইতিমধ্যেই আপনার হাতে ফোনটি কেমন অনুভব করবে এ ব্যাপারে যথেষ্ট ধারণা পেয়ে গিয়েছেন এবং এটির লুক এখন আর স্পেশাল মনে হয় না। এখনই সময় আপনার ফোনের জন্য একটি নতুন কেস সংগ্রহ করে নেওয়ার। 

🔥🔥 গুগল নিউজে বাংলাটেক সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 🔥🔥

পুরাতন এন্ড্রয়েড ফোন নতুনের মত করার ৫টি উপায়

ফোনের কেসের নিরাপত্তা জনিত গুণাবলি সম্পর্কে এখনো অনেক মানুষের মধ্যে বিভেদ থাকলেও এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন নেই যে ফোনের কেস খুব সহজেই একটি ফোনের দেখার সৌন্দর্য এবং অনুভব করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দিবে। নতুন কোনো উপাদান বা নতুন রংয়ের কেস ব্যবহার করার ফোনে খুব সহজেই ডিভাইসের বাহ্যিক রূপ পরিবর্তন করে দিতে পারে। এছাড়া আপনি চাইলে একাধিক কেস ব্যবহার করতে পারেন যাতে করে আপনি বিভিন্ন সময় এবং পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে কেস পরিবর্তন করে সবসময় ইউনিক লুক ধারণ করতে পারেন।

এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর জন্য টিপস অনুসরণ করুন

আপনি আইফোন কিংবা অ্যান্ড্রয়েড যেটি ব্যবহার করেন না কেন সময়ের সাথে সাথে আপনার স্মার্টফোন স্লো হতেই থাকবে। এটি কিছু ক্ষেত্রে আপনার ভুলের কারণে হতে পারে আবার কিছু ক্ষেত্রে বলা যায় যে টেকনোলজি এভাবেই কাজ করে। কিন্তু ভালো সংবাদ হলো এই যে আপনি কিছু উপায় অবলম্বন করে আপনার ফোনের স্পিড অল্প পরিমান হলেও বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

👉 অ্যান্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর কার্যকরী উপায়

রিস্টার্টিং অথবা অ্যাপ আপডেট করার মত সহজ জিনিসগুলো আপনাকে এ বিষয়ে সাহায্য করতে পারে। এছাড়া আপনি চাইলে ক্যাশ এবং যে সকল অ্যাপ প্রয়োজন নয় সেগুলো ডিলিট করতে পারেন। আপনি যদি একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায়ের পারফরম্যান্স পেতে চান তাহলে অ্যানিমেশনের স্পিড বাড়িয়ে দিন এবং অ্যাপ গুলোর লাইট ভার্শন ব্যবহার করা শুরু করুন। আপনি চাইলে আপনার ডিভাইসকে সম্পূর্ণ রিসেট করে দিয়ে নতুন ভাবেও শুরু করতে পারেন।

একটি ফোনের মধ্যে থাকা সম্পূর্ণ লাইফ ব্যবহার করা খুব ভালো একটি আইডিয়া৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিবছর ফোনকে আপডেট করা খুব বেশি একটা দরকারি হয়ে ওঠে না। এ সকল টিপস ব্যবহার করে আপনার ফোনকে আরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করুন। এছাড়া যখনই আপনার নতুন একটি এন্ড্রয়েড ফোন কেনার প্রয়োজন পড়বে সেক্ষেত্রে বেশি সময় ধরে ব্যবহার করতে পারবেন এমন ফোন নির্বাচন করুন। আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা আমাদের কমেন্ট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিতে পারবেন। নিত্য নতুন প্রযুক্তি বিষয়ক নানা ধরনের তথ্য এবং টিপস এন্ড ট্রিকস পেতে চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে। 

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

সর্বশেষ প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য সরাসরি আপনার ইমেইলে পেতে ফ্রি সাবস্ক্রাইব করুন!

Join 8,550 other subscribers

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *